কিভাবে ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করা যায় - ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করবো কিভাবে — বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেল অনেকেরই আছে। কিন্তু সব চ্যানেলের ভিডিও কিন্তু সকলেই দেখে না। একটি ভালো মানের ভিডিও তৈরি করেও অনেক সময় সারা পাওয়া যায় না। অথচ অনেকের ভিডিও আবার মিলিয়ন ছাড়িয়ে বিলিয়ন ভিউ হয়। আপনি যদি একটি ব্যবসা পরিচালনা করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার পণ্যের প্রচার করার পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনার জন্য এই লিখাটি পড়া অত্যন্ত জরুরী।
কেননা এই লিখাতে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করা যায়, ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করবো কিভাবে, কিভাবে বেশি ভিউ পাবেন এই বিষয়গুলো নিয়ে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক ইউটিউবে ভিডিও ভাইরাল করার উপায় বা ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করার উপায় সম্পর্কেঃ
আপনি যদি একটি ভিডিও তৈরি করার কথা ভাবেন তাহলে ইউটিউব হচ্ছে আপনার ক্রিয়েটিভিটি দেখানোর একটি ভালো মানের প্ল্যাটফর্ম। ইউটিউবের ভিডিওগুলি এখন আমাদের সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কারণ প্রত্যেক ব্যক্তি এমন কিছু তৈরি করতে চায় যা ভাইরাল হবে তা ব্যক্তিগত কারণে হোক বা কোনো কারণ বা কোনো পাবলিক ইভেন্টের মতো কিছু।
যদিও ইউটিউব একটি উল্লেখযোগ্য শ্রোতাকে হোস্ট করে। এখানে লক্ষ লক্ষ থেকে কোটি কোটি ভিডিও আপলোড করা হয় প্রতিদিন। তাই এতো ভিডিওর ভিরে আপনার ভিডিও সবাইকে দেখানো আসলেই চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার। যাই হোক কিছু পয়েন্ট দেখে নেই আমরা যেভাবে ইউটিউবে ভিডিও ভাইরাল করবো।
১। সব সময় সেরা কোয়ালিটির ভিডিও সাফল্যের গ্যারান্টি দেয়না, অনেক সময় ভালো কন্টেন্ট ও সাফল্য এনে দেয়
এটা অনুমান করা সহজ যে, যে ভিডিওগুলি বেশিরভাগ ভাইরাল হয় সেগুলি হাই কোয়ালিটির ভিডিও। যদিও এটি আপনার ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনাকে বেশি করতে পারে কিন্তু এটি সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। আপনি যদি গত কয়েক বছরে সাধারণত ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলি দেখেন তবে বুঝতে পারবেন সেগুলি সাধারণত আবেগে ভরা। আপনি যদি মনে করেন যে কোয়ালিটি নিশ্চিত করাই যথেষ্ট তাহলে আপনার ভিডিওটি সম্ভবত মিক্সেই হারিয়ে যাবে। এটি যথেষ্ট ট্রাফিক আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হবে। তাই কোয়ালিটির পাশাপাশি ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে হবে তবেই ভিডিও বেশি ভিউ পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুনঃ ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল
২। দর্শক শ্রোতাদের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে
ভাইরাল হওয়ার জন্য একটি ভিডিও তৈরি করার পরিকল্পনা করতে হলে আগে দর্শক শ্রোতাদের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। ভিডিও নির্মাতারা সাধারণত দর্শকদের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করতে ব্যর্থ হন। তারা ভিডিওটির বিভিন্ন দিক নিয়ে নিজেদের ব্যস্ত রাখে কিন্তু কে সেই বিশেষ ভিডিওটি দেখবে এবং কেন দেখবে তা নিয়ে ভাবেন না। আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার ভিডিওর বিষয়বস্তু দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হবে।
তাই আপনার এমন একটি ভিডিও তৈরি করা উচিত যা আপনার শ্রোতাদের মাঝে আকর্ষণ জাগাবে। তারা যে তথ্য খুঁজছে তা যেন আপনার ভিডিওটিতে তারা খুঁজে পায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভিডিওর আকার বেশি দীর্ঘ করা যাবে না আবার বেশি শর্টও করা যাবে না। সর্বাধিক ১০ মিনিটের ভিডিও হলো একটি স্ট্যান্ডার্ড সময়ের ভিডিও অন্যথায় তারা আগ্রহ হারাবে৷ একই সময়ে, আপনার ভিডিওটি যেন খুব সাধারণ হয়ে না যায় সেদিকে আপনার খেয়াল রাখা উচিত।
৩। ইউটিউবে ফলোয়ারদের সাথে যুক্ত হন
