ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড — অনেকেই আছেন যারা আমাকে প্রশ্ন করেন যে, আমি নিজেই নিজের ভোটার আইডি কার্ড দেখবো কিভাবে? খুবই সহজে আপনি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটার দিয়ে আপনার নতুন ভোটার আইডি কার্ড দেখতে এবং ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে আবার নতুন করে ডাউনলোড কিংবা রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে পারবেন আপনি। ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করা এবং ভোটার আইডি কার্ড চেক করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি 2022 এখানে দেখানো হলো। চলুন তাহলে জেনে নিই ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য কি কি প্রয়োজন হবে।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে যা প্রয়োজন হবে
নিজের ভোটার আইডি কার্ড দেখার জন্যে কিংবা ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্যে আপনার যা যা প্রয়োজন হবে, ভোটার নিবন্ধন ফর্মের স্লিপ নাম্বার, জন্ম তারিখ, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা, উপজেলা, জেলা, বিভাগ এবং একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার। এছাড়াও সচল মোবাইল নাম্বার যা ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) ভেরিফিকেশনের জন্যে এবং একটি স্মার্টফোন (আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য।
আরো পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২২
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভোটার আইডি কার্ড চেক কিংবা নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করাটা খুববেশি কঠিন কোনো কাজ না। আপনি আমাদের এখানে আলোচনা করা বিষয় ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড নিয়ম অনুসরণ করে অনলাইন থেকে আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
ধাপ ১ঃ NID Wallet মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড
প্রথমে আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্যে নির্বাচন কমিশনের ডেভেলপ করা মোবাইল অ্যাপ NID Wallet একটি স্মার্টফোনে ইন্সটল করার দরকার হবে। NID Wallet ইন্সটল করার জন্য আপনার ফোনের ব্রাউজার থেকে Google Play Store এ যান এবং সেখানে সার্চ করুন NID Wallet। তারপর আপনার কাঙ্ক্ষিত অ্যাপটি ইনস্টল করে নিন।
ধাপ ২ঃ জাতীয় পরিচয়পত্র অ্যাকাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন এবং লগ ইন
স্লিপ নাম্বার, জাতীয় পরিচয়পত্র অর্থাৎ ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার দিয়ে এনআইডি এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করার দরকার হবে। যদি আপনি ২০১৯ সালের পরে ভোটার হোন তাহলে হয়তোবা আপনার ভোটার আইডি স্লিপ অবশ্যই রয়েছে। আপনি উক্ত স্লিপ নাম্বার দিয়ে সহজেই জাতীয় পরিচয়পত্র অর্থাৎ ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র উইং (NID Wing) এর রেজিস্ট্রেশন করেই ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে এবং তা প্রিন্ট ও লেমিনেটিং করে ব্যবহার করতে পারবেন। এখন, জাতীয় পরিচয়পত্রের ওয়েবসাইটে আপনাকে একাউন্ট রেজিষ্টার বা সাইন আপ করতে হবে। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
আরো পড়ুনঃ রমজান সম্পর্কে হাদিস
ধাপ ১ঃ
জাতীয় পরিচয়পত্র ওয়েবসাইটে এখানে ক্লিক করে ভিজিট করুন। তারপর নিচের মতো একটি পেজ আপনি দেখতে পারবেন।
সেখান থেকে রেজিস্টার করুন অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ ২ঃ
জাতীয় পরিচয়পত্র/ভোটার আইডি কার্ড/স্মার্ট কার্ড নাম্বার কিংবা স্লিপ নাম্বার টাইপ করুন। আপনার জন্মতারিখ এবং ছবিতে দেখানো কোডটি টাইপ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিন।
