যদি আপনাকে আমি প্রশ্ন করি যে, বর্তমান পৃথিবীর সবথেকে বিস্ময়কর আবিষ্কার হচ্ছে কোনটি? তাহলে হয়তোবা আপনি সহ অনেকেই বলবে যে কম্পিউটার! কিন্তু বর্তমান সময়ের এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে যে বিষয়টা না হলে আমাদের এক মুহুর্তও চলে না, সেটা হচ্ছে ইন্টারনেট।
কিন্তু আমরা এই ইন্টারনেট সম্পর্কে মূলত কতটুকুই বা জানি? ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে? ইন্টারনেট এর সুবিধা ও অসুবিধা আরও কত কি।
(toc) #title=(সুচিপত্র)
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে থাকছে ইন্টারনেট সম্পর্কে বিস্তারিত সব আলোচনা। ইন্টারনেট কি, ইন্টারনেট কীভাবে কাজ করে, ইন্টারনেট এর সুবিধা অসুবিধা গুলো কি কি, ইন্টারনেটের বিভিন্ন রহস্য ও ইন্টারনেট সম্পর্কে জানা অজানা নানান তথ্য নিয়েই আমরা আমাদের এই আজকের পোস্টটি করেছি। সম্পূর্ণ বিষয়টি ভালোভাবে জানার জন্য এবং বুঝতে হলে লেখাটি শুরু থেকে শেষ অবদি পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আমরা আজকে এই আর্টিকেলে কি কি জানতে চলছি- ইন্টারনেট কি, ইন্টারনেট এবং ওয়ার্ল্ড ওয়েব এর পার্থক্য কী, ইন্টারনেট কত সালে চালু হয়, ইন্টারনেট কিভাবে সংযোগ দিতে হয়, ইন্টারনেটের প্রকারভেদ, ইন্টারনেট কি কি কাজে লাগে, ইন্টারনেটের সুবিধা ও অসুবিধা কী, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের আদিপ্রান্ত, আইপি এড্রেস কি, DNS, Subnet Mask কি, ইন্টারনেট প্রটোকল, ইন্টারনেট অর্থ কি।
শাব্দিক ভাবে ইন্টারনেট শব্দের অর্থ দাঁড়ায় যে ভিতরের জাল বা অন্তজাল। যদি আমরা ইন্টারনেট শব্দটিকে ভেঙে অর্থ করবার চেষ্টা করি তবে দুটো অংশ হয়। ইন্টারন্যাশনাল ও নেটওয়ার্ক। এই ভাবেই ইন্টারন্যাশনাল শব্দ থেকে ইন্টার ও নেটওয়ার্ক শব্দ থেকে নেট এই শব্দ দুটিকে নিয়ে ইন্টারনেট শব্দের গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও অনেকেই ইন্টারনেটকে ইন্টারকানেক্টেড নেটওয়ার্কের সংক্ষিপ্তরূপ হিসাবেও বিবেচনা করে। কারণ ইন্টারনেট হচ্ছে মূলত কতগুলি নেটওয়ার্কের সমন্বয়। যেখানে লাখ লাখ থেকে কোটি কোটি নেটওয়ার্ক রাউটারের মাধ্যমে একসঙ্গে জুড়ে দেওয়া আছে।
এই তো গেলো ইন্টারনেটের শাব্দিক বিশ্লেষণ। ইন্টারনেট বলতে আমরা সাধারণত কি বুঝি? তোহ আমরা জানলাম ইন্টারনেট হচ্ছে অনেকগুলি নেটওয়ার্ক এর সংগঠিতরূপ। আর এই নেটওয়ার্কগুলিকে যুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয় রাউটার। এরপরে বিভিন্ন আইপি এড্রেস ও প্রটোকলের সমন্বয়ে মিলে তৈরি করা হয়ে থাকে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট।
সহজে বলতে গেলে ইন্টারনেটের অর্থ হচ্ছে কতগুলি নেটওয়ার্ক এর সমষ্টি। যা সারাবিশ্বে একটি জালের মতো করে ছড়িয়ে রয়েছে। আর সেই কারণে একে বলা হয়ে থাকে আন্তর্জাতিক ভাবে বিস্তীর্ণ জাল বা ইন্টারনেট। আশা করি আপনি ইন্টারনেটের মানে আপনার কাছে মোটামুটি পরিষ্কার হয়েছে।
ইন্টারনেট এবং world-wide-web এর পার্থক্য কি?
