সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি | সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব

হাসিবুর
লিখেছেন -

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কী? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মানে কি — ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আমরা কমবেশি হয়তো বেশিরভাগ মানুষই জানি। ডিজিটাল ডিভাইস এবং তথ্য ও প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে প্রোডাক্ট মার্কেটিং করার জন্য যে কৌশল বা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, তাই হচ্ছে মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং। আর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে সেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর আরেকটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি

যে সকল মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সহায়তা নিয়ে নিজের ওয়েবসাইট, প্রোডাক্ট কিংবা বিভিন্ন সার্ভিস সমূহের প্রচার-প্রচারনা করা হয় তাদেরকে সাধারণ ভাষাতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে। আর যে সকল ওয়েবসাইটের সহায়তায় এই মার্কেটিং করা হয়ে থাকে তাদেরকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মাধ্যম সমূহ বলে। অনলাইনে কোনো প্রোডাক্ট, নিজের ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন সার্ভিস অথবা কোনো বিষয়ের প্রচার-প্রচারনার জন্য আছে বিভিন্ন মাধ্যম।

যেসকল মাধ্যম গুলোর মধ্যে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুবই সহজ ও অত্যন্ত কার্যকর একটি পদ্ধতি। অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের মাধ্যমে খুবই সহজে কোনো ওয়েবসাইটের প্রচারণা, প্রোডাক্টের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো সম্ভবপর হয়। আমরা আমাদের অবসর সময় কাটানো, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন অথবা চিত্তবিনোদনের জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ব্যবহার করে থাকি।

আর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মূলত এই সকল সোশ্যাল মিডিয়া গুলোকে কেন্দ্র করেই হয়ে থাকে। কারণ সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের মাধ্যম আমরা ইন্টারনেটে সক্রিয় থাকা লোকেদের কাছে নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রচার-প্রচারনা করতে পারি এবং তাদের কাছে তাদের প্রয়োজনীয় সার্ভিসগুলো পৌঁছে দিতে পারি।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মূল উদেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন প্লাটফর্ম যেমনঃ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, গুগল প্লাস, টুইটার, পিন্টারেস্ট, লিংকডইন এবং আরও অনেক গুলোতে টার্গেটেড সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের নিজেদের ওয়েবসাইট, প্রোডাক্ট বিভিন্ন সার্ভিসের প্রচার বৃদ্ধি করে মার্কেটিংয়ের লক্ষ্যকে পূরণ করা। 

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? কেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখব? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ কি কি শিখতে হবে? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কেমন? কেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে হয়? কোথায় থেকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখব? পেশা হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেমন হবে? প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলে আমরা উপরােক্ত যে প্রশ্নগুলো আছে এর প্রত্যেকটি বিষয় আমরা কিভাবে এবং বিস্তারিত আলোচনা করবো। তো বন্ধুরা চলুন প্রথমে আমরা জেনে নেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?

নিম্নে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন করবেন? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কিভাবে করবেন? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সবথেকে জনপ্রিয় কয়েকটি মাধ্যম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? কেন করবো? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ে নিনঃ 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব

বাংলাদেশে সর্বাধিক ব্যবহারের দিক থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার তালিকায় অনেকাংশে এগিয়ে রয়েছে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন এবং ইউটিউব। আর এই সকল সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মকে কেন্দ্র করে প্রোডাক্ট কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার-প্রচারনা করাটা বর্তমানে অনেক লাভজনক প্রমাণিত হচ্ছে। যার কারণে, ঘরে বসে থাকা লোকজনও কিন্ত আপনার প্রচার ও মার্কেটিং করা প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস সমুহ অনেক সহজেই দেখে নিতে পারবে। আর এই সকল কিছুই হবে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের মাধ্যমে।

সুতরাং, এটা ক্লিয়ার যে, আপনাকে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচার-প্রচারনার জন্য বাস্তব জীবনে কোনো দোকান ভাড়া করার প্রয়োজন হচ্ছে না এমনকি মানুষের দরজায়-দরজায়ও যাওয়ার দরকার হয়না। সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল বিজনেস স্ট্রাটেজিকে ব্যবহার করে আপনি আপনার বিজনেসকে শুধুমাত্র দেশের মাঝে নয় বরং দেশের বাইরেও বিস্তার করতে পারছেন। যার কারণে একদিকে যেমন আপনার ক্রেতা সমাগম বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে বিশ্বব্যপী আপনার কোম্পানিটির পপুলারিটি ছড়িয়ে পড়ছে। ইন্টারনেট জগতে আপনার সার্ভিসের অস্তিত্ব তৈরি হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা

বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের বিজনেসের প্রসার-প্রচারনার জন্য অনলাইন ভিত্তিক এই মার্কেটিং ব্যাবস্থার প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। তারা তাদের বিজনেস, সার্ভিস, প্রোডাক্টকে প্রোমোট করার জন্য ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, লিংকডিন কিংবা ইউটিউবের মতো বড় বড় সোশ্যাল সাইটের প্রতি ধাবিত হচ্ছে। আর যারা তাদের হয়ে তাদের প্রোডাক্টগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার করছে, তাদের জন্য তৈরি হচ্ছে বিশাল এক কর্মসংস্থানের। 