ধাপ ৩ঃ
তারপর আপনার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা (বিভাগ, জেলা, উপজেলা) গুলো বাছাই করুন। নিচের ছবির মতোন।
আরো পড়ুনঃ ২০২২ সালের রমজানের সময় সূচি - রমজানের ক্যালেন্ডার ২০২২
ধাপ ৪ঃ
উপরোক্ত সকল তথ্য ঠিকঠাক থাকলে আপনার মোবাইল নাম্বার দেখানো হবে। অথবা আপনি নতুন একটি সচল থাকা মোবাইল নাম্বার দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্টটিকে ভেরিফাই করার প্রয়োজন হবে। অবশ্যই মোবাইল নাম্বারটি সচল এবং আপনার হাতে থাকতে হবে। কেননা এই মোবাইল নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) সেন্ড করা হবে।
এখানে আপনার মোবাইল নাম্বারটি সঠিকভাবে টাইপ করুন এবং বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করে দিন।
ধাপ ৫ঃ
আপনার মোবাইল ফোনে ৬ ডিজিটের একটি ভেরিফিকেশন কোড সেন্ড করা হবে। কোডটি উপরোক্ত ছবিতে দেখানো বক্সে লিখুন এবং বহাল বাটনে ক্লিক করে দিন।
এবার আপনার Face Verification করার জন্য একটি QR কোড দেখানো হবে। NID Wallet এপ দিয়ে কোডটিকে স্ক্যান করে আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করার প্রয়োজন হবে।
আরো পড়ুনঃ জন্ম নিবন্ধন সংশোধন - জন্ম নিবন্ধন সংশোধন অনলাইন
ধাপ ৬ঃ
আপনার Face Verification করার জন্য একটি QR কোড দেখানো হবে। যে স্মার্টফোনে আপনি NID Wallet অ্যাপটি ইনস্টল করেছেন। উক্ত মোবাইল ফোনটি হাতে নিন। অ্যাপটি ওপেন করুন এবং QR কোডটিকে স্ক্যান করুন।
ধাপ ৭ঃ
অ্যাপে দেখানো ভিডিওর মতোন, আপনার মুখ বরাবর সেলফি ক্যামেরা ধরুন এবং সোজাসুজি সেদিকে তাকান। ঠিক থাকলে ছবিতে OK অর্থাৎ টিক মার্ক নোটিফিকেশন দেখাবে। এরপর, ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আপনার মাথা ডানে ১ বার এবং বামে ১ বার ঘুরাবেন। OK না দেখালে, আবার চেষ্টা করুন। ফেস ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হলে আপনার সামনে নিচের মতো করে একটি পেজ চলে আসবে।
ধাপ ৮ঃ
এখানে পাসওয়ার্ড সেট করুন। ভবিষ্যতে ফেস ভেরিফিকেশনের ঝামেলা ছাড়া অ্যাকাউন্টে লগইন করার জন্য, আপনাকে সেট পাসওয়ার্ড বাটনে ক্লিক করতে হবে এবং একটি ইউনিক পাসওয়ার্ড সেটআপ করতে হবে। পাসওয়ার্ড সেট করার জন্যে আমার সাজেশন থাকবে। ভবিষ্যতে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন কিংবা পুনরায় ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্যে আপনার অনেক সুবিধে হবে।
ধাপ ৯ঃ জাতীয় পরিচয়পত্র/ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
পাসওয়ার্ড সেট করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার NID Website সেখানে লগিন হয়ে যাবে। সেখানে আপনি আপনার ছবি এবং প্রোফাইল দেখতে পারবেন।
ছবির ডানপাশে দেখানো অপশনটি থেকে সবার নিচে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে আপনি আপনার নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বের করার নিয়ম
শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করার কোনো সুযোগ নেই। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ জানা থাকলেই এনআইডি সেবার ওয়েবসাইট থেকে মোবাইল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করতে পারবেন।
আপনি যদি জানতে চান যে, কারো মোবাইল নাম্বার দিয়ে কিভাবে কোনো ব্যক্তির নাম, ঠিকানা বের করা যায়, তাহলে আমি বলব এটি সাধারণ মানুষের জন্যে অসম্ভব। কেননা ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার কারণে এই ধরণের কোনো সুযোগ সুবিধে নেই। তবে শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে আপনি কারো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারবেন।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।