কম্পিউটার এর সুবিধা ও অসুবিধা: বর্তমান সময়ের বিস্ময় হচ্ছে কম্পিউটার। কম্পিউটার হচ্ছে একটি স্বয়ংক্রিয় মেশিন। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমদের দৈনন্দিন কাজকে আরো সহজ করে তুলছি। বর্তমান সময়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান এর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
ঘরে হোক অথবা ঘরের বাইরে কম্পিউটারের কদর সবখানেই। বর্তমান সময়ে কম্পিউটার এর প্রভাব বিশাল। মানুষ কম্পিউটার নানান ক্ষেত্রে নানা কাজে ব্যবহার করে থাকে। কম্পিউটার এর মাধ্যমে পণ্য কেনাবেচা, অনলাইনে পড়াশুনা, টিকিট কাটা, অনলাইনে কেনাকাটা সহ অফিশিয়াল সকল প্রকার কাজ সহ ইতাদি কাজ করে থাকে।
কম্পিউটার প্রযুক্তি শিক্ষার উপরে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পড়াশুনা করতে পারে বা ঘরে বসে থেকেই জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তবে হ্যাঁ কম্পিউটার এর ব্যবহার সুবিধার পাশাপাশি কিছু কম্পিউটার এর অসুবিধাও রয়েছে। আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করবো কম্পিউটার এর সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত।
(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)
কম্পিউটার কী
যেহেতু আমরা কম্পিউটার এর সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করবো তাই আগে আমাদের জেনে নিতে হবে কম্পিউটার কি। কম্পিউটার শব্দটি ইংরেজিতে 'কম্পিউট' শব্দ থেকে আসছে। যার অর্থ হচ্ছে গণনা। যে কারণে কম্পিউটারকে ক্যালকুলেটর বা কম্পিউটার বা গণনাকারী যন্ত্রও বলা হয়ে থাকে।
কম্পিউটার গণনা সংক্রান্ত কাজকর্ম খুব দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করতে পারে। এছাড়াও হিসাব-নিকাশ সংক্রান্ত কাজকর্ম সম্পন্ন হয়। কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণ করা, তথ্য পুনরুদ্ধার এবং প্রক্রিয়া করার ক্ষমতা আছে।
কম্পিউটার এর সুবিধা
- গবেষণার কাজে
- ইন্টারনেট এর সুবিধা
- মাল্টিমিডিয়া
- তথ্য সংরক্ষণ করা
- অনলাইন বাণিজ্য
- শিক্ষা ক্ষেত্রে কম্পিউটার এর ব্যবহার
কম্পিউটার দ্রুত প্রচুর পরিমাণে তথ্য প্রস্তুত করার ক্ষমতা রাখে। মানবজাতির থেকেও কম্পিউটার বিভিন্ন ধরনের কাজ সাফল্যের সাথে যথাযথভাবে সম্পূর্ণ করতে পারে। সুতরাং বলতে পারি কম্পিউটার আমাদের প্রতিদিনের কাজের দক্ষতাকে আরও বৃদ্ধি করে। নিম্নে কম্পিউটার ব্যবহারের সুবিধা উল্লেখ করা হলো—
গবেষণার কাজেঃ কম্পিউটার এর মাধ্যমে আপনি যেকোন ক্ষেত্রে সার্চ করলেই উত্তর খুঁজে পাবেন। কম্পিউটারের ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি ডাটা সঞ্চয় করা, হিসাব-নিকাশ ক্যালকুলেশন এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে যেকোন ডাটা উপস্থাপন করতে পারবেন। বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন।
ইন্টারনেট এর সুবিধাঃ কম্পিউটার এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে আলোচনার ক্ষেত্রে সুবিধার একটি সব থেকে বড় অংশ হচ্ছে ইন্টারনেট। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের প্রতিটি যায়গার সাথে যোগসূত্রে আপনি আবদ্ধ হতে পারবেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সাথে ভিডিও কলে কথাবার্তা ও চ্যাট করতে পারবেন। এছাড়াও ইন্টারনেট সার্চ, সিনেমা ও ভিডিও, ক্লাস, গেমস খেলতে পারবেন। ইন্টারনেটকে সর্বশ্রেষ্ঠ কম্পিউটার এর সুবিধা বলে গণ্য করা হয়।
মাল্টিমিডিয়াঃ কম্পিউটার এর আরেকটি সুবিধা হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া ডিভাইস। মাল্টিমিডিয়া ডিভাইসে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায় যেমন- ভিডিও দেখা, গান শোনা, গেমিং করা ইত্যাদি।
