এমন কি কেউ আছেন যিনি কখনও কোন দিন রাগ করেননি হ্যাঁ রাগ করেছেন অবশ্যই। রাগ প্রতিটি মানুষের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু রাগ করলে কোন লাভ হয় কি। রাগ হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক অনুভুতি। তবে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটলে তা ব্যাক্তিকে অস্বাভাবিক করে তোলে। অনেক সময় দেখা যায় খুব অল্প সময়ে অনেকের রাগ চলে আছে। একজন মানুষের এর জন্য রাগ একটি ভালো বিষয় নয় এটি নিমিষেই সমাজে নিয়ে আসতে পারে নানা রকম বিশৃঙ্খলা অশান্তি ইত্যাদি কারণ। রাগ কমানোর সহজ উপায়।
রাগ হলে আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবেন কিভাবে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা এবং মানসিক রোগ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা নানা রকম পদ্ধতি অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। জানতে হলে রাগ না করে আপনাকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পরতে হবে।
তাই আপনার জন্য দরকার রাগ নিয়ন্ত্রণ করা। আসলে এটি সমাধানের কোন কারম আছে কি? অনেক ডাক্তার মেডিকেল অফিসার এবং বিশেষজ্ঞরা রাগ কমানোর নানা রকম উপায় বা টিপস দিয়ে থাকে। তো আমরা আজ এই আর্টিকেলে তুলে ধরবো বিশেষজ্ঞরা রাগ কমানোর যে উপায় গুলো প্রদান করে তা তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
১.রাগের বহিঃপ্রকাশ করা
রাগ সবার হয় এটি আসবে আবার চলে যাবে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এই রাগকে আপনাকে সঠিকভাবে প্রকাশ করতে হবে। মনের মধ্যে সকল রাগ লুকিয়ে রাখা বা গোপন রাখা যাবেনা বা এর জন্য আপনাকে কোন রকম অনুতপ্ত হওয়া যাবে না এটি উচিত না। আপনার রাগ কে সঠিক ভাবে প্রকাশ করতে হলে আপনাকে প্রথমে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এর জন্য রাগের প্রকাশ থাকতে হবে। আর যদি রাগ প্রকাশ না করেন তাহলে এটি জমতে জমতে অনেক খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। আপনাকে একটি উদাহরণের মাধ্যমে বলি। একটি গ্লাস বা একটি জগের যেমন নিদিষ্ট একটি পানি ধারণ করার ক্ষমতা থাকে ঠিক তেমনি একটি মানুষের রাগ ধারনের নিদিষ্ট পরিমান থাকে।
আরও পড়ুনঃ মেদ কমানোর সহজ উপায়
২.শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
এই শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম এর মাধ্যমে আপনি আপনার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। একটি মানুষের রাগ প্রকাশ এর নিদিষ্ট কিছু লক্ষণ থাকে। কারন সমুহগুলো হলো রাগ হওয়ার ফলে তার হ্রিদস্পন্দন বেড়ে যাবে শরীরের পেশি গুলি অনেক শক্ত হয়ে যাবে। আর এই লক্ষণ গুলি আপনার মাঝে দেখা গেলে আপনাকে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। আর এটি কিভাবে করবেন?
আপনাকে ১-৫ পর্যন্ত গুনতে গুনতে শ্বাস টা আপনাকে ধরে রাখতে হবে। তারপর আপনাকে ১-৫ পর্যন্ত গুনতে গুনতে শ্বাসটা আপনাকে মুখ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। এভাবে আপনি ৫-৬ বার চেষ্টা করবেন।
১ থেকে ১০ পর্যন্ত প্রতি ১ সেকেন্ড পর পর গুনতে হবে। ভাবছেন এভাবে কেন করবেন। এটিও রাগ কমানোর উপায়। যদি আপনার মনে হয় আপনার মধ্যে রাগ এর লক্ষণ দেখা দিচ্ছে তাহলে আপনি সাথে সাথে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনতে হবে। এর ফলে আপনার মন অন্যান্য কোন দিকে যাবে এবং রাগ কমতে থাকবে। এছাড়া আপনি যেখানে বসে আছেন কিংবা দাড়িয়ে আছেন সেখান থেকে গন্তব্য ত্যাগ করুন অন্যান্য কোথাও যান বারান্দায় কিংবা অন্যান্য কোন রুমে দিয়ে বিশ্রাম নিন।
আপনার মনকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। এক থেকে দশ প্রযন্ত উলটা করে গুনা শুরু করু কিংবা 1 - 20 পর্যন্ত উল্টা আবার সিধা করে গুন্তে পারেন। যার ফলে আপনার মন থাকবে অন্যান্য দিকে আর রাগ আসতে আসতে কমতে থাকবে।
আরও পড়ুনঃ হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়
যেকোন রকম কাজ রাগের মাথায় করে বসবেন না দরকার হলে কিছুক্ষণ সেই মানুষটার সঙ্গে কথা বার্তা বলা থেকে বিরত থাকুন, সময় নিন, এছাড়া আগের সেই কারন টি থেকে নিজের মনকে ছরিয়ে নিন। এটি প্রয়োগ করার ফলে আপনার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