যেহেতু কার্যকারীরা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চাহিদাও কিন্ত বেড়ে যাচ্ছে, তাই প্রয়োজন হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং পরিচালনা করার জন্যে দক্ষ জনবলের। যদি আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সেক্টরে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে আপনিও কিন্ত এই প্লাটফর্মটিতে নিজের জন্য উজ্জ্বল একটি ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। তো প্রিয় পাঠক এবার চলুন জেনে নেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা গুলো কি কিঃ

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা

বর্তমান সময়ে বাজারে যেকোনো ব্যাবসা কিংবা প্রোডাক্টের অনেক প্রতিযোগিতা আছে। অর্থাৎ, বর্তমানে একটি ব্যাবসা অসংখ্যক মানুষ করছেন। সেক্ষেত্রে, যদি আপনি আপনার নিজের বিজনেস, ব্র্যান্ড কিংবা প্রোডাক্টের জন্যে অধিক ক্রেতা বা গ্রাহক পেতে চান, তবে আপনাকে আলাদা কিছু করার প্রয়োজন হবে। 

বাস্তব জীবনেরর মার্কেটিং এর তুলনায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর অনেক সুবিধা। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধে হচ্ছে আপনি যেকোন প্রোডাক্ট, যেকোনো ব্র্যান্ড কিংবা সার্ভিস সারা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রমোশন কিংবা প্রচার করতে পারবেন। এই ধরনের মার্কেটিংয়ে খুবই অল্প সময়ের মাঝে আপনি গ্রাহকদের কাছে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন। মুহুর্তের মাঝে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভবপর। যার কারণে স্বল্প সময়ের মাঝে আপনি আপনার বিজনেসের প্রচার-প্রসার এবং প্রোডাক্টের প্রচারণা বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে দিতে পারবেন।

শুধুমাত্র তাই না, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং পলিসি অবলম্বন করে আপনি আপনার টার্গেট করা কাস্টোমারদের কাছে প্রোডাক্ট প্রচার-প্রচারনা করতে পারবেন। যেমনঃ যদি আপনি ছেলেদের পোশাক নিয়ে ব্যবসা করেন, সেই ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো আপনাকে সুযোগ দিবে শুধুমাত্র ছেলেদের কাছেই আপনার প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন পৌঁছে দিতে। সেইমভাবে যদি আপনি বই বিক্রি করতে চান, তাহলে আপনার ডিসপ্লে করা বইগুলো শুধু বই প্রেমীকরাই দেখবে। যার কারণে আপনার প্রোডাক্টের অ্যাড সেই সকল লোকের কাছে পৌঁছানোর সম্ভবনা কম, যারা আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে আগ্রহী নয়।

আরও পড়ুনঃ সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেন কি | গুগলে ওয়েবসাইট র‍্যাংক করার উপায়

কিভাবে করবেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার পদ্ধতি খুবই সহজ একটা বিষয়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে আপনাকে খুবই বেশি অভিজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন হবে না। কেননা, মার্কেটিং কাজটি করার জন্য আপনাকে কি কি করার প্রয়োজন হবে তা সম্বন্ধে পর্যাপ্ত সহায়তা করবে সোশ্যাল মিডিয়া নিজেই। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য আপনার কাজ শুধুমাত্র আপনার প্রোডাক্টের প্রচার-প্রচারনার জন্য পারফেক্ট প্লাটফর্মটি সিলেক্ট করা। 

উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন এবং ইউটিউবে অধিক সংখ্যক ইউজার একটিভ থাকেন। যার কারণে আপনি মার্কেটিং করার জন্য এগুলোর যেকোনো একটি সোশ্যাল সাইট সিলেক্ট করতে পারেন। অথবা আপনি চাইলে আবার সকল সাইট গুলোইর বিজ্ঞাপন সার্ভিস গ্রহণ করতে পারেন। নিম্নে আমরা জানবো প্রত‌্যেকটি সোশ্যাল সাইটে মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত। প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি যেকোনো একটি প্লাটফর্মকে সিলেক্ট করে নিন এবং ভালো ফলাফল পেলে আরো অন্যান্য প্লাটফর্মগুলোতে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

ফেসবুক মার্কেটিং

ফেসবুকের যাত্রা শুরু হয়েছিল বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করার জন্যে। কিন্তু বর্তমান সময়ে সামাজিক এই মাধ্যমটি যতটা না বেশি ব্যক্তিগত কারণে ইউজ করা হয়, তার থেকে বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা হয়ে থাকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পূরণ করার লক্ষ্যে। ফেসবুক পেজ হতে শুরু করে ফেসবুক গ্রুপ, মেসেঞ্জার সকল কিছুই এখন ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পূরণ করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে কেবলমাত্র ফেসবুককে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।

পাশপাশি গড়ে উঠছে নিত্য নতুন অনলাইন ভিত্তিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, যার পুরোটাই ফেসবুক কেন্দ্রিক। বর্তমানে ফেসবুক মার্কেটিং এর চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি হতে চলছে এবং আশা করা যায় ভবিষ্যতে ফেসবুক মার্কেটিং এর চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাবে। তাই আপনি এই জনপ্রিয় সোশ্যাল সাইট ফেসবুক প্লাটফর্মটিকে ব্যবহার করে নিজের ক্যারিয়ার ডেভেলপ করা কথা চিন্তা করতে পারেন। এটি হতে পারে একজন ব্যাক্তিগত ফেসবুক মার্কেটিং এর দক্ষতাকে কাজে লাগানো, কিংবা নিজের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের জন্য।

