র‍্যাম কি? প্রকারভেদ ও কাজ এবং প্রয়োজনীয়তা জেনে নিন

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

বর্তমানে কম্পিউটার বিষয়ক জটিল জিনিসগুলো নিয়ে আপনার জ্ঞান আছে কিনা সেটা পরের কথা। র‍্যাম মানে কি, র‍্যাম বলতে কি বোঝায়? তবে হ্যাঁ, কম্পিউটার বিষয়ক কিছু সাধারণ বিষয়গুলোর উপর আপনার জ্ঞান রাখাটা কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। সকল ধরনের কাজ বর্তমানে কম্পিউটারের সাহায্য করা হয়।

আর তাই, কম্পিউটার বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান যদি আপনার মধ্যে না থাকে, তবে ব্যাপারটা আপনার জন্য ফিউচারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমরা আজকে এই আর্টিকেলে কম্পিউটারের একটি বিশেষ অংশ এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে আলোচনা করবো। আর সেই জরুরি অংশটি হচ্ছে 'RAM'।

মনে রাখা ভালো, র‍্যাম বলতে কেবলমাত্র ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপের র‍্যামকে বোঝায় না। একটি র‍্যাম যেভাবে ডেক্সটপ এবং ল্যাপটপের জন্য প্রয়োজন একইভাবে স্মার্টফোন গুলোতেও র‍্যামের প্রয়োজনীয়তা সেইম।

কেননা আমাদের স্মার্টফোন গুলো হচ্ছে এক ধরণের কম্পিউটার ডিভাইস আর সেটাই কারণ যার জন্য, আমরা ডেক্সটপ ও মোবাইল এসকল ডিভাইস কেনার ক্ষেত্রে, সেখানে র‍্যাম কতটুকু আছে সেটা আগেই দেখে তারপর ক্রয় করি। তাই, ডেক্সটপ হোক অথবা আধুনিক স্মার্টফোন, র‍্যামের পরিভাষা দুটোর ক্ষেত্রেই সমান।

র‍্যাম কি

(toc) #title=(পোষ্ট সূচিপত্র)

র‍্যাম কি

র‍্যাম এর পূর্ণরুপ হচ্ছে 'র‌্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমোরি'। এছাড়া, কিছু ক্ষেত্রে র‍্যামকে 'Direct Access Memory' বলা হয়। র‍্যাম কম্পিউটারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি হার্ডওয়্যার। তবে হ্যাঁ, র‍্যামের পূর্ণরূপ ব্যাপারে জানার পরে হয়তোবা আপনি এই বিষয়ে কোনো কিছুই বুঝতে পারেন নি। চলুন র‍্যাম সম্পর্কে আমরা সামান্য সরল ও সহজভাবে বুঝতে চেষ্টা করি।

ডেক্সটপ অথবা স্মার্টফোনের র‍্যাম হচ্ছে এমন একটি 'স্টোরেজ মেমোরি ডিভাইস' যা কিছু সময়ের জন্য যেকোন 'অ্যাপ্লিকেশন' প্রসেস করার উদ্দেশ্য অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন তথ্য এবং ডাটাকে অস্থায়ীভাবে নিজের কাছে জমা রাখে।

কম্পিউটারকে দেয়া আপনার কাজের নির্দেশ অনুযায়ী, বিভিন্ন তথ্য র‍্যাম নিজের মেমোরিতে সংরক্ষিত করে রাখে। এতে করে, অনেক সহজে ও দ্রুতভাবে কম্পিউটার, আপনার নির্দেশ অনুযায়ী হিসেবে কাজগুলোকে প্রসেসরের কাছে তুলে দিতে পারে। আর, মনে রাখবেন র‍্যাম কেবলমাত্র কিছু সময়ের জন্য যেকোনো ডাটা নিজের কাছে জমা করে। কোনো কাজ প্রসেস হয়ে গেলে অথবা কম্পিউটার রিস্টার্ট এবং বন্ধ করে দিলেই সব অস্থায়ী তথ্য র‍্যাম থেকে মুছে যাবে।

র‍্যাম যেকোন কম্পিউটারের সকল বিষয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। কারণ, আমাদের কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোন কতবেশি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করবে, তা নির্ভর করবে র‍্যাম মেমোরির উপরে। আশা করি, র‍্যাম বলতে কি বোঝায় সেই বিষয়টি বোঝতে পারছেন?

