কিডনি ও লিভার ভালো রাখার উপায় — এমন প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমরা সবাই জানি কিডনি এবং লিভার শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সুস্থ থাকতে এগুলোর খেয়াল আমাদেরকে রাখতেই হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লিভার এবং কিডনি খারাপ হওয়ার কারণ হয়ে থাকে কিছু বদ অভ্যাসে।
লিভার ভালো রাখার উপায় | লিভার পরিস্কার রাখার উপায় | লিভার সমস্যা দূর করার উপায়
লিভার সুস্থ রাখার সহজ উপায় জেনে নিন।
১। লো ফ্যাট ফুডে ‘না’- ফ্যাটি লিভার এর সমস্যা এড়ানোর জন্য তেলযুক্ত, অতিরিক্ত মদ্যপান এবং মশলাযুক্ত বেশি খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে ঠিকই, তবে লো-ফ্যাট খাবার হইতে কিন্ত সাবধান। সুপার মার্কেট গুলোতে গিয়ে লো-ফ্যাট বা ৯৯% লোয়ার ইন ফ্যাট লেখা ফুড কেনা অবিলম্বে পরিহার করুন। এই সকল খাবার থেকে ফ্যাট বাদ দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু স্বাদ ধরে রাখার জন্য যোগ করা হয় প্রচুর পরিমাণ চিনি। এতে করে লিভার এর সমস্যা আরো বেড়ে যায়।
২। স্ট্রেস থাকলে খাবেন না- বোরিং হলে, এনার্জি কম লাগলে আমরা কি করি? অনেকেই এই সময় খাবার খেয়ে মুড ঠিক করার চেষ্টা করেন। ডাক্তাররা জানাচ্ছেন যে লিভার সুস্থ্য রাখার জন্য স্ট্রেসের সময় খাবার ছোঁবেন না। এই সময়ে হজম ঠিক মতো হয়না।
৩। হার্বাল কেয়ার- কথাটি শুনতে আপনার কাছে অদ্ভুত মনে হলেও বেশ কিছু গাছের মূল আছে। যেগুলো লিভার সুস্থ্য রাখার জন্যে সাহায্য করে। মিল্ক থিসল বা হলুদের মূল এবং ড্যানডেলিওন লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ যৌবন ধরে রাখার সহজ উপায়
৪। সাপ্লিমেন্ট- ভিটামিন বা প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সময়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন। এমন সাপ্লিমেন্ট বেঁছে নিন যা লিভার ডিটক্সিফাই করার জন্য সহযোগিতা করে। ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স লিভার পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। প্রোটিনের মাঝে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড ও লিভার পরিষ্কার রাখার জন্যে ভালো। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড লিভারকে সুস্থ রাখার জন্য সাহায্য করে।
৫। ওষুধ থেকে সাবধান- বেশি কিছু ওষুধ লিভার এর ক্ষতি করে। এই সকল ওষুধ থেকে দূরে থাকুন। কিছু পেইনকিলার যেমন টাইলেনল অথবা কোলেস্টেরলের ওষুধ লিভার এর প্রভূত ক্ষতি করে থাকে।
৬। কফি - চা ও কফি খেলে শরীরের ক্ষতি হয়ে থাকে এই কথাটি কতবার শুনেছেন? কফি খাওয়া কিন্তু শরীরের জন্য অনেক সুফল আছে। গবেষণায় জানা গেছে, নিয়মিত কফি খাওয়ার ফলে লিভারের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্তত ১৪% কমে যায়।
কিডনি ভালো রাখার উপায় | কিডনি ভালো রাখার খাদ্য | কিডনি পরিস্কার করার পদ্ধতি
কিডনি ভালো রাখা তেমন কোনো কঠিন বিষয় নয়। মাত্র কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখলেই কিডনি ভালো রাখার সম্ভব।
১। পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করুন- কিডনি সুস্থ রাখার জন্য বিশুদ্ধ পানি পান করার বিকল্প নেই। কিডনি ভালো রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি খান। পানি কিডনিকে সুস্থ ও সচল রাখতে এবং কিডনির স্বাভাবিক কার্যকলাপে সহযোগিতা করে থাকে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দৈনিক ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করলে কিডনি ভালো রাখা সম্ভব।
২। কোমল পানীয়, কফি, চা- আমরা চা, কফি এবং কোমল পানীয় সহ বিভিন্ন খাবার খেয়ে থাকি। ক্যাফেইন আমাদের শরীরে তাৎক্ষণিকভাবে ক্লান্তিভাব দূর করে। তবে শরীরের মধ্যে পানিস্বল্পতা তৈরি করে। শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দিলে কিডনি স্টোনের সমস্যা হতে পারে তাই এই বিষয়ে সতর্ক হোন।
৩। ধূমপান- ধূমপান একটি ভয়াবহ বদঅভ্যাস। ধূমপানের কারণে ফুসফুস এবং ব্লাড ভ্যাসেলকেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।মনে রাখবেন ধূমপান শুধুমাত্র নিজের জন্য নয় অন্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই ধূমপান পরিহার করুন।৪। পেইন কিলার- সামান্য পরিমাণ ব্যথা হলেই পেইনকিলার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আজই সেটি পরিহার করুন। কিডনির কোষের অতিরিক্ত ক্ষতি সাধন করে পেইনকিলার। ব্যথা একান্ত অসহ্য হলে তবেই আপনি পেইনকিলার খান।
আরও পড়ুনঃ ঘন ঘন হাই ওঠা যে সকল রোগের লক্ষণ
৫। লবণ- আপনি কি খাওয়ার পাতে লবণ খান খুব? এই অভ্যাসের রাশ টানুন এখনি। কিডনি অতিরিক্ত পরিমাণ সোডিয়াম শরীর থেকে বাহির করতে পারেনা। যার ফলে বাড়তি লবণের সোডিয়ামটুকু থেকে যায় কিডনিতেই। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি।
৬। প্রস্রাব আটকে রাখা- সুলভ শৌচালয় ব্যবহার করতে চান না, তাই বাইরে বাহির হলে আটকে রাখেন প্রস্রাব? এই রকম অভ্যাস কিন্তু শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অনেকক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখার ফলে তা কিডনিতে চাপ তো ফেলে, এমনকি চিকিৎসকদের মতে, এমন অভ্যাস দীর্ঘদিন ধরে বজায় রাখার ফলে অচিরেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিডনি। মাংস না খেয়ে মাছ এবং শাকসবজি খান। চর্বি কিডনির জন্য খুবই ক্ষতিকারক। মাংসের ফাইবার এর পরিমাণে বেশি হলে সেটি কিডনির ওপর চাপ ফেলে। তাই আপনার যদি ঘন ঘন মাংস খাওয়ার প্রবণতা থাকে তিবে তা কমান, আর খেলেও তা খুব পরিমাণ মেপে খান।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।