এতে করে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই কাজগুলোই হচ্ছে ভাইরাসের কারণে। কম্পিউটার ভাইরাসের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা ভাইরাস কী? কেন ভাইরাস কম্পিউটারের শত্রু। ভাইরাস কে বা কারা তৈরি করে এবং কি কারণে বানায়, এছাড়া কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তা বোঝার উপায় কী? কিভাবে ভাইরাস কাজ করে? এসকল নানা দিক নিয়েই নীচে আলোচনা করা হলো-
ভাইরাস কি
কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে এক ধরণের প্রোগ্রাম সফট্ওয়্যার যেটা তৈরী করা হয়েছে মূলত কম্পিউটার সিস্টেম সফট্ওয়্যার এর ক্ষতি করার জন্যেই। ভাইরাস বিভিন্ন ধরনে হ্যাকার কোম্পানিগুলো তৈরী করে থাকে রবং বিভিন্ন ভাবে তাদের টার্গেটেড কম্পিউটারে প্রবেশ করে তাদের স্বার্থ হাসিল করে থাকে। কিছু কিছু সফট্ওয়্যার রয়েছে যেগুলি কম্পিউটার এর সিস্টেমের সমস্যার সৃষ্টি করার জন্য তৈরী করা হয়েছে। যেমন-ম্যালওয়্যার, শর্টকাট, ট্রাজেন হর্স ইত্যাদি। অর্থাৎ যেসকল সফট্ওয়্যার কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকে কম্পিউটার প্রোগ্রামের বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে তাদেরকে কম্পিউটার ভাইরাস বলা হয়।
কম্পিউটার ভাইরাস মুক্ত রাখার উপায়
১. ইন্টারনেট থেকে ভাইরাস
কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করার সব থেকে বড় মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট। কম্পিউটারে মধ্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ভাইরাস প্রবেশ করে থাকে, এইজন্য কম্পিউটারে ইন্টারনেট চালানোর সময়ে আপনাকে এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। সেই এন্টিভাইরাস হতে পারে প্রিমিয়াম এন্টিভাইরাস অথবা ফ্রি এন্টিভাইরাস। ফ্রি এন্টিভাইরাস গুলোর মধ্যে অন্যতম এন্টিভাইরাস হচ্ছে অ্যাভাস্ট এবং পেইড এন্টিভাইরাস হচ্ছে নর্তন এবং ক্যাস্পারিস্কাই ইত্যাদি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ উইন্ডোজে স্লো ইন্টারনেট ফাস্ট করার উপায়
২. পেনড্রাইভ বা মেমোরী থেকে ভাইরাস
কম্পিউটারের মধ্যে ভাইরাস প্রবেশ করার ২য় রাস্তা হচ্ছে পেনড্রাইভ অথবা মেমোরী কার্ড। পেনড্রাইভ অথবা মেমোরীর মাধ্যমে কম্পিউটারে মধ্যে ভাইরাস ঢুকে থাকে। এই জন্য যে কারো পেনড্রাইভ অথবা মেমোরী স্ক্যান না কর কম্পিউটারে সংযুক্ত করবেন না। পেনড্রাইভ অথবা মেমোরির ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার জন্য আপনি ইউএসবি ডেস্ক সিকিউরিটি সফট্ওয়্যার আপনার কম্পিউটারে ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে পেনড্রাইভ বা মেমোরীতে ভাইরাস থাকলে আপনাকে এলার্ট দিবে। তখন সেই মেমোরি বা পেনড্রাইভ ভাইরাস স্ক্যান করে ডিলিট করে নিতে পারবেন।
৩. যেকোন শেয়ার ডিভাইস থেকে ভাইরাস
আপনি আপনার স্মার্টফোন অথবা ল্যাপটপ থেকে কোনো কিছু পারাপার করেন বা শেয়ারের জন্য যে ডিভাইস ব্যবহার করে থাকেন তার মাধ্যমে কম্পিউটারের মধ্যে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। আপনি যদি কোন শেয়ারিং ডিভাইস যেমন- শেয়ারইট, ব্লুটুথ, ফেইম ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকেন তাহলে সেখানে ভাইরাস আছে কি-না তা জেনে ব্যবহার করুন।
৪. কম্পিউটার টু কম্পিউটার কানেক্ট বা নেটওয়ার্কিং থেকে ভাইরাস
আপনার ডেক্সটপ বা ল্যাপটপ যদি অন্য ডেক্সটপ বা ল্যাপটপের সঙ্গে নেটওয়াকিং করা থাকে তবে অনন্য দেস্কতপ/লাপ্তপ ভাইরাস দাঁরা আক্রান্ত হলে আপনার ডেক্সটপ|ল্যাপটপের মধ্যে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। তাই জন্য ডেক্সটপ/কম্পিউটার সংযুক্ত করার পূর্বে অবশ্যই অবশ্যই ভাইরাস মুক্ত রয়েছে কি-না তা জেনে নিতে হবে। তারপরে কম্পিউটারের সঙ্গে নেটওয়ার্কিং করে নিতে হবে।