তথ্য সংরক্ষণ করাঃ কম্পিউটারের মধ্যে আপনি প্রচুর পরিমাণে তথ্য জমা করতে পারবেন। বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মার্কেটিং এর তথ্যগুলো কম্পিউটারে জমা করে রাখে। এমনকি গ্রাহকগনের সংবেদনশীল তথ্য নিরাপদে রাখার জন্য কম্পিউটারাইজড করে রাখে।
আরো পরতে পারেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে
অনলাইন বাণিজ্যঃ বিশ্বের ৬০% মানুষ যারা অনলাইনে ব্যবসার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন। তারা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের প্রোডাক্ট কেনাবেচা করে থাকে। অনলাইনে বিজনেস করা এখন আরো বেশি সহজ হয়ে গেছে এবং পাশাপাশি সময়ও সঞ্চয় হয়ে থাকে। অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা তাদের গ্রাহকদের কোন প্রোডাক্ট কেনার জন্য ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনলাইনে কেনাকাটার প্রতি মানুষের আগ্রহ এখন অনেক বেশি।
শিক্ষা ক্ষেত্রে কম্পিউটার এর ব্যবহারঃ কম্পিউটার স্টুডেন্টদের পড়াশুনার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সুবিধা নিয়ে আসছে। বিশ্বের ৫০% মানুষ বর্তমানে ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষাগত জ্ঞান লাভ করে। বর্তমান সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষাগত কোর্স সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়।
কম্পিউটারের অসুবিধা
- স্বাস্থ্যের ক্ষতি
- পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব
- শক্তি ও সময় অপচয়
- অপরাধ
- ব্যয়বহুল
- বেকারত্ব
কম্পিউটার ব্যবহার করার যেমন সুবিধা রয়েছে ঠিক একই ভাবে কম্পিউটার ব্যবহার করে সমাজে কিছু সমস্যার তৈরি হয়েছে। কম্পিউটার এর সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনায় কম্পিউটারের অসুবিধা সমূহ নিম্নে দেওয়া হলো:
স্বাস্থ্যের ক্ষতিঃ দীর্ঘ সময় কম্পিউটার ব্যবহার করার ফলে চোখের উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। চোখের পেশি গুলোতে চাপ পড়ে যার ফলে চোখের ক্ষতি হয়ে থাকে। এছাড়াও দীর্ঘ সময় কম্পিউটার ব্যবহার করার ফলে ঘাড় এবং মস্তিষ্কের উভয়ের ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই যারা দীর্ঘ সময়ে কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন তাদেরকে অন্ততও ৩০ মিনিট পর পর বিশ্রাম নেওয়া দরকার।
পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাবঃ কম্পিউটার তৈরির প্রক্রিয়া ও কম্পিউটারে বর্জ্য পরিবেশ দূষণ করে। কম্পিউটারের নষ্ট পার্টসগুলো থেকে বিষাক্ত উপাদান গুলো পরিবেশে ছড়াতে থাকে বা পারে।
শক্তি ও সময় অপচয়ঃ অনেকেই গেমিং করতে এবং দীর্ঘসময় চ্যাটিং করার জন্য কম্পিউটার ইউজ করে থাকেন। এতে করে সময় এবং শক্তি অপচয় হয়ে থাকে। তরুন প্রজন্ম বর্তমানে দিনের বেশির ভাগ সময়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্যে খুবি খারাপ। পাশাপাশি এই সকল সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সামাজিক জীবনে প্রতিকূল প্রভাব ফেলছে। এছাড়াও আরো দেখতে পারেন মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা।
অপরাধঃ অনেকেই আছেন যারা কম্পিউটার ব্যবহার করে নেতিবাচক কাজকর্ম করার জন্য। তারা মানুষের ক্রেডিট কার্ডের নম্বাগুলি হ্যাক করে এবং অনেক সময় বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য চুরি করে।
ব্যয়বহুলঃ কম্পিউটার হচ্ছে একটি ব্যয়বহুল যন্ত্র। তাই ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনেক সময় কম্পিউটার ব্যবহার করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।
বেকারত্বঃ অতিত প্রজন্মে কম্পিউটারের ব্যবহার করা হতো না। তাই তাদের বর্তমান কর্মসংস্থানে কম্পিউটার এর বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকার ফলে চাকরি ক্ষেত্রে বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যার ফলে বেকারত্ব বেড়ে যায়।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।