বর্তমান সময়ে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা পৃথিবীর প্রাই প্রত্যেকটি দেশে অনেক অনেক বেশী। জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে ফেসবুক ইউজারদের কাছে কোনো বিজনেস বা প্রতিষ্ঠান, প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস প্রচার-প্রচারণা করে দেওয়াকেই ফেসবুক মার্কেটিং বলে। ফেসবুক মার্কেটিং আপনি নিজে অথবা কোনো ফেসবুক মার্কেটারের সাহায্য করে নিতে পারবেন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ফেসবুকের সাহায্য যে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তাকেই মুলত বলা হয় ফেসবুক মার্কেটিং। 

যেকোনো ধরনের বিজ্ঞাপনই আপনি ফেসবুকে টাকার মাধ্যমে দিতে পারবেন। এ ধরনের বিজ্ঞাপন গুলো সাধারণত আপনার ফেসবুক নিউজফিডে বিভিন্ন প্রোডাক্টের স্পন্সরড পোষ্ট হিসেবে আছে এবং আপনার ফেসবুকের ডানপাশে বিভিন্ন প্রোডাক্টের ছবি অথবা অফার হিসেবে আসে আর এগুলোকেই মূলত ফেসবুক বিজ্ঞাপন বলা হয়।

ফেসবুক বিজ্ঞাপনকে ব্যবহার করে আপনি আপনার পার্সোনাল কিংবা কোনো ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করতে পারবেন। ফেসবুকে কিছু পেইড বিজ্ঞাপণ সার্ভিস নিয়ে আপনি খুবই সহজেই আপনার প্রোডাক্টির প্রচার-প্রচারণা সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারবেন। সবচেয়ে ভালো খবর হলো, ফেসবুক ব্যবহার করে আপনি নির্দিষ্ট শ্রেণীর গ্রাহকদেরকে টার্গেট করে আপনার প্রোডাক্টটি বিক্রি অরতে পারেন।

অর্থাৎ, যদি আপনি ছেলেদের পোশাক নিয়ে ব্যবসা করে থাকেন, সেই ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া গুলো আপনাকে সুযোগ করে দিবে শুধুমাত্র ছেলেদের কাছেই আপনার প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেয়ার। একইভাবে যদি আপনি ল্যাপটপ/কম্পিউটার অর্থাৎ ইলেক্ট্রোনিক্স প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চান, তাহলে আপনার এই ল্যাপটপ/কম্পিউটার এবং ইলেক্ট্রোনিক্স প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী ব্যক্তিরাই দেখবে। ফলে আপনার প্রোডাক্টের বিজ্ঞপনটা তাদের কাছেই ফেসবুক পৌঁছে দিচ্ছে, যাদের ঐ প্রোডাক্টগুলো সত্যিকার অর্থেই অনেক অনেক প্রয়োজন।

২০১৬ সালের একটি জরিপ অনুযায়ী ফেসবুকের প্রতিমাসে অ্যাক্টিভ ইউজারের সংখ্যা ১.৮৬ বিলিয়ন। আর প্রতিদিন একটিভ ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১.১৫ বিলিয়ন। মোবাইল ডিভাইস দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করে এমন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১.৭৪ বিলিয়ন। জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ফেসবুকে প্রতিদিন ছবি আপলোড করা হয়ে থাকে ৩০০ মিলিয়ন। ফেসবুকে প্রতিটি ভিজিটর অ্যাভারেজ টাইম স্পেন্ড করে ২০ মিনিট।

প্রতি ১ মিনিটে ফেসবুকে ২,৯৩,০০০ স্ট্যাটাস, ১,৩৬,০০০ ছবি আপলোড এবং ৫,১০,০০০ কমেন্টস করা হয়ে থাকে। ফেসবুকে ১৬ মিলিয়নের বেশি লোকাল বিজনেস পেইজ তৈরি করা হয়েছে। ৪২% ব্যবসায়ী মনে করেন যে, ফেসবুক তাদের বিজনেসের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ইউজারের মধ্য ৫০% ব্যবহারকারী ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুক ব্যবহার করে অর্থাৎ সাধারন ভাষায় বলতে গেলে ফেসবুকে এসেই তাদের ঘুম ভাঙ্গে। 

আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুক ইউজার প্রতি বছর ১৭% হারে বৃদ্ধি পায় এবং এটি ক্রমাগত বৃদ্ধি হতেই চলেছে। একবার চিন্তা করুন তো ২০১৭ সালে ফেসবুকের অ্যাক্টিভ ইউজার ছিলো ১৮৬ কোটি। আর বর্তমান ২০২১ সালে ফেসবুকের ইউজার সংখ্যা কেমন হবে? আপনি এখন নিজেই ভাবুন আপনি কেনইবা ফেসবুক মার্কেটিং করবেন না।

আরও পড়ুনঃ ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম | ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার

ইউটিউব মার্কেটিং

আমরা মাঝে সাধারণত বেশিরভাগ মানুষ ইউটিউব ব্যবহার করে থাকি শুধুমাত্র চিত্তবিনোদনের জন্য। তবে আপনি কি জানেন কি? এই ইউটিউবকে ব্যবহার করেই আপনি আপনার প্রোডাক্টের প্রোমোশন করতে পারবেন খুবই সহজে ও সুন্দরভাবে। বর্তমান সময়ে গুগলের পরেই সারাবিশ্বে ২য় সর্বাধিক বাবহ্রত ওয়েবসাইট হচ্ছে ইউটিউব। আর আপনি এই ইউটিউবের জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।

বর্তমান সময়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং মাধ্যম হচ্ছে ইউটিউব মার্কেটিং। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ সবথেকে বেশী কার্যকারী মাধ্যম হচ্ছে ইউটিউব মার্কেটিং। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা যত বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার সঙ্গে ইউটিউব মার্কেটিং এর কার্যকারিতা ততবেশি বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আপনি খুবই সহজে একটি ভিডিও ভাইরাল করার মাধ্যমে আপনি আপনার কোম্পানির কিংবা ওয়েবসাইটের প্রচারও কিন্ত বৃদ্ধি করতে পারবেন। 

আপনি সম্পূর্ণ ফ্রিতে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করে তাতে নিজের ব্যবসা, পণ্য এবং বিভিন্ন সেবার সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলো নিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এতে করে, আপনি অনেক সহজে ভিডিওর মাধ্যমে আপনার বিজনেস কিংবা প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন করে নিতে পারবেন। তাছাড়াও যদি ইউটিউবে আপনার অনেক ভিউ থেকে থাকে, তবে অনেক লোকাল প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রোডাক্টের প্রচার-প্রচারণা করার জন্যে আপনাকে স্পন্সর করবে। যার কারণে আপনি সেখান থেকেও কিন্ত বড় অংকের অর্থ ইনকাম করতে সক্ষম হবেন।

কেবলমাত্র একটি ভিডিওর মাধ্যমে আপনি নিজের ব্যবসা, ব্র্যান্ড, ব্যবসা কিংবা প্রোডাক্টের ব্যাপারে কোটি কোটি মানুষের কাছে একসাথেই জানিয়ে দিতে পারছেন। আর যতদিন সেই ভিডিও ইউটিউবে চ্যানেলে থাকবে ততদিন আপনার প্রোডাক্টের প্রোমোশন ও হতেই থাকবে। তাহলে, বুঝতেই পারলেন, ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওর মাধ্যমে যেকোনো ব্র্যান্ড, বিজনেস কিংবা প্রোডাক্ট মার্কেটিং বা অ্যাডভার্টাইসিং করাটা কতটা লাভজনক হতে পারে। আপনার সফল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কৌশলের জন্য ইউটিউব ভিডিও মার্কেটিং অনেক অনেক বেশি জরুরি।

২০১৭ সালের একটি হিসেব অনুযায়ী ইউটিউব ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১,৩০০,০০০,০০০। প্রতিদিন প্রায় ৫ বিলিয়নের বেশি ইউটিউব ভিডিও দেখা হয়ে থাকে। আর এই সোশ্যাল সাইটে প্রতিদিন ৩০ মিলিয়নের বেশি ভিজিটর আসে। এই এত বেশি ট্রাফিকের কারনেই ইউটিউব এই মুহূর্তে ডিজিটাল মার্কেটিং বা সোশ্যাল মার্কেটিংকরার সবচেয়ে বড় মাধ্যম।

আরও পড়ুনঃ প্রোগ্রামিং কি? প্রোগ্রামিং এর কাজ কি?

ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং

জনপ্রিয়তা ও কার্যকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য ইনস্টাগ্রামের চাহিদা বর্তমান সময়ে অনেক অনেক বেশি। আর এই জন্যই মূলত অনেক ফ্রিল্যান্সার ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিংকে পুঁজি করে নিজের ক্যারিয়ার দাঁড় করানোর কথা ভাবছেন। কিন্তু এখন চিন্তার বিষয় হলো ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং মূলত ঠিক কতটা সহজ? ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং সত্যিকার অর্থেই অনেক অনেক সজা। আপনি আপনি ইনস্টাগ্রামের প্রত্যেকটি ফিচারস গুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন, তবে আপনার এই প্লাটফরমটিতে মার্কেটিং করে সফলতা লাভ করার সম্ভবনা ১০০% নিশ্চিত। 

বর্তমান সময়ের আরেকটি অন্যতম জনপ্রিয় সোশ্যাল সাইট বা ফটো শেয়ারিংয়ের মাধ্যমের নাম হচ্ছে ইন্সটাগ্রাম। বর্তমান সময়ে ইন্সটাগ্রামের একটিভ ইউজার সংখ্যা রয়েছে ৬০০ মিলিয়ন। প্রতিদিনের হিসেব অনুযায়ী ৪০০ মিলিয়ন অ্যাক্টিভ ব্যবহারকারী রয়েছে। প্রতিদিন ১৫০ মিলিয়নের বেশি ইউজার তাদের স্টোরি ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করে থাকে। 

