কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয় — সৌন্দর্য চর্চার শুরু থেকেই মানুষ প্রতিনিয়ত আরও সুন্দর থেকে সুন্দর হতে চায়। এই সুন্দর পৃথিবীতে সকলেই প্রাকৃতিকভাবে অনেক সুন্দর। আমরা সবাই প্রাকৃতিক ভাবে অনেক সুন্দর তবে আমরা তারপরেও আরো সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে চাই।
তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে আমরা জানবো কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয় এবং কি খাবার খেলে গায়ের রং ফর্সা হয়। এছাড়াও রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় এবং কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। তাহলে আর দেরি না করে চলুন কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয় জেনে নেই।
গায়ের রং ফর্সা করার জন্য আপনাকে জানতে হবে গায়ের রং কালো হয় কি কারণে। মূলত আমাদের শরীরে মেলানিন নামক পদার্থের কারণে গায়ের রং কালো হয়। যার দেহে মেলানিন পদার্থের পরিমাণ যতবেশি সে ততবেশি কালো রংয়ের হয়।
রোদের কারণে, স্ট্রেসের কারণে সহ আরো বিভিন্ন কারণে দেহে মেলানিন পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যার কারণে গায়ের রং কালো হয়। কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয় সেই মূল টিপসে যাওয়ার পূর্বে কিছু কথা জেনে নেই।
প্রিয় পাঠক একটি কথা সবসময় মনে রাখবেন সুন্দর হওয়ার জন্য সাদা হওয়ার প্রয়োজন হয়না। একটু সাজানো গোছানো ও পরিস্কার পরিপাটি হওয়ার মধ্যে দিয়ে সুন্দর হওয়া যায়। আর মহান আল্লাহ পাক আপনাকে যেভাবে সৃষ্টি করেছেন সেভাবেই নিজেকে খুশি রাখার ও খুশি থাকার চেষ্টা করুন।
মাথায় সব সময়ের জন্য রাখুন যখন মারা যাবেন তখন কবরে সাদা কালোর কোনো হিসাব নাই, আমলই সব। নিজেকে আপনি সাদা কালো রংয়ের বিচারে সুন্দর ভাবা বন্ধ করুন। নিজেকে সুস্থ, পরিপাটি, সাজানো, গোছানো, উজ্জল রাখতে নিজের যত্ন নিন। কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয়? চলুন জেনে নেই ফর্সা হওয়ার উপায় কি খাবেন গায়ের রং ফর্সা করার জন্য?
কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয়
যদি আপনি আপনার গায়ের রং ফর্সা করতে চান তবে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হবে। এই সকল খাবারে থাকা উপাদানগুলো গায়ের রং ফর্সা করতে সহায়তা করে। এই খাবারগুলো ত্বক মোলায়েম ও আকর্ষণীয় করে তোলে। প্রিয় পাঠক তাহলে চলুন আর দেরি না করে, কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয় এমন কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জেনে নেই।
১। ডিম
ডিম খাওয়ার কারণে হাড় ভালো থাকে, যৌ- -ন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এসকল কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু ডিমের আরও একটা গুণ রয়েছে যেটা আমাদের মাঝে অনেকেই জানিনা। আর সেটা হচ্ছে ডিম ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে। যদি আপনি আপনার শরীরের সৌন্দর্যকে বেশি বৃদ্ধি করতে চান?