তবে কিন্ত আমাদের অনেকের মাঝে মধ্যে ইন্টারনেট বা world-wide-web ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কে সমার্থক শব্দ হিসাবে বিবেচনা করে থাকি। কিন্তু মূলত এই শব্দ দাঁরা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়কে নির্দেশ করে থাকে।
ইন্টারনেট হচ্ছে হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে গঠিত একটি কাঠামোবদ্ধ ব্যবস্থা যেটা কম্পিউটার সমূহের মাঝে এক ধরনের আন্তর্জাতিক তথ্য এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা যুক্ত করে। অপরদিকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে প্রদত্ত সেবা গুলোর একটি।
যেটি পরস্পরযুক্ত বিভিন্ন কাগজপত্র অ অন্যান্য সম্পদ সংগ্রহের হাইপারলিংক অ ইউআরএল URL দ্বারা সংযুক্ত একটি ব্যবস্থা। তোহ যাই হোক, প্রতিদিনের আলাপচারিতায় আমরা ইন্টারনেট ও world wide web ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কে একই জিনিস বলে চালিয়ে দিলেও মূলত এটি এক জাতীয় সিস্টেম না।
ইন্টারনেট হচ্ছে একটি নেটওয়ার্ক সম্মিলিত ব্যবস্থা ও বিপরীতে world-wide-web ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে প্রদত্ত সেবা গুলোর মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুল ব্যবহৃত পরিসেবা। আঁশা করি এই বিষয়টি আপনার কাছে ক্লিয়ার হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ডার্ক ওয়েব কি | ডার্ক ওয়েব এর কাজ কি
ইন্টারনেট চালু হয় কত সালে
তোহ এইবার চলুন জেনে নেই ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্কের ইতিহাস নিয়ে। বিশ্বের প্রথম নেটওয়ার্ক হিসাবে আমরা মূলত আর্পানেট (ARPANET) কেই চিনে থাকি। মূলত প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতিতে এই ধরনের নেটওয়ার্কের তৈরি করা হয়েছিল।
এরপর পরবর্তীতে ধাপে ধাপে বিভিন্ন ধরনের প্রটোকল ব্যবহার করে আরো উন্নত করতে থাকে এই প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতির নেটওয়ার্ককে। ১৯৬৯ সালে প্রথম আর্পানেট নেটওয়ার্ক সারাবিশ্বের প্যাকেট (ইনফরমেশনের অংশ) পরিবহন করে। আর নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার বা এনআইসি ( NIC) তৈরি করা হয় ১৯৭০ সালে। যে আবিস্কার ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়েছে।
তারপর ১৯৮০ সাল এর শেষের দিকে আর ১৯৯০ সালে এর শুরুর দিকে (আইএসপি) বাণিজ্যিকভাবে ইন্টারনেট পরিসেবা প্রদানকারীদের আবির্ভাব ঘটে। এইভাবে ১৯৯০ সালের দিকে ARPANET আর্পানেট নেটওয়ার্ক ইন্টারনেটের জগত থেকে কর্মবিরতি গ্রহণ করে।
তবে হ্যাঁ ১৯৯৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইন্টারনেটকে বাণিজ্যিক প্রোডাক্ট হিসেবে পরিণত করা হলেও পরবর্তী সময়ে যখন NSF এনএসএফ নেট কর্মবিরতি নেয়, তখন ইন্টারনেট ব্যবহার করার বাণিজ্যিক বহন শেষ নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে ফেলা হয়।
তারপর থেকেই শুরু হয়ে জায় বিভিন্ন জনপ্রিয় ইন্টারনেটের সেবা প্রদান। ১৯৯৫ সালে Amazon.com ও eBay ইন্টারনেট ইতিহাস এর প্রথমের সারির কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে পরিণত হয়।
১৯৯৮ সালে গুগল সার্চ ইঞ্জিন ও ইহাহু ডটকম, তারপরে ২০০১ সালে উইকিপিডিয়া, ২০০৩ সালে স্কাইপ, ২০০৪ সালে ফেসবুক, ২০০৫ সালে ইউটিউব, ২০০৬ সালে টুইটার ও ২০০৯ সালে বিং ইন্টারনেট পৃথিবীকে আরও বেশি বড় করে তুলেছে।
সব মিলিয়ে গত অক্টোবর ২০২০ সালের একজরিপে জানা যায় যে সারাবিশ্বের অ্যাক্টিভ ইন্টারনেট ইউজার সংখ্যা ৪.৬৬ বিলিয়নের মতো। যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৯ শতাংশ। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ইন্টারনেট আমাদের সঙ্গে কিভাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।
কিভাবে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে হয়
আগেই বলেছি যে, ইন্টারনেট হচ্ছে মূলত অনেকগুলি নেটওয়ার্ক এর সমষ্টি। আর এই সকল নেটওয়ার্ককে একসঙ্গে জুড়ে দেয়ার জন্য কাজে লাগে প্রয়োজন কয়েকটি রাউটার। এরপর প্রত্যেকটি নেটওয়ার্কে কতগুলি আইপি অ্যাড্রেস সেট প্রদান করা হয়ে থাকে। এই আইপি অ্যাড্রেসগুলির কিন্ত আবার বিভিন্ন ধরনের বিভাগ রয়েছে। সেই বিষয় নিয়ে আমরা পরে আলোচনা করবো।
তারপর প্রত্যেকটি নেটওয়ার্ক আইডিকে একটি করে ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস প্রদান করা হলে, সেগুলো বিভিন্ন প্রটোকলের সমন্বয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
