জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি কত

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি — জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে, নবায়ন করতে হলে অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য সংশোধনের দরকার হলে বর্তমান সময়ে নির্ধারিত হারে ফি নেওয়া হবে। এই হার ১০০ টাকা থেকে ১০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি কত

২০০৮ সালে ছবি সহকারে ভোটার তালিকা তৈরির পর থেকেই বিনামূল্যে এই সেবা প্রদান করে আসছিল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন বিভাগ। প্রথমবার জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়ার জন্য নাগরিকদের কোনো ধরনের টাকা দিতে হবেনা। এই কার্ডের মেয়াদ থাকবে ১৫ বছর। নতুন নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের পরবর্তী সময়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়ন করার জন্য ফি দিতে হবে।

এই বিষয়ে আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফি কার্যকর করার জন্য বিধি মেনে প্রজ্ঞাপন এবং গেজেট হয়েছে। সময় বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। জাতীয় পরিচয়প্ত্র সংশোধিত লেমিনেটেড কার্ড নিতে হলে টাকা লাগবে। জরুরি কাজে দরকার হলে যেকোনো কার্ড নির্ধারিত ফি দিয়ে নিতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক না হলেও ভোটার এর তথ্য যাচাই-বাছাইয়ে সরকারি-বেসরকারি একাধিক সংস্থার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যার কারণে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারও অঘোষিতভাবে "বাধ্যতামূলক" হয়ে পড়েছে।

কোন কাজে কত টাকাঃ জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়ন করার জন্য ‘ফি’ ঠিক করা হয়েছে ১০০ টাকা মাত্র। তবে হ্যাঁ জরুরি ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়নের জন্য ফি দিতে হবে ১৫০ টাকা মাত্র। জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেললে অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র নষ্ট হলে আবার পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য স্বাভাবিক সময়ের জন্য প্রথমবার আবেদন করতে ২০০ টাকা ও জরুরি আবেদনে ৩০০ টাকা ‘ফি’ নির্ধারণ করছে। এছাড়াও দ্বিতীয়বার আবেদন করতে ৩০০ টাকা (সাধারণ), জরুরি প্রয়োজনে ৫০০ টাকা এবং পরবর্তী যেকোনো বার আবেদন করতে ৫০০ টাকা (সাধারণ) এবং তৃতীয় বার জরুরিভাবে পাওয়ার জন্য ১০০০ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করেছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র নষ্ট হলে বিকল্প পরিচয়পত্র সংগ্রহ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অনুবিভাগে আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে নতুন 'ফি' কমিশন সচিব বরাবর পে-অর্ডার অথবা অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে জমা দিতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি প্রথমবার ২০০, দ্বিতীয়বার ৩০০ এবং পরে প্রতিবারে ৪০০ টাকা করে দিতে হবে। এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য সংশোধনে করার জন্য প্রথমবার ১০০, দ্বিতীয়বার ২০০ টাকা এবং পরবর্তী যেকোনো বারে ৩০০ টাকা করে দিতে হবে।

নির্বাচন সচিব জানিয়েছেন যে, নির্ধারিত ফি সোনালী ব্যাংক ট্রেজারি চালান বা ইসি সচিবের অনুকূলে ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে কোড (নম্বরঃ ১-০৬০১-০০০১-১৮৪৭) নম্বর উল্লেখ করে টাকা পরিশোধ করতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য যাচাইয়ে যেকোনো সরকারি সংস্থাও কর্তৃপক্ষকে এককালীন ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। প্রতিটি তথ্য প্রতিবারে যাচাই করার জন্য খরচ করতে হবে মাত্র ২ টাকা। সরকারি সংস্থাও বিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষকে তথ্য উপাত্ত সরবরাহের ক্ষেত্রে এককালীন ৫ লাখ টাকা "সার্ভিস চার্জ" ধরা হয়েছে। প্রতিটি উপাত্ত সরবরাহে ১ টাকা করে দিতে হবে। প্রতিবছর ১ লাখ টাকায় এই সেবা নবায়ন করতে পারবে।

আরও পড়ুনঃ জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন অনলাইনে আবেদন

এনআইডির প্রস্তুতি নিয়ে সন্দেহঃ সারাদেশ থেকে ঢাকাতে প্রতিনিয়তই কয়েক লক্ষ্য মানুষ নির্বাচন কমিশন এনআইডি কার্যালয়ে এই সেবা নেয়ার জন্য আসেন। সেখানে দালাল চক্র ও এনআইডির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতে তাদের নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়। এসকল সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোন পদেক্ষপ নিতে দেখা যায়না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ অন্যান্য কমিশনাররা একাধিকবার বলেছেন যে, দেশব্যাপী নির্বাচন কমিশন সার্ভার স্টেশন চালু হলে উপজেলা পর্যায় থেকে মানুষ এই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে কারো আর ঢাকাতে আসার প্রয়োজন হবেনা। তবে কবে নাগাদ সার্ভার স্টেশনের নেটওয়ার্কিং এর কাজ শেষ হবে, তাকেউ নিশ্চিত করে বলছেন না।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আরো বলেন, মঙ্গলবার থেকে ফি নিয়ে সাধারণ এবং জরুরি সেবা দেয়ার জন্য যে প্রস্তুতি দরকার তা নির্বাচন কমিনারের নেই। নির্দিষ্ট বিভাগ অথবা জেলার ভোটারের জন্যে কোনো ডেস্ক কাজ করবে, কল সেন্টারের সুযোগ রাখা হবে কি-না, ওয়ান স্টপ সার্ভিস থাকবে কি-না এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে- এসকল নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা কর্মকর্তাদের দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে এনআইডির প্রধান বলেন, কোথায় কিভাবে ফি জমা দেয়া যাবে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। গণমাধ্যমেও সেটি প্রচার করা হবে। তিনি বলেন, ১ সেপ্টেম্বরের আগেই যারা সেবা পেতে আবেদন করেছে,তাদের কোনো অর্থ ব্যয় করার প্রয়োজন হবেনা। মানুষকে সচেতন করার জন্যেই এই ফি ধার্য করা হয়েছে।

বর্তমানে দেশে ৯ কোটি ৬২ লাখ ভোটারের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার জন্য সব মিলিয়ে সরকারের টাকা খরচ হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। আর এই এনআইডি কার্ড নবায়ন থেকে আয় হবে হাজার কোটি টাকা। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন ও জাতীয় পরিচয়পত্র হারানোর বিষয়ে গড়ে প্রায় এক হাজার ১০০ নতুন আবেদন পড়ছে। বর্তমান সময়ে যে লেমিনেটিং করা ম্যানুয়াল কার্ড দেওয়া হচ্ছে, তার মেয়াদ ১৫ বছর। 

তবে হ্যাঁ বর্তমান সময়ে যে স্মার্ট কার্ড দেয়া হচ্ছে তার মেয়াদ থাকবে ১০ বছর। যার কারণে আগামী ১০ বছর পরে এই এনআইডি কার্ডটি নবায়ন করতে হবে সকলকে। বর্তমান সময়ে দেশের ৯ কোটি ৬২ লাখ মানুষের বেশি ভোটারের তথ্য সংরক্ষিত আছে ইসির তথ্যভাণ্ডারে। এছাড়াও ১৮ বছর এর কম বয়সীদেরও কার্ড দেবার পরিকল্পনা আছে নির্বাচন কমিশনারের (ইসি)।

আরও পড়ুনঃ এনআইডি কার্ড NID Card ডাউনলোড করার নিয়ম

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!