কম্পিটিশন এর এই যুগে এসে কোনো চাকরির জন্য বসে থাকা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। চাকরির প্রতিযোগিতা এতবেশী পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে যে, আপনি যদি শুধুমাত্র চাকরি হওয়ার প্রত্যাশায় বসে থাকেন পরিশেষে, শুন্য হাত নিয়ে আপনাকে ঘরে ফিরতেও হতে পারে।
চাকরির প্রস্তুতির পাশাপাশি লাভজনক ব্যবসা গুলোর মাধ্যমে স্বল্প সময়ে স্বাবলম্বী হতে পারবেন। বেকার সমস্যা রোধে ব্যবসা কার্যকরী একটি ভুমিকা পালন করে। আমাদের দেশে শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা দিন দিন অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Image by standret on Freepikশিক্ষিত বা অশিক্ষিত, নারী কিংবা পুরুষ সকলেই ব্যবসা ক্ষেত্রে ভালো করতে পারেন। ব্যবসা এর জন্য একাডেমিক শিক্ষ্যার অধিক প্রয়োজনীয় না হলেও এখানেও আলাদা জ্ঞান সম্পন্ন না হলে আপনি সফল হতে পারবেন না। ব্যবসা এমন একটি বিষয় যেখানে লাভ হলে অনেক বেশী হয় আবার অপরদিকে লস হলেও অধিক পরিমাণে সেটা হয়।
ব্যবসা করার জন্য আপনাকে খুজে নিতে হবে কোন গুলো বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা। শুধুমাত্র লাভের আশায় এই ব্যবসা করার প্রতিশ্রুতি নিতে হবে। লাভজনক ব্যবসা গুলোতে লাভের পরিমাণ থাকে অনেক বেশী। যার ফলে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে আত্বনির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারবেন।
আমাদের আজকের পোষ্টে আমরা দেখবো সেরা কয়েকটি লাভজনক ব্যবসা সম্পর্কে কিংবা বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কোনটি। ব্যবসা শুরু করার সময় আমাদের সকলের মাথায় একটি চিন্তা চলে আসে যে, কোন ব্যবসাটি শুরু করবো?
এসকল চিন্তার অবশান ঘটাতে লাভজনক ব্যবসা গুলো আপনাদের সহায়ক করে তুলবে। আপনি যদি লাভজনক ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পুর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো। চলুন তাহলে জেনে নিই বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা গুলো কি কিঃ
(toc) #title=(সুচিপত্র)
বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা
শতাব্দী থেকে সন মানুষ যেমন পরিবর্তনশীল ঠিক তেমনি মানুষের নিত্তনৈমিত্তিক কাজ ও চাহিদার পরিবর্তন ঘটে সময়ের সাথে সাথে। পুর্বে যে ব্যবসা গুলোতে অধিক লাভ্যাংস পাওয়া যেত সে সব ব্যবসা গুলোর বর্তমানে অস্তিত্ব খুজে পাওয়া ও দুস্কর।
ব্যবসা করে লাভবান হতে চাইলে শুধুমাত্র একটি ব্যবসার উপরে নিজেকে নিয়োজিত রাখা উচিৎ নয়। সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন ব্যবসা গুলোতে অধিক লাভ পাওয়া যায়। বর্তমান যুগ হচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞানের যুগ।
বিজ্ঞানের উত্তরনের যুগে মানুষের প্রতিদিন কার কাজে ব্যাবহার হচ্ছে ইন্টারনেট। বর্তমানে অনলাইন ব্যবহার করে ও অফলাইনে বেশ কিছু লাভজনক ব্যবসা রয়েছে। যেগুলোর তালিকা নিচে প্রকাশ করা হলোঃ
১। ই-কমার্স ব্যবসা
বর্তমান বিশ্বে ই-কমার্স এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনলাইনকে মাধ্যম হিসেবে নিয়ে এখানেই ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন আপনিও। ই-কমার্স ব্যবসা গুলোতে প্রচুর লাভ হয়।
এখানে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। যে সকল পণ্য গুলো সেল করবেন সেগুলোর মার্কেটিং করতে হবে সোশ্যাল মিডিয়াতে। ই-কমার্স সাইট অনেক বড় ভাবে বিস্তৃত তাই এই সম্পর্কে না জেনে এ ব্যবসা শুরু না করা ভালো।
২। মোবাইল সার্ভিসিং ব্যবসা
