শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় — মানব দেহের সবচেয়ে বাইরের আবরণীর নাম হলো ত্বক। প্রায় প্রতিটি উদ্ভিদ বা প্রাণীর অভ্যন্তরীণ অংশগুলো বাহ্যিক এক আবরণী অংশ দ্বারা আবৃত থাকে। মানুষের মানবদেহকে আচ্ছাদন বা আবৃতকারী অংশের নাম হলো ত্বক। ত্বকের মাধ্যমেই কেবল মানুষের সৌন্দর্য্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
কিন্তু এই ত্বক খুবই কোমল ও মসৃণ হয়ে থাকে (যদিও বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের ত্বক কিছুটা ভারী হতে থাকলেও মসৃণ থাকে)। যার কারণে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে সাথে ত্বকের পরিবর্তন লক্ষ করা যায় ফলে ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। আর তাই সর্বদা ত্বকের যত্ন নেয়া উচিত। আজকের আর্টিকেলে আমরা শীতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্নে ৬টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
১। নারিকেল তেল
অনেক আগে থেকেই নারিকেল তেলের গুণাগুণ সম্পর্কে আমাদের মোটামুটি একটু ধারণা আছে। এটি যে শুধুমাত্র চুলের জন্য ব্যবহার করা যায় তা নয়। বরং নারিকেল তেল চুলে ব্যবহার করার পাশাপাশি আমরা চাইলে ত্বকেও নারিকেল তেলের ব্যবহার করতে পারি। নারিকেল তেল শরীরে ব্যবহারের জন্য খুবই উপকারী। নারিকেল তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে ত্বকের রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব দূর হয়ে তেলতেলে হয়।
২। মধু
মধু একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন তরল খাদ্য যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। শীতে ত্বকের যত্নে মধুর ব্যবহার খুব বেশি দরকার। মধুতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান। এক্ষেত্রে ত্বকের যত্নে এক চামচ মধুর সঙ্গে দুই চামচ মিল্ক পাউডার ও এক চিমটে হলুদ মিশিয়ে নিয়ে পেস্ট করে চেহারার মধ্যে ত্বকের যত্ন ব্যবহার করা যায়। শুধু যে ত্বকের যত্নেই কেবল এটি কাজ করে তা নয় বরং বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতেও কাজ করে এটি।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে বুঝব দোয়া কবুল হয়েছে
৩। অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা সাধারণত এমন একটি উদ্ভিদ জাতীয় পাতা যা অনেক ধরনের রোগ নিরাময় পাশাপাশি রূপচর্চা কিংবা ত্বকের জন্যও খুব ভালো। এক্ষেত্রে অ্যালোভেরা পাতার রস মুখের মধ্যে মেখে কিছুক্ষণ রাখলে এর ফলে মুখের কালো ভাব দূর হয় এবং ব্রণ কিংবা রুক্ষতা শুষ্কতাও দূর হয়ে যায়।
৪। অ্যাপল সিডার ভিনেগার
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের মাধ্যমে ত্বকের যত্ন নেয়া যায়। এক্ষেত্রে আধা কাপ অ্যাপল সিডার আধ কাপ পানি, আধা চামচ মধু, দুই চামচ গোলাপজল ও কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল নিয়ে ভালো করে পেস্ট তৈরি করতে হবে। পরবর্তীতে সেটা কোনুই, হাটু কিংবা হাত-পায়ে ভালোভাবে মেখে রাখতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
৫। নিম পাতা
নিমপাতা প্রাচীনকাল থেকেই খুবই কার্যকরী ওষুধ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত হয়ে আসছে। এটি একটি ভেষজ ঔষধি গুণসম্পন্ন পাতা এর বহুল ব্যবহার রয়েছে। বিশেষ করে ভেষজ ঔষধ তৈরিতে এটি খুবই কার্যকরী। নিমের ডালও দাঁতের মাজন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যার ফলে দাঁত শক্ত ও মজবুত হয়। নিমপাতা সিদ্ধ করে বেটে যেকোনো ধরনের চর্মরোগ স্থানে লাগালে চর্ম রোগ ভালো হয়। ত্বকের যত্নে নিমপাতার পাউডারের সঙ্গে মধু ও হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে তা মুখে প্রায় 10 মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। যার ফলে ত্বকের রূক্ষতা ও শুষ্কতা দূর হয়।
৬। ওটমিল
ওটমিল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী এক উপাদান যা ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাকাশে ভাব কালচে ভাব দূর হয়। তিন চামচ ওটমিল এক চামচ মধু ও আধ কাপের কম দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। তারপর তা মুখে প্রায় 10 মিনিট রেখে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেললেই ত্বক আগের কমল হয়ে থাকে।
পরিশেষে বলা যায়, শুধু যে কেবল বিভিন্ন ধরনের ফেসওয়াশ কিংবা লোশন ব্যবহার করলে ত্বকের যত্ন হয়ে যায় তা নয় বরং প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ঔষধি সম্পন্ন উদ্ভিদ গাছ কিংবা তার উপাদান ব্যবহার করেও খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে এখানে একটি সুবিধা হল প্রাকৃতিক সব দ্রব্য বস্তু ব্যবহার করলে তার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এর ফলে নিশ্চিন্তে এসব বস্তুর ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা যায়।
আরো পড়ুনঃ শীতে ত্বকের যত্ন
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।