বিদ্যুৎ বিল কমানোর কৌশল — প্রচণ্ড গরমে আমরা সবাই অতীষ্ট। এই সময়ে ভরসা শুধুমাত্র ফ্যান, পাখা এবং এসি (এয়ার কন্ডিশন) এর বাতাস। তবে এইসকল একনাগাড়ে চালালেই তো হবেনা? প্রতিমাস শেষে গুণতে হবে হাজার হাজার টাকা এর মধ্যে অনেকেই হয়তোবা বিদ্যুৎ বিল দিতে গিয়ে টের পাচ্ছেন সেই বিষয়টি!
শীতকালে ফ্যান অথবা এসি (এয়ার কন্ডিশন) চালানোর তেমন কোন দরকার হয়না, আর এই জন্যেই স্বাভাবিকভাবে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল কম আসে। আবার অন্যদিকে গরম চলে আসলেই হু হু করে বৃদ্ধি পায় বিদ্যুৎ বিল। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করা প্রয়োজন। তবে আপনি জানেন কি, সহজ কিছু কিছু কৌশল অনুসরণ করলেই আপনি গরমে বিদ্যুৎ বিল কমাতে পারবেন-
১. এসি ব্যবহারে সতর্কতা
গরমের সময় অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত এসি ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হবে এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। এইজন্য নিয়মিত করে এসি (এয়ার কন্ডিশন) সার্ভিসিং করিয়ে তাপমাত্রাও নির্ধারণ করে দিন। যার ফলে বিদ্যুৎ বিল কমানো সম্ভব হতে পারে। আরো একটি ছোট্ট অভ্যাসের মাধ্যমেও আপনি কমাতে পারবেন বিদ্যুৎ বিল। ঘুমানোর পূর্বে এসিতে (এয়ার কন্ডিশনে) টাইমার লাগিয়ে রাখুন। ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যেই রুম ঠান্ডা হয়ে যাবে। অতঃপর এসির প্রয়োজন পড়বে না।
অনেকেই আছেন যারা ঘুমানোর কারণে পরবর্তী সময়ে এসি (এয়ার কন্ডিশন) বন্ধ করতে ভুলে যান বা এসি বন্ধ করে পারেন না। তাই সারারাত এসি (এয়ার কন্ডিশন) চলতেই থাকে। যা একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। তাই ঘুমানোর পূর্বে এসিতে টাইমার সেট করে রাখার ফলে আপনি বিদ্যুৎ বিল কমাতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ বিকাশে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার নিয়ম
অনেক এর ঘরেই ভেন্টিলেশনের অভাবে দিনের বেলাতে ঘরের মধ্যে অন্ধকার থাকে। এই কারণে সারাক্ষণ লাইট জ্বালিয়ে রাখার প্রয়োজন হয়ে থাকে। যদি এই রকম ঘর হয়ে থাকে তাহলে বিদ্যুৎ বিল বেশি হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই চেষ্টা করুন ঘরের চারপাশে খোলা ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আসে এমন ঘরে থাকার জন্য। যার ফলে শরীরও সুস্থ্য থাকবে এবং বিদ্যুৎ বিলও সাশ্রয় হবে।
প্রতিদিন ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে না। সপ্তাহে ৩-৪ দিন ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করা হলে বিদ্যুৎ বিল কম আসে। আবার সপ্তাহে অনেকগুলো কাপড় একসাথে ধুয়ে নিতে পারেন ওয়াশিং মেশিনে। গরমের সময় ওয়াশিং মেশিনে কাপড় শুকাবেন না। বাইরে রোদে শুকিয়ে নিবেন কাপর। যার ফলে বিদ্যুৎ এর অপচয় বা ব্যবহার কম হবে এবং বিদ্যুৎ বিলও কম আসবে।
সোলার এনার্জি ব্যবহার করা হলে বিদ্যুৎ বিল সব থেকে বেশি সাশ্রয় করা সম্ভব। সোলার পাওয়ার লাগানোর সময়ে টাকা খরচ বেশি হলেও পরবর্তী সময়ে আপনি এর সুফল গুলো নিজেই বুঝতে পারবেন।
বিদুৎ বিলের কাগজ হাতে পেলেই টাকা পরিশোধ করে তা যথাযথা স্থানে রেখে দিবেন না। অন্তত আপনাকে একবার হলেও বিদ্যুৎ বিল চোখ রাখুন। কোন কোন মাসে আপনার কত ইউনিট খরচ হয়েছে সেই হিসেব রাখুন।
অনেকেই আছেন যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফ্যান, টিভি, লাইট, মিউজিক চালিয়ে রাখেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্লাগ সংযুক্ত করে রাখেন সুইচবোর্ডের পোর্টের সঙ্গে। এগুলো সবই হচ্ছে বিদ্যুৎ এর অদৃশ্য ব্যয়।
বাসা-বাড়িতে অনেক সময় সুইচের ওয়ারিং খারাপ হওয়ার ফলে, অনেক সময় সুইচ বন্ধ করা সত্ত্বেও লাইট জ্বলতে থাকে। এ সময়ে স্বাভাবিক ভাবেই বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধি পেতে থাকে।
ফ্রিজে আপনি যত বেশি পরিমাণ জিনিসপত্র রাখবেন তত বেশি ফ্রিজ নোংরা হবে যার ফলে বিদ্যুৎ বিল বাড়তে থাকবে। যদি ফ্রিজ নোংরা হয়ে থাকে তাহলে ফ্রিজ ঠান্ডা হতে সময় লাগে। যার কারণে অধিক পরিমাণে বেশি বিদ্যুৎ ব্যয় হয়।
আরও পড়ুনঃ হিট স্ট্রোক কি | হিট স্ট্রোক এর কারণ ও লক্ষণ
ফ্রিজ, এসি (এয়ার কন্ডিশন), ওয়াশিং মেশিন, ইনভার্টার বা গিজার কেনার সময় আপনি লক্ষ্য রাখবেন যে, সেগুলো ৫ স্টার অ্যাপলায়েন্স আছে কিনা। স্টারের সংখ্যা যত বেশি হবে ততো কম বিদ্যুৎ ব্যয় হবে। এগুলোর দাম একটু বেশি হলেও আপনি দীর্ঘমেয়াদি সুফল পেয়ে যাবেন।
গরমের সময় রুমে ভারি পর্দা ব্যবহার করুন। কেননা রুমের তাপমাত্রার পরিমাণ বেশি হলে কুলার বা এসি রুম ঠান্ডা করতে বেশি সময় নিয়ে থাকে। যার ফলে বিদ্যুৎ বিল বাড়তে থাকে। তাই আজই ঘরের হালকা পর্দা গুলোকে পরিবর্তন করুন।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।