বর্তমানে মোবাইল নেই এমন মানুষ হয়তো খুজেও পাওয়া যাবে না। মোবাইল এর বিভিন্ন সমস্যা এর জন্য আমাদের ছুটতে হয় সার্ভিসিং সেন্টার পয়েন্টে। এই ব্যবসা প্রচুর পরিমাণে লাভজনক বর্তমানে।
মোবাইল ফোনের ইউজার যত বৃদ্ধি পাবে মোবাইল সার্ভিসিং করার কাস্টমার ও অধিক বৃদ্ধি পাবে। মোবাইল সার্ভিসিং সম্পর্কে ভালো ভাবে কাজ শিখে। একটি দোকান ভাড়া নিয়ে সেখানে ওয়ার্কার দিয়েও কাজ করাতে পারেন।
আরো দেখুনঃ ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এবং রিস্ক ফ্রি ব্যবসা
৩। ফার্মেসী দোকান
মেডিসিন আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এমন কোনো পরিবার নেই যেখানে মেডিসিন লাগে না। প্রতিটি পরিবার এর মধ্যেই কাউকে না কাউকে মেডিসিন ক্রয় করতে হয়। বর্তমান সময়ে ফার্মেসির ব্যবসা গুলো ব্যাপক লাভজনক। এখানে, একটি দোকান নিয়ে, ফার্মেসী এর উপর কোর্স করে একটি ফার্মেসি শুরু করে দিতে পারেন।
৪। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবসা
বর্তমান বাংলাদেশে মানুষ এখন ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে বেশী ব্যাবহার করে থাকে। বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা মুহুর্তের মধ্যে এক স্থান হতে অন্য স্থানে টাকা পাঠাতে পারি। এসকল মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যদি আপনি দেয়া শুরু করেন প্রচুর পরিমাণে লাভ দেখতে পারবেন।
৫। কসমেটিক্স ব্যবসা
যদি বলা হয় সবচেয়ে বেশী লাভজনক ব্যবসা গুলো কি? তাহলে আপনাকে বলতেই হয় সেটা কসমেটিক্স এর ব্যবসা। এ সকল পণ্য গুলো ক্রয়কৃত দামের তুলনায় অনেক বেশী দামে বিক্রি করা হয়। কসমেটিক্স ব্যবসার মূল টার্গেট যেহেতু মহিলাগণ তাই তাদের চাহিদা অনেক বেশী থাকে। লাভজনক ব্যবসা গুলো খুঁজে থাকলে এটা আপনার জন্য অন্যতম সেরা লাভজনক ব্যবসা হিসেবে কাজ করবে।
৬। সিরামিক টাইলস ব্যবসা
ভবন নির্মাণ অথবা তৈজসপত্রে সিরামিক ব্যবহারের ইতিহাস হাজার বছরের পুরোনো। তবে সে সময় জাঁকজমক তৈজসপত্র ব্যবহার আর আলিশান অট্টালিকা নির্মাণ করতেন শুধু সমাজপতিরা। সাধারণের হাতের নাগালে সিরামিকের পণ্য আসার গল্প সেদিনের।
আর আমাদের দেশে বাণিজ্যিক ভাবে সিরামিকের প্রসার আরো পরে। যদিও এশিয়া মহাদেশে সিরামিকের ব্যবহার ছিল অনেক আগে থেকেই। তবে এখনকার সময়ের চিত্র একেবারে উল্টো।
মূলত বর্তমানে যেখানেই নতুন নতুন দালান কোঠা তৈরি করা হচ্ছে সেখানেই টাইলসের ব্যবহার হচ্ছে। অর্থাৎ যেখানেই নতুন দালান কোঠা সেখানেই টাইলসের ব্যবহার।
সিরামিকের ব্যবহারটা বর্তমানে এত বেশি পরিমাণে বেড়ে গেছে যে আপনি চাইলে টাইলসের ব্যবসা করে একজন সফল উদ্যোক্তা বনে যেতে পারেন। এটার কারণ হচ্ছে টাইলস ব্যবহারের সংখ্যা যে হাড়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্যবসায়ীর সংখ্যা কিন্ত সেই হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
সিরামিক টাইলসের ব্যবসা করার জন্যে শোরুম কিংবা দোকানের জায়গা নিজের হলে সবচেয়ে ভালো হয়। তবে শোরুম বা দোকানের জায়গা ভাড়া নিতে হলে ভাড়ার টাকাটা লাগবে। শোরুম বা দোকান খুব ভালোভাবে ডেকোরেট করার জন্যে ৪-৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হতে পারে।
দোকানে কিংবা শোরুমে পণ্য ডিসপ্লে করার জন্য কোনো খরচ করা লাগবে না। দোকানে ডিসপ্লে করার জন্য টাইলস কোম্পানি নিজেই সরবরাহ করে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনাকে কোম্পানির সাথে কথা বলতে হবে।
টাইলস ব্যবসা হচ্ছে একটি অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা। বর্তমান সময়ে এই ব্যবসাটি একচেটিয়া ব্যবসা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এই ব্যবসার বাজার অনেক বড়।