এটি একটি দুর্দান্ত কৌশল যা বেশ কয়েকটি ইউটিউবার ব্যবহার করে। যারা তাদের নিজ নিজ চ্যানেলে সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চায় তারা এই ধরণের কৌশল অবলম্বন করে। ইউটিউব নিজেই একটি সামাজিক নেটওয়ার্ক যেখানে দর্শকরা ভিডিওটির নীচে প্রাসঙ্গিক মন্তব্য করতে পারে। আপনি যদি আপনার কয়েকজন ফলোয়ারের সাথে যুক্ত হন তবে আপনি তাদের সাথে আবেগগত স্তরে সংযোগ করতে পারেন এবং দর্শকরা সম্ভবত আপনার সম্পর্কে একটি অনুকূল মনোভাব তৈরি করবে।
আরো পড়ুনঃ ইউটিউবে কী কী বিষয়ে ভিডিও তৈরী করলে ভালো হবে
৪। ভিডিও প্রতিলিপি তৈরি
আপনি সহজেই একটি ট্রান্সক্রিপশন সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে আপনার ভিডিও ছোট ছোট প্রতিলিপি করতে পারেন। কারণ এটি আপনার ভিডিওকে সকল ব্যবহারকারীদের কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য করতে সহায়তা করবে। ভিডিও প্রতিলিপি করলে সেই ভিডিওর রেজুলেশন বা কোয়ালিটি পরিবর্তন করে বিভিন্ন মাধ্যমে আপলোড করতে পারবেন..এতে করে মূল ভিডিও কোয়ালিটি ঠিক রেখে আপনি প্রতিলিপি ভিডিও দ্বারা দর্শককে আপনার ভিডিওর প্রতি আকর্ষিত করতে পারবেন। প্রতিলিপি গুলো অবশ্যই ছোট ছোট করে তৈরি করতে হবে যেন এক অংশ দেখার পর আরেক অংশ দেখার আগ্রহ থাকে।
৫। একটি শিক্ষণীয় বিষয় যোগ করা
ভিডিওটি দেখার পর দর্শকদের ইতিবাচক কিছু করতে উৎসাহিত করা উচিত। যাতে ভিডিওটি তাদের মনের মধ্যে থাকতে পারে এবং তারা এক ঘন্টা পরে এটি ভুলে না যায়। একটি শিক্ষণীয় বিষয় যোগ করা আপনার জন্যও উপকারী হবে কারণ এটি আপনার ভিডিওটিকে বাকিদের থেকে আলাদা করে তুলবে এবং দর্শকদের কাছ থেকে একটি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে।
আপনি যদি বিশ্বব্যাপী আলোচিত কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন যেমন নারীর ক্ষমতায়ন বা পরিবেশ টিকিয়ে রাখা যা একটি সামাজিক কারণকে সাহায্য করতে পারে এবং আপনার ভাবমূর্তি উন্নত করতে পারে। এই ধরনের ভিডিও সহজেই অনলাইনে বিখ্যাত হতে পারে যা ভিডিওটিকে ভাইরাল করতে সাহায্য করবে।
৬। সহজবোধ্য
ভিডিও জটিল করা এড়িয়ে চলুন কারণ এটি দর্শকদের জন্য একটি বড় টার্নঅফ। কনটেন্ট যদি বেশি জটিল হয় তবে দর্শক প্রথম ১০ সেকেন্ড পরে অন্য ভিডিওতে স্যুইচ করবে। তাই যথা সম্ভব সহজ ভাবে বিষয় বস্তু ফুটিয়ে তোলার ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর উপায়
৭। ভিউ কিনবেন না
ভিডিওর ভিউ কেইনা বাড়াতে চায় ফেসবুক, ইউটিউবে বিভিন্ন এড ঘুরে বেড়ায় যেখানে বলা হয় ১০০০ ভিউ ২০০-৩০০ টাকা, যদিও এটি লোভনীয় হতে পারে, তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে এটি করা এড়িয়ে চলুন। কারণ এটি কঠোরভাবে ইউটিউবের নীতি লঙ্ঘন করে এবং ধরা পড়লে শাস্তি হতে পারে। আরেকটি দিক লক্ষ্য করা উচিত যে শুধুমাত্র বেশি ভিউ থাকলেই একটি ভিডিও ভাইরাল হয় না, শুধুমাত্র ভিউ হলেই ভিডিও ভাইরাল হয়না, কারণ ভিউ যেকোনো কারণে হতে পারে।
৮। নিদিষ্ট সময়ে ভিডিও প্রকাশ করুন
আপনার ভিডিও প্রোডাকশনে কাজ করার সর্বোত্তম সময় হল সপ্তাহের শেষে। এতে করে আপনি আপনার ভিডিওতে ফোকাস করার জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন। যাইহোক, সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত হল নতুন সপ্তাহের শুরুতে আপনার ভিডিও প্রকাশ করা। এতে করে দর্শকের মাঝে একটা আলাদা ইন্টারেস্ট থাকে যা আপনার ভিডিও ভাইরাল করতে সাহায্য করবে।
শেষ কথা
আপনি যদি একজন ইউটিউবার হিসাবে আপনার ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করেন তবে আপনাকে সৃজনশীলতার শীর্ষে থাকতে হবে। এর অর্থ হল আপনাকে অবশ্যই আপনার ভিডিওর উচ্চ গুণমান বজায় রাখতে হবে এবং আপনার ভিডিও প্রকাশ করার সেরা সময় নিয়ে গবেষণা করতে হবে। আপনার শ্রোতা এবং দর্শক সাবধানে নির্বাচন করুন এবং কমেন্টে সক্রিয় যোগাযোগের মাধ্যমে আপনার শ্রোতাদের সাথে জড়িত হন। এবং এই জিনিসটাই সবচেয়ে বেশি কাজ করে। কেননা দর্শকরা তাদের ফিডব্যাক জানায় কমেন্ট বক্সে। তাই এখানে সক্রিয় থাকলে আপনি দর্শকের চাহিদা বুঝে কাজ করতে পারবেন এতে সফলতাও পাবেন।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।