কম্পিউটারে র‍্যাম এর কাজ কি

যখন আমরা কম্পিউটারকে কোন কাজ দেই, সেই কাজের সঙ্গে জড়িত ইনফরমেশন এবং ডাটাগুলোকে র‍্যাম নিজের কাছে সংরক্ষন করে নেয়। তারপর র‍্যাম এর সাহায্য সেই সকল অস্থায়ী ডাটাগুলোকে, প্রসেসর সহজেই সংগ্রহ করে, কাজগুলো সম্পন্ন করে নেয়। এছাড়া র‍্যাম এবং প্রসেসরের মধ্যে চলতে থাকা, এই ডাটা ও তথ্যগুলোর আদান-প্রদানের প্রক্রিয়া অনেক দ্রুততার সঙ্গে চলতে থাকবে।

আপনার কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনের মাঝে থাকা র‍্যাম যতবেশি উন্নতমানের ও অধিক ফ্রিকোয়েন্সির থাকবে, ততবেশি দ্রুততার সাথে এই ডাটা প্রসেসিং এর কাজগুলো হবে। আপনার কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোন ডিভাইসে যদি একটি র‍্যাম না থাকে, তবে সেই ডিভাইস কখনোই ওপেন হবেনা। কেননা, কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোন চালু করার পরে, অপেরাটিং সিস্টেম এর সঙ্গে জড়িত ডাটা ও তথ্যগুলোক র‍্যাম মেমোরিতে সেভ হয়।

এরপর র‍্যাম থেকে প্রসেসর আপনার কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেমের তথ্য বা ডাটাগুলোলে সেভ করে। শেষে, ডাটা প্রসেসিং হওয়ার পরে আমাদের কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোন বুট হয় তারপর ডিভাইস চালু হয়।

তাই র‍্যাম হচ্ছে যেকোন কম্পিউটারের এমন একটি টেম্পোরারি স্টোরেজ মেমোরি, যেখানে কম্পিউটারে ইন্সটলকৃত অ্যাপ্লিকেশান, সফটওয়্যার, ইনফরমেশন গুলোর সঙ্গে জড়িত ডাটা এবং মেশিন কোড গুলো অস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ হয়ে থাকে। আর এই র‍্যাম মেমোরির থেকে প্রসেসর ডাটা বা ইনফরমেশন গুলোকে সংগ্রহ করে, যেকোন কাজ সম্পন্ন করে। র‍্যাম আকার, ক্ষমতা, গঠন, স্থাপত্য ও দ্রুততা হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। 

র‍্যাম নিয়ে এই বিষয়গুলোতে ধ্যান দেয়াটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যখন আপনি একটি কম্পিউটার ডিভাইস কেনার অথবা কম্পিউটার আপগ্রেড করার কথা চিন্তাভাবনা করছেন।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনে যেকোন একটি অ্যাপ্লিকেশান ওপেন করলেন। ধরুন সেই অ্যাপ্লিকেশানটি হচ্ছে একটি ওয়েব ব্রাউজার।

এখন, আপনি অ্যাপ্লিকেশানটিতে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে, সেই ওয়েব ব্রাউজার অ্যাপ্লিকেশানের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকটি ডাটা এবং তথ্য ডিভাইসের র‍্যাম মেমোরিতে সেভ হয়ে যাবে। তারপর র‍্যামের থেকেই অ্যাপ্লিকেশানটির ডাটা ও তথ্যগুলোকে প্রসেসরের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। একবার প্রসেসর অর্থাৎ CPU দ্বারা ডাটা বা তথ্যগুলোকে প্রসেস হয়ে যাওয়ার পর, আপনার কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনে সেই ওয়েব ব্রাউজার অ্যাপ্লিকেশানটি চালু হয়ে যাবে।