তাই আপনি যদি এই সিরামিকের ব্যবসা শুরু করতে চান তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে খুব ভালো ফলাফল বয়ে আনতে পারবেন। তাই বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে আপনি সিরামিক টাইলসের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
৭। জুতার ব্যবসা
জুতা এমন একটি জিনিস যা আমরা সকলেই ব্যবহার করে থাকি। রাফ ইউজ করবার জন্য হোক অথবা কোনো বিশেষ কোথাও যাওয়ার জন্য আমরা অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন ধরনের জুতা ব্যবহার করে থাকি।
আবার জুতার মাঝে আছে বিভিন্ন ধরন কিংবা ক্যাটাগরি। যারা নিয়মিত দৌড়ঝাঁপ এবং খেলাধুলা করেন, তাদের জন্যে আবার আলাদা ক্যাটাগরির জুতার দরকার হয়। সবকিছু মিলিয়ে দেখবেন জুতার বেশ ভালোই চাহিদা রয়েছে।
জুতার বিভিন্ন দিক আছে। সেসকল বিষয়ে আপনার ভালো পরিমাণে জ্ঞান থাকলে এই ব্যবসায় আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে করতে পারেন। কারণ জুতার ব্যবসা হচ্ছে বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা।
নূন্যতম ২-৫ লাখ টাকা মূলধন হলে জুতার ব্যবসা কিংবা বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার জন্য দোকান ভাড়া নিয়ে ছোট্ট পরিসরে শুরু করা সম্ভব।
এছাড়াও আপনি ১০-১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে অনলাইনের মাধ্যমে এই জুতার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আশা করা যায় এখান থেকে আপনি অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।
৮। ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা
আপনি যদি ভ্রমণের প্রিয় হন এবং এটি সঠিকভাবে পরিকল্পনা করেন তবে এই ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসাটি আপনার জন্য। একটি ট্রাভেল এজেন্সি খুলতে হলে আপনার পর্যটন স্থান সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
কারণ, যখন লোকজন আপনার কাছে একটি নির্দিষ্ট জায়গা বুক করার জন্য আসবে, তখন আপনার সেই জায়গা সম্পর্কে সমস্ত কিছু জানা উচিত, যাতে আপনি সেই অনুযায়ী তাদের ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন এবং যাতায়াতের সঠিক উপায়, আবাসন এবং খাবার বুকিং করতে পারেন।
আপনার যদি এই দক্ষতা থাকে তবে আপনি সহজেই এই ব্যবসা শুরু করতে এবং চালাতে পারেন। আপনার যা দরকার তা হল কয়েকটি কম্পিউটার, একটি প্রিন্টার এবং কয়েকজন লোক সহ একটি ছোট অফিস।
তবে ছোট স্কেলে আপনি একাই শুরু করতে পারেন। যখন আরও লোক বুকিং এর জন্য আপনার কাছে আসতে শুরু করবে, আপনি কাজটি সম্পন্ন করার জন্য কিছু সহযোগী নিয়োগ করতে পারেন। আপনি সহজেই 2 লক্ষ টাকার মধ্যে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আরো দেখুনঃ সহজে ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় | ব্যাংক লোন পাওয়ার সহজ উপায়
৯। কোচিং ব্যবসা
আমাদের দেশে বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে কোচিং ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক। কেননা প্রাইভেট টিউটর অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ার ফলে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন তাদের সন্তানদের পড়াশোনা করা হিমশিম খেয়ে যায়।
তাই প্রত্যেক মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন একটি মানসম্মত কোচিং সেন্টারে সাশ্রয়ী মূল্যে তাদের সন্তানদেরকে পড়াতে চান। আর কোচিং বিজনেসে সফলতার হার অনেকগুণে বেশি। আপনি একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হলো কোচিং ব্যবসা। আর এই ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে যেসকল বিষয় সম্পর্কে ভাবতে হবে সেগুলাে হচ্ছেঃ
