আজ আপনাদের সাথে এই পোস্টে আলোচনা করবো কিভাবে চার্জ দিলে আপনার ফোনের ব্যাটারি ভালো থাকবে। অনেক এই বলতে পারেন যে ফোন চার্জে দেওয়ার সাথে ফোনের ব্যাটারি ভালো রাখার কি সম্পর্ক। আমি বলবো যে হ্যাঁ ফোন চার্জে দেয়ার সাথে ফোনের ব্যাটারি ভালো থাকার সম্পর্ক মূলত নির্ভর করে থাকে। আপনি যত ভালো ব্র্যান্ডের ফোন কিনে থাকেন না কেন। যদি আপনার ফোনটাকে ভালো করে চার্জ করতে না পারেন।
মানে যদি আপনি প্রপার ভাবে ফোন চার্জ করতে না পারেন। তাহলে দেখবেন যে ছয় মাস অথবা এক বছরের মধ্যে আপনার ফোনের ব্যাটারি ড্যামেজ হয়ে যাচ্ছে। আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন আপনার ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ দিবে না।
তো এই ক্ষেত্রে বেশ কিছু টিপস আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করবো। আপনারা যদি এই টিপসগুলো অনুসরণ করেন। তবেই আপনি আপনার ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ ভালো রাখতে পারবেন এবং আপনার ফোনের ব্যাটারির লং লাস্টিং তো পাবেন। চলুন তাহলে জেনে নেই মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার টিপস সমূহঃ
কখনো সারারাত ধরে ফোন চার্জ দিবেন না। কারণ আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন যে আপনার ফোনের ব্যাটারি ১০০% চার্জ হওয়ার পরেও ফোনের চার্জার আপনার ব্যাটারি তে একটা প্রেশার ক্রিয়েট করতে থাকে। যার ফলে ব্যাটারি তো আর চার্জ গ্রহণ করতে পারবে না। তো এই ক্ষেত্রে দেখা যায় চার্জার ব্যাটারি উপরে এক্সট্রা ওভার প্রেসার ক্রিয়েট করতে থাকে। ফোনের ব্যাটারি উপরে এক্সট্রা ওভার প্রেসার ক্রিয়েট করার পর ব্যাটারি টিকে নষ্ট করে ফেলে চার্জার। আর এই জন্যই ব্যাটারির সুরক্ষার জন্য সারা রাত ধরে ফোন চার্জে দিবেন না।
মোবাইল ফোনের অরিজিনাল চার্জার ছাড়া অন্য কোন চার্জার ব্যবহার করার ফলে আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন। যে ফোনের ব্যাটারি এবং চার্জার এর সমন্বয় করে মূলত সেই ডিভাইসটিকে তৈরি করা হয়। তো আপনি যখন আপনার ফোনটি অন্য কোন ফোনের চার্জার বা অন্য কোন চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ করবেন। তখন আপনার ফোনের ব্যাটারির চার্জার এবং সেই অন্য চার্জারের সঙ্গে ভোল্টেজ মিলবে না।
সে ক্ষেত্রে ঠিকই আপনার ফোনে চার্জ হবে কিন্তু ঠিকই কিন্ত। আপনার ফোনের ব্যাটারি দিকে খুব দ্রুত নষ্ট করে দিবে। এছাড়া আপনি যে চার্জার দিয়ে ফোনটি চার্জ করছেন সে ক্ষেত্রে সেই চার্জারটি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। তাই আমি আপনাদের সাজেস্ট করবো যে, আপনাদের ফোনের অরিজিনাল চার্জার ছাড়া অন্য কোন চার্জার দিয়ে চার্জ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না বা দিবেন না।
ফোনে চার্জ করার জন্য কোন প্রকার চায়না চার্জার অথবা কোন প্রকার নকল চার্জার দিয়ে ব্যাটারি চার্জ করার চেষ্টা করবেন না। কারণ নকল চার্জার গুলোতে ফোন চার্জ হওয়ার জন্য যে ভোল্টেজ এর প্রয়োজন সেই ভোল্টেজ নকল চার্জারে সঠিকভাবে দিয়ে থাকে না। যার ফলে এই চায়না বা নকল চার্জার ব্যবহার করার ফলে আপনার ফোনের ব্যাটারি খুব দ্রুত নষ্ট বা ড্যামেজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। আর আপনি যে নকল বা চায়না চার্জার ব্যবহার করছেন সেটিও নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়।
কোন প্রকার ফাস্ট চার্জার দিয়ে আপনার মোবাইল ফোন চার্জ করতে যাবেন না। কারন আপনার ফোন যদি কোন প্রকার ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট না করে থাকে। তাহলে সেক্ষেত্রে ফোনের যে ব্যাটারি রয়েছে সেটার যে কর্মক্ষমতা রয়েছে তার উপরে ফাস্ট চার্জিং একটি প্রেশার ক্রিয়েট করতে থাকে। এই প্রেসার ক্রিয়েট করে চার্জার চেষ্টা করে আপনার ফোনের ব্যাটারি দ্রুত চার্জ করতে। কিন্তু সেই ব্যাটারি যখন সেই লোড নিতে পারে না। তখন আপনার ফোনের ব্যাটারি টি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। নতুন মোবাইল কিনে চার্জ দেওয়ার নিয়ম।
