বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি - বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বেকার সমস্যা প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে। এই সমস্যায় নাজেহাল হচ্ছে সাধারণ জণগণ। তাই সমস্যার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বেশিরভাগ মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি আমরা অনেকেই চিন্তা করি বিদেশে গেলে টাকা আর টাকা। এই যেন টাকার বন্যা। কিন্তু বাস্তবতা বলে অন্যকথা।
সূচীপত্রঃ বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি
এমন অনেক মানুষ আছে যারা বিদেশে গিয়ে দু'বেলা খাবারও জুটাতে পারছে না, পরিবার চালানোতো দূরে থাক। কিন্তু সবারই যে এমন করুন দূর্দশা তা না। অনেক প্রবাসীদের রেমিট্যান্স থেকে আজকে সমৃদ্ধ হচ্ছে সরকারি কোষাগার। তাহলে কি এমন বিষয় যেটির জন্য বিদেশে গিয়ে কেউ সফল হতে পারছে আবার কেউ পারছে না?
আসলে সত্যি কথা বলতে বর্তমান বিশ্বে টাকা উপার্জনের একমাত্র পন্থা হলো দক্ষতা। আপনার যদি দক্ষতা থাকে মানুষ যদি আপনার সেই দক্ষতা থেকে উপকৃত হয় তাহলে তারা আপনাকে টাকা দিতে প্রস্তুত। কিন্তু যদি আপনার কোন দক্ষতাই না থাকে কেউ যদি আপনার থেকে কোন প্রকার বেনিফিটই না পায় তাহলে কেন তারা আপনাকে টাকা দিবে একবার প্রশ্ন করুন নিজেকে।
যাই হোক আমাদের অনেক জনই জিজ্ঞাসা করেন "বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি"। আসলেই এটি একটি যুগান্তকারী প্রশ্ন। চাহিদা সম্পন্ন কাজের দক্ষতার অভাবেই মানুষ বিদেশে গিয়েও সফল হতে পারছে না। অনেকেই আবার বিদেশে গিয়ে একটার পর একটা সব কাজই করে যা অপ্রশংসনীয়। চলুন তাহলে আজকে জেনে নিই বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি। আশা করি আমাদের আজকের এই বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি লেখাটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকবেন।
আরো পড়ুনঃ ইতালি কৃষি ভিসা ২০২২
বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি
বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিদেশে যান বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে। কিন্ত হ্যাঁ বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি তা না জেনেই চলে যায়। যার ফলে বিদেশে গিয়ে পরবর্তীতে কাজের জন্য হিমশিম খেতে হয়। তাই বিদেশে যাওয়ার পূর্বে সে দেশে কোন কাজের অবস্থা, কাজের চাহিদা, কাজের চাহিদা সর্ম্পকে বিস্তারিত জেনে যাওয়া দরকার। বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং কোন কাজের কি রকম বেতন হয়ে থাকে তাই নিয়ে আমাদের আজকের এই আলোচনা। চলুন তাহলে নিচে থেকে জেনে নেই বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি -
বিদেশে ড্রাইভিং কাজের চাহিদা বেশি
বিদেশে অথবা প্রবাস লাইফে সব থেকে শান্তিময় যে কাজটি রয়েছে সেটা হলো ড্রাইভিং। আপনি যদি ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে কোন দেশে যাওয়ার পর ড্রাইভিংয়ের কাজ করেন তাহলে প্রচুর লাভবান হবেন। এজন্য আপনি যদি ড্রাইভিংয়ের ভিসা নিয়ে বিদেশের যেকোনো দেশে কাজ করেন। তাহলে প্রতিমাসে কমপক্ষে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব। সেটা কাতার, সৌদি, সিঙ্গাপুর, দুবাই, ইউরোপ, কুয়েত, আমেরিকা, কানাডা অথবা অস্ট্রেলিয়া হতে পারে। এই ড্রাইভিং পেশাটি বিদেশে একটি অনেক ডিমান্ডিং কাজ।
