জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড পদ্ধতি — বাংলাদেশ এখন আধুনিকায়নে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে অনেক দূর দূরান্তে বিস্তার ছড়িয়ে। ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে সবখানে। এই ডিজিটালাইজেশনের যুগে জন্ম নিবন্ধনের হাতে লেখা কপি এখন পরিণত হয়েছে অনলাইন স্ক্রীন কপিতে।
আগে যেখানে জন্ম নিবন্ধনের কপি হাতে নিয়ে ঘুরতে হতো এখন তা পকেটের মুঠো ফোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজন অনুসারে নিজের মত ব্যবহার করা যাবে অনায়েসে। আজকে আমরা শিখব কিভাবে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি বের করা হয় এবং জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করা যায়। তার আগে জানতে হবে জন্ম নিবন্ধন কি এবং কি কাজে ব্যবহার করা হয়।
জন্ম নিবন্ধন কি?
জন্ম নিবন্ধন হচ্ছে একটি শিশুর জাতীয় মৌলিক অধিকার। শিশু জন্মের পর পর তার নাম, তার জন্মের তারিখ, তার লিঙ্গ, তার পিতার নাম, তার মাতার নাম , তার জাতীয়তা এবং ঠিকানা সহ লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়। জন্মসূত্রে সে যে একজন বাংলাদেশী নাগরিক এটি তার লিখিত লিপিবদ্ধ দলিল। এটির মাধ্যমে সে রাষ্ট্রের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
জন্ম নিবন্ধন এর ব্যবহার
১। সরকারি বিভিন্ন ধরনের টিকা দান কার্যক্রম এর জন্য জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন ২। স্কুল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন ৩। ভোটার আইডি কার্ড পেতে ও পাসপোর্ট এর জন্য জন্ম নিবন্ধন দরকার ৪। লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন ৫। নতুন বিদ্যুৎ ,পানি বা গ্যাস সংযোগের জন্য জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন ৬। ট্রেড লাইসেন্স বা ট্যাক্স প্রদানের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনের কপি প্রয়োজন ৭। ব্যাংক একাউন্ট ও সঞ্চয় বীমা করার ক্ষেত্রেও জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন ৮। সরকারি অফিস-আদালত এর বিভিন্ন রেজিস্ট্রির জন্য জন্ম নিবন্ধন অত্যাবশ্যকীয় ৯। বিবাহ রেজিস্ট্রি সময়ও জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল
ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কপি ডাউনলোড পদ্ধতি
প্রথমে মোবাইল ফোনের বা কম্পিউটারের ব্রাউজারে গিয়ে সার্চ অপশনে টাইপ করতে হবে https://everify.bdris.gov.bd/ অথবা সরাসরি ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এখানে ক্লিক করে কিংবা ইংরেজিতে লিখতে হবে birth certificate. তারপর সবার উপরে দেখবেন লেখা আছে birth and death certificate.
সেখানে ক্লিক করলে একটি পেজ আসবে সেখানে আপনার জন্ম নিবন্ধন এর 17 ডিজিটের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দেওয়ার জন্য একটি বক্স দেখতে পাবেন, বক্সটির ভিতরে আপনার জন্ম নিবন্ধনে দেওয়া 17 ডিজিটের রেজিস্ট্রেশন নাম্বারটি দিয়ে দিতে হবে। তার নিচে জন্ম নিবন্ধনে দেয়া জন্ম তারিখটি দিতে হবে। এখানে জন্ম তারিখ দেয়ার ক্ষেত্রে আগে বছর তারপর মাস এবং তারপর দিন যেমনঃ (yyyy-mm-dd) এভাবে দিতে হবে।
এর নিচে একটি সলিউশন সলভ করার জন্য বক্স দেয়া হবে, এতে হয় কোন সংখ্যার যোগ বা বিয়োগ করার জন্য দেয়া থাকবে, তার সঠিক উত্তর বক্সে লেখার পর Search বক্সটিতে ক্লিক করতে হবে। আর যদি লিখা আসে রেকর্ড নট ফাউন্ড তবে বুঝতে হবে 17 ডিজিটের রেজিস্ট্রেশানের কোন নাম্বার অথবা জন্ম তারিখের কোন তথ্য দিতে ভুল হয়েছে।
পুনরায় ভালোভাবে নাম্বার প্রবেশ করানোর পর যদি সব ঠিক থাকে তাহলে তার পরের পেজে আপনার জন্ম নিবন্ধনে যেসব তথ্যগুলো দেওয়া আছে যেমন নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, পিতার নাম, মাতার নাম, বাসার, স্থায়ী ঠিকানা, জাতীয়তা এবং এই সবকিছুর পাশাপাশি একটি QR কোড সম্বলিত বক্স থাকবে।
এই QR কোড আপনি যখন যেখান থেকেই স্ক্যান করবেন সেই স্ক্রিনে আপনার জন্ম নিবন্ধন কপিটি ভেসে উঠবে। আপনি এই পেজটির একটি স্ক্রিনশট নিয়ে রাখতে পারেন আর কম্পিউটারের মাধ্যমে যদি ব্রাউজ করেন তাহলে হার্ডকপির মাধ্যমে প্রিন্ট আউট করে রাখতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সবকিছু আরো সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কাগজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না হয়ে এখন যখন যেখানে প্রয়োজন সাথে সাথে সেখানেই ব্যবহার করার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি বাবা-মায়ের নৈতিক ও জাতীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে যে জন্মের পরপর তার শিশুর জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে নেয়া।
আরো পড়ুনঃ সিমের নাম্বার দেখার নিয়ম
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।