- কোচিং সঠিকভাবে ক্লাস নেয়ার জন্য ভালোমানের শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
- উন্নত পরিবেশের ক্লাসরুম ব্যবস্থা থাকতে হবে
- কোচিংএ মানসম্মত এক্সামের ব্যবস্থা থাকতে হবে
- শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।
১০। কাপড়ের ব্যবসা
সেই খ্রিস্টপূর্ব থেকে এখন পর্যন্ত চালু আছে কাপড়ের ব্যবসা। যদিওবা কাপড়ের ব্যবসা হচ্ছে একটা কমন ব্যবসা। কাপড়ের ব্যবসা লাভজনক ব্যবসাও বটে। বলা হয়ে থাকে কাপড়ের ব্যবসা হচ্ছে সুন্নতি ব্যবসা।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মত (সাঃ) কাপড়ের ব্যবসা করতেন। তাই, কাপড়ের ব্যবসাতে বরকত রয়েছে। যদি আপনি কঠোর পরিশ্রম এবং সৎভাবে এই কাপড়ের ব্যবসাটি করতে পারেন। তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনি সফলতা লাভ করতে পারবেন।
কাপড়ের ব্যবসার করার জন্য আপনার ভালো পরিমাণ পুঁজির দরকার। বাংলাদেশের যেসকল জায়গায় কম মূল্যে ভালোমানের কাপড় পাওয়া যায় সেসকল জায়গা থেকে পাইকারি দাম দিয়ে কাপড় কিনে আপনি আপনার নিজের শহরে কিংবা এলাকায় বিক্রি করতে পারেন।
নিউমার্কেট, পুরানঢাকার ইসলামপুর, গাউসিয়া, গুলিস্তান থেকে আপনি পাইকারি দামে অনেক কম খরচে অনেক ভালোমানের কাপড় ক্রয় করতে পারবেন। বর্তমানে সবকিছুই অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে। দোকান থেকে কাপড় বিক্রি করার পাশাপাশি আপনি চাইলে এসকল কাপড় গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো মার্কেটিং করার মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন।
এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ভালো পরিমাণে রেস্পন্স পাওয়া যায়। অনলাইনের মাধ্যমে কাপড় বিক্রি করার কারণে আপনার দোকানের ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন সহ যাবতীয় খরচ হ্রাস পাবে। এছাড়াও আপনার অনেক পরিশ্রমও অনেক কমে যাবে।
১১। ক্যাফে বিজনেস
গত কয়েক দশক ধরে ক্যাফে তরুণদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। আজকাল, বড় শহর থেকে ছোট শহর সব জায়গায় ক্যাফে পাওয়া যাবে। বিশেষ করে ট্যুরিস্ট প্লেসে অনেক ক্যাফে আছে। আপনি যদি একটি ক্যাফে শুরু করতে চান, তাহলে আপনি সহজেই 5 লাখ টাকার মধ্যে এটি শুরু করতে পারেন। যাইহোক, একটি ক্যাফে শুরু করার চেয়েও কঠিন এটি সঠিকভাবে চালানো।
যেকোনো ক্যাফে শুধুমাত্র চমৎকার খাবার এবং পরিষেবার জন্য নয় বরং মনোরম পরিবেশের কারণেও চলে। আপনি যদি মানুষের পছন্দ অনুযায়ী আপনার ক্যাফে ডিজাইন করেন, তাহলে সেখানে আরও মানুষ আসবে। তাই শুরুতে এর স্থপতির পেছনে বেশি টাকা খরচ করতে হয়। একটি ক্যাফে শুরু করার পরে, এটি সঠিকভাবে বাজারজাত করলে আপনি অল্প সময়ের মধ্যেই লাভ দেখতে শুরু করবেন।
আরো দেখুনঃ মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় - নারীদের ঘরে বসে কাজ
১২। জিম এবং ফিটনেস সেন্টার
বর্তমানে আমরা প্রত্যেকেই সুস্থ ও সবল থাকতে চাই। এক্ষেত্রে, জিম হচ্ছে সাধারণ এবং অ্যাডভান্স ধরনের ব্যায়াম করার জন্য একটি দারুন জায়গা। জিম সেন্টারে প্রতি মাসে মাসে মেম্বার ফি নিয়ে লোকেদের ব্যায়াম করার সুযোগ দেয়া হয়। এই বিজনেস পূর্বে তেমন বেশি জনপ্রিয় ছিলোনা।
