জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম — প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেও যারা ১৮ বছরের কমবয়সী নাগরিক তাদের জন্য জন্ম নিবন্ধন থাকা জরুরি। জাতীয় পরিচয়পত্র যেমন একজন সুনাগরিকের নাগরিকত্বের প্রমাণ বহন করে ঠিক তেমনি ভাবে জন্ম নিবন্ধন ও শিশু কিশোরদের নাগরিকত্বের প্রমাণ বহন করে। জন্ম নিবন্ধন হচ্ছে শিশুর জন্মগত অধিকার প্রত্যেকটি শিশুর জন্মের পর পর জন্ম নিবন্ধন করা প্রয়োজন।
শিশুর নাম লিঙ্গ, জন্মের তারিখ, পিতার নাম, মাতার নাম ও স্থায়ী ঠিকানা সম্বলিত পরিচয়পত্রটিই হল জন্ম নিবন্ধন। সমসাময়িক যেসব কাজে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়, সেসব ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রাধান্য পায়।
বর্তমান ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধনের উপর বেশী গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। পুরানো হাতে বা কাগজে লেখা জন্ম নিবন্ধন সনদ এর গুরুত্ব তেমন নেই বললেই চলে। প্রত্যেকটি জন্ম নিবন্ধন সনদ অবশ্যই অনলাইনে থাকতে হবে এবং প্রত্যেকের জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে থাকা বাঞ্ছনীয়। তাই জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আছে কিনা তা ওয়েবসাইটে গিয়ে চেক করতে হবে।
তার জন্য জন্ম নিবন্ধনের যাচাইকৃত ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৭ ডিজিটের নাম্বার ও জন্ম তারিখ দিয়ে খুঁজে বের করে দেখতে হবে। জন্ম নিবন্ধন সনদ যদি ডিজিটাল হয়ে থাকে তাহলে পূর্ণ তথ্য সম্বলিত একটি পেজে সনদটি দেখতে পাওয়া যাবে। আর যদি আপনার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ দেখতে না পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে আপনার জন্ম সনদ অনলাইনে নিবন্ধিত হয়নি। সেক্ষেত্রে হয়তোবা আপনাকে নতুন ভাবে জন্ম নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতেও হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ২০২২ সালের সরকারি ছুটির তালিকা
যেসব কারণে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন তথ্য পাওয়া যায় না
আমাদের দেশে পুরাতন জন্ম সনদের তথ্য সমূহ হাতে লিখে সংরক্ষণ করা হতো। যা পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের রেজিস্টারে উল্লেখিত থাকতো। পরবর্তী সময়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন দেখা দিলে তা লিখিত আকার থেকে অনলাইনে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া চালু করা হয়। অনেকগুলো তথ্য একসাথে রূপান্তরিত করার কারণে হয়তো বা কিছু তথ্য বাদ পড়ে যায়, তাই কিছু কিছু ব্যক্তির অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তাই তাদের কাছে লেখা নিবন্ধিত সনদপত্র থাকলেও তা ডিজিটালের আওতাভুক্ত নেই।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম
কারো জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি যদি অনলাইনে না পাওয়া যায় তাহলে তাকে আগে লক্ষ্য করতে হবে যে তার জন্ম নিবন্ধন কত ডিজিটের। কারণ পুরনো জন্ম নিবন্ধন গুলো ১৬ ডিজিটের ছিল আর বর্তমান জন্ম নিবন্ধন সনদ গুলো হচ্ছে ১৭ ডিজিটের। এই ১ ডিজিটের তারতম্যের কারণে ও হয়তোবা জন্ম সনদ অনলাইনে নিবন্ধিত নেই। আর যদি জন্ম নিবন্ধন সনদ ১৭ ডিজিটেরই হয় আর তার তথ্য যদি অনলাইনে না পাওয়া গিয়ে থাকে তাহলে নতুন করে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য আবেদন করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড
নিবন্ধনকারী ব্যক্তির জন্ম যদি ২০০১ সালের আগে হয়ে থাকে তাহলে তার পিতা ও মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রয়োজন পড়বে না, শুধু আবেদন করার সময় পিতার নাম ও মাতার নাম উল্লেখ করে দিলেই হবে। আর যদি নিবন্ধনকারী ব্যক্তির জন্ম ২০০১ সালে বা তারপর হয় তাহলে নিবন্ধনকারী ব্যক্তির পিতা ও মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ অবশ্যই থাকতে হবে।
কারণ পিতা ও মাতার জন্ম নিবন্ধন অনুসারে ই সন্তানের জন্ম নিবন্ধনে পিতা ও মাতাকে যুক্ত করা হবে। সেক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধনে সন্তানের নিবন্ধন সনদ এ পিতা ও মাতার নামের অংশে ক্লিক করলে তাদের জন্ম সনদও স্পষ্ট ভাবে ডাটাবেজ থেকে দেখা যাবে।
আর যাদের জন্ম নিবন্ধন এর সনদ ১৬ ডিজিটের তাদের যেই জেলায় বা যেই ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে জন্ম সেই অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদ অথবা জেলা পরিষদের দপ্তরে গিয়ে যোগাযোগ করে ১৬ ডিজিটের নাম্বারকে ১৭ ডিজিটে পরিণত করিয়ে ডিজিটাল করে আনতে হবে। ১৬ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধনের প্রথম ৪ ডিজিট হচ্ছে জন্মসাল এবং শেষের ৪ ডিজিট হচ্ছে ব্যক্তিগত তথ্য।
সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সনদ। স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জন্ম নিবন্ধনের সনদ খুবই দরকারি। তাছাড়া ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য, বিবাহ রেজিস্ট্রি এবং বিভিন্ন টিকাদান কর্মসূচির জন্য ও জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়। আমাদের ব্যক্তি জীবনের কোন না কোন কাজে জন্ম নিবন্ধন এর প্রয়োজন হয়। তাই প্রত্যেককে সঠিক তথ্য সহকারে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ করে রাখতে হবে। নিজের জন্য এবং নিজের সন্তানের জন্য হলেও এটা জরুরি।
আরো পড়ুনঃ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।