মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় | মানসিক চাপ কমানোর উপায়

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় | মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উপায় — মানসিক রোগী কথাটা বলতে গেলেই সাধারণত রাস্তাঘাটের চারপাশে অথবা রাস্তার পাশের উসকো-খুশকো মাথার চুল, ছেঁড়া কাপড়-চোপড় পরিধান করা কিছু মানুষের চেহারা গুলো আমাদের চিন্তায় আগে আসে। কিংবা চোখের সামনে মানসিক হাসপাতাল গুলোতে চিল্লা চিল্লি করা অথবা হাসাহাসি করা মানুষদের চেহারা ভেসে উঠে। শুধুমাত্র তারাই কি মানসিক রোগী? মোটেও না। কিন্ত প্রকৃত বাস্তবতা একটু অন্যরকম দেখা যায়। এই কারণে প্রকৃতভাবে আসলে কারা মানসিক রোগে আক্রান্ত বা কারা মানসিক রোগী সেটা আপনার জানা প্রয়োজন।

মানসিক চাপ কমানোর উপায়

মানসিক রোগ কি | মানসিক রোগ কত প্রকার

মানসিক রোগ হচ্ছে মস্তিষ্কের এক রকমের রোগ। বিভিন ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক রোগ হলো একজন ব্যক্তির সুস্থ্য সঠিকভাবে চিন্তাভাবনা করতে, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে ও সঠিকভাবে আচরণ করতে না পারাকে বুঝায়। মানসিক রোগ হচ্ছে মূলত দুই ধরনের হতে পারেঃ

১। মৃদু আকারের মানসিক রোগ

২। তীব্র আকারের মানসিক রোগ

মৃদু আকারে মানসিক রোগ | মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ

এই রোগের ক্ষেত্রে জীবনের স্বাভাবিক অনুভূতি গুলো (দুঃখ বোধ, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি) প্রকট আকারের ধারণ করে। এই ক্ষেত্রে যেসকল লক্ষণগুলো দেখা যায় সেগুলো হচ্ছেঃ স্মরণশক্তি কমে যাওয়া, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, অশান্তি, শ্বাসকষ্ট, অহেতুক মানসিক অস্থিরতা, বুক ধরফর করা, বিরক্তি, দুশ্চিন্তা-ভয়ভীতি, খিঁচুনি, একই চিন্তা কিংবা কাজ বারবার করা, ক্ষুধামন্দা, অসহায়বোধ, মানসিক অবসাদ, বিষন্নতা, কাজে মন বসে না, অনিদ্রা, আত্মহত্যার করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি৷

আরও পড়ুনঃ হিট স্ট্রোক কি | হিট স্ট্রোক এর কারণ ও লক্ষণ | হিট স্ট্রোক হলে করনীয়

তীব্র আকারের মানসিক রোগ

এই ক্ষেত্রে আচার-আচরণ কথাবার্তা স্পষ্টভাবে অস্বাভাবিক হয়ে যায় ফলে আশেপাশের মানুষগুলো এটা বুঝতে পারে। এই রোগ হলে যে লক্ষণগুলো দেখা যায় সেগুলো হলোঃ নিজেকে বড় মনে করা, বেশি বেশি খরচ করা, গভীর রাতে বাড়ির বাইরে চলে যাওয়া, স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি লোপ পাওয়া, সন্দেহ প্রবণতা, অহেতুক মারামারি, ভাঙচুর করা, ঠিকমতো ঘুম না হওয়া, আবোল-তাবোল বলা, একা একা হাসা ও কথা বলা, খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো না করা।

মানসিক রোগ থেকে বেঁচে থাকার উপায় | মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়

তাহলে বোঝা গেলো যে, আমরা যাদেরকে মানসিক রোগে আক্রান্ত ভাবি সে সকল ব্যক্তি ছাড়াও আরও অনেকেই মানসিক রোগে আক্রান্ত। মানসিক চাপ থেকে বাঁচার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ও ভালো ভাবে বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছাশক্তি। মানসিক রোগ থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে নিম্নলিখিত কিছু পরামর্শ আপনার মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেক কার্যকরী উপায় হতে পারেঃ

(১) পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো (২) ধর্মীয় কাজের জন্য সময় দিন (৩) কাজের প্রতি নিজেকে ব্যস্ত রাখুন (৪) পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করুন (৫) পর্নোগ্রাফি বা ব্লু-ফ্লিম দেখা বাদ দিন (৬) বিশ্রাম এবং আরাম করার জন্য যথেষ্ট সময় নিন (৭) নিজেকে সকলের থেকে আলাদা করা থেকে বিরত থাকুন (৮) ভারসাম্যপূর্ণ এবং স্থায়ী দৈনন্দিন তালিকা অনুসরণ করুন (৯) দক্ষ মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করুন (১০) ধূমপান এবং মদ্যপান সহ যাবতীয় নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।

আরও পড়ুনঃ মুখে দুর্গন্ধের কারণ ও প্রতিকার

মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উপায়

১। অন্যের বিষয় নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবেন না 

আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন তা নিয়ে খুশি থাকুন আর আল্লাহ শুকরিয়া আদায় করুন। অন্যের কী আছে আর কি আপনার নেই, এসব নিয়ে পড়ে থাকবেন না।

২। সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা কাধে তুলবেন না 

আপনার যতটুকু দায়িত্ব ও কর্তব্য ততটুকু পরম আন্তরিকতার সাথে পালন করুন। 

৩। অতি লোভ করবেন না

অল্পে তুষ্টি মানসিক শান্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি তাকওয়ারও পরিচায়ক।

৪। আজকের দিনটিকে ভালোভাবে উপভোগ করুন 

আগামীকাল কি হবে সেটা আল্লাহ'র উপর ছেড়ে দিন। দুনিয়াবি বিষয়ে আগামীর চিন্তায় অস্তির হয়ে মানসিক চাপ বৃদ্ধি করবেন না। 

৫। প্রতিদিন একান্ত নির্জনে কিছু সময় কাটান 

এসময় আত্মসমালোচনা করুন আল্লাহর নিকট দু'আ করুন। 

৬। নেককার পূর্বসূরীদের জীবনী পড়ুন 

তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা ও উপদেশ দুনিয়ার জীবনে আপনার চলার পথকে সহজ করে দিবে ইনশাল্লাহ। 

৭। দুশ্চিন্তা করবেন না

জীবনে আসা বিপর্যয়গুলোকে সহজভাবে মেনে নিন। মনে রাখুন আল্লাহর লিখিত তাকদিরের বাইরে কিছুই ঘটে না। 

৮। সবকিছুই গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করবেন না 

মানুষের প্রতিটি কথা বা কাজ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা ঠিক নয়। সবকিছু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে যাবেন না। 

৯। দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজে রুটিন করুন 

অগোছালো কার্যক্রম মানসিক অস্তিরতা বাড়ায়। তাই রুটিন অনুযায়ী আগের কাজ আগে, পরের কাজ পরে করুন।

১০। প্রতিটি কাজ ১০০% নির্ভুল হতে হবে এই চিন্তা মাথা থেকে সরান

কেননা নির্ভুলতার গুণ কেবলমাত্র আল্লাহর। আমরা কেউই ভুলের উর্ধে নই।

আরও পড়ুনঃ ঘন ঘন হাই ওঠা যে সকল রোগের লক্ষণ | বার বার হাই উঠা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!