আর নেটওয়ার্কগুলিকে একটির সাথে অন্যটির সাথে জুড়ে দেয়ার কাজ করে রাউটার। এই ভাবেই আমরা একটি কম্পিউটার অথবা নেটওয়ার্ক আইডি এর ব্যবহার করে পুরো পৃথিবীর ইন্টারনেট পরিষেবা আমরা পেয়ে থাকি। আশা করি আপনার একটি ঝাপ সাধারণ সৃষ্টি হয়েছে। আপাতত এই দিয়েই কাজ চলবে। বিস্তারিত জানার জন্য আপনাকে নেটওয়ার্ক নিয়ে আরও বেশি গভীরভাবে পড়াশুনা করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নেটওয়ার্ক আইডিগুলা ইন্টারনেটের সঙ্গে ফিজিক্যালি কিভাবে সংযুক্ত করা হয়ে থাকে? নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা জন্যে প্রত্যেকটি ডিভাইসে মানে আপনার কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনে একটি নিক কার্ড NIC Card বা নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড থাকা আবশ্যক। ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযোগ দেওয়ার জন্যে সর্বপ্রথমে তাই আপনার ডিভাইসের মধ্যে নিক কার্ড NIC Card বা নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড ইন্সস্টল দিয়ে রাখতে হবে।
এরপরে একটি নেটওয়ার্ক ক্যাবলের একপ্রান্তে আপনার নিক কার্ড (নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড) এর সঙ্গে সংযুক্ত করে দেয়া থাকবে আর অপরপ্রান্তে একটি কেবল মডেম ডিএসএল মডেম বা রাউটারের সঙ্গে সংযুক্ত করা থাকবে।
কিভাবে আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মধ্যে কোনো একটি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হলো। এরপর আপনার নেটওয়ার্ককে অপর কোনো একটি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে দরকার হবে রাউটার। তারপরে আপনার স্মার্টফোনের ডাটা কানেকশন বা কম্পিউটারের ডাটা কানেকশন চালু করলেই আপনি যুক্ত হয়ে যাবেন ইন্টারনেটের দুনিয়ায়।
আরও পড়ুনঃ বিজ্ঞাপন দেখে টাকা ইনকাম
এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন যে, বাস্তবে আমি তো কখনোই স্মার্টফোনের সঙ্গে কোনো তার সংযুক্ত করা দেখিনা, তবে ইন্টারনেট ফোনের সাথে কিভাবে সংযুক্ত হয়?
এটির উত্তর হচ্ছে, আপনার মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট কানেকশন পাওয়ার জন্য অবশ্যই কোন-না-কোন আইএসপি ISP বা Internet Service Provider ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এর দ্বারগ্রস্থ হওয়া দরকার। আর এই কাজটি করে থাকে আপনার মোবাইল অপারেটর গুলো। বাংলালিংক, গ্রামীণফোন, এয়ারটেল অথবা যেকোন মোবাইল অপারেটর ইউজারকারী আপনি হয়েই থাকেন না কেন।
এর বিনিময়ে এই মোবাইল অপারেটর পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে চার্জ প্রদান করার প্রয়োজন হয়, যেটাকে আমরা সাধারণত ইন্টারনেট প্যাকেজ ক্রয় করা বলি।
তবে হ্যাঁ বেশিরভাগ সময়ে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কানেকশন পরিষেবা আমরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। এই নিয়ে ইন্টারনেটের প্রকারভেদ অংশের মধ্যে বিস্তারিত ভাবে নিম্নে আলোচনা করেছি। আঁশা করি, এই বিষয়টি আপনার কাছে এখন সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার হয়েছে।
ইন্টারনেটের প্রকারভেদ
ইন্টারনেটকে কানেকশন এর উপরে ভিত্তি করে মূলত ইন্টারনেটকে চারটি ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে। সেগুলো হছে-
- ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার লাইন Digital Subscriber Line ( DSL )
- স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কানেকশন Satellite Internet Connection
- ফাইবার ইন্টারনেট কানেকশন Fiver Internet Connection
- ক্যাবল ইন্টারনেট কানেকশন Cable Internet Connection
ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার লাইন বা ডিএসএল
ডিএসএল DSL (Digital Subscriber Line) হচ্ছে একটি নিম্ন মানের প্রযুক্তি কিন্তু এটি উচ্চ গতি সম্পূর্ণ স্থির ওয়্যারলাইন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ। এটি তামা টেলিফোন লাইন ধরে চলতে থাকে। দ্বিওয়্যার প্রযুক্তি সংযোগটি আপনাকে আপনার ডিভাইসের পরিষেবা থেকে কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সরবরাহ করার অনুমতি প্রদান করে।
আপনার প্রাঙ্গণটি অথবা প্রিমাইসেসটি ডিএসএল DSL মডেমের মাধ্যমে পরিষেবার সঙ্গে সংযুক্ত আছে, যেটি আপনি অফিসের ডিভাইসগুলোকে ওয়্যারলেস অথবা তারযুক্ত স্থানীয় অঞ্চলের নেটওয়ার্কগুলোর (ল্যান) মাধ্যমে সংযোগ করেন।
