মোবাইলে ডাটা খরচ কমানোর উপায় | মোবাইলের ডাটা খরচ কমানোর সহজ উপায় — আজকাল আমাদের প্রায় সকলের ঘরেই রাউটার রয়েছে৷ এজন্য ইন্টারনেট নিয়ে খুব একটা সমস্যা হয়না। কিন্তু ধরুন যখন ইন্টারনেটে জরুরি একটি কাজ করছেন আর কারেন্ট চলে গেলো, তখন আপনার কি অবস্থা হবে? আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন কি আর হবে ডাটা কিনে নিবো কিছুক্ষণের জন্য। ঠিক আছে বুঝলাম। ভ্যাকেশনে গ্রামের বাড়িতে তো রাউটার থাকে না। তখন কীভাবে ইন্টারনেট চালাবেন? নিশ্চয়ই ডাটা ব্যবহার করে। কিন্তু আপনি গ্রামে থাকবেন অনেকদিন।
তাহলে কিছুক্ষণ কিছুক্ষণ করে কতবার ডাটা ঢুকাবেন? আবার অনেক সময়ে দেখা যায় প্যাকেজ কিনার পর ব্যবহার করতে না করতেই ডাটা শেষ হয়ে যায়। তখন তো মাথা গরম হয়ে যায়। ছুটিতে গ্রামে আসলেন ছোট ভাই বোনদের উপহার কিনে দেওয়ার জন্য কিন্তু উপহারের সব টাকা চলে যাচ্ছে ডাটার পেছনে। এটা কি মানা যায়? কখনোই না। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নিই মোবাইলে ডাটা খরচ কমানোর উপায়ঃ
ডাটা সেভিং মোড ব্যবহার করুন
একটা সময় ছিলো যখন মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ডাটা খরচ কমানোর জন্যে বেশিরভাগ মানুষ আলাদাভাবে মোবাইলে থার্ডপার্টি ডাটা সেভার অ্যাপ্লিকেশান ব্যবহার করতো। কিন্তু বর্তমানে প্রত্যেক স্মার্টফোনগুলোতে আগে থেকেই অর্থাৎ ফোনের মাঝে বিল্ট ইন ডাটা সেভিং মোড কিংবা ডাটা সেভার নামের একটি ফিচারস ব্যবহার করা থাকে। যে ফিচারটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি আপনার মোবাইলের ডাটা খরচ কমাতে পারবেন সহজেই।
আপনার হাতে থাকা এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনের নোটিফিকেশন প্যানেলে কিংবা সেটিংসে মধ্যে দেখুন ডাটা সেভার মোড নামের অপশন রয়েছে কি-না। যদি এই ডাটা সেভার মোড অপশন থাকে তবে সেটা অন করে ইন্টারনেট ব্রাউজ করুন। শুধুমাত্র ডাটা সেভার মোড অন করে ইন্টারনেট ব্রাউজ করলেই যে মোবাইলে অতিরিক্ত ডাটা কাটা একবারেই কম হয়ে যাবে ঠিক তেমন বিষয় কিন্ত নয়। মোবাইলে অতিরিক্ত ডাটা খরচ কমানোর জন্য ডাটা সেভার মোড ব্যবহার করার পরেও আপনাকে আরো কিছু কাজ করার প্রয়োজন হবে ম্যানুয়ালি। মোবাইলে ডাটা খরচ কমানোর জন্য নিম্নক্তো পদ্ধতিগুলো সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আরও পড়ুনঃ এন্ড্রয়েড ফোন ভালো রাখার উপায় | স্মার্ফোন ভালো রাখার উপায়
অটো ডাউনলোড
আপনাদের মধ্যে অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে দেখা যায় কেউ যদি আপনাকে কোনো ভিডিও বা ছবি সেন্ড করে তাহলে সেটা আপনার মোবাইলে অটোমেটিক ডাউনলোড হয়ে যায়। এই ডাউনলোড হতেও কিন্তু ডাটার প্রয়োজন হয়৷ অনেক সময়ে দেখা যায় যে ফাইলটি আপনার প্রয়োজন নেই সেটিও আপনার মোবাইলে অটোমেটিক ডাউনলোড হয়ে যায়। এতে ডাটা অনেক বেশি খরচ হয়। এই সমস্যা এড়াতে আপনি হোয়াটস অ্যাপের অটো ডাউনলোড অপশনটি অফ করে দিন।
ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশ
আমরা যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করি দেখা যায় মোবাইলে অনেক গুলো ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ থেকে যায়। যেমন একটু আগে আপনি মেসেঞ্জার ব্যবহার করছিলেন এখন মেসেঞ্জার থেকে ফেসবুক এ গেলেন। এক্ষেত্রে কিন্তু মেসেঞ্জার অ্যাপটি বন্ধ হয়নি। চালুই রয়েছে। এতে আপনার ডাটা অযথা খরচ হচ্ছে। তাই মোবাইল ব্যবহার এর সময়ে খেয়াল রাখবেন যেনো একটাই অ্যাপ ব্যবহার করছেন। একাধিক হলে রিফ্রেশ করে ফেলবেন।
গেম
আপনি কি মোবাইলে অনেক বেশি গেমস খেলেন? তাহলে গেমস খেলা কমিয়ে দিন। কিছু গেমস প্রতি ৫ মিনিটে এক মেগাবাইট ডাটা খরচ করে ফেলে। গেম না খেলে আপনি আপনার ভাই বোন, আত্মীয় স্বজনদের সাথে কিছু সময় কাটান। দেখবেন মন ভালো লাগবে সাথে আপনার ডাটা বেচে যাবে।
ভিডিও অটোপ্লে
ফেসবুক বা ব্রাউজার এ স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ যদি দেখেন আপনার সামনে একটি ভিডিও বা এড চলে এসেছে তখন কি করবেন? নিশ্চয়ই আপনি ভিডিওটি বন্ধ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠবেন, যাতে ডাটা খরচ না হয়। কিন্তু ততক্ষণে আপনার ডাটা অনেকটাই শেষ। এর জন্য আপনাকে পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ আপনার ফেসবুক বা ব্রাউজারের ভিডিও অটোপ্লে ফিচারটি অফ করে দিন। দেখবেন অটোমেটিক কোনো ভিডিও আসবে না।
আরও পড়ুনঃ মোবাইল রেডিয়েশন থেকে বাঁচার উপায়
ইউটিউব
কোনো কিছু শিখতে বা বিনোদনের জন্য আমরা ছুটে যাই ইউটিউব এ। কিন্তু ইউটিউব এ তো সব ভিডিও দেখায়। আর ভিডিও দেখতে তো বেশি ডাটা খরচ হয়। তাহলে আপনি চলে যেতে পারেন ইউটিউব গো তে। সেখানে ভিডিও দেখলে কিছুটা কম ডাটা খরচ হয়।
ফেসবুক ও মেসেঞ্জার
ফেসবুক ও মেসেঞ্জার এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙগী হয়ে দাড়িয়েছে। খানিকটা সময়ও যেনো এই দুটি অ্যাপ ছাড়া থাকা যায়না। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হতে পারেন যে, এই দুটি অ্যাপ প্রচুর পরিমাণে ডাটা খরচ করে। কি অবাক হয়ে গেলেন তো? এখন কীভাবে ডাটা দিয়ে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ব্যবহার করবেন, এটাই তো ভাবছেন তাই না? খুব সহজেই। ফেসবুক লাইট আর মেসেঞ্জার লাইট। এই ২ টি অ্যাপ এ তুলনামূলক ভাবে কম ডাটা খরচ হয়।
অটো আপডেট
কেমন হবে যদি আপনার সবগুলো অ্যাপ আপডেট হয়ে গেলো এবং এর পরবর্তীতে আমাদের সব ডাটা নিয়ে গেলো? আমাদের অনেকের মোবাইলেই অটো আপডেট চালু করা থাকে। অর্থাৎ যখনই ডাটা কানেকশন অন করবেন তখনই মোবাইলের অ্যাপ গুলো আপডেট হতে শুরু করবে। এতে আপনার সব ডাটা উধাও হয়ে যাবে। তাই সবসময়ে অটো আপডেট অপশনটি অফ করে রাখুন।
এই উপায়গুলোর মাধ্যমে আশা করি আপনারা আপনাদের মোবাইলে অতিরিক্ত ডাটা খরচ কমাতে পারবেন বা মোবাইলে ডাটা খরচ কমাতে পারবেন ও ভাই বোনদের জন্য উপহার কিনতে পারবেন। আজকের এই মোবাইলে ডাটা খরচ কমানোর উপায় বা মোবাইলে অতিরিক্ত ডাটা খরচ কমানোর উপায় আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন আপনার টাইমলাইনে। ধন্যবাদ
আরও পড়ুনঃ আন অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায় | আন অফিসিয়াল মোবাইল চেনার উপায়
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।