মোট ইন্টারনেট ইউজারের ২০ শতাংশ মানুষ ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন কতটা আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা এই প্লাটফরমটির। এবার আপনি বলুন এতো কিছুর পরেও কিভাবে আপনি ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং না করে বসে থাকবেন। আপনি যদি ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং না করেন তাহলে এই ২০ শতাংশ ইন্টারনেট ইউজার আপনার এই বিজ্ঞাপনটি সম্পর্কে কোনোভাবে জানতেই পারবে না।

ফেসবুকের মতোন করে আপনি ইনস্টাগ্রামেও বিজনেস, প্রোডাক্টের প্রচারণার জন্য বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারবেন। তাছাড়াও আপনারর প্রোডাক্টের পারফেক্ট হ্যাশ ট্যাগ রিসার্চ করে সেটা কাস্টেমারের নিউজফিডে পৌঁছে দিতে পারবেন। বর্তমান সময়ে ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং এ সুদক্ষ এমন ব্যক্তিদের অনেক চাহিদা। তাই আপনিও নাম লিখাতে পারেন তাদের সেই তালিকায়। জেনে রাখা ভালো, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এবং ইউটিউব এই তিনটি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুবই বেশি জনপ্রিয় এবং প্রতিষ্ঠিত।

টুইটার মার্কেটিং

টুইটার ইউজারদের কাছে আপনার বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেওয়ার সিস্টেমকেই মূলত টুইটার মার্কেটিং বলা হয়। টুইটারে আপনি অডিও, ভিডিও, টেক্সটের মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্ট ও বিজনেসের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন। টুইটারে একটা একটিভ প্রোফাইলের মাধ্যমেও আপনি আপনার প্রোডাক্টের প্রচার-প্রচারণা ও চালাতে পারবেন। টুইটারে আপনি লেখার ক্ষেত্রে এখানে সর্বোচ্চ ১৪০ অক্ষরের বার্তা আদান-প্রদান এবং প্রকাশ করতে পারবেন। টুইট বার্তা লেখার জন্যে সদস্যরা সরাসরি টুইটারের মেইন ওয়েবসাইট ব্যাবহার করতে পারবেন তাছাড়াও, স্মার্টফোন কিংবা এসএমএসের মাধ্যমেও টুইট আপডেট করার সুযোগ আছে।

জ্যাক ডর্সি ২০০৬ এর জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে টুইটারের উদ্বোধন করেন। টুইটার বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। টুইটার হচ্ছে বিশ্বের ২য় বৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ২০১০ সালের ৩১শে অক্টোবর জনপ্রিয় ওয়েবসাইট টুইটারে ১৭৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৭.৫ কোটির বেশি ইউজার ছিলো। 

অন্যান্য পরিসংখ্যান অনুযায়ী একই সময়ে টুইটারের ১৯০ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৯ কোটি ইউজার ছিলো এবং প্রতিদিন ৬৫ মিলিয়ন কিংবা সাড়ে ৬ কোটি টুইট বার্তা এবং ৮ লক্ষ সার্চের কাজ সম্পন্ন হতো। আবার ২০১৬ সালের রিপোর্ট অনুসারে টুইটারের ইউজার সংখ্যা ৩১৯ মিলিয়ন। প্রতি মিনিটে ৩,৫০,০০ টুইট হয় এবং প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন টুইট হয় এবং প্রতি ১ বছরে ২০০ বিলিয়ন টুইট হয়। আর হ্যাঁ জেনে রাখা ভালো টুইটারকে কিন্ত ইন্টারনেটের এসএমএস বলা হয়ে থাকে। টুইটার সাইট থেকে আপনি কি কি সুবিধা পাবেন –

১। টুইটারে আপনার নিজের নামের একটি ইউনিক ইউআরএল পাবেন ২। হ্যাশট্যাগ, অ্যাট (@) ইত্যাদি সাংকেতিক চিহ্ন গুলো ব্যাবহার করে আপনার কাঙ্খিত ব্যাক্তি কিংবা কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ সমন্বয় করতে পারবেন ৩। টুইটারে আপনার ব্যবসায়ের ধরণ কিংবা পছন্দ অনুযায়ী প্রোফাইল পিকচার, হেডার ছবি ও ব্যাকগ্রাউন্ড দিতে পারবেন ৪। আপনার বিজনেস ওয়েবসাইটে টুইটার এপিআই উইজেড ব্যবহার করতে পারবেন ৫। আপনার বিজনেসের ওয়েবসাইট অ্যাড করতে পারবেন টুইটার সাইটটিতে, যা ইউজারদের সরাসরি ওয়েবসাইটে ভিজিট করার সুযোগ দিবে।

আরও পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম | মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায়

লিংকডইন মার্কেটিং

প্রায় ২৮ কোটি অ্যাক্টিভ ইউজার নিয়ে লিংকডইন বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং সাইট। লিংকডইন সাইটে আপনার প্রফেশনাল প্রোফাইল তৈরি করার এবং কমিউনিটি তৈরির সুযোগ পাবেন। লিংকডইন ওয়েবসাইট কিন্ত আপনার প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিসের জন্য ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি তৈরির সুযোগ সুবিধা প্রদান করে। লিংকডইন সাইট থেকে আপনি যা যা সুবিধা পাবেনঃ