এখন একবার ভাবুন তো, অ্যাপ্লিকেশানটিতে ক্লিক করার সময় থেকে শুরু করে অ্যাপ্লিকেশান চালু হওয়া অব্দি কতটুকু কাজ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, তার সকল কিছুই কেবলমাত্র কয়েক মিলি সেকেন্ডের মধ্যেই সম্পূর্ণ হচ্ছে। কেননা, র‍্যাম এবং প্রসেসর মধ্যে হওয়া এই প্রক্রিয়া অনেক হাজার গুন দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হয়।

র‍্যামে কাজ এটাই যে, কম্পিউটারের মধ্যে যেকোন কাজ হওয়ার সময়, সেই কাজের সঙ্গে জড়িত ডাটা, তথ্য এবং মেশিন কোডগুলোকে নিজের কাছে সংরক্ষন অর্থাৎ জমা করে রাখে।

তাহলে আশা করি এখন বুঝতে পারছেন যে র‍্যামের কাজ কি। মনে রাখা ভালো, ডিভাইসে র‍্যাম এর সাইজ যতবেশি হবে, সেই ডিভাইসে ততবেশি সহজভাবে মাল্টিটাস্কিং করা যাবে এবং সেই ডিভাইস হ্যাং করবেনা। 

কেননা, ডিভাইসে বেশি র‍্যাম থাকা মানেই হচ্ছে, ডিভাইসের কাছে অধিক অস্থায়ী মেমোরি থাকা। আর ডিভাইসে অধিক অস্থায়ী মেমোরি থাকা মানেই হচ্ছে, অধিক কাজ করার জন্যে অধিক বেশি পরিমাণের ডাটা এবং তথ্য র‍্যামের কাছে অস্থায়ীভাবে জমা রাখা। সাধারণত আমরা ১ জিবি, ২ জিবি, ৪ জিবি, ৮ জিবি, ১৬ জিবি, ৩২ জিবি র‍্যাম ব্যবহার করে থাকি।

র‍্যাম এর প্রকারভেদ

র‍্যাম কাকে বলে এবং কিভাবে কাজ করে এই বিষয়ে জানলাম। এখন আমরা জানবো র‍্যাম এর বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে। বর্তমানে প্রায় যেকোন কম্পিউটিং ক্যাপাবল ডিভাইস গুলোতে র‍্যাম এর দরকার। যেমন- কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেটস, এইচডি টিভি ইত্যাদি। আর প্রত্যেক আলাদা আলাদা ডিভাইস গুলোতে ব্যবহার হওয়া র‍্যাম মেমোরি কাজ ও উদ্দেশ্যে প্রায় একই।

কম্পিউটারে র‍্যাম মেমোরি মূলত ৬টি ভিন্ন ভিন্ন প্রকারভেদ দেখা যায়। তবে হ্যাঁ, প্রত্যেকটি র‍্যাম এর কাজ করার ক্ষমতাও আলাদা আলাদা হতে পারে। 

৬টি কম্পিউটার র‍্যাম এর প্রকারভেদ

  • SRAM- Static RAM.
  • DRAM- Dynamic RAM.
  • SDRAM- Synchronous Dynamic RAM.
  • SDR SDRAM- Single Data Rate Synchronous Dynamic RAM.
  • DDR SDRAM, DDR2, DDR3, DDR4 - Double Data Rate Synchronous Dynamic RAM.
  • GDDR SDRAM, GDDR2, GDDR3, GDDR4, GDDR5- Graphics Double Data Rate Synchronous Dynamic RAM.

তাহলে চলুন র‍্যামের প্রকারভেদ বিষয়গুলোকে ভালোভাবে জেনে নেই। 

Static Ram (SRAM)

এই ধরণের র‍্যাম মার্কেটে আনা হয়েছিল ১৯৯০ সালে। আর, বর্তমান সময়ে এই ধরনের র‍্যাম গুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিজিটাল ক্যামেরা, প্রিন্টার, এলসিডি স্ক্রিন ইত্যাদি ডিভাইস গুলোতে এই স্ট্যাটিক র‍্যাম গুলোকে ব্যবহার করা হয়।

Dynamic Ram (DRAM)