যদি আপনি হালকা থেকে মাঝারি সাইজের ওয়েব ব্রাউজিং, ক্লাউড ব্যাকআপ ও ফাইল শেয়ার করে নিয়ে থাকেন, তাহলে ডিএসএল (ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার লাইন) আপনার ব্যবসায়ের জন্য সঠিক।
এই সংযোগটি আপনি ভিডিও কনফারেন্সিং ও অডিও স্ট্রিমিংকে সমর্থন করতে পারে আর দ্রুততার সাথে ডাউনলোডের গতি বৈশিষ্ট্য প্রদান করে। সহজ ভাষায়, আমাদের বাসা-বাড়িতে যে ওয়াইফাই কানেকশন ব্যবহার করে থাকি, সেটা মূলত হচ্ছে ডিএসএল (ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার লাইন) ইন্টারনেট কানেকশনের একটি উদাহরণ।
স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কানেকশন
মনে করুন, আপনার ব্যবসা যদি এমন প্রত্যন্ত অর্থাৎ গ্রামীণ অঞ্চলের দিকে অবস্থিত হয়ে থাকে যেখানে ল্যান্ডলাইন ইন্টারনেট পরিষেবা যেমন তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট কানেকশন, ফাইবার অথবা ডিএসএল (ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার লাইন) এর এক্সেস নাই, সেই যায়গাতে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কানেকশন হবে আপনার জন্য একমাত্র অবলম্বন।
এখানে আপনি লক্ষ্য রাখবেন যে, বেশিরভাগ সময়ে আপনার আইএসপি ISP (Internet Service Provider) একটা রিসিভার ডিশ ইনস্টল করে দক্ষিণের আকাশের দিকে নির্দেশ করে রাখা থাকবে।
সেই থালাটি (ডিস) রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আকারে মহাকাশের প্রদক্ষিণ কেন্দ্রগুলো অর্তাত স্যাটেলাইট থেকে ডেটা সংগ্রহ করে, যা আপনার অফিস এর কোনো মডেমের সাহায্য ইন্টারনেটের সংকেত গুলোতে অনুবাদ করা হয়। আশা করি বিষয়টি আপনার বুঝতে কোনো অসুবিধে হচ্ছে না।
তবে হ্যাঁ দুর্ভাগ্যক্রমে, বর্তমানে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রযুক্তি কেবল বা ডিএসএল (ডিজিটাল সাবস্ক্রাবার লাইন) হিসাবে ততো দ্রুত গতি সরবরাহ করতে পারেনা। কেননা এই স্টেশনগুলো পৃথিবীর থেকে প্রায় ২২,৩০০ মাইল দূরে অবস্থিত, যা তথ্য পাঠানোর জন্যে বিশাল ভ্রমণ। অপরদিকে, ল্যান্ডলাইন ইন্টারনেট কানেকশনের গতি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়ে থাকে।
আর হ্যাঁ এখানে অবশ্যই মনে রাখবেন যে, গতি বলতে আমি কিন্ত ইন্টারনেটের স্পিডকেই বুঝিয়েছি, আর স্যাটেলাইট কানেকশনের ক্ষেত্রে কিন্তু নেটওয়ার্ক প্যাকেটগুলে ল্যান্ডলাইনের তুলনায় অধিক বেশি স্পিডে প্রবাহিত হয়ে থাকে। তবে দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ার কারণে, নেটওয়ার্কের স্পিড অনেক কম বলে মনে হয়। তোহ বিষয়টি আপনি ধরতে পেরেছেন নিশ্চয়।
আরও পড়ুনঃ লিনাক্স এর সুবিধা ও অসুবিধা
ফাইবার ইন্টারনেট কানেকশন
ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট কানেকশন ব্রডব্যান্ড সারাবিশ্বে নতুন প্রবেশকারীদের মধ্যে হচ্ছে একটি। এই প্রযুক্তি আপনাকে অবিশ্বাস্যভাবে অনেক বেশি দ্রুত গতির সুবিধা প্রদান করবে অ ছোট ব্যবসায়ীরা তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্যে দৃঢ়ভাবে এই ফাইবার ইন্টারনেট কানেকশন সংযোগের উপরে নির্ভর করতে পারে।
তবে হ্যাঁ দুর্ভাগ্যক্রমে, এই ফাইবার ইন্টারনেট কানেকশন প্রযুক্তিটি কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়েই কয়েকটি স্থানে বিদ্যমান আছে। আমাদের বাংলাদেশে অতি শ্রীঘ্রই আমরা ফাইবার ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করতে পারবো।
যদি আপনি অনেক বেশি ভারী ওয়েব ব্রাউজিং, অনলাইন ব্যাকআপ অ হেরোকু লগ এবং অন্যের মতো ক্রমাগত ফাইলগুলোকে নিয়ে বেশ হিমিশিম খাচ্ছেন। তাহলে আপনার ব্যবসার জন্যে ফাইবার ইন্টারনেট কানেকশন হবে সঠিক ইন্টারনেটর সমাধান।
তাছাড়াও, ঘন-ঘন এইচডি HD অডিও স্ট্রিমিং, ভিওআইপি সেবাগুলি, হোস্টিং সার্ভারগুলে অ জটিল ক্লাউড ভিত্তিক পরিষেবাগুলোর জন্য আপনি ফাইবার ইন্টারনেট কানেকশন একটি সেরা ইন্টারনেট সংযোগ এর ধরণ হিসেবে বিবেচ্য হতে পারে।
ক্যাবল ইন্টারনেট কানেকশন
ক্যাবল ইন্টারনেট কানেকশন যা লোককে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক (National Geography) থেকে ইএসপিএন ESPN পর্যন্ত বেশ কয়েক বছর ধরেই ফ্লিপ করতে দেয়, সেই একই কানেকশন আপনার ব্যবসার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশনও আনতে পারে।
কেবল ব্রডব্যান্ড কানেকশন সাধারণত কোক্সিয়াল কেবলগুলোর মাধ্যমে পাওয়া যায়। তবে নতুন প্রযুক্তিগুলো বর্তমানে হাইব্রিড ফাইবার কোক্সিয়াল (এইচএফসি) সংযোগগুলো ব্যবহার করে।
