ডায়াবেটিস কমানোর উপায় | ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম | ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা — ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া প্রতিকার সুগার কমাতে খুবই উপকারী। আমাদের দেশে ডায়াবেটিস একটি বিস্তৃত ও লাগাতার হওয়া একটি সমস্যা। সাধারণভাবে, ডায়াবেটিসের দুটি প্রধান প্রকার আছে।
১। টাইপ-১ ডায়াবেটিসঃ যেখানে শরীর মোটেও ইনসুলিন উৎপাদন করেনা।
২। টাইপ-২ ডায়াবেটিসঃ যা শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না অর্থাৎ যা শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন করে সেটা চিনির শোষণে সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা আমাদের রক্ত থেকে।
বর্তমানে সারাবিশ্বে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এই হরমোনজনিত ব্যাধি স্ট্রোক, হৃদরোগ, যকৃতের ক্ষতি, কিডনির বিকল এবং ছানি ছত্রাকের পাশাপাশি কম গুরুতর শরীরে স্বাস্থ্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগ ক্রমশ সাধারণ এবং জীবনের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে পরিণত হচ্ছে। কিছু সাধারণ জীবন যাত্রার পরিবর্তন করেই আপনি ডায়াবেটিসকে আপনার জীবনে আসতে বাধা প্রদান করতে পারেন এবং ডায়াবেটিস নিরাময়ের জন্যে ঘরোয়া প্রতিকারই সর্বোত্তম সেরা প্রতিকার। এই প্রতিকারগুলোর মধ্যে আছে দারুচিনি, মেথি, করলা, আমলা, বেরি, সূর্যের আলো প্রভৃতি গুল্ম এবং মশলা।
যখন কোনো ব্যক্তির ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, তখন তার দেহে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি হয়না বা এটি সঠিকভাবে ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারেনা তাই গ্লুকোজ রক্তে জমা হয়। উচ্চমাত্রায় রক্তে শর্করার কারনে ক্লান্তি থেকে শুরু করে হৃদরোগ পর্যন্ত অনেকগুলো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি ভালো উপায়। শরীর থেকে আস্তে আস্তে শর্করা শুষে নেয় এমন খাবার এবং পানীয়গুলো সর্বোত্তম কারন তারা রক্তে শর্করায় হঠাৎ স্পাইক উ ডাইপ সৃষ্টি করেনা। চলুন জেনে নেই ডায়াবেটিস কমানো ঘরোয়া উপায়। ডায়াবেটিস কমানোর উপায়। ডায়াবেটিস কমানোর ব্যায়াম।
ডায়াবেটিস কমাতে এই আর্টিকেলে কিছু প্রাকৃতিক ও আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া প্রতিকার আছে যার সাহায্যে আপনি আপনার সুগার স্তরকে প্রাকৃতিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
নিয়মিত ব্যায়াম | ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম
নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার ওজন হ্রাস কমাতে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। ব্যায়াম আপনার পেশীগুলোকে শক্তি ও পেশী সংকোচনের জন্যে রক্তে চিনির ব্যবহার করতে সাহায্য করবে। যদি আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে আপনার নিয়মিত আপনাকে চিনির স্তর পরীক্ষা করা দরকার। ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম এর ভালো ফর্মগুলোর মধ্যে আছে দৌড়ানো, ওজন উত্তোলন, বাইক চালানো, দ্রুত হাঁটাচলা, হাইকিং ও সাঁতার কাটা সহ ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ নিয়মিত হাঁটার উপকারিতা
নিম পাতা | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
নিম গাছের তেতো পাতা ডায়াবেটিসের কার্যকর নিরাময় যা আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। নিম বিটা কোষগুলোতে ইনসুলিন রিসেপ্টর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এবং হাইপোগ্লাইকাইমিক ড্রাগের উপরে নির্ভরতা কমিয়ে থাকে। নিমের পাতা ব্যবহার করে শরীরের দ্বারা ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে দেখা গেছে।
করলা | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
ডায়াবেটিস হ্রাস করতে তেতো খাবার একটি ভালো ঘরোয়া উপায়। করলা হচ্ছে– ইনসুলিন-পলিপেপটাইড-পি সমৃদ্ধ। যা হাইপারগ্লাইসেমিয়ার মাত্রা বাড়ানোর ক্ষমতা রাখে। করলাতে রয়েছে ক্যারোটিন ও মমর্ডিসিন নামক ২টি প্রয়োজনীয় যৌগ যা শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ যৌগিক। ডায়াবেটিস হ্রাস করতে প্রতি সপ্তাহে একবার হলেও করলার তরকারি হিসেবে ব্যবহার করুন।
এছাড়াও আপনি করলার টুকরোগুলোকে কেটে নিন ও বীজ বের করার পরে সেই কাটা করলা গুলোকে একটি ব্লেন্ডারে রেখে দিন তারপর রস তৈরি হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে এই করলার রস একটি ছোটো গ্লাসে পান করুন। করলার রস পানি করার সাহায্যে আপনি আপনার শরীরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
সূর্যের আলো | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
