বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় - বিকাশ থেকে লোন নেয়ার নিয়ম - আপনি কি বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় বা বিকাশ থেকে লোন নেয়ার নিয়ম এবং বিকাশ থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? প্রিয় পাঠক আপনারা ইতিমধ্যে অনেকেই জেনে গিয়েছেন যে, বিকাশ থেকে লোন নেওয়া সম্ভব।
তবে অধিকাংশ মানুষের বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় সমূহ সম্পর্কে জানা নেই। আপনি যদি বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় জানতে ইচ্ছুক হোন। তবে ‘’স্বাগতম’’ আজকর এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাকঃ
সূচীপত্রঃ বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়
বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়
আমরা প্রায় সবাই কমবেশি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের সাথে পরিচিত। বিকাশ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন ভিত্তিক অর্থ স্থানান্তর (এমএফএস) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের সবচাইতে বড় অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান। এটি ব্যাংক হিসাববিহীন ব্যক্তিদের আর্থিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে চালু করা হয়েছিল।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, বিকাশ ইতিমধ্যে একটি নতুন ফিচার এর অধীনে বাংলাদেশের স্বনামধন্য একটি ব্যাংকের সাথে একত্রিত হয়ে, দেশে সর্বপ্রথম ডিজিটাল লোন বিতরণ সেবা চালু করেছে।
বেশ কিছু বছর ধরে পরীক্ষামূলক ভাবে থাকার পর ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার এই সেবাটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়েছিল। শুরুতে লোন পাওয়ার পরিমাণ কম হলেও ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়। এক নজরে দেখে নেই, আজকের এই আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয়সমূহঃ ১। সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন ২। সিটি ব্যাংক থেকে বিকাশ লোন কারা পাবেন ৩। কত টাকা বিকাশ লোন পাওয়া যায় ৪। বিকাশ লোনের সুদের হার।
৫। বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় ৬। সিটি ব্যাংক ও বিকাশ কেন এই ঋণ প্রদান করছেন ৭। কোন কোন ক্ষেত্রে বিকাশের ঋণ সুবিধা পাব ৮। কেন বিকাশ অ্যাপের এর মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নেবেন ৯। বিকাশ লোন ভবিষ্যত ১০। লোন নেওয়ার পূর্বে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে ১১। বিকাশ থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা
আরো পড়ুনঃ কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ বেশি
সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী বিকাশ সহ সকল প্রতিষ্ঠান লেনদেন, মোবাইল রিচার্জ, পেমেন্ট সহ নানান রকম সুযোগ সুবিধা করে দিলেও লোন নেওয়ার কোন সুবিধা চালু করেনি। তবে সম্প্রীতি বিকাশ সিটি ব্যাংকের সাথে একত্রিত হয়ে নতুন একটি ফিচার চালু করেছে।
যার মাধ্যমে বিকাশ থেকে সহজেই লোন পাওয়া যাবে। লোন পেতে আপনাকে কোন রকম জামানতের প্রয়োজন হবে না। জামানতবিহীন এই লোন সিটি ব্যাংক কর্তৃক বিকাশ একাউন্ট এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে।
সিটি ব্যাংক থেকে বিকাশ লোন কারা পাবেন?
