কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি - কোন ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে বেশি লাভ — এখনকার সময়ের সবচেয়ে কমন একটি বিষয় হলো ব্যাংকে টাকা রাখা। মানুষের অর্থ এবং ব্যাক্তিগত সম্পত্তির নিরাপত্তার জন্য ব্যাংক এর সৃষ্টি। ব্যাংকিং পদ্ধতি পুরো বিশ্বের মধ্যে এক অন্যরকম পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এখন ব্যাংকিংয়ের আরেকটি মজার বিষয় হলো ব্যাংকে টাকা রেখে মুনাফাও লাভ করা যায়।
আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কোন ব্যাংকে জমা রাখলে নির্দিষ্ট সময় পরে সেই ব্যাংক আপনাকে কিছু মুনাফা দিবে। কিন্তু এই মুনাফা বা লাভ একেক ব্যাংকে একেক রকম হয়ে থাকে। চলুন এবার জেনে আসি কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি। আজকের এই পোস্ট থেকে আপনারা জানতে পারবেন কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি, কোন ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে বেশি লাভ।
সূচীপত্রঃ কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি
কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি
সারাদেশে অনেক অনেক ব্যাংক রয়েছে যারা দীর্ঘদিন যাবদ ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসছে। এবং প্রয়োজনের তাগিতে এখন আরো সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন ব্যাংকও। এসব ব্যাংকগুলোর মুনাফার হার এবং সুবিধা ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এখন আমরা আপনাদের সাথো সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ব্যাংকের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড
আপনি এই শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড ব্যাংকে ৩ বছর, ৫ বছর, ৮ বছর অথবা ১০ বছরের মেয়াদে টাকা জমা রাখতে পারেন। এই ব্যাংকটি তাদের মাসিক কিস্তিতে প্রায় ৪৫০ টাকায়, ৬৫০ টাকা ১২৫০ টাকা, ২৩৫০ টাকা নিধারিত হয়েছে। এছাড়াও আপনাকে ডিপিএস হতে যে মুনাফা দেওয়া হবে সেই মুনাফার পরিমাণ ব্যাংকে হতে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। শতকরা ৪% করে মুনাফা পাবেন সঞ্চয়ী হিসাবে।
আরো পড়ুনঃ কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি
ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড
সর্বনিম্ন ১০০ টাকা হতে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকার মাসিক কিস্তিতে টাকা জমাতে পারবেন আপনি এই ব্যাংকে। টাকা জমানোর মেয়াদ হলো ৫ এবং ১০ বছর। মুনাফার থেকে শতকরা ৯% ও ১০% সুদের পাবেন। যদি আপনি ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসেবে টাকা রাখেন তাহলে ৭.৭৫% শতকরা হারে মুনাফা দেওয়া হয়।
পূবালী ব্যাংকে লিমিটেড
মাসিক ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকার কিস্তি করা যায় এই ব্যাংকে। এই ব্যাংকের কিস্তির মেয়াদকাল হলো ৩ বছর হতে ৫ বছর পর্যন্ত। এই ব্যাংকে শতকরা ৮.২৫% থেকে ৯.৫% পর্যন্ত সুদের হার হিসেবে ধরা হয়েছে এবং সঞ্চয়ী হিসেবে সুদের হার সাধারণত ৪.৫% হয়ে থাকে।
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
অগ্রণী ব্যাংকের ডিপিএস এর সর্বনিম্ন মেয়াদকাল হলো ৫ বছর এবং সর্বচ্চো ১০ বছর। এই ব্যাংকে সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকার পর্যন্ত কিস্তি আপনি জমা রাখতে পারবেন। শতকরা সুদের হার প্রায় ৭% হতে ৯% পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে এবং সঞ্চয়ী হিসেবে করলে সুদের হার প্রায় শতকরা ৬% দিয়ে থাকে।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড
সোনালী ব্যাংকে ৫ বছর মেয়াদী একটি ডিপিএস একাউন্ট আপনি খুলতে পারেন। সেই একাউন্টে মাসিক কিস্তিতে কমপক্ষে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আপনি জমা করতে পারেন। শতকরা সুদের হার পাবেন ৮.৫% এবং যদি সঞ্চয়ী হিসেবে খুলেন তাহলে আপনার সুদের হার হবে শতকরা প্রায় ৬.৫%।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড
এই ব্যাংকে যদি ডিপিএস করেন তাহলে এর মেয়াদকাল কমপক্ষে ৩ বছর থেকে শুরু করে ৫ বছর, ৭ বছর এবং ১০ বছর পর্যন্ত। সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা হতে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা রাখা সম্ভব এই ব্যাংকে। শতকরা প্রায় ৬% সুদের হার থেকে শুরু করে ৬.১৭% পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে সাধারণত সুদের হার ৪.৫% দিয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড
এই ব্যাংকে ডিপিএস এর মেয়াদ সর্বনিম্ন ৪ বছর থেকে শুরু করে সর্বচ্চো ১০ বছর পর্যন্ত হয়। আপনি কমপক্ষে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি মাসের কিস্তিতে জমা রাখতে পারবেন এই ব্যাংকে। শতকরা ৯% সুদের হার। যদি সঞ্চয়ী হিসাবে খুলেন তাহলে গ্রাহকদের জন্য শতকরা ৫% সুদের হার দিবে।
উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড
উত্তরা ব্যাংকের কিস্তির মেয়াদকাল হলো ৫ বছর এবং ১০ বছর হয়ে থাকে। ডিপিএসের লাভের হার শতকার ৫% থেকে ৯% দিয়ে থাকেন। এই ব্যাংকের মাসিক কিস্তি সর্বনিম্ন পাঁচশ টাকা থেকে শুরু করে সর্বচ্চ ত্রিশ হাজর টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে পারেন।
ডাচ - বাংলা ব্যাংক লিমিটেড
ডাচ বাংলা ব্যাংকে আপনি ডিপিএসএ যে টাকা জমা রাখবেন সেই টাকার জমা রাখা মেয়াদ হবে সর্বনিম্ন ৩ বছর থেকে শুরু করে ৫ বছর, ৮বছর ও ১০ বছর পর্যন্ত। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকো শুরু করে আপনি আপনার ইচ্ছে মতো টাকা জমা রাখতে পারবেন এই ব্যাংকে। ডাচ বাংলা ব্যাংকের শতকরা সুদের হার ৭.৫% পর্যন্ত দেওয়া হয়। লভ্যাংস হিসাব করে এই ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবের জন্য সুদ প্রায় ৪% দিবে।
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড
এই ব্যাংকের ডিপিএসএ মেয়াদকাল হবে ৪ বছর এবং ১০ বছর পর্যন্ত। প্রত্যেক কিস্তিতে আপনি সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা হতে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে পারবেন। প্রদত্ত শতকরা সুদের হারগুলো প্রায় ৬%, ৭%, ৮%, ৮.৫%, ৮.৭৫%, ৯% ও ৯.৫% দেওয়া হয়। আর সঞ্চয়ী হিসাবে সুদের হার ৪% নির্ধারিত।
সিটি ব্যাংক লিমিটেড
সিটি ব্যাংকে টাকা জমানোর জন্য মেয়াদ কাল গুলো হলো ৩, ৫, ৭ বছর এবং ১০ বছর। আপনি চাইলে এই ব্যাংকটিতে মাসিক কিস্তিতে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা হতর শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে পারেন। সিটি ব্যাংকের সুদের হার প্রায় শতকরা ৮.৫% ডিপিএস-এ এবং আপনি সঞ্চয় হিসেবে শতকরা ৪% সুদ পাবেন।
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড
ন্যাশনাল ব্যাংকে প্রায় ৫ ধরনের মাসিক কিস্তিতে ডিপিএস করা যায়। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা, ২ হাজার টাকা, ৫ হাজার টাকা এবং ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে পারবেন। ৩ বছর, ৬ বছর, ৮ বছর এবং ১০ বছর পর্যন্ত ডিপিএস এর মেয়াদকাল থাকবে। শতকরা ৭.৭৫% থেকে শুরু করে সুদের হার ৯.৫% পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবে শতকরা ৪.৫% সুদ দেওয়া হয়।
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে আপনাকে সাথে শেয়ার করা চেষ্টা করেছি কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি এবং জনপ্রিয় কিছু ব্যাংকের মুনাফার হার। ব্যাংক যেকোনো সময় তাদের সুদের হার এবং বাকী বিষয় গুলো পরিবর্তন করতে পারে।
তাই আগে ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল প্রোফাইলে গিয়ে এ বিষয়ে আরো নিশ্চিত হয়ে নিবেন। কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে আপনার মতামত জানিয়ে দিবেন। কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি, কোন ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে বেশি লাভ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।