আজকের আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয়বস্তু হচ্ছে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার নিয়ে। অনেকে এই আছেন নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলছেন এবং ভিডিও তৈরি করতাছেন কিন্তু বুঝে উঠে পারছেন না যে কিভাবে বা কোন সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও এডিট করবেন। তাদের জন্যই মূলত আজকে আমার এই আর্টিকেল। আঁশা করি যারা নতুন ইউটিউবার অথবা ভিডিও এডিট করার প্রতি আগ্রহী তারা আমার এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন। তোহ চলুন জেনে নেয়া যাক কোন কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিও এডিটিং করা যায়।
Adobe Premiere Pro
ভিডিও এডিটিং করার জন্য প্রথমেই যে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার থাকছে তা হচ্ছে Adobe Premiere Pro। Adobe Premiere Pro অ্যাডভান্সড লেভেলের প্রফেশনালদের জন্য। আগেই বলে রাখি Adobe Premiere Pro ওপেন করলে প্রথমে আপনি ভয় পেয়ে যাবেন যে এটা কি চালু করেছি। ভিডিও এডিট করার জন্য Adobe Premiere Pro সফটওয়্যারটি একটু কঠিন। তবে ভিডিও এডিটিং করার জন্য অন্যতম একটি সফটওয়্যার হচ্ছে Adobe Premiere Pro। Adobe master collection software এর সুবিধা হচ্ছে একটি সফটওয়্যার জানা থাকলে অন্য সফটওয়্যার গুলি সহজে শেখা যায়। এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি ম্যাক, উইন্ডোজ এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করতে পারবেন।
Wondershare Filmora
আপনার কম্পিউটার যদি ধীর গতির হয়ে থাকে, ধীর গতির বলতে আমি বলতে চাচ্ছি যে, আপনার কম্পিউটার যদি ডুয়েল কোড় এর হয়ে থাকে আর আপনার যদি ভিডিও এডিটিং করার শখ থাকে যে আপনি ভিডিও এডিটিং এর কাজ শিখবেন। কিন্তু আপনার কম্পিউটার এর কনফিগারেশান তেমন ভালো না। সেক্ষেত্রে আপনাকে আমি সাজেষ্ট করবো এই সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার Wondershare Filmora ব্যবহার করার জন্য। এটি অসাধারণ একটা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের ট্রাঞ্জেকশন ইফেক্ট দিতে পারবেন। একেবারে বলতে গেলে ভিডিও এডিটিং করার জন্য যাবতীয় যেটা চাওয়া-পাওয়া আছে অল্প মেগাবাইটের সাধারণত এটা ১৩০ মেগাবাইটের সফটওয়্যার। আমি আঁশা করি এই সফটওয়্যার ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার ভিডিও এডিটিং এর চাওয়া পাওয়া পূরণ করা সম্ভব। এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি ম্যাক, উইন্ডোজ এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে ছবি এডিট করার সেরা অ্যাপস
Camtasia
Camtasia হচ্ছে এমন একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার, যে সফটওয়্যারটি খুবি খুবি সহজ একটি সফটওয়্যার। যদি আপনি চান যে আপনি ইউটিউব চ্যানেলের জন্যে টিউটোরিয়াল তৈরি করবেন, সেই জন্য আপনি খুবই সুন্দর ভাবে Camtasia ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ইউটিউব টিউটোরিয়াল তৈরি করতে পারবেন। বর্তমানে Camtasia X সফটওয়্যার চলে আসছে এটি একটি খুবি আকর্ষনীয় সফটওয়্যার। Camtasia ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে খুবই সুন্দর ভাবে ভিডিও এডিট করতে পারবেন। এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি ম্যাক, উইন্ডোজ এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করতে পারবেন।
Sony Vegas
আমাদের আজকের সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর চতুর্থ নাম্বারে থাকছে Sony Vegas ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এই একটি অসাধারণ সুন্দর সফটওয়্যার। Sony Vegas ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর বিশেষ কিছু গুণ রয়েছে, সফটওয়্যার এর সাইজ ৪০০ মেগাবাইটের। এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ইন্ট্রো তৈরি করতে পারবেন। আপনি Sony Vegas ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে খুবই সুন্দর সুন্দর ইন্ট্রো তৈরি করে নিতে পারবেন।