প্রায় ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে এই DRAM র‍্যাম গুলোর প্রচলন ছিলো। এমনিতেই, ভিডিও গেমিং কনসোল, নেটওয়ার্ক হার্ডওয়্যার এবং এই ধরনের ডিভাইস গুলোতে এই DRAM র‍্যাম গুলো ব্যবহার করা হতো।

Synchronous Dynamic RAM (SDRAM)

১৯৯৩ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই ধরণের SDRAM র‍্যাম ব্যবহার করা হচ্ছে। কম্পিউটার মেমোরি এবং ভিডিও গেমিং কনসোলের ক্ষেত্রে এই র‍্যাম গুলোকে ব্যবহার করা হয়।

Single Data Rate Synchronous Dynamic RAM (SDR SDRAM)

১৯৯৩ সালের দিকে এই SDR SDRAM গুলো মার্কেটে আসছিলো আর বর্তমানেও আছে। এই ধরনের র‍্যাম গুলো কম্পিউটার মেমোরি এবং ভিডিও গেমিং কনসোলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। তবে, এই SDR SDRAM ধরনের র‍্যাম গুলো কিছু উন্নতমানের।

Double Data Rate Synchronous Dynamic Ram (DDR SDRAM)

২০০০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই ধরনের র‍্যাম গুলো অনেক বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। কম্পিউটার মেমোরি হিসেবে DDR SDRAM গুলো ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটার ডিভাইসগুলোর জন্য অনেক স্মার্ট, দ্রুতগতি এবং অনেক উন্নতমানের র‍্যাম মেমোরি হচ্ছে এই DDR SDRAM গুলো।

Graphics Double Data Rate Synchronous Dynamic RAM (GDDR SDRAM)

প্রায় ২০০৩ সাল এর পর থেকে এই ধরনের র‍্যাম মার্কেটে আসছিলো এবং বর্তমান সময়েও আছে। এই ধরনের র‍্যাম গুলো মূলত ভিডিও গ্রাফিক্স কার্ড গুলোতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে হ্যাঁ, কিছু ট্যাবলেট ডিভাইস গুলোতেও GDDR SDRAM র‍্যাম গুলোর ব্যবহার করা হয়েছে।

বিশেষ করে, ভিডিও গ্রাফিক্স কার্ড RENDERING ও Dedicated GPU (Graphics Processing Unit) এর উদ্দেশ্যে এই ধরনের GDDR SDRAM র‍্যাম তৈরি করা হয়েছে। High Definition Realistic Video এবং 720p ও 1080p High-Resolution Displays View ও Gaming এর জন্য, এই ধরণের GDDR র‍্যাম ব্যবহার হয়।

র‍্যাম ও রমের মধ্যে পার্থক্য

সাধারণত, র‍্যান্ডম এক্সেক্স মেমোরি (র‍্যাম) এবং রিড অনলি মেমােরি (রম মাঝে তেমন বিশেষ কোন পার্থক্য নাই। কেননা এই দুটি হচ্ছে এমন এক মেমোরি ডিভাইস বা হার্ডওয়্যার যেখানে ডাটা ও তথ্য সেভ করে রাখা হয়। তবে হ্যাঁ, ক্ষমতা ও কার্যশক্তি হিসাবে দেখলে এই দুটি ডিভাইসের মধ্যে প্রায় অনেক পার্থক্য আছে।

Memory Nature or Type

র‍্যম কেবলমাত্র কিছু সময়ের জন্যে অস্থায়ী ভাবে, বর্তমানে CPU প্রসেসর দ্বারা ব্যবহার হওয়া ডাটা, তথ্য এবং মেশিন কোড গুলো নিজের মাঝে সঞ্চিত করে রাখা। কিন্তু হ্যাঁ রম মেমোরির ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ণ বিপরীত। একটি ROM রম হচ্ছে কম্পিউটারের এমন একটি মেমোরি যেখানে ডাটা, তথ্য বা ফাইল বা ডকুমেন্ট স্থায়ীভাবে সংরক্ষন করে রাখা হয়। কম্পিউটারের Bootstrap এর ক্ষেত্রে জরুরি ডাটা ও তথ্য এ রম মেমোরিতে রাখা হয়। যেমন, কম্পিউটারের Bios এবং Framework.