তাহলে প্রতিদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ২টি করে সেদ্ধ ডিম খান। মাস খানেকের মধ্যেই আপনার ত্বকের পরিবর্তন দেখতে পারবেন তবে ডিমের কুসুম কখনোই ফেলবেন না। তাই গায়ের রং ফর্সা করতে নিয়মিত ভাবে আপনার খাবার তালিকায় ডিম রাখার চেষ্টা করুন। শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার হচ্ছে ডিম।
আরো পড়ুনঃ লম্বা হওয়ার উপায় ও ব্যায়াম
২। সালাদ
ত্বকের সতেজতা এবং স্বাস্থজ্জ্বল রাখার জন্য ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের দরকার হয়। আর আমাদের ত্বকের জন্য এই প্রয়োজনীয় ফাইবারের চাহিদা মিটানো যায় সালাদ খাওয়ার মাধ্যমে। সালাদে আপনি পাবেন প্রচুর পরিমাণে ফাইবার তার সঙ্গে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আপনার চেহারাকে রাখবে সুন্দর ও সতেজ।
৩। গ্রিন-টি
শরীরের জন্য অনেক সময় অনেককেই হয়তো গ্রিন-টি খেতে বলতে শুনেছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন গ্রিন-টি চেহারা সুন্দর ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করতে পারে। সালাদের মতো গ্রিন-টিতেও আপনি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাবেন। গ্রিন-টি খাওয়ার কারণে আপনার চেহারার বলি রেখা অথবা কালো কিংবা কালচে দাগ পড়া থেকে বিরত রাখে যার কারণে চেহারা সুন্দর ও ভালো দেখায়।
৪। পেঁপে
জি আপনি ঠিকই দেখেছেন। পেঁপে দেশি খাবার বলেই ইগ্নর করবেন না। পেঁপে খাওয়ার কারণে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়, পেঁপে খাওয়ার ফলে চেহারাকে উজ্জল করবে। লিভার ভালো রাখার জন্য পেঁপে খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে, কিন্তু পেঁপেতে প্রচুর ভিটামিন-এ রয়েছে, যার কারণে পেঁপে আপনার চেহারার জন্যে বেশ উপকারি।
পেঁপে খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ত্বকের মৃত কোষগুলো দূর করবে এবং কালচে দাগ ভালো করতে সহায়তা করবে। তাই গায়ের রঙ ফর্সা করার জন্য বেশি বেশি পেঁপে খান। পেঁপে খাওয়ার কারণে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
আরো পড়ুনঃ কি খেলে মোটা হওয়া যায়
৫। কিউই ফল
এটি একটি বিদেশি ফল। কিন্তু বর্তমানে তা আমাদের দেশেও পাওয়া যায়। এই ফলে আপনি পাবেন ভিটামিন সি, যা ত্বকের কোষকে সাহায্য করে সাথে চেহারার কালচে দাগ দূর করতে সহায়তা করে। যদি আপনি কিউই ফল খুঁজে না পাবেন কিংবা ঝামেলায় যেতে চান না তাহলে আপনি ডিম এবং পেঁপে বেশি বেশি খান।
৬। সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শসা
যদি আপনি শসা ভালোভাবে পিষে শসার রস দিয়ে নাক ও মুখ ধৌত করে নাকে এবং মুখে প্রলেপ দিয়ে রাখেন তবে আপনার চেহারার উজ্জ্বলতা অনেকগুণে বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং এই শসা যদি আপনি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে শসাতে থাকা উপাদান গুলো আপনার শরীরে মিশে যাবে যার কারণে আপনার শরীর আগের চেয়ে মোলায়েম আকর্ষণীয় ও সুন্দর হতে থাকবে। শসা সরাসরি আর্দ্রতা ধরে রাখতে কাজ করে এবং শরীরকে আরো বেশি ফর্সা করতে সাহায্য করে।
৭। টক জাতীয় ফল
প্রায় সকল টক জাতীয় ফলই ত্বকের জন্যে বেশ উপকারি। বিশেষ করে যেসকল ফলে ভিটামিন-সি রয়েছে সেসকল ফল। আবার সাইট্রিক এসিড রয়েছে এমন ফল ও কিন্ত ত্বকের জন্য ভালো।
৮। গায়ের রং ফর্সা করতে সামুদ্রিক মাছ
মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ। আমাদের মাঝে কমবেশি সকলেই মাছ খেতে পছন্দ করি। আমরা জানি, সামুদ্রিক মাছ গায়ের রং ভালো রাখতে অনেক বেশি কার্যকরী ভুমিকা রাখে। সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে ফ্যাটি এসিড। এছাড়াও মাছের তেলে অনেক বেশি ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে ও ত্বকের উজ্জলতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুনঃ গেজ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
৯। গায়ের রং ফর্সা করতে প্রতিদিন শাঁক খান
শাঁক খেতে অনেকেই অনেক বেশি পছন্দ করেন আবার অনেকেই আছেন যারা শাঁক খেতে পছন্দ করেন না। কিন্ত গায়ের রং ফর্সা করতে আপনি প্রতিদিনই শাঁক খেতে পারেন। সেজন্য আপনি বিভিন্ন প্রকার শাঁক খেতে পারেন। শাঁকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুলো হচ্ছে পালংশাক, পুঁইশাক।
গায়ের রং ফর্সা করার প্রাকৃতিক উপায়
লেবুর রস আর চিনি - লেবুর রস হাতে চিপে বের করে নিন। ১ চামচ পরিমাণ লেবুর রসের সঙ্গে ১ চামচ চিনি মিশিয়ে পেস্টের মতো করে নিন। তারপর মুখে এবং হাত পায়ে ম্যাসাজ করুন এবং ২ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২ মিনিট পরে ভালোভাবে করে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতি সপ্তাহে ১ বার করার চেষ্টা করুন তাই যথেষ্ট।
কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয় এটি না খুঁজে আপনি বাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। যদি আপনি দ্রুত ফর্সা হতে চান তাহলে দ্রুত ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করার পাশাপাশি আপনি চাইলে উপরে আলোচনা করা খাবারগুলো খেতে পারেন।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।