সময়ের পরিবর্তনে অনেক নতুন আপডেটেড স্মার্টফোন গুলো স্লো বা ধীরগতি হয়ে যায়। আর সেই সঙ্গে ধীরে ধীরে সেই নতুন সুপার ফাস্ট মোবাইল ফোনের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। মোবাইল ফাস্ট করার উপায়।
বর্তমান সময়ে আন্ড্রয়েড ফোন এর বড় সমস্যা হচ্ছে ফোন স্লো হয়ে যাওয়া। নতুন সময় ফোনটি কেনার সময় যথেষ্ট ফাস্ট এবং দ্রুততার সাথে কাজ করলেও এক সময় তা আর সঠিক ভাবে কাজ করে না। আপনার স্মার্টফোন আন্ড্রয়েড ধীরগতি স্লো হলে কি করবেন? চলুন সেটা দেখে নেয়া যাক;
আমরা যখন নতুন স্মার্টফোন কিনে থাকি তখন খুব ভালোভাবে ভালো গতির সাথে মোবাইল ব্যবহার করে থাকি। আর এর কিছু দিন পর সময় যেতে যেতে আমাদের ফোন এর মধ্যে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় আর আমরা অনেক রকম অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকি। এই সমস্যা নানা রকম নানান প্রকার হতে পারে। যেমন, মোবাইল ফোন হ্যাং হয়ে যাওয়া, স্লো কাজ করা ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ Best Camera Phone In The World
আমার মতে মোবাইল ফোন স্লো বা ধীরগতি নানা রকম সমস্যার কারন আমরা। কেননা আমরা একটা ফোন নতুন অবসস্থায় যেমন যত্ন নেই আর পুরনো হতে থাকলে তা আর আমরা যত্ন নেই না। এর ফলাফল সরূপ দেখা যায় স্মার্টফোনের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে ৫ টি টিপস শেয়ার করবো যা আপনি আপনার আন্ড্রয়েড ফোন প্রয়োগ করলে ফোনটি আবার পূর্বের মতো নতুন এর মতো ফাস্ট হবে। চলুন আন্ড্রয়েড ফোন ফাস্ট করার উপায় জেনে নেই;
কারন মোবাইল এর সম্পূর্ণ কাজ গুলি এখান থেকেই পরিচালিত হয়ে থাকে। আর সেই ভাবে যদি আপনার মোবাইল এর প্রসেসর, র্যাম, রম যদি কম হয়ে থাকে আর তার কাজ করার ক্ষমতা যদি কম হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে যদি ফোনের উপর বেশি পরিমান চাপ পড়ে থাকে তাহলে আপনার সেই আন্ড্রয়েড ফোন হ্যাং হয়ে যাবে।
এখন তাহলে সহজে বলি, আপনার কাছে যদি অনেক পুরনো স্মার্ট ফোন থাকে তাহলে সেটিতে অনেক কম নিম্ন মানের (র্যাম ৫০০ এমবি- ১ জিবি) র্যাম লাগানো থাকে এবং প্রসেসর স্পিড খুব কম যেমন (Single Core অথবা Dual Core) এর ফোন এই ক্ষেত্রে আপনার খুব অবশ্যই হ্যাং বা স্লো হয়ে যাবে।
এই ক্ষেত্রে আমি আপনাকে বলবো আপনার যদি সেই পুরনো মোবাইল ফোন হয়ে থাকে তাহলে সেটি ফাস্ট করার একমাত্র উপায় হচ্ছে অনেক কম পরিমান অ্যাপ ব্যবহার করা। তাই আপনার উচিত যেসব অ্যাপ ব্যবহার করার মতো না সেগুলি ফোন না রাখা অর্থাৎ সেই সব অ্যাপ গুলি মোবাইল থেকে আনইন্সটল করে দেয়া। যতটা সম্ভব আপনার ফোন কম অ্যাপ বাবহার করা।
আরও পড়ুনঃ এনআইডি NID কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
আপনার মোবাইল ফোন আগের মতো নতুন এর মতো ফাস্ট করার জন্য আপনি কিছু সহজ উপায় ব্যবহার করতে পারেন। আর এই সহজ সুন্দর উপায় আপনার যদি প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে আশা করা যায় আপনার ফোন আবার আগের মতো ফাস্ট হবে। চলুন তাহলে আন্ড্রয়েড ফোন ফাস্ট করার উপায় গুলি জেনে নেই;
অনেক অ্যাপ আছে যে গুলোর প্রয়োজন নেই যেমন হয়তো একদিন এর জন্য ব্যবহার করা দরকার ছিলো কিন্তু তা আর ব্যবহার এর প্রয়োজন নেই এমন ধরনের অ্যাপস গুলি ডিলিট করে দিতে হবে। এই রকম অনেক অ্যাপস আছে যে গুলি ইন্সটল করার পর আপনার ফোন অনেক যায়গা দখল করে থাকে যার ফলে আপনার ফোন হয়ে যায় অনেক স্লো যা ব্যবহার করার ফলে আপনার কাজকে আরও ধীর গতি করে দেয়।