Data access permission

র‍্যাম মেমোরিতে থাকা ডাটা এবং তথ্য গুলো যেকোন সময় রিড, রাইট এবং ডিলিট করা যেতে পারে। আর সেটাও বার বার করা সম্ভব। কিন্তু রম মেমোরিতে থাকা ডাটা এবং তথ্য গুলো কেবল রিড করা যেতে পারে। তাই, এটাকে বলা হয় 'রিড অনলি মেমরি'।

Data availability

আপনার কম্পিউটার ডিভাইস রিস্টার্ট অথবা টার্ন অফ করলে, র‍্যামে থাকা ডাটা ও তথ্য গুলো ডিলিট হয়ে যায়। কারণ র‍্যাম হচ্ছে 'ভায়োলেট মেমোরি' এবং যতক্ষণ পর্যন্ত এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে, ততোক্ষণ পর্যন্ত এটি ডাটা ও তথ্য স্টোর ও জমা করতে পারবে। কিন্তু, কম্পিউটার ডিভাইস টার্ন অফ করলেও রম মেমোরিতে থাকা তথ্য ও ডাটা ডিলিট হয়ে যাবেনা। সেগুলো নিজের জায়গাতেই থেকে যাবে। কেননা, রম হচ্ছে ' নন-ভায়োলেট-মেমোরি'। যা বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়াও ডাটা ও তথ্যকে নিজের মধ্যে জমা রাখতে পারে।

Speed

কম্পিউটারের র‍্যাম হচ্ছে অনেক দ্রুত গতির মেমোরি। কিন্তু র‍্যাম এর তুলনায় রম মেমোরি অনেক বেশি পরিমাণে ধীর গতির।

CPU Interaction

র‌্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমরিতে সেভ করা ডাটা ও তথ্যগুলো সিপিইউ সোজাভাবে অ্যাক্সেস করতে পারে। কিন্তু রিড অনলি মেমোরি ROM এর মধ্যে সঞ্চিত ডাটা ও ইনফরমেশন গুলো সিপিইউ অ্যাক্সেস করতে পারেনা। তবে হ্যাঁ, সেই ডেটা এবং ইনফরমেশন গুলো র‍্যাম মেমোরিতে সেভ থাকলে, সেগুলো সিপিইউ দ্বারা এক্সেক্স করা যেতে পারে। 

Size and Capacity

র‍্যামগুলো একসাথে অনেক বেশি সাইজের থাকে এবং এগুলোর ধারণক্ষমতা অনেক বেশি। কিন্তু রমগুলোর সাইজ অনেক কম আর এদের ধারণক্ষমতা সীমিত।

ব্যবহার

CPU Cache এবং প্রাইমারি মেমোরির ক্ষেত্রে, র‍্যামগুলোকে ব্যবহার করা হয়। তবে, Firmware, Bios এবং Micro-Controllers এর ক্ষেত্রে রম ব্যবহার করা হয়।

Accessibility

র‍্যামের মধ্যে সেভ করা ডেটা ও ইনফরমেশন গুলো সহজে অ্যাক্সেস করা যায়। তবে রম এর মধ্যে সেভ করা ডেটা ও ইনফরমেশনগুলোকে সহজে অ্যাক্সেস করা যায়না।

মূল্য

RAM মেমোরির দাম অনেক বেশি। তবে, র‍্যাম এর তুলনায় রম মেমোরির দাম অনেক কম।

আশা করছি র‍্যাম এবং রম এর মাঝে পার্থক্য কি তা আপনি সহজেই বুঝতে পারছেন।

আরো পড়ুন - সেরা ১০ টি ওয়েব ব্রাউজার | ২০২৪ সালের সেরা ১০টি ওয়েব ব্রাউজার

কম্পিউটারে কতটুক র‍্যাম এর প্রয়োজন

দেখুন, আপনার এই প্রশ্নের উত্তর ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন উত্তর হতে পারে। কেননা, উন্নত মানের ও অধিক ক্ষমতা সম্পূর্ণ থাকা র‍্যাম ব্যবহার করার জন্যে আপনার কম্পিউটারে থাকতে হবে প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার।