সূর্যের আলো ডায়াবেটিস হ্রাস করতে সাহায্য করে। সাম্প্রতিক সময়ে, গবেষকরা ইনসুলিন প্রতিরোধের জন্য এবং ডায়াবেটিসের কারণ হিসেবে কম ভিটামিন-ডি স্তর খুঁজে পেয়েছেন। গবেষণায় জানা গেছে যে শরীরে ইনসুলিন তৈরি করতে ভিটামিন-ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যার শরীরে ভিটামিন-ডি পরিমাণ কম, তার শরীরে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ততো বেশি থাকে।
শরীরে সুগার হ্রাস করতে এবং ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি পূরণ করতে প্রত্যেকদিন ৩০ মিনিটের জন্যে রোদে চলাফেরা করুন। এগুলো ব্যতীত আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে আপনার সয়া দুধ, কমলার রস, দই, পনির এবং সিরিয়াল জাতীয় ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার গুলোকে প্রতিদিনের খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
আরও পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
দারুচিনি | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
ডায়াবেটিস কমাতে দারুচিনি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে ও ইনসুলিন কার্যকলাপকে উদ্দীপিত করে দেহের রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করে। ডায়াবেটিস কমাতে দারুচিনি হচ্ছে একটি ভালো এবং সাধারণ ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া প্রতিকার। দারুচিনি হচ্ছে একটি অলৌকিক মশলা যা সকল বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ হয়ে থাকে এবং দারুচিনি জৈবিক কার্যকলাপগুলা যেমন- সিনামিক অ্যাসিড ও সিনামালডিহাইড (সিনামালডিহাইড) দিয়ে বোঝা হয়। দারুচিনি ডায়াবেটিস রোগীর স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করতে পারে।
দারুচিনি ডায়াবেটিস কমানোর জন্য বিখ্যাত আর ইনসুলিন কার্যকলাপ আপনার দেহের উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা কম করে। এক কাপ গরম পানিতে আপনি যদি আধা থেকে এক চা চামচ করে দারুচিনি মিশিয়ে প্রতিদিন পান করতে পারেন। তাহলে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আনতে পারবেন। আপনি চা, মসৃণ ও বেকড মিষ্টান্ন গুলোতে দারুচিনি যুক্ত করে খেতে পারেন।
আমলকি | ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম
আমলকিতে থাকা ঔষধি গুণাগুণ আপনার ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করবে। আমলকি ভিটামিন-সি এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস আর আম্লকি আপনার অগ্ন্যাশয়কে ভালো ইনসুলিন তৈরি করতে সাহায্য করে যাতে করে আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করার জন্য ২ থেকে ৩টি আমলকি নিয়ে নিন এবং সেই আমলকি গুলোকে পিশে নিন তারপর পিশে রস বাহির করে নিন।
এক কাপ পানিতে প্রায় ২ চা চামচ সেই রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে খেয়ে নিন। এছাড়াও রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস করতে এক কাপ করলার রস ও ১ টেবিল চামচ কুঁচির রস মিশিয়ে নিয়মিত পান করুন। আপনি প্রতিদিন এনিতেই কাঁচা আমলকি খেতে পারেন এতে আপনার লাভ। প্রতিদিন আমলকি খাওয়ার কারণে ডায়াবেটিস কমানো বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব।
পানি পান করুন | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
অতিরিক্ত পানি পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের পক্ষ্যে পানি শূন্যতার ঝুঁকি বেশি। গ্লুকোজ থেকে মুক্তি পেতে কিডনিগুলো প্রস্রাবের মাঝে এটি নির্গত করার চেষ্টা করবে, তবে এটার জন্য পানি প্রয়োজন। সুতরাং আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ যতবেশি হবে ততবেশি তরল পানি করা দরকার। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হচ্ছে তৃষ্ণা। আপনার শরীর থেকে চিনি হ্রাস করতে আপনাকে প্রতিদিন ২.৫ লিটার পানি খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃ মন ভালো রাখার উপায়
আম পাতা | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
আমের পাতা আপনাকে দেহে ডায়াবেটিসের পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে। রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সূক্ষ্ম ও কোমল আমের পাতাগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিত্সার জন্য তাজা আমের পাতা হ’ল কার্যকর ঘরোয়া উপায়। আমের পাতায় ভিটামিন সি, এ এবং ট্যানিন থাকে যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডায়াবেটিসের প্রাথমিক চিকিত্সায় সহায়তা করে। ডায়াবেটিস কমাতে আমের পাতাগুলি ধুয়ে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। প্রতিদিন সকালে ও রাতে এই গুঁড়ো জল দিয়ে পান করুন। এক গ্লাস জলে কিছু তাজা আমের পাতা সিদ্ধ করে সারা রাত ঠান্ডা হতে দিন। সকালে খালি পেটে এর জল পান করুন.