৫. ওয়াইফাই থেকে ভাইরাস
ওয়াইফাই এর মাধ্যমে স্মার্টফোন থেকে কম্পিউটার বা কম্পিউটার থেকে স্মার্টফোনে ভাইরাস প্রবেশ করে। তাই আপনি যদি ওয়াইফাই ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে এন্ট্রিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে।
৬. ডাউনলোড থেকে ভাইরাস
আপনি যখন ইন্টারনেট থেকে কোনো কিছু ডাউনলোড করবেন তখন অবশ্যই তা জেনে বুঝে ডাউনলোড করবেন। কেননা ইন্টারনেটে অনেক সময় দেখা যায় যে আপনি কোন একটা সফটওয়্যার ডাউনলোড করছেন কিন্তু সেই সফটওয়্যার ডাউনলোডের পরে দেখা যাচ্ছে সেটা আপনার কাঙ্খিত সফট্ওয়্যার নয় সেটি হচ্ছে ভাইরাস বা কম্পিউটার হ্যাং করা সফট্ওয়্যার। এই জন্য কম্পিউটারে|মোবাইলে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ নতুন ল্যাপটপ কেনার আগে জেনে নিন
৭. মোবাইল থেকে ভাইরাস
মোবাইল এর মাধ্যমে ভাইরাস ডেক্সটপ|ল্যাপটপে চলে আসে এটা একটা সাধারণ সমস্যা। তাই আপনার পিসি যদি ভাইরাস মুক্ত হয়ে থাকে অথবা মোবাইল যদি ভাইরাস মুক্ত হয়ে থাকে তাহলে ডাটা কেবল লাগাতে পারেন। অথবা ডিভাইস কানেক্ট করার পূর্বে স্ক্যান করে নিতে পারেন।
৮. সিডি, ডিভিডি থেকে ভাইরাস
কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিকারের উপায়
আপনার ডেক্সটপ/ল্যাপটপকে ভাইরাস মুক্ত রাখার জন্য আপনাকে এন্ট্রিভাইরাস সফট্ওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনি এন্টিভাইরাস কিনে ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে আপনি বিভিন্ন ফ্রি এন্ট্রিভাইরাস সফটওয়্যার পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। এন্ট্রিভাইরাস সফট্ওয়্যার আপনার দেস্কতপ/ল্যাপটপে ইন্সটল করা থাকলে সেটি ভাইরাস থাকলে স্ক্যান শুরু করে দিবে। অনেক সময় এমনিতেই স্ক্যান করতে থাকে, তখন সময় দিয়ে আপনার কম্পিউটার স্ক্যান করে নিতে হবে।
১. পিসি ভাইরাস আক্রান্ত
যদি আপনার ডেক্সটপ|ল্যাপটপ থেকেই ভাইরাস দাঁরা আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে সম্ভব হলে নতুন করে উইন্ডোজ সেটআপ দিয়ে নিবেন। তারপরে একটা এন্টিভাইরাস দিয়ে আপনার হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ স্ক্যান করে নিলেই আপনার কম্পিউটার ভাইরাস মুক্ত হয়ে যাবে। অথবা যদি আপনার ল্যাপটপ/ডেক্সটপে উইন্ডোজ দেওয়া সম্ভব না হয় তবে ভালো মানের একটা এন্টিভাইরাস কম্পিউটারে ব্যবহার করে পুরো কম্পিউটার টিকে স্ক্যান করে ভাইরাস মুক্ত করে নিতে হবে।
২. এন্টিভাইরাস শর্ট টিপস
আপনি যদি কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই অবশ্যই কম্পিউটারে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে। আর যদি আপনার কম্পিউটারে যদি মেমোরি কার্ড, সিডি, ডিভিডি, প্রেনড্রইভ প্রবেশ করিয়ে থাকেন তাহলে সেই ডিভাইস গুলো ওপেন করার পূর্বে অবশ্যই স্ক্যান করে নিতে হবে আর সরাসরি কোনো ফাইল কম্পিউটারে ওপেন করা যাবে না। ফোল্ডার অপশন থেকে ফাইল গুলোকে ওপেন করতে হবে।
আর যদি আপনি ফাইল গুলো সরাসরি ওপেন করেন তাহলে ডিভাইসে যদি ভাইরাস থাকে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার কম্পিউটারকে অ্যাটাক করবে। হয়তোবা আপনি জেনে রাখবেন যে শর্টকাট ভাইরাস-কি খুব দ্রুত কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে। আর কম্পিউটারে প্রবেশ করা মাত্র আপনার কম্পিউটার সিস্টেম এর ১২টা বাজিয়ে ফেলবে। এই জন্য উপরোক্ত নিয়ম গুলো ভালো ভাবে অনুসরন করুন যার ফলে আপনার কম্পিউটার থাকবে নিরাপদ।
আরও পড়ুনঃ কম্পিউটার নতুনের মতো রাখার উপায়
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।