আর এই ভিডিও এডিট সফটওয়্যারটির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্লাগিং ব্যাবহার করার মাধ্যমে আকর্ষণীয় স্লাইড সোর ভিডিও তৈরি করে নিতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ মনে করুন একটি গাছের মাঝে আপনার ছবি ঝুলতেছে পানির মাঝে আপনার ছবি ভাসতেছে এই রকম ভাবে আপনি খুবই সুন্দরভাবে ইফেক্ট দিয়েও Sony Vegas এর মাধ্যমে কাজ করতে পারবেন। এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি ম্যাক, উইন্ডোজ এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করতে পারবেন।
Openshot
Openshot Video Editor ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। মূলত প্রাথমিক পর্যায় এর কাজগুলি করার জন্যে এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। আপনি যদি প্রফেশনাল মানের কাজ করতে চান তবে আপনাকে আরও ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আছে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। সাধারণত ক্যাপচার করা ভিডিও গুলির অপ্রয়োজনীয় অংশকে ডিলিট করে দেওয়া, ভিডিও ক্লিপ গুলোকে জোড়া লাগানো, স্বল্প পরিসরে টাইপ ব্যবহার করা, অন্য সাউন্ড বসানো অথবা ভিডিওর নীচে মিউজিক এই কাজগুলির জন্যই কেবল এই Openshot ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিৎ। আপনি এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি উইন্ডোজ, ম্যাক এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ ছবি এডিট সফটওয়্যার ২০২১
Edius
আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন যে বিয়ে বাড়িতে ভিডিও এবং জন্মদিনের ভিডিও রয়েছে। বিশেষ করে বিয়ে বাড়িতে ভিডিওর জন্যে এই Edius ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। আপনি বিয়ে বাড়িতে লক্ষ্য করে দেখবেন বিভিন্ন রকম স্টাইলে, বিভিন্ন ভাবে বর ও কনে কে দেখানো হয়ে থাকে। এই নানান ধরনের স্টাইল গুলো বিভিন্ন ধরনের ইফেক্টে থার্ড পার্টি প্লাগিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা Edius ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারে খুবই সুন্দর ভাবে দেওয়া থাকে।
যারা প্রফিশনাল ভাবে বিয়ে বাড়ির ভিডিও এডিটিং করেন তারা Edius ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে। আপনি যদি চান যে, কোনো বিয়ে বাড়ির ভিডিও অথবা জন্মদিনের ভিডিও এডিট করবেন তবে আপনি Edius ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার টি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি ম্যাক, উইন্ডোজ এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করতে পারবেন।
Shotcut
এটি সফটওয়্যারটি একটি ফ্রি ওপেন সোর্স ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর ফিচারগুলো আমার কাছে খুবই অসাধারণ লেগেছে। যদি আপনি Paid পেইড একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর সঙ্গে এই সফটওয়্যারের তুলনা করেন তবে এই সফটওয়্যারটি ফ্রি হওয়া সত্ত্বেও এর মধ্যে সবগুলো ফিচারই মোটামুটি ভাবে আপনি পেয়ে যাবেন। আর এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর সাহায্যে আপনি একটি ভিডিওতে যে সমস্ত বিষয় প্রয়োজন হয়ে থাকে প্রফেশনাল বা সেমি প্রফেশনাল কাজের জন্যে প্রায় অনেক গুলো কাজই এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে করতে পারবেন।
সুতরাং আমরা সাধারণত যে ভিডিওগুলো ইউটিউব চ্যানেলের জন্য তৈরি করে থাকি সেসকল আপনি 100% করতে পারবেন। অর্থাৎ যদি আপনি চাচ্ছেন কোনো একটি ভিডিও কে কাট ও পেস্ট করবেন বা ট্রিম করবেন অথবা ভিডিওতে কোনো একটি ট্রানজেকশন যুক্ত করবেন। আপনি যদি চান ভিডিওর কোয়ালিটি ভালোমানের করবেন কালার গ্রেডিং করবেন সে সকল কিছু কাজই এই ফ্রি Shotcut ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর সাহায্যে করতে পারবেন। এই সফটওয়্যারটি মোটামুটি ফ্রি হলেও এর ফিচার রয়েছে অনেক বেশি। আপনি এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি ম্যাক, উইন্ডোজ এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ এটিএম কার্ড, ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড কি