যদি আপনি মাঝারি ফাইল শেয়ার, ওয়েব ব্রাউজিং ও অনলাইন ব্যাকআপ করতে চান। তাহলে ক্যাবল ইন্টারনেট কানেকশন আপনার ব্যবসায়ের জন্য একদম উত্তম।
আপনাকে যখন ভিওআইপি (VOIP) সেবা এবং এইচডি অডিও স্ট্রিমিং ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় ও মাঝারি সাইজের আপলোড গতি আর দ্রুততার সাথে ডাউনলোড করার প্রয়োজন হয় তখনই ক্যাবল ইন্টারনেট কানেকশন একটি দক্ষ কানেকশনের ধরণ হিসেবে বিবেচনা হতে আপনার কাছে।
ইন্টারনেটের ব্যবহার কি কি | ইন্টারনেটের ৫টি ব্যবহার
বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে চার বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ইন্টারনেট ইউজ করে থাকেন। আর এই ইন্টারনেট ব্যবহার করে তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে নানান ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে।
তাদের মধ্যে তোহ আবার অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। তবে হ্যাঁ এই বিষয়টি কিন্তু আমাদের কারো অজানা নয়। যাকে আমরা ই-কমার্স অথবা অনলাইনে কেনাকাটা বা অনলাইনে বিজনেস হিসাবে চিনি।
যদি আমি এখন ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ে লিখতে থাকি, তাহলে মনে হয় আজকের পোস্টটি আমাদের কখনোই শেষ হবেনা। তাই আমি সকল বিষয়ের ব্যবহারের কথা উল্লেখ না করে, শুধুমাত্র বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজের নামসমূহ নিম্নে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি, যেগুলি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এনেছে আমূল এক পরিবর্তন। চলুন জেনে নেই আমরা সাধারণত কেন ইন্টারনেট কে ব্যবহার করে থাকি-
- রিয়েল-টাইম ভিত্তিতে সারাবিশ্বে যেকোনো কিছু যেকোন বিষয়ে তথ্য সার্চ করে উত্তর জানার জন্যে।
- যোগাযোগ বা অন্যের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য বা সহযোগিতা পাওয়ার জন্য।
- অফিস থেকে টেলিকমিউটে অর্থাৎ বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করি।
- বিজনেস সত্তাগুলোর সঙ্গে লেনদেন করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি।
- রিমোট থেকে বিভিন্ন ধরনের ফাইল ডাউনলোড করতে।
- শিক্ষায় এবং বিনোদন পাওয়ার জন্য।
- সামাজিক বহন হিসেবে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করি।
- গ্রুপ কার্যকলাপ করার জন্য ইন্টারনেটকে ব্যবহার।
- দূরের সরঞ্জামগুলো থেকে অপারেশনাল ডেটা সংগ্রহ করার জন্য।
- মূল সার্ভারে প্রবাহিত হওয়ার সময় ডেটা প্রক্রিয়া করার জন্য ইন্টারনেটকে ব্যবহার করি।
- ক্রিয়াকলাপকে স্বয়ংক্রিয় করার পার্শ্ববর্তী ডিভাইস, সিস্টেম, আবহাওয়ার উপরে রিয়েল টাইম ডেটা পাওয়ার জন্য।
- সিদ্ধান্ত সমর্থন সিস্টেম এর পরিবর্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পদ্ধতি ডিজাইন করতে।
- অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য।
- পড়শুনার কাজে।
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অ্যাডভারটাইজমেন্ট করতে।
- চাকরি খোজার জন্য।
- ক্লাউড স্টোরেজের সুবিধা পেতে।
- কোনো স্থানে হারিয়ে গেলে, গুগল ম্যাপের মাধ্যমে আমাদের নিদিষ্ট গন্তব্য খুজে পেতে।
- কোনো প্রোডাক্টকে ক্রয় বা বিক্রয় করার জন্য ইন্টারনেটকে ব্যবহার করি।
উপরোক্ত ব্যবহারে মাঝে থেকে আপনি হয়তোবা একটি কমোন বিষয়ের দিকে লক্ষ্য করে থাকবেন। আর সেটি হচ্ছে কমিউনেকশন বা যোগাযোগ। মূলত ইন্টারনেট এর প্রধান উদ্দ্যেশ্যই হচ্ছে আমাদের সারাবিশ্বের মাঝে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন ঘটানো।
আর এই উন্নয়নের সুফল হিসেবেই আমরা বর্তমান সময়ের আমাদের বিশ্বকে গ্লোবাল ভিলেজ হিসাবে দেখতে পারছি। যেখানে আমরা সবাই একটা গ্রামের সদস্যের মতে। যখন খুশি যেকেউ যেখানে যোগাযোগ করতে পারে। সুতরাং আমি বলতেই পারি যে, ইন্টারনেট হচ্ছে আমাদের জীবনের এক আশীর্বাদ স্বরূপ।
ইন্টারনেটের সুফল ও কুফল | ইন্টারনেটের সুফল ও কুফল রচনা
এতোক্ষণ আমরা তো ইন্টারনেটের নানান ধরনের ব্যবহার আর আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কীভাবে আমরা ইন্টারনেটের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে থাকি সেই বিষয়ে জানলাম। এইবার আমরা ইন্টারনেট এর সুবিধা জানার পাশাপাশি আরো বেশ কয়েকটি ইন্টারনেটের অসুবিধা সেই সম্পর্কে জানবো। আপনি হয়তোবা অবাক হচ্ছেন যে, ইন্টারনেটের অসুবিধা আবার কি রকম হবে বা ইন্টারনেটের অসুবিধা গুলো কি কি হতে পারে?