আপনার আন্ড্রয়েড স্মার্টফোন যদি অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস থাকে তাহলে সেসব অ্যাপ ডিলিট করুন বা আনইন্সটল করুন আর হ্যাঁ সেই অ্যাপস যদি আপনার পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে তা আবার পুনরায় ইন্সটল করে নিন। এর কারন হচ্ছে অতিরিক্ত অ্যাপ মোবাইল ফোন এর কার্যক্ষমতা কে ধীরগতি বা স্লো করে দেয়।
আরও পড়ুনঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম
আপনার মোবাইল ফোন ইন্সটল করে থাকা কিছু কিছু অ্যাপস আছে যা ফোনের সিস্টেম স্টোরেজ, র্যাম, মেমোরি, বাকগ্রাউন্ডে এ প্রসেসর ব্যবহার করতে থাকে। যার ফলে মোবাইল ফোন গুলি নিজে নিজে চলতে থাকে কিন্তু আমরা তা বুঝতে পারি না। আর এর ফলে আপনার স্মার্টফোন নিজে নিজে চলতে থাকে আর আপনি কিছু ভারী কাজ করতে গেলেই ফোন হ্যাং হয়ে যায়।
এখন আপনি যদি চান তাহলে আপনার আপনার মোবাইল ফোনকে আবার নতুন এর মতো ব্যবহার করবেন তাহলে এখনই আপনার অব্যবহারযোগ্য অ্যাপস গুলি এখন ডিলিট করে নিন। তাই এক্ষেত্রে আমার সাজেশন থাকে মোবাইল ফোন এর কার্যক্ষমতা কমানোর জন্য আজে বাজে অ্যাপ ইন্সটল বা ব্যবহার করবেন না।
আন্ড্রয়েড ফোন স্লো বা ধীরগতি হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেম আপডেট না রাখা।আন্ড্রয়েড ফোন এর জন্য OS ওএস বা অপেরাটিং সিস্টেম আপডেট রাখা জরুরি। কেননা ফোন এর মধ্যে যদি কোন রকম সমস্যা থাকে যেমন বাগ ইত্যাদি আরও নানা রকম সমস্যা থাকে তাহলে তা এই অপারেটিং সিস্টেম এর আপডেট এর মাধ্যমে ঠিক হয়ে যায়।
তাই যখন আপনার ফোনটি আপডেট চাইবে তখন আপনি সঙ্গে সঙ্গে আপডেট দিয়ে দিবেন। আর এই অপারেটিং সিস্টেম আপডেট থাকার ফলে আপনার ফোনর অ্যাপস গুলি আপডেট থাকবে যার ফলে আপনার ফোন স্লো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।
আরও পড়ুনঃ 10 Android Risky Apps? এই ধরনের অ্যাপস এড়িয়ে চলুন
আমরা সবাই বিনোদন প্রেমি। যার ফলে আমরা অনেক এই বিনোদন এর জন্য বিভিন্ন অডিও,ভিডিও ফাইল এছাড়া নানা রকম গুরুপ্তপূর্ণ ডকুমেন্ট, অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস ফাইল রাখেন। এসকল অপ্রয়োজনীয় ফাইল এর কারনে আপনার ফোন এর লোডিং স্পিড কমে যায় যায় যার ফলে অন্য অ্যাপস ফাইল ওপেন বা চালু হতে বেশি সময় নিয়ে নেয়।
এক্ষেত্রে আপনার আপনার ফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় ফাইল গুলি ডিলিট করে দেয়া এবং তা ক্লিয়ার কেস থেকে একেবারে ডিলিট করে দেয়া উচিত। এই পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে আশা করি আপনার ফোন আগের থেকে অনেক ফাস্ট কাজ করবে। আপনি সেটিংস এ গিয়ে দেখে নিয়ে পারবেন যে আপনার কোন অ্যাপস বা কোন ফাইল কত টুকু যায়গা দখল করে নিয়েছে। এটি দেখার জন্য আপনাকে যেতে হবে ফোন এর সেটিংস > স্টোরেজ। মোবাইল স্লো হলে কি করবেন। এটির জন্য আপনি নিশ্চয় আরও এক্টি ভালো উত্তর পেয়েছেন আশা করি।
অনেক সময় দেখা গেছে আন্ড্রয়েড ফোনের স্লো বা গতি কমে যাওয়ার কারন হচ্ছে ফোনের পুরনো অ্যাপস। এসব অ্যাপস আপডেট না দেয়ার কারনে ফোনের নতুন আপডেট এর পায় না যার ফলে ফোন হয়ে যায় স্লো। আপনার ফোনের যদি অ্যাপস এর আপডেট আসলে তা আপনার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নিবে অথবা আপনি চাইলে এটি আপডেট করে রাখতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ হারানো মোবাইল খুজে পাওয়ার উপায় জেনে নিন
