সার্টিফিকেট তোলার আবেদন | সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে করণীয় — প্রত্যেকের জীবনেই সার্টিফিকেট এক বড় অবদান রাখে। একটি সার্টিফিকেট নিজের যোগ্যতা ও অর্জন অন্যের কাছে প্রকাশ করতে সহায়তা করে। শিক্ষাজীবনে ও চাকুরী জীবনে সার্টিফিকেটের গুরুত্ব অনেক। এ যেনো সোনার রত্নের চেয়েও দামী। সবাই এই সার্টিফিকেট যত্ন করে রাখি। কিন্তু যদি এমন হয় যে আপনি বাহিরে গেলেন সার্টিফিকেট এর ফটোকপি করতে।
আর আপনার ব্যাগ কেউ ছোবল মেরে নিয়ে গেলো তখন কি করবেন? ভাবছেন আমি এতো দায়িত্বহীন না। ঠিকভাবেই নিবো। তবে দুর্ঘটনা তো, মে আই কাম ইন বলে আসে না। দুর্ঘটনা যেকোনো পরিস্থিতিতে চলে আসতে পারে। আবার অনেকেই তো এই দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে এখন হতাশায় ভুগছেন। কতো কি করছেন কিন্তু নতুন সার্টিফিকেট তুলতেই পারছে না। তাই আপনাদের সাথে সম্পূর্ণ সঠিক নিয়মে সার্টিফিকেট তোলার আবেদন নিয়ে বলবো।
সার্টিফিকেট তোলার জন্য আবেদনপত্র লেখার নিয়ম
বরাবর-
প্রধান শিক্ষক,
স্কুলের নামঃ
বিষয়ঃ এস এস সি পাশের সনদ উত্তোলন প্রসঙ্গে।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে আমি আপনার অত্র বিদ্যালয় থেকে (পাশের সাল উল্লেখ করুন ) সালে এস এস সি (যে ক্লাসের সার্টিফিকেট তুলতে চান তা উল্লেখ করুন) পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হই। এখন আমার ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে এস.এস.সি পাশের সনদটি প্রয়োজন। আমার এস.এস.সি এর রোল নং (এস এস সি রোল এখানে বসান) ও রেজিঃনং (এস এস সি রেজিস্ট্রেশন নং এখানে বসান)।
অতএব, আপনার নিকট আমার আকুল আবেদন এই যে, আমাকে আমার উক্ত এস.এস.সি পাশের সনদ প্রদান করে বাধিত করতে আপনার মন যেন আজ্ঞা হয়।
নিবেদক...........
আপনার নাম...........
স্কুলের নাম,.............
রোল নং...........
আরও পড়ুনঃ নাম্বার দিয়ে মোবাইলের লোকেশন বের করার উপায়
সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে করণীয় | হারিয়ে যাওয়া সার্টিফিকেট তোলার নিয়ম
জিডি করুন
জিডি কি আসলে এটাই তো ভাবছেন তাই না? জিডি হলো হাতে লিখা একটি কাগজ। এই কাগজে মূলত আপনার সার্টিফিকেট কিভাবে হারিয়েছে সেগুলো আইনের ভাষায় লিখা থাকবে। সাথে আপনার সার্টিফিকেট এর নাম, রোল নং, রেজিস্ট্রেশন নং লিখে পাশের থানায় জমা দিবেন। তবে ভাববেন না যে পুলিশের এখানে ছুটাছুটি করলে কিচ্ছু হবে। পুলিশরা কিন্তু আমাদের বন্ধু। তাই বিপদের সময়ে তাদেরই সহায়তা নিতে হবে।
বিজ্ঞাপন দিন
জিডি জমা দেওয়ার পর বসে থাকলে হবেনা। আপনার জিডি প্রচার করতে হবে বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে। এক্ষেত্রে আপনার জিডি নং, সার্টিফিকেটের নাম, রেজিস্ট্রেশন নং, রোল নং, হারিয়ে যাওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত এসব উল্লেখ করতে হবে। অর্থাৎ পুরো জিডিটাই ফুটিয়ে তুলতে হবে এবং এটি বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের অফিসে প্রচারের জন্য দিয়ে আসবেন।
বোর্ড
এবার আপনাকে বোর্ড থেকে সার্টিফিকেট তোলার জন্য আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষের সহায়তা নিতে হবে। আপনার জিডির আবেদনপত্র, বিজ্ঞাপনের কাগজ, বোর্ড পরীক্ষার প্রবেশপত্র, প্রশংসাপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, জন্ম নিবন্ধন ইত্যাদির ফটোকপি আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আপনার সার্টিফিকেট তোলার ফর্ম ফিল আপ করে দিবে এবং আপনাকে একটি পে স্লিপ দিবে ও একটি ব্যাংকে যাওয়ার পরামর্শ দিবে।
ব্যাংক
এখন অন্যদিকে না তাকিয়ে সোজা চলে যাবেন ব্যাংকে। এবার ব্যাংকে পে স্লিপের ব্যাংক কপি জমা দিয়ে পে করবেন এপ্লিকেশনের জন্য। এজন্য ৫০০-৮০০ টাকার মতো লাগবে৷ আর স্টুডেন্ট কপিটা আপনার সাথে যত্ন করে রাখবেন। এবার বাসায় গিয়ে টেনশন মুক্ত হয়ে যান।
কনফার্মেশন মেসেজ
কয়েকদিন পর আপনার মোবাইলে একটি কনফার্মেশন মেসেজ আসবে। এরপর ১৪-৩০ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এতোদিন যেহেতু অপেক্ষা করেছেন তাহলে আরেকটু অপেক্ষা তো করতেই হয়। কারণ এটা তো সোনার রত্নের চেয়েও দামী। ১৪-৩০ দিন পর আরেকটি মেসেজ আসবে। এবং সেখানে লিখা থাকবে যে আপনার সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে গেছে। সাথে আরো জানাবে যে কয় তারিখে ও কোথায় সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য আসতে হবে।
সরাসরি সার্টিফিকেট তোলা
এবার আর কিছুই না। এবার আরামে ঘুমাতে পারবেন। সার্টিফিকেটের টেনশন আর নিতে হবে না। শুধু নির্দিষ্ট তারিখে ও স্থানে গিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে আসবেন। আবার খালি হাতে যাবেন না কিন্তু। আপনারা হয়তো বা ভাবছেন, মিষ্টি নিয়ে যাবো নাকি! না না। পে স্লিপ এর স্টুডেন্ট কপি, রেজিষ্ট্রেশন কার্ড, প্রবেশপত্র, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট সাইজের ছবি সাথে করে নিয়ে যাবেন। আর হ্যাঁ কোনো মাধ্যমে পৌছানো দরকার নেই। সোনার রত্ন তো আপনাকেই যত্ন করে আনতে হবে। এছাড়াও সেখানকার কতৃপক্ষরা স্টুডেন্টদের হাতেই সার্টিফিকেট দেয় অন্যদের হাতে না।