মেথি | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
মেথি হচ্ছে ডায়াবেটিস কমানোর সবথেকে সহজ উপায় এবং সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি। মেথি ডায়াবেটিস কমাতে, গ্লুকোজ সহনশীলতা বৃদ্ধি করতে এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস করতে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ মেথির মাঝে ফাইবার বেশি পরিমাণে থাকে। মেথি খেলে হজম শক্তি কমে, যাতে করে রক্তে সুগার ঠিকভাবে শুষে যায়। এটি টাইপ-১ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস দুই প্রকার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক বেশি কার্যকর। মেথি আমাদের দেশের রান্না ঘরে একটি সাধারণ ভাবে ব্যবহৃত ঔষধি যার অনেক উপকারিতা আছে।
মেথি ডায়াবেটিস কমাতে, গ্লুকোজ সহনশীলতা বৃদ্ধি করতে, রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে এবং গ্লুকোজ হজমের জন্যে ইনসুলিনের নিঃসরণকে উৎসাহিত করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে ২ চা চামচ মেথি বীজ সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। আর প্রত্যেকদিন সকাল বেলা খালি পেটে মেথি বীজ দিয়ে সেই পানি পান করুন। এছাড়াও প্রতিদিন মেথি বীজের গুঁড়ো গরম করে অথবা ঠান্ডা পানি কিংবা দুধের সাথে পান করুন।
কালোজাম | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
কালোজাম রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। কেননা কালােজামে আছে এলাজিক এসিড, অ্যান্টোসায়ানিনস এবং হাইড্রোসিলাইলেবল ট্যানিনস (হাইড্রোলাইজেবল ট্যানিনস) যেগুলো এক ধরণের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। কালোজামের প্রায় প্রত্যেকটি অংশ যেমনঃ কালোজামের পাতা ও কালোজামের বীজ ডায়াবেটিস পীড়িত মানুষদের জন্য এক ধরনের সুপারফুড।
গবেষণায় জানা গেছে যে এই গাছের বীজের হাইপোগ্লাইসেমিক প্রভাব আছে, যার মানে তারা রক্তের সুগার ও মূত্রের সুগার দ্রুত কমাতে সাহায্য করে যদিওবা এটি সাধারণ স্তরের নীচে না। আপনি কালোজামের শুকনো বীজ গুঁড়া তৈরি করতে পারেন এবং এই গুঁড়া গুলো দিনে ২ বার পানি দিয়ে পান করতে পারেন।
পেয়ারা | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
ভিটামিন-সি এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকার ফলে পেয়ারা খাওয়া রক্তে শর্করার পরিমাণ ধরে রাখতে সাহায্য করতে পারে। পেয়ারা খাওয়ার কারনে বিপাককে ধীর করে দেয়, যার কারণে খাদ্য থেকে সুগার ভালো রক্তে শর্করার শোষণের দিকে নিয়ে যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষ্যে সুগারের পরিমাণ কমানোর জন্য পেয়ারা ফলের খোসা গুলো না খাওয়াই ভালো। তবে দিনেদিনে খুব বেশি পেয়ারা খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়না। কেননা পেয়ারাতে পটাসিয়াম আছে যা শরীরের জন্যে পরবর্তীতে ক্ষতিকারক হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ রাগ কমানোর সহজ উপায়
সজনে পাতা | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
সজনে পাতা কিংবা সজনে ডাটা সুগার হ্রাস করতে কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি। সজনে পাতা রক্তে শর্করার পরিমাণ বজায় রাখা ও শক্তি বাড়াতে সক্ষমতার জন্যে পরিচিত। সজনে পাতায় মাঝে এমন পুষ্টি থাকে যা শরীরের ইনসুলিনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। এই সজনে পাতাগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুলোতেও সমৃদ্ধ ও এন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ আছে। ডায়াবেটিস হ্রাস করতে, আপনার খাদ্য তালিকায় ৫০ গ্রাম তাজা সজনে পাতা তালিকাভুক্ত করুন। এই সজনে পাতাগুলো রক্তে সুগার ২০ শতাংশ হ্রাসের পাশাপাশি আপনার খাবারের স্বাদও বাড়িয়ে তুলবে। তাছাড়াও আপনি সজনে পাতা সালাদ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
কারীপাতা | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
