পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২২ — পাসপোর্ট অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। দেশের জাতীয় সেবা ও বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্টের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশী। পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম অনেকেই জানিনা। বিভিন্ন সময়ে অন্যের মাধ্যমে পাসপোর্ট করতে যেয়ে পড়তে হয় নানারকম ঝামেলার মধ্যে।
হ্যালো বন্ধুরা, আজকের এই আর্টিকেলে পাসপোর্ট করার নিয়ম কিংবা পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২২ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করবো। আপনি চাইলে এখন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট করতে পারবেন। নিজের জন্য নিজেই পাসপোর্ট করতে পারবেন কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই।পাসপোর্ট করার নিয়ম জানতে লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিনঃ
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম
পেজ সূচীপত্রঃ পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২২
পাসপোর্ট করার নিয়ম
অনলাইনে পাসপোর্ট করাকে সাধারণত ই-পাসপোর্ট বলা হয়। ই-পাসপোর্ট করা খুববেশী ঝামেলার কাজ নয়। খুব সহজেই আপনি ঘরে বসে ই-পাসপোর্ট এর আবেদন করতে পারবেন। পাসপোর্ট করার সম্পুর্ণ নিয়ম আপনাদের সামনে তুলে ধরছিঃ-
ই-পাসপোর্ট এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র
পাসপোর্ট আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ই-পাসপোর্ট এর আবেদন করার পূর্বে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপনার কাছে থাকা প্রয়োজন। তা হলোঃ-
১। জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড। যদি ১৮ বছর না হয় তাহলে জন্মনিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি ২। শিক্ষাগত যতগুলো সার্টিফিকেট আপনার রয়েছে। সবগুলো সনদপত্রের ফটোকপি ৩। পূর্বে যদি আপনার কোনো পাসপোর্ট করা থাকে সেটার একটি ফটোকপি ৪। এপয়েটমেন্ট একটি ফটোকপি ৫। যখন ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন। আবেদন এর একটি কপি নিজ সংগ্রহে রাখবেন। উপরিউক্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো পুলিশ ভেয়ারিফিকেশন ও পাসপোর্ট করার জন্য দরকারি।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার নিয়ম
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম
পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য সবার প্রথমে https://www.passport.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। আপনার পাসপোর্ট আবেদন প্রায় সকল তথ্য এখানে আপনি দেখতে পাবেন। এই ওয়েবসাইটে আপনি ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করে পাসপোর্টের যাবতীয় তথ্য সকল কিছু পেয়ে যাবেন।
নতুন ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম
বাংলাদেশে নতুন যদি আপনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে চান সবার প্রথমে বাংলাদেশ পাসপোর্ট পোর্টাল সাইটে আপনাকে ঢুকতে হবে। সাইট লিংক www.epassport.gov.bd.
এখানে নির্দিষ্ট পরিমান সঠিক তথ্য প্রদান করুন। ফর্মে উল্লিখিত সকল বিষয়ের যাবতীয় তথ্য পূরন করে নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
আপনার পাসপোর্ট করা হয়ে গেলে। আপনার পাসপোর্টের সকল তথ্য সঠিক রয়েছে কি না সেটা দেখার প্রয়োজন পরে। অনলাইনে আপনি চাইলে আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ সহ যাবতীয় সকল তথ্য চেক করে নিতে পারবেন। অনলাইনে পাসপোর্ট চেক করার জন্য এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
