ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় — ডায়াবেটিস এমন একটি শারীরিক অবস্থা যা সারা জীবনের জন্য বয়ে বেড়াতে হয় এবং সারা বিশ্বে এর কারণে প্রতিবছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃ- ত্যু হয়। এছাড়া যে কোনো ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। শরীর যখন রক্তের সব গ্লুকোজ বা চিনিকে ভাঙতে ব্যর্থ হয় তখনই ডায়াবেটিস হয়। এই জটিলতার কারণে মানুষের হূদযন্ত্রের সমস্যা স্ট্রোক হতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিডনি এবং অনেক সময় ডায়াবেটিক রোগীদের শরীরের নিম্নাঙ্গে ঘা হয় যা সহজে শুকাতে চায়না, পা কেটেও ফেলতে হতে পারে প্রায়সই তা এমন পর্যায়ে চলে যায়।
ডায়াবেটিস কত ধরনের
ডায়াবেটিস বিভিন্ন ধরনের। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেস এনএইচএস (NHS) এবং ডায়াবেটিস ইউকে সংস্থার তথ্য অনুযায়ী জেনে নেবো ডায়াবেটিসের নানা ধরন ও লক্ষণগুলো।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস
টাইপ ১ ডায়াবেটিসে অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তখন রক্তের প্রবাহে গ্লুকোজ জমা হতে শুরু করে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস
অন্যটি টাইপ টু ডায়াবেটিস। এই ধরনের ডায়াবেটিসে যারা আক্রান্ত তাদের অগ্নাশয় যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা এই হরমোনটি ঠিকমত কাজ করেনা। যারা টাইপ ১ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের বেলায় করোনাভাইরাস এর উপসর্গ মারাত্মক রুপ নিতে পারে। তাদের বেলায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি।
কীভাবে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস আছে কি-না | ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ
ডায়াবেটিসের সাধারণ উপসর্গ গুলোর মধ্যে রয়েছে যেমন ধরুন,
১। আপনার যদি খুব তৃষ্ণা পায়
২। স্বাভাবিকের চাইতে ও ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
৩। বিশেষ করে রাতের বেলায় ক্লান্ত বোধ করা
৪। কোন কারন ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া
৫। প্রদাহ জনিত রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়া
৬। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
৭। শরীরের কোথাও কেটে গেলে তা শুকাতে দেরি হওয়া
২। স্বাভাবিকের চাইতে ও ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
৩। বিশেষ করে রাতের বেলায় ক্লান্ত বোধ করা
৪। কোন কারন ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া
৫। প্রদাহ জনিত রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়া
৬। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
৭। শরীরের কোথাও কেটে গেলে তা শুকাতে দেরি হওয়া
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সহজ উপায় | ডায়াবেটিস সারানোর উপায়
আপনি যদি ডায়াবেটিক হন তাহলে কিভাবে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন সে নিয়ে NHS এবং ডায়াবেটিস ইউকে এর দেয়া কিছু টিপস রয়েছে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায়।
খাদ্যভাস/খাদ্য মেন্যু | ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবে না
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক খাবার। কি খাবেন আর কি খাবেন না এবং কতটুকু খাবেন সেটি মেনে চললে সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব। যেমন পর্যাপ্ত পানি পান করুন, শর্করা জাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণ করুন, ভাতে গ্লুকোজ বেশি থাকে তাই ভাত কম খাওয়া উচিত, খাদ্য তালিকায় লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি থাকলে সেটি উপকারী, খাদ্য তালিকায় নানা উজ্জ্বল রঙের ফল ও সবজি যোগ করুন। এতে নানা ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলস পাবেন। এই রোগে আক্রান্তদের জন্য আমিষ উপকারী তবে অবশ্যই অনেক বেশি নয়। গরুর মাংসের বদলে মাছ বেঁছে নিন, আমিষের জন্য ডিম, ছোলা ও ডাল খেতে পারেন। দই, ঘি মাখন নয়, কম ফ্যাটযুক্ত দুধ খাওয়া উচিত। কাঁচা লবন, বেশি ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার এবং শুকনো ফল পরিহার করুন। প্রধান খাবারের পর পরেই ফল খাবেন না।
শারীরিক শ্রম
কায়িক পরিশ্রম করুন ডায়াবেটিস বিছানায় শুয়ে থাকার রোগ নয়। শুধু খেলেন আর বিশ্রাম নিলেন সেটি কিন্তু চলবে না। আপনাকে অবশ্যই কায়িক পরিশ্রম করতে হবে। চিকিৎসকেরা বলছেন দিনে অন্তত 30 থেকে 40 মিনিট যেকোনো ধরনের কায়িক পরিশ্রম করুন। যা হতে পারে ঘরের কোন কাজ সবচেয়ে ভালো হয় যদি হাঁটতে পারেন।
জীবনাচরণ
সুস্থ্যজীবন আচরণ করে তুলুন। যেমন সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা এবং সঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় খাওয়া, স্বাস্থ্যকর ও পরিমিত খাওয়া-দাওয়া, একেবারে অনেক বেশি নয়, অল্প করে দিনে কয়েকবার খাওয়া, শরীরের ওজন যাতে বেড়ে না যায় সেদিকে নজর দেয়া, ধূমপান অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিহার করা।
মিষ্টি খেতে পারবেন?
ডায়াবেটিস হয়েছে এমন অনেক ব্যক্তি প্রশ্ন করেন মিষ্টি খেতে পাবো তো? মিষ্টি অনেকেরই প্রিয় সাধারণ ধারণা হলো ডায়াবেটিস হলে মিষ্টি খাওয়া যাবেনা চিকিৎসকের অবশ্য বলছেন এই ধারণাটি ভুল। মিষ্টি আপনি খেতে পারবেন তবে এক বসাতেই এক কেজি নয় অল্প পরিমাণে খেতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ দৈহিক উচ্চতা বৃদ্ধির উপায়
নিয়মিত পরিক্ষা
ডায়াবেটিক ব্যক্তিদের উচিত প্রতিদিন রক্তে চিনির পরিমাণ পরীক্ষা করা। পায়ে কোন ধরনের ঘা হয়েছে কি না সেটি দেখে নেয়া। প্রতিদিন খুব ভালোভাবে পায়ের অনুভূতি পরীক্ষা করা, পায়ের ঘা আগেভাগে ধরতে পারলে সেটি নিয়ন্ত্রণ করার সহজ। প্রতি সপ্তাহে একবার ওজন পরীক্ষা করুন, প্রতি মাসের রক্তচাপ পরীক্ষা করুন, কয়েক মাস পর পর চোখ পরীক্ষা করুন এসব পরীক্ষায় যেসব ফল পাচ্ছেন তা একটি ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করুন। কয়েক মাস পর পর চিকিৎসকের কাছে যান চিকিৎসক আপনাকে যেসব ঔষধ দেবেন তা নিয়মিত সঠিক সময় অনুযায়ী সেবন করতে হবে। ঔষধ কি ধরনের প্রভাব রাখছে সেটি নিয়মিত চিকিৎসককে অবহিত করুন।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।