তবে হ্যাঁ বর্তমান সময়ে সকলেই আমরা আধুনিক লাইফস্টাইলের প্রতি আকর্ষিত হয়ে জিম এবং ফিটনেস সেন্টার গুলো প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করছি। তাই যদি আপনি জিম এবং ফিটনেস অর্থাৎ বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা টি করতে পারেন তাহলে আশা করা যায় এখান থেকে খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।
১৩। পানি বিশুদ্ধকরণ ব্যবসা
আজকাল, বেশিরভাগ লোকই বিয়ে উপলক্ষে বোতলজাত পানি ব্যবহার করে, শহর হোক বা গ্রামে। বিশেষ করে শহরগুলিতে, সবাই পান করার জন্য বোতলজাত পানি কেনে।
এমতাবস্থায়, আমরা বলতে পারি যে এটির ব্যবসা আজকের সময়ে সেরা এবং লাভজনক। এই ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনি খুব অল্প বিনিয়োগে সহজেই এটি আপনার বাড়িতে শুরু করতে পারেন।
আপনি যদি স্বল্প পরিসরে একটি পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট স্থাপন করেন, তাহলে আপনাকে সর্বোচ্চ 3 লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে, আপনি যদি বড় পরিসরে শুরু করেন তবে আপনাকে আরও অর্থ ব্যয় করতে হবে।
কিন্তু এর কোনো প্রয়োজন নেই। চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে আপনি ছোট পরিসরে এই ব্যবসা শুরু করে এটি বাড়াতে পারেন। প্রয়োজনে আপনি ডেলিভারির জন্য কিছু সহযোগী নিয়োগ করতে পারেন।
১৪। অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ড্রেসের ব্যবসা
যদি আপনি সৃষ্টিশীল হয়ে থাকেন তবে আপনি করতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ড্রেসের ব্যবসা। বর্তমান সময়ে অনলাইনে কেনাকাটার জন্যে সবাই ট্রাস্টেড মাধ্যম খুঁজে থাকে। আর যদি আপনি এই ব্যবসায় কাস্টমারের ভরসার স্থান দখল করতে পারেন তবে আপনার এই ব্যবসায় খুব দ্রুত উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারবেন।
১৫। ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা
শহরে হোক কিংবা গ্রামে সকল অঞ্চলেই ইলেকট্রনিক্স প্রডাক্টের প্রতি ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নিত্য পণ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স পণ্য। গ্রামে এবং শহরের প্রত্যেকটি বাড়িতেই ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্টের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আপনি নিম্নোক্ত ইলেকট্রনিক্স পণ্য গুলোর ব্যবসা করতে পারেন। ইলেকট্রনিক্স পণ্য গুলো হলোঃ ১। রাইস কুকার, প্রেসার কুকার, মাইক্রোওভেন, ইলেকট্রিক কেটলি, আয়রন, টিভি, এলইডি টিভি, রেফ্রিজারেটর, গ্যাসের চুলা, ইলেকট্রিক চুলা, ব্লেন্ডার, হটপট সহ নানা রকমের পণ্য।
আপনার নিকটস্থ শহরে এবং এলাকার বাজারে একটি রুম নিয়ে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমান সময়ে এই ব্যবসার সফলতার হার অনেক বেশি। ইলেক্টনিক্স ব্যবসায় ১৫-২০% লাভ করা যায়। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা করার জন্য আপনাকে ৪-৫ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। আপনি এই ব্যবসা থেকে প্রতিমাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমাসে ইনকাম করতে পারবেন।
১৬। চালের ব্যবসা - বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা
আমাদের দেশের প্রধান খাদ্য হচ্ছে চাল। মূলত সেজন্য চালের রয়েছে বিপুল চাহিদা। প্রত্যেকদিন বাজারে হাজার হাজার মেট্রিকটন চাল ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। তাই আপনি বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে এই চালের ব্যবসাটি করতে পারেন। বাংলাদেশের পাবনা জেলা হচ্ছে চালের জন্য বিখ্যাত।