সিটি ব্যাংক কর্তৃক বিকাশ থেকে লোন পেতে হলে, আপনাকে অবশ্যই পুরাতন গ্রাহক হতে হবে এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে কেওয়াইসি সম্পন্ন করে গ্রাহক হওয়া লাগবে। অধিকাংশ গ্রাহকই বিকাশের থেকে এই লোন পায় না।
প্রথমত যাদের খুব বেশি পুরাতন বিকাশ একাউন্ট রয়েছে অর্থাৎ যারা শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে কেওয়াইসি ফরম পূরণ করে বিকাশ একাউন্ট করেছিলেন। আবার যারা কেওয়াইসি বা বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে কেওয়াইসি সম্পন্ন করে গ্রাহক হয়েছেন কিন্তু অল্প সময়ের ধরে বিকাশ ব্যবহার করছেন তারা এই লোনের সুবিধা পাবেন না।
অনেকেই আবার প্রশ্ন করে থাকেন, বিকাশ থেকে এই ডিজিটাল লোন আসলে কে দিচ্ছে? সিটি ব্যাংক নাকি বিকাশ? তাদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনি বিকাশ ব্যবহারকারী হিসেবে সিটির ব্যাংক থেকে এই লোনের জন্য আবেদন করবেন এবং সিটি ব্যাংক এই লোন আপনার বিকাশ একাউন্টে বিতরণ করবে।
কত টাকা বিকাশ লোন পাওয়া যায়?
প্রথম প্রথম বিকাশ থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যেত। তবে বর্তমানে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে হয়তো লোনের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতেও পারে।
বিকাশ লোনের সুদের হার
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ৯ শতাংশ (বাৎসরিক) সুদের হারের বিনিময়ে পাওয়া যাবে বিকাশ লোন। উদাহরণস্বরূপ তিন মাসের জন্য ১ হাজার টাকা লোনের জন্য আপনাকে ১৫ টাকা সুদ পরিশোধ করতে হবে। বিকাশ ডিজিটাল এই লোনের মেয়াদ সাধারণত তিন মাস। আপনাকে তিন মাসে তিনটি সমান কিসিতে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে।
লোন নেওয়ার পর পরবর্তী তিন মাসে একই পরিমাণ অর্থ তিনটি সমান কিস্তিতে গ্রাহকের বিকাশ একাউন্ট থেকে নির্দিষ্ট তারিখে কেটে নেওয়া হবে। কিস্তি কেটে নেওয়ার পূর্বের তারিখে গ্রাহক এসএমএস বা অ্যাপের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন।
লোন গ্রহনকারী সঠিক সময়ে কিস্তি প্রদান করছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে লোন প্রদানের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটিও বিবেচনা করা হয়।
আরো পড়ুনঃ কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি
বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়
সিটি ব্যাংক কর্তৃক বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার জন্য প্রথমত, আপনার একটি নির্দিষ্ট বিকাশ একাউন্ট থাকা লাগবে। বিকাশ একাউন্টটি অবশ্যই বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে ই-কেওয়াইসি সম্পূর্ণ হতে হবে। দীর্ঘদিন বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করার ফলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নির্ধারণ করে দিচ্ছে কোন বিকাশ একাউন্ট লোন নেওয়ার যোগ্য।
আপনি যদি বিকাশ লোন পাওয়ার যোগ্য হয়ে থাকেন। তাহলে সেখানেই আপনি যে পরিমাণ লোন পাওয়ার যোগ্য তা গ্ৰহণ করতে পারবেন। লোনের টাকা আপনার বিকাশ একাউন্টে অটোমেটিক যোগ হয়ে যাবে।
সিটি ব্যাংক কর্তৃক বিকাশ কেন এই লোন প্রদান করছে?