আপনি যদি কোন দেশে ড্রাইভিং ভিসা নিয়েও যেতে পারেন বা সেই দেশে গিয়ে আপনি ভিসাটি ড্রাইভিংয়ে কনভার্ট করতে পারেন। তার পাশাপাশি যদি আপনি একটি আপনার নিজস্ব লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি কিনতে ফেলতে পারেন বা গাড়ি চালাতে পারবেন অন্য কারো। তাছাড়া বাংলাদেশের তুলনায় বিদেশে গাড়ির দাম অনেক কম। তাই বিদেশীদের কাছে এই ড্রাইভিং কাজগুলোর চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে। তাই আমি প্রথম সারিতে এই পেশাটিকেই রাখবো।
রেস্টুরেন্টের এর কাজ
যারা রেস্টুরেন্ট সম্পর্কিত কাজ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা আছে অর্থাৎ শেপ বা বাবুর্চি এমন কিছু কাজ জানেন তাদের কমপক্ষে ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা বেতন আছে। এদের চাহিদা বর্তমানে অনেক অনেক বেশি রয়েছে। মিডের ইস্টের প্রায় দেশেই তাদের জনপ্রিয়তা ও চাহিদা ক্রমেই অনেক বাড়ছে।
এজন্য যদি আপনি রেস্টুরেন্ট অথবা হোটেলের কাজ জেনে থাকেন সেক্ষেত্রে বিদেশে আপনাকে কাজ নিয়ে কোন রকম চিন্তা করা লাগবে না। আর আপনার যদি এই কাজগুলো না জানা থাকে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকেই আপনি এই কাজগুলো শিখে তারপরে বিদেশে এসে এসব কাজে যুক্ত হতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
কনস্ট্রাকশন রিলেটেড কাজ
পৃথিবীতে যেকোনো দেশেই কনস্ট্রাকশন রিলেটেড কাজের চাহিদা সব সসয় ছিল এবং কখনো এই কাজের চাহিদা কমবে না। কিন্তু এই কাজগুলো অনেক বেশি জটিল। তাছাড়া এই কাজ গুলোর সিংহভাগ কাজই বাঙালিরাই করে থাকেন। কঠিন কাজগুলোর ভিতরে ভিতরে অনেক সহজ কাজও রয়েছে।
ইলেকট্রিক্যল অথবা প্লাম্বার রিলেটেড কাজও সহজ। এই ধরনের কাজগুলোর চাহিদাও বেশি রয়েছে। যদি একজন ইলেকট্রিশিয়ান অথবা প্লাম্বার হতে পারেন অথবা এই কাজগুলো সঠিকভাবে সব কিছু শিখে নেন তাহলে পুরো বিশ্বের যেকোনো দেশের প্রবাসী হয়েও আপনি ভালো অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ফ্রিজ বা এসি সার্ভিসিং এর কাজ
যদি আপনি এসি অথবা ফ্রিজ সার্ভিসিংয়ের কাজ জেনে থাকেন তাহলে সেসব কাজগুলোর প্রচুর চাহিদা আছে। চাহিদা থাকার সত্ত্বেও এসব কাজগুলো করার মতো তেমন কোনো দক্ষ মানুষ নেই। খুবই অল্প সংখ্যাক মানুষেরা এই কাজগুলো করে থাকে।
যদিও এসির কাজগুলো সাধারণত গরম কালে বেশি হয়ে থাকে। যদি আপনি কাজ জানেন তাহলে আপনি এক সিজন গরম কালেই সারা বছরের ইনকাম উঠিয়ে ফেলতে পারবেন। ৬ মাস কাজ করলেও আপনি পুরো এক বছরের ইনকামটাই করতে পারবেন। যারা এই ধরণের কাজগুলো করে থাকে তারা সাধারণত ৬ মাস কাজ করে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা সহজেই ইনকাম করে ফেলতে পারেন। তাই এই ধরণের কাজ আপনি শিখে রাখতে পারেন কারন এগুলোর প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
ওয়েটারের কাজ
বিদেশের মানুষেরা রেস্টুরেন্টে প্রচুর খাওয়া দাওয়া করে। তাই সেখানে রেস্টুরেন্টের যেমন চাহিদা রয়েছে তেমনি রয়েছে ওয়েটারের চাহিদা। কারণ ওয়েটার ছাড়া কোনো রেস্টুরেন্ট চলা সম্ভবপর নয়। আবার অনেকেই মনে করেন ওয়েটার নিচু মানের চাকরি যা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বিদেশে সব কাজকেই সমান দৃষ্টিতে দেখা হয়।