১। লিংকডইন সাইটে আপনার ব্র্যান্ডের জন্যে গ্রুপ তৈরি এবং সংযুক্তদের সাথে তা প্রোমোট করতে পারবেন ২। সহজে ইমেইল কালেক্ট করে ই-মেইল করতে পারবেন তাদের কাছে ৩। আপনার বিজনেসের ধরণ অনুসারে সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট/বায়ার খুজে নিতে পারবেন ৪। আপনার তৈরি করা গ্রুপে যারা রয়েছে তাদের মাধ্যমেই নতুন কানেকশনের সাজেশন পাবেন। যার মাধ্যমে আপনার নেটওয়ার্ক আরো বৃদ্ধি পাবে ৫। তৈরি করা ব্র্যান্ড গ্রুপকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারবেন।

গুগল প্লাস মার্কেটিং

প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস হচ্ছে গুগল প্লাস। এতে ১০০ কোটিরও বেশি নিবন্ধিত এবং নিয়মিত ৬০ কোটির অধিক অ্যাক্টিভ ইউজার আছে। প্রতিনিয়ত এই সংখ্যাটি বৃদ্ধি হয়েই চলছে। গুগল অথরশিপ হওয়ার কারণে এটি অনলাইন মার্কেটিংয়ের একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ওয়েবসাইটে কোনো কিছু শেয়ার করলে এসইও অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর দিক থেকে অনেক সুবিধে দেয়। গুগল প্লাস থেকে আপনারা কি কি সুবিধে পাবেন সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।

১। ইউজারদের ব্র্যান্ড পেজ তৈরি করার সুযোগ রয়েছে ২। আপনার ব্র্যান্ডের জন্যে একটি গুগল প্লাস পেজ ইউনিক ইউআরএল পেতে পারেন ৩। পেজে কাস্টমাইজড কাভার টেমপ্লেট এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে ৪। পেজে বিভিন্ন ওয়েবমাস্টার এবং এপিআই কনসোল সার্ভিস পাবে, যা আপনার ব্র্যান্ড বা সার্ভিস অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্মে ছড়িয়ে দেয়ার সুযোগ পাবেন ৫। কনট্যাক্ট, ওয়েবসাইট এবং জিওগ্রাফিক্যাল লোকেশন সহ আপনার বিজনেসের বিস্তারিত তথ্য এখানে অ্যাড করতে পারবেন ৬। আপনার সার্কেলে থাকা মানুষ গুলোকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সাজিয়ে নিতে পারবেন। পরবর্তীতে ঐ নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ইউজারদের উদ্দেশ্য করে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় | মানসিক চাপ কমানোর উপায়

পিন্টারেস্ট মার্কেটিং

পিন্টারেস্ট হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত জনপ্রিয় লাভ করা সোশ্যাল বুকমার্কিং সেবার ওয়েবসাইট। বর্তমান সময়ে প্রায় ৮ কোটির বেশি ইউজার রয়েছে এই ওয়েবসাইটটির। ছবি ভিত্তিক এই পিন্টারেস্ট ওয়েবসাইটটি আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসের অনলাইন মার্কেটিং এর সবচেয়ে কাজে দেবে। পিন্টারেস্ট ওয়েবসাইটে আপনারা যা যা সুবিধে পাবেনঃ

১। এই নেটওয়ার্কে আপনার বিজনেস প্রোফাইল ক্রিয়েট করতে পারবেন ২। এই সাইটে আপনার অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া লিংকগুলো অ্যাড করতে পারবেন। যেমন এই ওয়েবসাইটের সাথে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল অ্যাড থাকলে আপনি যখনই কোনো ছবি পিন করবেন, তখন এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ফেসবুকে শেয়ার করে দিবে। আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে তবে এই সাইট থেকে আপনি Do-follow ব্যাকলিংক পেতে পারেন ৩। পিন্টারেস্ট আপনার বিজনেসের নামানুসারে একটি পার্সোনালাইজড ইউজার নাম প্রদান করে। প্রিয় পাঠক এতোক্ষণ আমরা জানলাম কি কি পদ্ধতি ব্যবহার করে সোশ্যাল মার্কেটিং করা হয়। এবার চলুন জেনে নেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ভ্যালু কেমন সেটা সম্পর্কেঃ 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ভ্যালু কেমন?

বর্তমানে এক কথায় বলতে গেলে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর চাহিদা ব্যাপক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব অনেক অনেক অনেক বেশি। অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলোতে ফ্রিল্যান্সাররা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার হিসেবে। যদি আপনি একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটের হোন তবে আপনিও কিন্তু খুবই ভালো পরিমাণে আয় করতে পারবেন অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য জনপ্রিয় কিছু অনলাইন মার্কেটপ্লেস হচ্ছেঃ Upwork, Freelancer, Fiverr, People per hour, Guru। এছাড়াও আরো অনেক অনলাইন মার্কেটপ্লেস রয়েছে। যেগুলোতে আপনি চাইলেই সেখান থেকে রেজিস্ট্রেশন করে বিনামূল্য একজন বায়ার/ক্লায়েন্টের কাছ থেকে কাজ নিয়ে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে খুবই ভালো পরিমাণে আয় করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ ইসলামের ইতিহাস | ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কোথায় থেকে শিখব | সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কোর্স