আপনি যদি চালের ব্যবসা করতে চান তবে পাবনা থেকে পাইকারি দামে চাল ক্রয় করে নিজস্ব দোকানে বিক্রি করতে পারেন। তবে হ্যাঁ চালের ব্যবসা করার জন্যে মোটা অংকের টাকার প্রয়োজন হয়। যদি আপনার কাছে নূন্যতম ৮ লাখ টাকা হলে চালের ব্যবসা সুন্দর ভাবে শুরু করতে পারবেন।
চালের ব্যবসায় যতবেশি বিনিয়োগ করতে পারবেন, এখান থেকে ততবেশি লাভ করতে পারবেন। তাই যদি আপনার কাছে মোটা অংকের টাকা থাকে তাহলে আমি আপনাকে বলবো বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা অর্থাৎ চালের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
১৭। ফল চাষ - বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা
আমাদের দৈনন্দিন খাবার তালিকায় ফল হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। মানুষ শিক্ষা এবং সচেতনতার পাশাপাশি ফলকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। আমাদের দেশে ফলের ব্যাপক চাহিদা আছে।
তাই আপনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ফলের চাষ শুরু করতে পারেন। ফল চাষ করার জন্য আপনি যেসকল লাভজনক ফল সিলেক্ট করবেনঃ পেঁপে, পেয়ারা, মালটা, কলা, তরমুজ, আম, বারোমাসি লেবু ইত্যাদি।
ফল চাষ করার জন্য আপনি যেসকল বিষয়গুলো মাথায় রাখবেনঃ উন্নত জাতের ফল নির্বাচন করুন, সঠিক জায়গা নির্ধারণ করুন, নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করুন, পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখা, কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ রাখা, জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ, সেচ দেওয়া, বালাই নাশক ঔষধ ছিটানো, ফসল উত্তোলন ও বিক্রি করা।
১৮। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা
প্রিয় পাঠক আপনি জেনে অবাক হবেন যে, অন্যান্য ব্যবসার মতো আরো একটি বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হচ্ছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা। যদি আপনি এই ব্যবসাটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন।
তবে কিন্ত আপনি এখান থেকে বেশ ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। জেনে রাখা ভালো, আপনি যদি নিজেকে একজন সফল ইভেন ম্যানেজমেন্ট হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনি সহ আরো বেশ কয়েকজন সহকারী নিয়ে এই বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা টিকে পরিচালনা করতে হবে।
১৯। আচারের ব্যবসা
আচার আমাদের দেশের মানুষের কাছে একটা প্রচলিত এবং বহুল জনপ্রিয় একটি খাবার। আমরা বাঙ্গালি সবাই মুখরোচক জাতি হিসাবে পরিচিত। এইটা সকলেই জানে। আমাদের সকলের বাড়ির রান্না ঘর কিংবা ফ্রিজ খুললেই কয়েক প্রকারের আচার পাওয়া যাবে।
যদি আপনি ছোট পরিসরে ছোট আকারে ব্যবসা শুরু করতে চান তবে আপনার জন্য এই আচারের ব্যবসা। আচারের ব্যবসা করার জন্য আপনার কাছে ২০-৩০ হাজার টাকা থাকলেই যথেষ্ট। বিভিন্ন মৌসুমে যেসকল ফল কমদামে কিনতে পাওয়া যায় সেগুলো দিয়েই আপনি খুবই সহজেই এই আচারের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
যেমনঃ আমের সিজনে আমের আচার, বড়ইয়ের মৌসুুমে বড়ইয়ের আচার, চালতার আচার, জলপাইয়ের সিজনে জলপাইয়ের আচার সহ আরো অনেক প্রজাতির আচার বানাতে পারেন।
আচারের মান যদি ভালো হয় তাহলে অনেক বড় বড় রেস্তোরাঁ আপনার কাছে আচারের জন্য অর্ডার করবে। এছাড়াও আচার আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন, অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করে বর্তমানে অনেকেই অনেক টাকা আয় করছে।