৩.নিয়মিত ব্যায়াম করা
নিয়মিত এক্সসারসাইজ করতে পারেন। এটি করার ফলে আপনি আপনার রাগ কমিয়ে নিতে পারবেন বা সাহায্য করবে। ক্ষণিকের রাগ কমানোর জন্য আপনি প্রতিদিন কিছু পথ হাটতে পারেন।
৪.বরফ চেপে ধরে রাখা
৫.শান্ত হওয়া
৬.কান্না করা
৭. সমস্যা সমাধান চেষ্টা করুন
সকল সমস্যা সমাধানের উপায় রয়েছে। একটু ঠাণ্ডা মাথা চেষ্টা করলে সেকল সমস্যা সমাধান করা জেতে পারে আপনি সেই টিপস ব্যবহার করুন।
৮.হাসি ঠাট্টা করা
টেনশন বা রাগ কমানোর জন্য হাসি ঠাট্টা করা জেতে পারে। এর ফলে আপনার মনটা প্রফুল্ল মনে হয় এবং আসতে আসতে রাগ কমতে থাকে।
৯.লিখা,ছবি আঁকা
অনেক সময় এমন পরিমান রাগ হয় এমন মানুষের উপর যে তাদের কে কিছু বলা যায় না। যেমন পরিবারে বড় বাক্তি গন এবং অফিস এর বস। তো এর জন্য আপনি যেটি করতে পারেন। আপনি যদি আপনার বস এর উপর রাগ করে কিছু বলতে চান সেটি আপনি একটি খাতায় লিখতে পারেন এবং তারপর সেটি আপনি ফেলে দিন। অথবা যে আপনি যদি সেই বাক্তিকে আরও বেশি পরিমান রাগ ঝেরে ফেলতে চান তাহলে তার ছবি আকুন আর ছিড়ে ফেলুন। অথবা আপনার যার উপর জাগ তার নামটি খাতায় লিখুন বা সম্ভব হলে খুব জোর দিয়ে লিখুন যাতে খাতা অথবা কলম ভেঙ্গে জায়। কোন রকম সমস্যা নেই। এই পদ্ধতি অনুসরন করার ফলে আপনার রাগ অবশ্যই কমতে থাকবে।
১০.ধুমপান পরিহার
অনেক কেই দেখা যায় রাগ কমানোর জন্য ধুমপান করে থাকে। এছাড়া অন্যান্য আরও নানা রকম নেশা করেন। কিন্ত এটি রাগ কমানোর উপায় নয়। বরং এটি করার ফলে আপনার আরও নানা রকম ক্ষতি হবে। এর ফলে আপনার মনটা আরও বেশি বিক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
১১. বল থেরাপি
বল থেরাপি নামে একটি বিষয় রয়েছে যেটি রাগ কমাতে অনেক সহায়তা করে। মানুষ রেগে গেলে তার মধ্যে এক ধরনের শক্তি তৈরি হয়। এক্ষেত্রে কিছু সফট বা নরম বল আছে জেগুলি কে হাতে নিয়ে চাপ দিলে ওই শক্তি হাত থেকে বল এর মধ্যে যায়। যার কারনে রাগ কমে যায়। নিজেকে নিয়ে হিসাব করতে গেলে রাগ আরও বেশি পরিমান বেড়ে যাবে। এর ফলে আপনাকে যা করতে হবে তাতক্ষণিক ব্যাপারটা মেনে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং যেসব ভুলে হারাতে পারে আপনার জমানো টাকা
১২.ধর্মচর্চা
যার মধ্যে ধর্মের ভয় বা নানা রকম ভিতি রয়েছে সেই বাক্তি খুব অল্প সময় রাগ হয়ে থাকে। আমার কাছে এটি খুব ভালো মনে হয়েছে। তাই আমি আপনাদের কে সাজেস্ট করবো আপনারা সবাই নিজ নিজ ধর্মচর্চা করে নিবেন। রাগ কমানোর জন্য অজু করতে পারেন। যার ফলে আপনি আপনার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
রাগ আপনি যেসব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারেন। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, অন্যায় অবিচার, জুলুম ও বৈষম্য দূর করা মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায় করার জন্য অপরাধী এবং জুলুম বাজদের মোকাবেলা করার জন্য আপনি রাগকে প্রয়োগ করতে পারেন। আপনি জাতীয়, সামাজিক, মানবিক আদর্শ, ধর্মীয় আদর্শ মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য আপনি রাগকে প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে এটি মনে রাখতে হবে অন্যায় দমন করতে দিয়ে অন্যায় দাতাকে জেন প্রসয় না দেয়া হয় সেটিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
রাগ কমানোর দোয়াঃ আউজবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম। রাগ হলে আপনি এই দোয়াটি পরতে পারেন। ইনশাআল্লাহ আপনার রাগ কমতে থাকবে। তিরমিজি থেকে জানা যায় যে। রাগ আছে শয়তান এর কাছ থেকে। আর শয়তান হচ্ছে আগুনের তৈরি। আর আগুন নেভাতে দরকার হচ্ছে পানি। আর এই জন্য আপনাকে নামাজ এর অজু করে নিতে হবে। আবার মুসলিম শরিফে বলা হয়েছে যে, যে বাক্তি রাগ এর সময় নিজেকে সামলে রাখতে পারবে সেই প্রকিত বাহাদুর। রাগ দেখানোর সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে বাক্তি রাগ নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারবে আল্লাহ তায়ালা তাকে কিয়ামতের এর দিন পুরস্কিত করবে।
১৩. ভালো কাজ করা
মনকে ব্যস্ত রাখতে ভালো লাগে এমন ধরনের কাজ করতে পারেন। এছাড়া কারও সাথে রাগের কারণ শেয়ার করতে পারেন কিংবা হেডফোন দিয়ে আপনার পছন্দমত যেকোন কিছু শুনতে পারেন।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।