আর আপনি অটো আপডেট না চালু রাখলে আপনার থেকে অনুমতি চাইবে আর আপনি অনুমতি দিলেই তা আপডেট হয়ে যাবে। এর জন্য আপনাকে কিছু ডাটা খরচ করতে হবে। এই অ্যাপস আপডেট পদ্ধতি আপনি ব্যবহার করলে আশা করি আপনার ফোন আগের মতো ফাস্ট কাজ করবে।
আমরা আমাদের আন্ড্রয়েড ফোন কে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন রকম করে সাঝিয়ে নিতে আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন রকম গেজেট ব্যবহার করে থাকি। প্রয়োজন এর তুলনায় বেশি পরিমান গেজেট ব্যবহার করার ফলে আপনার ফোন স্লো হয়ে যেতে পারে।
তাই জন্য আপনার ফোন প্রয়োজন এর তুলনায় বেশি পরিমান গেজেট ব্যবহার না করা উত্তম। গেজেট গুলি যেমন; ফোন ডাবল ক্লক, ওয়েদার বক্স, তাপমাত্রা মিটার, গেম বক্স ইত্যাদি ব্যবহার করা। এরকম নানা রকম গেজেট ব্যবহার করার থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনার স্মার্টফোন কে অনেক ফাস্ট করতে চাইলে এসব নানা রকম গেজেট এখনই রিমুভ করে নিন।
আমরা ফোন ব্যবহার করার সময় অনেক অনেক অসুবিধার মধ্যে পরে থাকি। আর আপনার ফোন যদি অতিরিক্ত পরিমান স্লো হয়ে থাকে অতিরিক্ত পরিমান গরম হয়ে থাকে তাহলে আপনি আপনার আন্ড্রয়েড Android ফোনটি রিসেট বা ফ্যাক্টরি দিতে পারেন।
তবে হ্যাঁ এটা মনে রাখতে হবে যে ফ্যাক্টরি দেয়ার সময় আপনার ফোনের সকল ডাটা ব্যাকআপ নিয়ে রাখতে হবে। কেননা ফ্যাক্টরি দেয়ার সময় ফোনের স্টোরেজ থেকে সকল ডাটা রিমুভ হয়ে যায়। আর রিসেট বা ফ্যাক্টরি দেয়ার পর আবার পুনরায় আপনার ফোনকে নতুন করে সেটআপ করে নিতে হবে।এই পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে আপনার স্মার্টফোন অবশ্যই অবশ্যই ফাস্ট হবে এবং খুব দূরততার সাথে কাজ করবে।
আপনার ফোন যদি অনেক পুরনো হয়ে থাকে। আর সেক্ষেত্রে আপনার ফোনের ব্যাটারি এর বয়স যদি একটু পুরনো হয়ে থাকে তাহলে সেই কারনে আপনার মোবাইল স্লো কাজ করার সম্ভাবনা থাকে। ব্যাটারি এর বয়স বেশি এর কারনে তা অকারনেই গরম হয়ে থাকে। আর আপনার ফোনটিকে বাচাতে এবং স্লো কাজ করা থেকে ভালো করতে চাইলে আপনার ফোনের পুরনো ব্যাটারি পরিবর্তন করে নিতে পারেন। আবার অনেক সময় এমন হতে পারে যে অতিরিক্ত গরম এর কারনে আপনার ফোনটি ব্লাস্ট হয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ Smartphone Battery Charging Tips for Android
এই পদ্ধতি বা এই সেটিংসটি যদি আপনার ফোন অন থাকে তাহলে আপনার ফোনটি অনেক লোড এবং ধীরগতিতে কাজ করে। আপনার মোবাইল ফোনকে ফাস্ট করার জন্য এই পদ্ধতি বেশ কার্যকর। অ্যানিমেশন সেটিংস অন থাকলে তা অফ করে ব্যবহার করুন। দেখবেন আপনার ফোন আগের থেকে অনেক ফাস্ট এবং স্মুথ কাজ করছে।
মোবাইল ফোন ফাস্ট করার জন্য এটি খুব সুন্দর একটি সেটিংস। এই সেটিংস ব্যবহার করার জন্য আপনাকে আপনার ফোনের ক্রম ব্রাউজারে যেতে হবে। সেখানে আপনি দেখতে পারবেন যে ডাটা সেভ নামে একটা অপশন দেয়া আছে। সেখান থেকে ডাটা সেভ অপশন টা চালু করে রাখতে হবে। আপনি সেই সময় লক্ষ্য করবেন যে আপনার ফোনে কি পরিমান ডাটা সেভ হচ্ছে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে আপনার ফোন অবশ্যই ফাস্ট হবে।