আর হ্যাঁ, এখানে যে জিনিসটি আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সেটা হচ্ছে, আপনাকে আচারের কোয়ালিটি মেইনটেইন করতে হবে এবং আচার যেন পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়। বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে আচারের ব্যবসা অনেক সুন্দর এবং লাভজনক ব্যবসা।
২০। ফার্মের ব্যবসা
বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে গরু এবং ছাগল ফার্ম ভিত্তিতে পালন করার মাধ্যমে আপনি এই ব্যবসাটি করতে পারেন। বর্তমান সময়ে এটি খুবই লাভজনক ব্যবসার মধ্যে একটি।
দুধ হচ্ছে একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য, আর এটির চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। এছাড়াও গরু ও ছাগলের গোস্তের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। অনেক মুল্যে বাজারে গরু এবং ছাগলের গোস্ত বিক্রি হয়ে থাকে।
সুতরাং আপনি বুঝতেই পারছেন এটি বর্তমানে কতটা লাভজনক ব্যবসা তা। তাই বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে আপনি ছোট্ট পরিসরে কয়েকটি গরু অথবা ছাগল নিয়ে ফার্ম তৈরি করতে পারেন। যদি আপনি ধৈর্য্যের সঙ্গে সঠিক ভাবে কাজ করতে পারেন তাহলে অল্প সময়েই অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন ইংশাআল্লাহ।
ফার্মের ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায়, আপনি নির্দ্বিধায় শুরু করতে পারেন এবং অনেক লাভবান হবেন। যে সকল পশু পালন করলে অনেক লাভবান হওয়া যায়ঃ উন্নত জাতের ছাগল, উন্নত জাতের গরু, মহিষ, উন্নত জাতের ভেড়া, ইত্যাদি।
লেখকের শেষকথা
ব্যবসা অত্যন্ত ঝামেলার একটি বিষয়। এখানে যতবেশি ঝামেলা ততবেশি লাভ। চাকরির চেয়ে ব্যবসা করাটা অনেকটা স্বাধীন। লাভ জনক ব্যবসা একেক সময়ে একেকটা হয়ে থাকে। সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তার পরিবর্তন হয়।
আপনি যখনি ব্যবসা শুরু করবেন চেষ্টা করবেন যেন সেটা সে সময়ের লাভজনক ব্যবসা হিসেবে বিবেচিত হয়। বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা আপনার কাছে কোনটি সবচেয়ে ভালো মনে হয়েছে তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিন আমাদেরকে।
উপরে উল্লিখিত বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা অনুযায়ী কাজ শুরু করার পূর্বে আপনাকে ভালো মতো ব্যবসা সম্পর্কে জানতে হবে এবং শিখতে হবে। কেননা, অপরিপক্ব অবস্থাতে ব্যবসা করাটা একদম উচিত নয়। কোনো ব্যবসা কখনোই হুটহাট করে শুরু করাটা উচিত নয়।
কারণ, যদি কেউ এমন করে তাহলে তার বিপরীতে মূলধন নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। কোনো ব্যবসা লাভজনক হলেই যে কেউ যেভাবে ইচ্ছে তাতে নেমে যাবে বিষয়টি মোটেও এমন না।
যে ব্যবসাটি আপনি করতে চান, উক্ত ব্যবসা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে বুঝে, শিখে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী তারপর ব্যবসাতে নামতে হবে। এছাড়াও ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য আপনাকে ধৈর্য্য, সততা ও নিষ্ঠা এবং পরিশ্রমের সঙ্গে লেগে থাকতে হবে। তবেই আপনি ব্যবসায় সফলতা অর্জন করবেন ইনশা আল্লাহ।
ব্যবসাক্ষেত্র হচ্ছে এমন একটি ক্ষেত্র যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দিন দিন প্রসারতা লাভ করেছে। মনে রাখবেন, নতুন ব্যবসা ক্ষেত্রে পদার্পণের আগে প্রচলিত বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা অনুসরণ করবেন। তবেই আপনি ব্যবসা ক্ষেত্রে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন। কেননা ব্যবসা সেক্টরে এ সকল আইডিয়ার অবস্থান আছে সবগুলোর উপরে।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।