এখানে অনলাইনে আবেদনকৃত পাসপোর্টের রেজিষ্ট্রেশন আইডি অথবা অ্যাপলিকেশন আইডি অথবা ই-মেইল এড্রেস দিতে হবে উপরের বক্সে। যেকোনো একটি দিতে পারলেও হবে। নিচের বক্সে আপনার জন্মসাল সঠিকভাবে দিয়ে। ছোটো একটি ক্যাপচা পূরণ করে "চেক" বাটনে ক্লিক করলেই আপনার পাসপোর্টের সকল তথ্য আপনার কাছে চলে আসবে।
আরো পড়ুনঃ নিজেই নিজের ভোটার আইডি কার্ড দেখবো কিভাবে
ই-পাসপোর্ট ফি
ই-পাসপোর্ট এর আবেদন সফলভাবে হয়ে গেলে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা তাদেরকে পেমেন্ট করতে হবে। পেমেন্ট অনলাইন মোবাই ব্যংকিং এর মাধ্যমে করতে পারবেন না। এমন কি কোনো কার্ড দিয়েও পারবেন না। বর্তমানে ই-পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল সাইটে অনলাইন পেমেন্টস সিস্টেম এখনো যুক্ত করে নাই। পেমেন্ট দেয়ার জন্য আপনাকে কোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকে যেতে হবে। সেখান থেকে আপনাকে পাসপোর্টের যাবতীয় ফি পরিশোধ করতে হবে। ই-পাসপোর্ট এর নির্ধারিত রেগুলার ফি নিচে তুলে ধরলাম। দ্রুত ডেলিভারি নিতে চাইলে আরো বেশী পে করতে হবে আপনাকে।
১। ৫ বছর মেয়াদের ৪৮ পেজের পাসপোর্টের রেগুলার ফি ৪ হাজার ২৫ টাকা। এক্সপ্রেস ডেলিভারি ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা। সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা।
২। ১০ বছর মেয়াদের ৪৮ পেজের পাসপোর্টের রেগুলার ফি ৫ হাজার ৭০০ টাকা। এক্সপ্রেস ডেলিভারি ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা। সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ফি ১২ হাজার ৭৫ টাকা।
৩। ১০ বছর মেয়াদের ৬৪ পেজের পাসপোর্টের রেগুলার ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা। এক্সপ্রেস ডেলিভারি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা। সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ফি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
উল্লেখ্য যে, রেগুলার ডেলিভারিতে ১৫ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগবে আপনার ই-পাসপোর্ট তৈরি হতে। এক্সপ্রেস ডেলিভারি তে ৭ থেকে ১০ দিন সময় নিবে। সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি তে সর্বোচ্চ ২ দিনের মধ্যে হয়ে যাবে। যারা সরকারি চাকরিজিবি তাদের জন্য সবসময় এক্সপ্রেস ডেলিভারি ফ্রি পাবেন।
পুলিশ ভেরিফিকেশন
পাসপোর্টের আবেদন এবং ফি প্রদান এর কাজ সম্পন্ন হলে আপনাকে পুলিশের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন করতে হবে। আপনি যেসকল তথ্য পাসপোর্ট করার জন্য দিয়েছেন উক্ত তথ্য গুলো সত্য কি-না এটা কোনো পুলিশের সাহায্য নিয়ে তাকে দিয়ে যাচাই করিয়ে নিন। প্রয়োজনে নিজের এলাকায় তাকে নিয়ে আসুন সব কিছু সরাসরি দেখানোর সুযোগ করে দিন। এতে আপনার পাসপোর্ট করতে ঝামেলা পোহাতে হবে না।
আরো পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২২
ই-পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম
প্রতিটি পাসপোর্ট এর একটি নির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত মেয়াদ দেয়া থাকে। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেই পাসপোর্ট ব্যাবহার করার মাধ্যমে কোনো প্রকার সেবার আওতাভুক্ত হবেন না। এজন্য দরকার হয়ে পাসপোর্ট রিনিউ করার। পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য অনলাইনে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট এ লগিন করে পূর্বে যেভাবে নতুন পাসপোর্ট আবেদন করেছেন। ঠিক একই নিয়ম মেনে আবেদন করতে হবে। তাহলে আপনি আবার নতুন মেয়াদের পাসপোর্ট এর জন্য মনোনীত হবেন। পাসপোর্টের রিনিউ করতে এই সাইটে চলে যান www.epassport.gov.bd.
শেষ কথা
উপরিউক্ত পাসপোর্ট করার নিয়ম এর মাধ্যমে আপনি নিজেই কোনো প্রকার দালাল ছাড়া পাসপোর্টের আবেদন, ফি প্রদান, পুলিশ ভেরিফেকশন সহ সকল কাজ সমাধান করতে পারবেন। পাসপোর্ট করার নিয়ম আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।