এই কারণে ফোনের ব্যাটারির কর্মক্ষমতা দিন দিন কমে যায় বা কমতে থাকে। তাই এক্ষেত্রে আমার পক্ষ্যে থেকে সাজেস্ট থাকবে আপনার ফোনটি ফাস্ট চার্জিং করা থেকে বিরত থাকুন। আর যদি আপনার ফোন ফাস্ট চার্জিং সুবিধা সাপোর্ট করে থাকে। তাহলে আপনি ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করতে পারেন।
ফোনে যেকোন ব্যাক কভার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। আমরা সকলে মনে করি যে ব্যাক কভার আপনার ফোনকে সুরক্ষিত রাখবে। কিন্তু আসলে তা নয়। আপনি যখন মোবাইল ফোন চার্জ করবেন তখন দেখবেন ফোনটা অনেক বেশি গরম হয়। সেই সময় যে তাপ ক্রিয়েট করে সে তাপটা বেরিয়ে যেতে পারে না। যার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার ফোনের ব্যাটারিটা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমি সে ক্ষেত্রে সব সময় আমার পক্ষ্যে সাজেশন থাকবে যে ফোন চার্জ দেওয়ার সময় বা যখন ফোন চার্জ করবেন সেই সময় ব্যাক কভার ব্যবহার করবেন না।
আপনার মোবাইল ফোনে কোন প্রকার third-party অ্যাপস ব্যবহার করবেন না। Third-party অ্যাপস বিশেষ করে ব্যাটারি সেভার যে অ্যাপস গুলো ব্যবহার করে থাকে। সেগুলো আপনার ডিভাইসে ব্যবহার করবেন না। ব্যাটারি সেভার অ্যাপ যে অ্যাপ গুলো সেই গুলা আপনার ফোনের ব্যাটারি সেভিং করবেনা। বরং এগুলো আপনার ফোনের র্যাম (RAM) এর উপরে প্রেশার ক্রিয়েট করবে। সেইসাথে আপনার ফোনের রম (ROM) এর উপর প্রেশার ক্রিয়েট করে। আর এই কাজটি করার ফলে আপনার ফোনের ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে এবং ফোনের নানা রকম কার্যক্ষমতা কমতে থাকবে।
এছাড়াও আমরা ফোনের এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। এই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলো আমাদের ফোনে তেমন একটা কাজে আসে না। আর এই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলো ফোন একই ধরনের প্রবলেম সৃষ্টি করবে।
তাই আমার পক্ষ্যে সাজেস্ট থাকবে যে আপনার ফোনে ব্যাটারির সুরক্ষার জন্য। আপনি কোন প্রকার third-party অ্যাপ ব্যবহার করবেন না। বিশেষ করে এই ধরনের অ্যাপ গুলো ব্যাটারি সেভার এবং এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার।
আপনি স্মার্টফোনের ব্যাটারি 100% চার্জ করবেন না। আপনার ফোনের ব্যাটারি সর্বোচ্চ আপনি ৮০% চার্জ করবেন। এবং যখন দেখবেন 20% পার্সেন্ট চার্জ তখন আবার নতুন করে চার্জে লাগাবেন। একেবারে কোন সময় ২০% নিচে চার্জ করবেন না। আপনার স্মার্টফোনের চার্জ যখন ২০% এর নিচে যায় তখন আপনার ফোনে একটা প্রেসার ক্রিয়েট করতে থাকে। যার ফলে আপনার ফোনের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার ফোনটা যখন ওভার চার্জ করে ফেলেন মানে 80% পার্সেন্ট এর উপরে চার্জ করে থাকেন। তখন ফোনের উপরে একটা ওভারলোডের ব্যাপার থাকে।
আর এই কারনেই সকল কোম্পানী কর্তৃক বলা হয়। ফোনের চার্জ কখনো বেশি চার্জ করবেন না আবার একেবারে কম চার্জ করবেন না। ফোনের চার্জ মিনিমাম 20 পার্সেন্ট থেকে 80 পার্সেন্ট এর মধ্যে রাখা উত্তম। আপনি যদি এইভাবেএই নিয়মে ফোন চার্জ করেন যেমন 20 পার্সেন্ট থেকে 80 পার্সেন্ট তাহলে আপনার ফোনের ব্যাটারি অনেকদিন লং লাস্টিং করবে। যার ফলে আপনার ফোনের ব্যাটারি ভালো থাকবে।
ফোন চার্জ করার জন্য কোন প্রকার পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করবেন না। কারণ পাওয়ার ব্যাংক গুলাে ফোন চার্জ করার জন্য ভোল্টেজ সঠিকভাবে দেয় না। যার ফলে ফোনের ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এক্ষেত্রে আপনি পাওয়ার ব্যাংক যতটা ব্যবহার করবেন না। ততটা আপনার ফোনর ব্যাটারি ভালো থাকবে। পাওয়ার ব্যাংক চার্জ দেওয়ার নিয়ম।
ফোন চার্জে দিয়ে ফোন ব্যবহার করবেন না। বিশেষ করে ফোন চার্জে দিয়ে কথা বলবেন না অথবা নেট ব্রাউজিং করবেন না। কারণ যখন ফোন চার্জে দেন তখন লক্ষ করে দেখবেন। ফোন চার্জ হওয়ার সময় ফোনের ওপরে একটা বিশাল আকারে ফোনের ওপরে ইফেক্ট পরে। তখন ফোনটা পুরো দমে কাজ করে থাকে। আর তাই আপনি যদি ফোন চার্জে দিয়ে কথা বলেন অথবা একই সাথে ব্রাউজিং করেন। সে ক্ষেত্রে একই ভাবে আপনার ফোনের ব্যাটারির ওপরে একটা বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। যার ফলে আপনার ফোনের ব্যাটারি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।