বর্তমানে ইন্টারনেট এর ফলে সারাবিশ্ব এখন আমাদের হাতের মুঠোই চলে আসছে। এখন ঘরে বসে থেকেই আমরা সারাবিশ্বে অবলোকন করতে পারছি। তবে হ্যাঁ ইন্টারনেট আমাদের জীবনে অনেক সুফল নিয়ে আনলেও ইন্টারনেটের খারাপ বা ইন্টারনেট ব্যাবহারের কুফল এর দিকটি কিন্তু মোটেও উপেক্ষা করার মতো না।
ইন্টারনেটের সবথেকে বেশি ক্ষতিকর প্রভাব যাদের উপরে পড়ছে তারা হচ্ছেন যুব সমাজ। খারাপ দিকগুলোর মধ্যে থেকে অন্যতম একটা দিক হ'ল পর্নগ্রাফি। যেটি আমাদের সমাজের কিশোর-কিশোরী এবং যুবক যুবতীদের ঠেলে দিচ্ছে ভয়াবহ বিকৃতির পথে।
যার ফলে তরুণ তরুনিদের কর্মতৎপরতা মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। আর অশ্লীল সব ভিডিও দেখার কারণে সমাজের তরুন সমাজ হয়ে যাচ্ছে সেক্স অপরাধী। যার ফলে সমাজের মধ্যে বাড়ছে ধর্ষণ, খুনের মতো জঘন্য সব কাজকর্ম।
পর্নোগ্রাফি বাদেও বর্তমান সময়ে আমাদের ঘরের শিশু কিশোররা স্কুলবিমুখী দিকে চলে যাচ্ছে তারা ইন্টারনেটের অধীক ব্যবহার করার ফলে। যা মাদকাসক্তের মতো ভয়াবহ এডিকশনের নিয়ে যাচ্ছে। ভিডিও গেমস খেলার জন্য বর্তমান সময়ে শিশুরা ঘরের বাইরেই যেন যেতে চায়না।
যেই সময়টা বাচ্চাদের মাঠে ছুটোছুটি করে সময় কাটানোর কথা, কিন্ত এখন সেই সময়টা পার হচ্ছে ঘরের কোনো একটি কোণে বসে থেকে ফ্রি ফায়ার, পাবজি খেলে। যার ফলে যেমন তাদের শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি ভাবে তারা মানসিক দিকেও অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকেই। এই বিষয়ে আমাদের উচিত সকল অবিভাবকদের অনেক বেশি সচেষ্ট থাক।
ইন্টারনেটের আরেকটি খারাপ দিক হচ্ছে তথ্য বা ডেটা চুরি। আমাদের বেশিরভাগ বর্তমান সময়ে খাতা কলমে তথ্য সংরক্ষণ করে রাখার চেয়ে ইন্টারনেটে জমা করে রাখতে বেশি পছন্দ করি।
আর কিছু ব্যক্তি আছেন যারা হ্যাক করে অনেকে মূল্যবান ইনফরমেশন চুরি করে মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়। আসলে এই ক্ষেত্রে কিন্ত ইন্টারনেটকে দোষ দিলে চলবে না। এটা হচ্ছে আমাদের মানুষদেরই একটা অন্ধকার দিকের উদাহরণ।
যাইহোক ইন্টারনেট ব্যবহার করার যতই অসুবিধা এবং ইন্টারনেট ব্যাবহারের কুফল যতই থাকুক না কেন? আপনি আমি তো নিঃসন্দেহেই স্বীকার করবো যে, এই ইন্টারনেটই হচ্ছে বর্তমান সময়ের আমাদের মানব সমাজে ঘটে যাওয়া সবথেকে ভালো দিকগুলোর মধ্যে একটি। যা আমাদের প্রজন্মকেই এক অন্য এক ধাপে নিয়ে চলে গেছে।
বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ইতিহাস | বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালু হয় কত সালে
১৯৬৯ সালে সারাবিশ্বে প্রথম ইন্টারনেট চালু হলেও বাংলাদেশে এই ইন্টারনেটের সুবিধা পাওয়ার জন্য আরও ২৪ বছর ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে। বাংলাদেশে ১৯৯৩ সালে ইন্টারনেট চালু হলেও এটি সবার জন্যে উন্মুক্ত করা হয়ে থাকে ১৯৯৬ সালে। কিন্তু সারাবিশ্বের অন্যান্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মত বাংলাদেশেও ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে বিস্ময়কর হাড়ে বৃদ্ধি হচ্ছে।
যার পরিপেক্ষিতে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ইউজারের সংখ্যা ১১ কোটি এসে দাঁড়িয়েছে। যা আমাদের জনসংখ্যার প্রায় ৬৩%। কিন্তু ২০০১ সালে দেশে মোট ইন্টারনেট ইউজারের সংখ্যা ছিলো মাত্র এক লক্ষ ৮৬০০০।