কারীপাতা ডায়াবেটিস কমাতে একটি ভালো ঘরোয়া পদ্ধতি হতে পারে। কারীপাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধে কার্যকর। কারণ এগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাঝে স্টার্চ থেকে গ্লুকোজ ভাঙ্গার হারকে হ্রাস করে।
তুলসী পাতা | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করতে তুলসীর পাতাতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং প্রয়োজনীয় তেলের সংমিশ্রণ পাওয়া যায়। সম্মিলিতভাবে এই যৌগগুলো যেমনঃ মিথাইল ইউজেনল, ইউজেনল এবং কেরিওফিলিন, অগ্ন্যাশয় বিটা যা কোষগুলোকে ইনসুলিন তৈরির জন্য দায়ী, সঠিকভাবে কাজ করার জন্য সাহায্য করে। তুলসী পাতার একটি অতিরিক্ত সুবিধা হচ্ছে পাতায় উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমিয়ে দেয়।
অতিরিক্ত ভাবে এটিও পাওয়া গেছে যে তুলসী ইনসুলিন উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত ৭ শতাংশ এবং খাবারের পরে রক্তে শর্করার পরিমাণ ১৭ শতাংশ হ্রাস করে। রক্তের শর্করার পরিমাণ কমাতে আপনি খালি পেটে তুলসী পাতা সম্পূর্ণ অথবা প্রায় এক চা চামচ তুলসী পাতার রস খেতে পারেন।
অ্যালোভেরা | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
অ্যালোভেরা গ্রহণ করা সুগার কমানোর জন্য একটি উপকারী চিকিৎসা। অ্যালোভেরা হচ্ছে ফাইটোস্টেরল সমৃদ্ধ। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস পীড়িত ব্যক্তিদের ওপরে অ্যান্টি হাইপারগ্লাইসেমিক প্রভাব ফেলতে পারে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে এটি আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস করতে একটি নিরাপদ ও প্রাকৃতিক উৎস। এছাড়াও আপনি হলুদ ও অ্যালোভেরার মিশ্রণ প্রস্তুত করতে পারেন। এই ভেষজ ওষুধ রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার হয়।
তিসি বীজ | ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
তিসি বীজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলোতে সমৃদ্ধ ও সেগুলো গ্রহণের কারণে ইনসুলিন কমাতে পারে, সম্ভবত শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কম হওয়ার কারণে। তিসি বীজে ফাইবারের পরিমাণ বেশি ও যার কারণে চর্বি ও শর্করার যথাযথ শোষণে সাহায্য করে। ফ্লেক্সসিড গ্রহণ করে ডায়াবেটিস পরবর্তী চিনির পরিমাণ প্রায় ২৮% হ্রাস করতে সাহায্য করে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়িয়ে তোলে। প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে এক চা চামচ করে গুঁড়ো ফ্ল্যাকসিডের গুঁড়া এক গ্লাস গরম পানি দিয়ে পান করুন। তবে হা, প্রতিদিন ২ টেবিল চামচ বেশি ফ্ল্যাকসিডের বীজ কখনও গ্রহণ করবেন না।
মনে রাখবেনঃ যেকোনো চিকিৎসা গ্রহণ করার পূর্বে, আপনার সুগার স্তরটি পরিক্ষা করে নিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শের পরেই ডায়াবেটিস কমাতে কোনো ঘরোয়া প্রতিকার অবলম্বণ করতে ভুলবেন না।
শেষ কথা
আমি আশা করি আপনি অবশ্যই এই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় | ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম | ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা আর্টিকেলটি পছন্দ করেছেন। যদি আপনার এই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে আমি সার্থক। আমি সর্বদা এই কামনা করি যে আপনি সঠিক তথ্য পেয়ে জান। এই পোস্টটি সম্পর্কে আপনার যদি কোনো সন্দেহ থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই নীচে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন। শেষে যদি আপনি আর্টিকেলটি পছন্দ করেন ডায়াবেটিস কমানোর উপায় তাহলে অবশ্যই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় আর্টিকেলটি সমস্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে এবং আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস যেসব রোগের কারণ হতে পারে, ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কী?
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।