যদি আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও দেখে এবং অনলাইন থেকে বিভিন্ন রিসার্চ করে সেখান থেকে শিখতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার নিকটস্থ কোনো ট্রেনিং সেন্টারে গিয়ে কিন্তু আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে পারবেন। এজন্য আপনাকে প্রতি কোর্সের প্রতি ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করার প্রয়োজন হতে পারে।

এছাড়াও যদি আপনি চান যে, কোনো ধরনের টাকা ব্যয় না করেই সম্পূর্ণ আপনার নিজের চেষ্টায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখবেন। তবে আপনাকে গুগল বা ইউটিউবের মতো প্লাটফর্ম গুলোর সাহায্য নিতে হবে। প্রথমত আপনি গুগল থেকে অনেক কিছুই জানতে পারবেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে। তাছাড়াও ইউটিউবে এমন অনেক ধরনের ভিডিও রয়েছে যেগুলো দেখে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার টিপস & ট্রিকসগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।

[⚠️Warning — কোর্স কেনার পূর্বে অবশ্যই খুবই সতর্ক থাকবেন। লক্ষ্য রাখবেন, আপনার কষ্টের উপার্জিত টাকাগুলো যেন কোনো চিটার-বাটপারের হাতে না যায়] 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা 

সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমানে স্টুডেন্টস থেকে শুরু করে বিজনেস ম্যান, প্রাইভেট চাকরি করা লোক, সরকারি চাকরি করা লোক কিংবা বয়স্ক ব্যক্তিরাও ইউজ করছেন। তাই, সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলো ব্যবহার করে মার্কেটিং বা বিজ্ঞাপন দিয়ে আমরা অনেক সহজেই হাজার হাজার মানুষের কাছে প্রোডাক্ট ও সার্ভিস পৌঁছাতে দিতে পারি। এছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ব্যবহার করে আমরা আরো অনেক সুবিধা গ্রহণ করতে পারি, যেগুলো কেবলমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং দ্বারা আমাদের হতে পারে। নিচে সেরা ও গুরুত্বপূর্ণ সুবিধার ব্যাপারে আমি আপনাদের ধাপে ধাপে বলে দিচ্ছি।

✅ যেকোনো জিনিসের প্রোমোশন করা সম্ভব

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্ট কিংবা ব্যবসা সম্পর্কে ঘরে বসেই লাখ লাখ মানুষের কাছে মার্কেটিং করতে পারবেন। আপনার প্রোডাক্ট যে ধরনের হোক একজন ক্রেতা আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিশদ ধারণা পাবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এত করে আপনার প্রোডাক্ট খুবই দ্রুত মার্কেটে ছড়িয়ে পড়বে এবং কাস্টোমারের কাছে চাহিদা বাড়বে। বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ক্রয় করে ঘরে বসেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গাতে বিক্রি করছে এবং সেগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে পার্সেল করে দিচ্ছে। আর এটি একটি লাভজনক ব্যবসা।

ছোট হোক কিংবা বড় যেকোনো বিজনেস বা প্রোডাক্টের প্রোমোশন করতে পারবেন। বর্তমানে বিভিন্ন মানুষ নিজের ঘরে বসে বিভিন্ন প্রোডাক্ট এনে সেগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়াতে মার্কেটিং বা প্রোমোশন করে প্রোডাক্ট বিক্রি করছেন। তাই, আপনার ব্যবসা বা প্রোডাক্ট যে ধরনের হোক না কেন, আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে সেই প্রোডাক্টগুলোকে সহজে প্রচার-প্রচারনা করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার | ক্যালসিয়ামের অভাবের লক্ষণ কি

✅ কম খরচে পেইড বিজ্ঞাপন

অনেক কম টাকা খরচে এই প্রক্রিয়াতে মার্কেটিং কিংবা প্রমোশন করা সম্ভব। হ্যাঁ, বেশিরভাগ প্রক্রিয়া আপনি নিজে নিজেই করতে পারবেন আর সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। আপনার শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধমগুলোতে পেইজ ক্রিয়েট করতে হবে। তারপর নিজের বিজনেস বা প্রোডাক্টের ব্যাপারে লোকদের কাছে বিনামূল্যে জানাতে পারবেন এবং সময়ে সময়ে আপডেট দিতে পারবেন। 

কিন্তু হ্যাঁ আপনি যদি অধিক বেশি পরিমাণে বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখাতে চান, তবে পেইড বিজ্ঞাপনদের মাধ্যমে সেটা সম্ভব। কিন্তু হ্যাঁ এতে, আপনাকে কিছু টাকা খরচ করার প্রয়োজন হবে। টাকা খরচ করতে হলেও এখানে পুরাতন মার্কেটিং পদ্ধতি বা ফিজিক্যাল মার্কেটিং এর প্রক্রিয়া গুলোর তুলনাতে এই মাধ্যমে অনেক অনেক কম খরচে মার্কেটিং অর্থাৎ প্রমোশন করা সম্ভব।