বিনা জানামতে বিকাশ লোন সম্পর্কে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন এক সাক্ষাত কারে বলেছেন “আমরা সব সময়ই গ্রাহকের প্রয়োজনে আরো কাছে থাকার চেষ্টা করি। আমাদের দেশে অনেকেরই বিশেষ ভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হঠাৎ করেই অর্থের প্রয়োজন হয়।
সেটি কিভাবে আরো সহজে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় এবং তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে সেই অর্থ ব্যবহার করতে পারেন, সেটি মাথায় রেখেই এই ডিজিটাল লোনের যাত্রা। আমাদের এই প্রকল্পটি নীরিক্ষামূলক, এই প্রকল্পে অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়ে ক্রমোন্নয়নের মাধ্যমে গ্রাহকের জন্য আরও ভালো সেবা নিয়ে আসতে পারবো বলেই আমাদের আশা।”
এছাড়াও উদ্যোগটির বিষয়ে বিকাশ সিইও কামাল কাদীর জানিয়েছেন, “প্রান্তিক সহ সকল শ্রেণীর মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন এবং আর্থিক অর্ন্তভুক্তিতে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে বিকাশের মত কার্যকর ডিজিটাল আর্থিক প্ল্যাটফর্ম ও বিশাল গ্রাহক ভিত্তিকে ব্যবহার করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সৃজনশীল নতুন নতুন সেবা প্রচলন করতে পারে।
সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল ঋণ প্রকল্প তারই একটি উদাহরণ। জরুরী মুহূর্তে তাৎক্ষণিক জামানতবিহীন এই ঋণ প্রান্তিক মানুষ, তরুণ সমাজ, প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য আর্শীবাদ হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।”
বিকাশ ও সিটি ব্যাংক ১০,০০০ টাকা লোন
আমাদের প্রায় অনেক সময় খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হয়। যার জন্য আমাদের লোন সুবিধার প্রয়োজন পড়ে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, বিকাশ ও সিটি ব্যাংকের একটি বিশেষ সুবিধা রয়েছে। বিশেষ সুবিধায় তারা ১০০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন সুবিধা দিয়ে থাকে।
কোন কোন ক্ষেত্রে বিকাশের ঋণ সুবিধা পাব
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, কিছু ক্ষেত্রে বিকাশ ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুর্যোগ কালীন সময়ে। এছাড়াও চিকিৎসা, ব্যবসা ও কৃষিকাজের জন্য এই লোন দিয়ে থাকে। এ সময় আপনি বিকাশ থেকে 10000 টাকা পর্যন্ত লোন সুবিধা পেতে পাবেন।
কেন বিকাশ অ্যাপের এর মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নেবেন?
বিকাশ লোন জামানতবিহীন লোন। এই লোন নিতে আপনার কোন রকম জামানতের প্রয়োজন হবে না। অল্প সময়ের মধ্যেই টাকা হাতে চলে আসে। এছাড়াও অল্প অল্প কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়। এরকম সুযোগ সুবিধা যা অন্যান্য ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান এরকম সুযোগ প্রদান করে না।
মূলত সিটি ব্যাংক কর্তৃক এই বিকাশ লোনের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে যথাযথ পরিষেবা ও সাহায্য করা। যার জন্য সব রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে সিটি ব্যাংক কর্তৃক বিকাশ লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ সুবিধা পাওয়ার জন্য বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিবেন।
বিকাশ লোন ভবিষ্যত
বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই বিকাশ লোন ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নিবেন। কারণ লোন নেওয়ার পর, পরবর্তীতে যদি আপনি পরিশোধ না করেন। বিকাশ সেটি সিটি ব্যাংকে জানাবে এবং সিটি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আপনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।
লোন নেওয়ার পূর্বে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে
১। আপনাকে অবশ্যই বিকাশের যাবতীয় নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ভালো ভাবে জেনে নিতে হবে।
২। লোন পরিষদের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের সুদ হারের নিয়ম-কানুন মেনে লোন পরিশোধ করতে হবে।
৩। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লোনের টাকা পরিশোধ করতে হবে।
৪। লোনের টাকা তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়।
শেষ কথা - বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়
আজকের এই আর্টিকেলে বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় বা বিকাশ থেকে লোন নেয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। মূলত সিটি ব্যাংক হতে বিকাশ দ্বারা এই লোন দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়, মানুষকে যথাযথ পরিষেবা ও সাহায্য করা।
বিকাশ লোন ইতিমধ্যে অনেকের কাছে বেশ উপকারী হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে এর চাহিদা আরো বাড়বে, এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই বলতে হচ্ছে যে, অযথা লোন নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যখন খুব বেশি দরকার হবে, ঠিক তখনই বিকাশ থেকে লোন নিবেন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।