কিন্তু ওয়েটারের কাজ করতে হলে আপনাকে সে দেশের ভাষা ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে তা নাহলে আপনি এই কাজটি করতে পারবেন না। বিদেশে ওয়েটারদেরও প্রচুর বেতন রয়েছে। আপনি বিদেশের ওয়েটারের কাজ করে বাংলাদেশি টাকায় ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ
বর্তমানে আমাদের জীবনের সাথে জড়িত একটি মহা মূল্যবান ডিভাইস হলো মোবাইল। মোবাইল এখন সবার কাছেই আছে। এমন মানুষ পাওয়া দুর্লভ যার কাছে মোবাইল নেই। মোবাইলের সার্ভিসিং করানো সবারই দরকার তাই দেশে বলেন অথবা বিদেশ সব জায়গায়ই মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ভালো চাহিদা রয়েছে। আপনি বিদেশ গিয়ে একটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান দিলেও ভালো আয় করতে পারবেন।
বিদেশে কোন কাজের টাকা বেশি
বিদেশে কোন কাজের টাকা বেশি এটা নির্ভর করবে আপনার কাজের দক্ষতার উপরে। অর্থাৎ বেশি টাকা ইনকাম করার জন্য কাজের প্রতি অবশ্যই আপনাকে দক্ষ হতে হবে। কেননা সবকিছু নির্ভর করবে আপনার কাজের দক্ষতার উপরে। যদি আপনার উপরোক্ত কাজগুলোর প্রতি ভালো পরিমাণে দক্ষতা থাকে তবে আপনি অবশ্যই মোটা অংকের বেতন পাবেন এবং মাস শেষে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।
তাই আপনার যদি কোনো নির্দিষ্ট স্কিল থাকে অর্থাৎ কোনো কাজ জেনে থাকেন তাহলে আপনার কাজের জন্য কোনো চিন্তা করতে হবেনা সেটা যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে হোক না কেন। আর আপনি যদি কোনো কাজ না জানেন তবে আপনার জ্বালার শেষ থাকবে না। কাজ না জানার কারণে আপনি কোথাও ভালোমতো কাজ পাবেন না যার ফলে ভালো কোনো বেতনও পাবেন না।
তাই প্রবাস জীবনে বা বিদেশে সফলতা অর্জন করার জন্যে আপনাকে অবশ্যই অবশ্যই কাজ জানতে হবে। আর যদি কোনো কাজ না জেনে থাকেন তবে অবশ্যই আপনি প্রবাসে যাওয়ার পূর্বে যেকোনো একটি কাজের ওপর দক্ষতা অর্জন করবেন। তারপর আপনার উচিত বিদেশ যাওয়া। এই লেখায় আমরা যে কাজগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম সেগুলো যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তবে এগুলো যেকোনো একটির ওপর দক্ষতা অর্জন করে আপনি যেকোনো দেশে গেলে আপনাকে আর কাজ নিয়ে কোনো প্রকার চিন্তা করার প্রয়োজন হবে না আশা করি।
বিদেশ লাইফে যদি আপনি কোনো একটি কাজের প্রতি দক্ষতা অর্জন করেন এবং উক্ত কাজটি করার পাশাপাশি নিজে নিজেই একটা সময় বাহির করে সেই কাজটিকে নিয়ে যদি আপনি একটা ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে সেটা আপনার জন্য আরো বেশি লাভ। তাই বিদেশে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনি নির্দিষ্ট একটি কাজের ওপরে দক্ষতা অর্জন করুন।
শেষ কথা - বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি
আজকের পোস্টে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি এ নিয়ে। জানিনা কতটুকু পেরেছি। পোস্টটি যদি আপনার কাছে হেল্পফুল মনে হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়দের সঙ্গে শেয়ার করবেন যারা বিদেশে যেতে চাচ্ছেন। যদি আমাদের আজকের এই বিদেশে কোন কাজের চাহিদা বেশি লেখাটি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানিয়ে দিবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।