Hitfilm Express
Hitfilm Express এমন একটা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার যে সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি আয়নাদের প্রাথমিক যে ভিডিও রয়েছে সেই ভিডিও গুলো প্রয়োজন অনুসারে এডিট করে আপনি সেই ভিডিও কাজে লাগাতে পারবেন। খুব সহজেই প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিট করার জন্যে সবথেকে সহজ ও ইউজার ফ্রেন্ডলি। বর্তমানে Hitfilm Express ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এখন লেটেস্ট ভার্শন ১৬ চলছে। আপনি এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি ম্যাক, উইন্ডোজ এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করতে পারবেন।
IMovie | ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
আমি এখন কথা বলবো Apple ব্যবহারকারীদের নিয়ে। যদি আপনি একজন আইফোন ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন বা Appple এর ডিভাইস অর্থাৎ ম্যাক অ্যাপ্লিকেশান সিস্টেম ব্যবহার করে থাকেন। তবে আমি বলবো iMovie ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর চেয়ে সহজলভ্য ও ভিডিও এডিটিং এ সময় বাঁচানোর মতো অ্যাপ্লিকেশান বা সফটওয়্যার আর অন্য কিছুই হতে পারেনা। ফ্রি এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার টিতে আপনি আপনার সুবিধামতো সহজেই ভিডিও এডিট এর কাজ করতে পারবেন সহজেই।
আপনি যদি একজন প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর না হয়ে থাকেন তবে iMovie ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিও এডিট করেন তাহলে আপনার ভিডিও যিনি দেখবেন তার কোনভাবেই বোঝার উপায় নেই যে আপনি একজন পেশাদার ভিডিও এডিটর কি-না। কেননা iMovie ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এমন করে সাজানো যাতে করে আপনার ভিডিও এডিটিং এর ক্ষেত্রে আপনি নতুন হলেও সহজেই আপনার ভিডিওতে আনতে পারেন এর ক্রিয়েটিভিটি অর্থাৎ নতুনত্ব। তাই চোখ বন্ধ করেই আপনি এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার টি ব্যবহার করতে পারেন। এই সফটওয়্যারটি শুধুমাত্র Apple user অ্যাপল ইউজাররা ব্যবহার করতে পারবেন।
DaVinci Resolve
DaVinci system ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার প্রথম রিলিজ হয় ২০০৪ সালে। আর শেষ রিলিজ হয় ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে। এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ২০০৯ সালে ডিজাইন করে “ব্ল্যাক ম্যাজিক ডিজাইন”। বর্তমানে DaVinci Resolve ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর এখন সর্বশেষ ভার্শন ১৫ চলছে। এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ম্যাক ও উইন্ডোজ এবং লিনাক্স ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করতে পারবেন।
ভিডিও এডিট করার জন্য আমি আপনাকে সাজেস্ট করবো, আপনি যদি এখন ভিডিও এডিটিং এর কাজ শুরু করতে চান তাহলে কোন সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও এডিট করতে চান। যদি আপনি টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরি করতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই অবশ্যই Camtasia সফটওয়্যার ব্যবহার করার জন্য আমি বলবো। কারণ Camtasia সফটওয়্যার এর মধ্যে টিউটোরিয়াল তৈরির জন্য সম্পূর্ন বিষয় উল্লেখ রয়েছে। যা অন্যান্য সকল ভিডিও এডিটিং সফটওয়ার এর মধ্যে এই সুবিধাগুলো অনেক কঠিন করে দেওয়া আছে।
আরও পড়ুনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন করার জন্য কেমন কনফিগারেশনের ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ প্রয়োজন