✅ ঘরে বসেই মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মূলত আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন। যার ফলে আপনার সময় ও বিভিন্ন খরচ বেঁচে যাবে। যদি আপনার এই মার্কেটিং সরাসরি করার প্রয়োজন হতো তবে হয়তোবা এই মার্কেটিং করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় আপনাকে যেতে হতো। বিভিন্ন মানুষকে আপনাকে হায়ার করতে হতো সেক্ষেত্রে আপনার অনেক টাকা খরচ হতো এবং যাতায়াত খরচ তো আছেই। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং করলে আপনার এই সকল খরচ সাশ্রয় হবে।

✅ টার্গেটেড প্রোমোশন বা মার্কেটিং

ফিজিক্যাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আমরা কোন দিন কোনো ব্যাক্তি বিশেষকে লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারিনা। অর্থাৎ, আপনি যদি রাস্তার পাশে কিংবা ভ্যান ও রিক্সার পেছনে কোনো বিজ্ঞাপন লাগিয়ে দেন, তবে উক্ত বিজ্ঞাপন কারা দেখবে আর কারা দেখবেনা, সেটা কিন্ত আপনার হাতে নেই। কিন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করা মার্কেটিং কিংবা প্রমোশন করার জন্য আপনার হাতে সকল ধরণের অপশন থাকবে। অর্থাৎ, আপনার বিজ্ঞাপনটি আপনি কোন জায়গার লোকদের টার্গেট করে দেখাতে চান এবং বিজ্ঞাপন কতদিন পর্যন্ত চলবে, বিজ্ঞাপনটি যাদেরকে দেখানো হবে তাদের বয়স কত হতে হবে এবং লোকদের ইন্টারেস্ট ও চাহিদা হিসাবে বিজ্ঞাপনটি দেখানো যাবে।

তাই, আপনি নিজেই বুঝতে পারছেন যে, এই ধরনের প্রত্যেকটি জিনিসের ধ্যান রেখে আপনি যদি অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে বিজ্ঞাপন দেন কিংবা প্রোডাক্টের মার্কেটিং করেন, তবে আপনি আপনার ব্যাবসার সঙ্গে জড়িত গ্রাহকদেরকে টার্গেট করতে পারবেন। এতে করে, আপনার বিজ্ঞাপন দেখানোর উদ্দেশ্য ১০০ শতাংশ সফল হবে এবং নিজের বিজনেসের জন্য কাস্টমার পেয়ে যাবেন।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা ১০ কোম্পানি ২০২১

✅ সহজেই ভোক্তা বা ক্রেতা পাবেন 

যেটা আমি উপরোক্ত আলেচনায় বললাম, অন্যান্য ফিজিক্যাল বিজ্ঞাপনের তুলনায় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করা মার্কেটিং কিংবা বিজ্ঞাপনে আমরা সহজেই যেকোনো জায়গার বিশেষ অডিয়েন্স, বিশেষ ইন্টারেস্টেট থাকা ব্যক্তি অথবা অডিয়েন্সের বয়েস হিসাবে টার্গেট করে বিজ্ঞাপন চালাতে পারি। এক্ষেত্রে এতো ভালোভাবে টার্গেটেড ব্যাক্তিদের বিজ্ঞাপন দেখানোর কারণে অধিক পরিমাণে গ্রাহক পাওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে লাখ লাখ মানুষ এভাবেই নিজের প্রোডাক্ট, বিজনেসেের জন্য টার্গেটেড কাস্টমার কিংবা ক্রেতা পেয়ে যাচ্ছে।

✅ কোনো ব্রান্ডিং প্রমোশন করা

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি কোম্পানির ব্র্যান্ড অথবা প্রোডাক্টকে যতবেশি দ্রুততার সাথে প্রমোশন করা সম্ভব সরাসরি একটি কোম্পানির প্রোডাক্ট কিংবা ব্র্যান্ডকে প্রসার করা কোনো ভাবেই সম্ভবপর নয়। সুতরাং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার মাধ্যমে কোনো ব্র্যান্ডলে খুবই দ্রুত মার্কেটে প্রসার করা সম্ভবপর হয়।

✅ ফ্রিল্যান্সিং এ সোশ্যাল মিডিয়া

আপনি চাইলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। আর হ্যাঁ সেটা আবার ঘরে বসে থেকে। মোটকথা বর্তমান সময়ে দেশে ও বিদেশে যত বড় বড় কোম্পানি গুলোর প্রোডাক্ট রয়েছে তারা সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্ট পৌঁছে দিচ্ছে এবং তাদের ব্র্যান্ডকে প্রোমোট করছে। আপনি আপনি একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে টাকা আয় করতে পারবেন।

শেষ কথা

তাহলে, প্রিয় পাঠক যদি আপনি বিজনেস প্রমোশন করার এই অনলাইন মাধ্যমের ব্যাপারে ভালোভাবে বুঝতে পারেন, তাহলে নিচে কমেন্টে আপনার মতামত আমাদেরকে জানিয়ে দিন। তাছাড়া, যদি আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে, তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন অবশ্যই। আজকের আর্টিকেলটি আর দীর্ঘায়িত করবো না। যে বিষয়গুলো আমরা আলোচনা করছি সেগুলো অনুসরণ করার চেষ্টা করুন। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ আপনার বর্ণাঢ্য ক‌্যরিয়ার প্রত্যাশা করছি। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। ধন্যবাদ

আরও পড়ুনঃ প্রেমিকার জন্য রোমান্টিক কথা

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!