ফিউচারে আমাদের দেশে ইন্টারনেট ইউজারের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা সহজেই আন্দাজ করতে পারি। কারণ ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ইন্টারনেট ও টেকনোলজিতে আমাদের উন্নয়ন খুবই দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে এই উন্নয়েনের জন্য দরকার আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াস। এই পোস্টের শেষের দিকে আমরা নেটওয়ার্কে বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তোহ চলুন প্রথমেই জেনে নেই-
নেটওয়ার্ক কি | নেটওয়ার্ক কাকে বলে
নেটওয়ার্ক হচ্ছে কতগুলো কম্পিউটার এর সমষ্টি যেখানে মূলত একটি সাধারণ কমিউনিকেশন প্রোটকল ব্যবহার করা হয়ে থাকে কতকগুলো ডিজিটাল ইন্টারকানেকশনের উপরে ভিত্তি করে। যার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে যে নেটওয়ার্ক এর অধীনে কম্পিউটার নোডগুলোর মাঝে বিভিন্ন রিসোর্স আদান-প্রদান করা।
নোডের মাঝে আন্তঃসংযোগ শারীরিক ভাবে ওয়্যার্ড, অপটিক্যাল ও ওয়্যারলেস রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি পদ্ধতির উপরে ভিত্তি করে টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির বিস্তৃত বর্ণালী থেকে গঠিত হয়।
যেটা বিভিন্ন নেটওয়ার্ক টপোলজিতে সাজানো হতে পারে। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের নোডগুলে সাধারণত ব্যক্তিগত কম্পিউটারে, সার্ভার, নেটওয়ার্কিং হার্ডওয়্যার অথবা সাধারণ উদ্দেশ্যে হোস্ট হিসেবে অনেক উপায়ে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে।
তাদেরকে হোস্টনেম ও নেটওয়ার্ক ঠিকানা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। হোস্টনেমগুলো নোডগুলোর জন্য স্মরণীয় লেবেল হিসেবে পরিবেশণ করে, প্রাথমিক নিয়োগের পরবর্তীতে খুব কম পরিবর্তিত হয়।
নেটওয়ার্ক ঠিকানাগুলো (নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস) ইন্টারনেট প্রোটোকলের মত কমিউনিকেশন প্রোটোকল দ্বারা নোডগুলো শনাক্ত করার জন্যে পরিবেশণ করা হয়। নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আপনি একটু হলেও ধারণা অর্জন করেছেন আশা করি।
আরও পড়ুনঃ ছবি এডিট সফটওয়্যার ২০২১
আইপি এড্রেস কি
আইপি অ্যাড্রেসের অর্থ হচ্ছে ইন্টারনেট প্রোটোকল ঠিকানা। যদি সহজে বলি, ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী প্রতিটি ডিভাইসের সঙ্গে কমিউনিকেশন করার জন্যে একটা অনন্য শনাক্তকারী নাম্বারের প্রয়োজন, যাকে বলা হয় ‘আইপি অ্যাড্রেস’।
একটা ইন্টারনেট প্রোটোকল ঠিকানা (আইপি অ্যাড্রেস) হচ্ছে কয়েকটি সংখ্যার লেবেল যা কোনো কম্পিউটারের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি ডিভাইসের মধ্যে নিযুক্ত করা হয়ে থাকে। আর যেটি কমিউনিকেশনের জন্য ইন্টারনেট প্রোটোকল ব্যবহার করে।
একটি আইপি অ্যাড্রেস সাধারনত দুটো প্রধান ফাংশন পরিবেশন করে থাকে যথা- হোস্ট বা নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস শনাক্তকরণ আর অন্যটি অবস্থান ঠিকানা বা Location Addressing। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের জগতে দুই রকমের আইপি ভার্সন অবস্থান করছে।
ভার্সন দুটি হচ্ছে আইপি ভার্সন ৪ (IP version 4 (IPv4) আর আইপি ভার্সন ৬ (IP version 6 (IPv6)।আমরা হয়তোবা অনেকেই জানি যে, আইপি অ্যাড্রেসগুলে বাইনারি মানগুলোর সমন্বয়ে তৈরি করা হয় আর ইন্টারনেটে সমস্ত ডেটার রাউটিং চালায়।
IPv4 ঠিকানাগুলো ৩২ বিট দীর্ঘ ও IPv6 ঠিকানাগুলো ১২৮ বিট দীর্ঘ। তবে হ্যাঁ IP অ্যাড্রেসগুলো মানব পঠনযোগ্য স্বরলিপিগুলোতে লিখিত ও প্রদর্শিত করা থাকে যেমন IPv4 এ 172.16.254.1, ও 2001: db8: 0: 1234: 0: 567: 8: 1 IPv6 এ।
DNS, Subnet Mask কি