তবে হ্যাঁ, বর্তমান সময়ে DDR3 ও DDR4 মডেলের র‍্যাম ব্যবহার করা হচ্ছে। DDR3 ও DDR4 র‍্যাম আধুনিক ও উন্নতমানের র‍্যাম যেগুলোর কার্যক্ষমতা অনেক ভালো এবং দ্রুত। তাই, যদি আপনি একটি নতুন কম্পিউটার ক্রয় করার কথা ভাবেন, তবে সেই কম্পিউটারে DDR4 এর র‍্যাম ব্যবহার করুন।

তাছাড়া, র‍্যাম মেমোরির ফ্রিকুয়েন্সি যতবেশি থাকবে, তত দ্রুততার সাথে ও স্মুথভাবে কম্পিউটার কাজ করতে পারবেন। কেননা র‍্যাম ফ্রিকুয়েন্সি মূলত র‍্যামের এর দ্রুততার পরিমাণ বোঝায়। তাই, যতবেশি র‍্যামের ফ্রিকুয়েন্সি থাকবে ততবেশি দ্রুত হবে আপনার র‍্যাম। উদাহরণস্বরূপে, 1600MHz, 2400MHz, 2133MHz, 3200 MHz এছাড়াও আরো অনেক ফ্রিকুয়েন্সির র‍্যাম আছে। শেষে এখন আপনার ধ্যান দিতে হবে র‍্যামের সাইজের উপরে।

র‍্যাম ফ্রিকুয়েন্সির মতোই, যতবেশি র‍্যামের সাইজ থাকবে, ততবেশি স্মুথভাবে কম্পিউটারের সকল কাজ করতে পারবেন। এতে করে আপনার কম্পিউটার স্লো হয়ে যাওয়া বা হ্যাং হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেবেনা। কেননা, র‍্যামের সাইজ বেশি হওয়া মানেই, প্রসেসর দ্বারা কম্পিউটারে একটি সময়ে অনেক কাজ এক সঙ্গে করা যেতে পারা। আমরা মূলত যাকে বলি মাল্টিটাস্কিং।

আপনি মার্কেটে আলাদা আলাদা সাইজের এর র‍্যাম পেয়ে যাবেন। যেমন, ২ জিবি, ৪ জিবি, ৮ জিবি, ১৬ জিবি, ৩২ জিবি এবং ৬৪ জিবি। তাই, আপনার কম্পিউটারে ব্যবহার করার জন্য একটি ভালো ফ্রিকুয়েন্সির অধিক সাইজের র‍্যাম থাকা ভালো অবশ্যই হবে। যেমন, 2400MHz থেকে 3200 MHz এর ফ্রিকুয়েন্সি থাকা একটি ৮ জিবির র‍্যাম।

আরও পড়ুন - কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি

উপসংহার

আজকের লেখা থেকে আমরা জানলাম, র‍্যাম কাকে বলে ও এর কাজ কি? বিভিন্ন প্রকারের র‍্যাম এবং 'RAM এবং ROM এর মাঝে পার্থক্য কি কি'। কম্পিউটারের দ্রুততর স্পীড এবং কার্যক্ষমতা পূর্ণরূপে, র‍্যাম এবং প্রসেসরের উপরেই নির্ভর করবে। কারণ, কম্পিউটারের এই দুটো হার্ডওয়্যার আপনার নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোন কাজ সম্পন্ন এবং প্রসেস করে।

তাই, ডিভাইসে র‍্যাম যতবেশি উন্নত, হাই ফ্রিকুয়েন্সির এবং অধিক বেশি সাইজের ব্যবহার করবেন, আপনার কম্পিউটার ততবেশি দ্রুতভাবে ও হ্যাং না হয়ে কাজ করতে থাকবে। কম্পিউটার এবং ল্যাপটপের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কোন প্রশ্ন এবং সমস্যা থাকলে, নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই জানিয়ে দিন।

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!