ডিএনএসঃ ডিএনএস এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ডোমেইন নেম সিস্টেম Domain Name System। ডোমেইন নেম সিস্টেম (ডিএনএস) দ্বারা কম্পিউটার পরিষেবা অথবা ইন্টারনেট বা একটি ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত অন্যান্য সংস্থার জন্যে একটি শ্রেণিবিন্যাসক ও বিকেন্দ্রীভূত নামকরণ সিস্টেমকে বোঝানো হয়ে থাকে।
এটি অংশগ্রহণকারী সত্তাদের প্রত্যেককে নির্ধারিত ডোমেইন নামের সঙ্গে বিভিন্ন তথ্যে যুক্ত করে। সর্বাধিক সুস্পষ্টভাবে এটি অন্তর্নিহিত নেটওয়ার্কের প্রোটোকল সহ কম্পিউটার পরিষেবাদি ও ডিভাইস সনাক্তকরণ জন্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগত আইপি অ্যাড্রেসগুলিতে আরো সহজেই মুখস্ত করার অভিপ্রায় ডোমেইন নামগুলোকে অনুবাদ করে থাকে।
ডিএনএস এর প্রধান কাজ হচ্ছে ডোমেইনের নামগুলোকে একেক টিআইপি ঠিকানায় অনুবাদ করা, যা কম্পিউটার বুঝতে পারে। এটি মেল সার্ভারগুলোর একটি তালিকাও সরবরাহ করে থাকে; যেটা প্রতিটি ডোমেইন নামের জন্য ইমেইল গ্রহণ করে। ডিএনএস এর প্রতিটি ডোমেইন নাম তার ডিএনএস রেকর্ডগুলের অনুমোদনের জন্য নেম সার্ভারের একটি সেটকে মনোনীত করে।
সাবনেট মাস্কঃ অপরদিকে একটি আইপি অ্যাড্রেসকে দুটাে অংশে বিভক্ত করার জন্য একটি সাবনেট মাস্ক ব্যবহার করতে হয়। একটি অংশ হোস্ট (কম্পিউটার) শনাক্ত করে, অপর অংশটি নেটওয়ার্কটি যার সঙ্গে সম্পর্কিত সেটা শনাক্ত করে।
আইপি ঠিকানা এবং সাবনেট মাস্কগুলো কীভাবে কাজ করে সেই বিষয়ে আরো ভালভাবে বুঝতে, একটি আইপি অ্যাড্রেস দেখে নিন এবং দেখুন এটা কীভাবে সংগঠিত হছে। সাবনেট মাস্কগুলো ঠিকানার মতো বিন্দু-দশমিক ব্যবহার করে প্রকাশিত করা হয়।
ধরুন, 255.255। 255.0 এটা 198.51 . 100.0/24 প্রিফিক্সের একটি সাবনেট মাস্ক। রাউটারগুলের সাহায্যে সাবনেটওয়ার্কের মাঝে ভিজিটরের আদান-প্রদান কেবল তখনই হয়ে থাকে যখন উৎসের ঠিকানা এবং গন্তব্য ঠিকানাটির রাউটিং প্রিফিক্স আলাদা হবে। সহজ ভাষায়, সাবনেট মাস্ক হচ্ছে একটি আইপি নেটওয়ার্কের লজিক্যাল সাবডিভিশন।
আরও পড়ুনঃ ইসরাইল ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণ
ইন্টারনেট প্রটোকল কি | ইন্টারনেট প্রোটকল কাকে বলে
Internet Protocol (IP) হচ্ছে ডেটা প্যাকেট গুলোকে রাউটিং ও সম্বোধনের জন্যে একটা প্রোটোকল বা নিয়ম এর সেট। যাতে করে তারা নেটওয়ার্কগুলো সম্পূর্ণ ভ্রমণ করতে পারে ও সঠিক স্থানে পৌঁছাতে পারে।
ইন্টারনেটে ভিজিট করা ডেটার ছোটো ছোটো টুকরা গুলোকে বলা হয়ে থাকে প্যাকেট। আইপি ইনফরমেশনগুলো প্রতিটি প্যাকেটের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে ও এই তথ্য রাউটারগুলোকে সঠিক জায়গাতে প্যাকেট প্রেরণে সাহায্য করে।
প্রতিটি ডিভাইস বা ডোমেইন যা ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে তাদের একটি আইপি অ্যাড্রেস বরাদ্দ করা হয়, ও প্যাকেটগুলো তাদের সংযুক্ত আইপি অ্যাড্রেস নির্দেশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনমতো পৌছে যায়।
তোহ বন্ধুরা আমরা আমাদের লেখার একেবারে শেষের পর্যায়ে চলে আসছি। আমাদের সাধ্যমতো আমরা চেষ্টা করেছি, ইন্টারনেটের সকল বিষয় এর উপরে একটি ধারণা সৃষ্টি করার।
তবে এটাও মনে রাখবেন যে, ইন্টারনেট বিষয়বস্তু আপাতত আমাদের কাছে সরল ও সহজ বলে মনে হলেও এটা অনেক জটিল একটআঃ প্রক্রিয়া। তাই এখানে হয়তোবা অনেক বিষয় বাদ পড়ে যেতে পারে। যাইহোক আমার লেখা থেকে যদি এতোটুকুও আপনার প্রয়োজনে লাগে, সেটাই হবে আমার শ্রেষ্ঠ অর্জন।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।