বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয় - বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক ঋণ দেয় — বিদেশগামীদের মধ্যে বেশিরভাগ বিদেশে যাওয়ার জন্য তাদের জমি জমা বিক্রি করে থাকেন। অনেকের আবার বিদেশ যাওয়ার জন্য চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়। কিন্ত দেখা যায় বেশিরভাগ সময় তারা এই চড়া সুদে ঋণে পরিশোধ করতে পারেন না যার ফলে নানামুখি সমস্যার সৃষ্টি হয়।
আর এই সকল সমস্যা সহ বিদেশ যাওয়া সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যার হাত থেকে প্রবাসীদেরকে মুক্ত রেখে সিকিউর অভিবাসনের লক্ষ্যে আমাদের দেশে বিভিন্ন ব্যাংক এবং প্রতিষ্ঠান বিদেশ যাওয়ার জন্য সল্প সুদে সহজ ঋণ প্রদান করে থাকে।
সূচীপত্রঃ বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয়
অর্থ অভাবে যারা চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে পারছেন না তাদের স্বল্প সুদের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংক অনুযায়ী অনেক ধরনের কন্ডিশন থাকে। যেগুলা পূরণ করে আপনাকে লোন গ্রহন করতে হবে। কন্ডিশন গুলোর মধ্যে সাধারণত বিদেশে চাকরি পেতে হবে আপনাকে। লোন পরিশোধ এর সার্বাধিক ব্যবস্থা তাদের কাছে উল্লেখ করতে হবে। এ সকল লোন গুলো শুধুমাত্র বিদেশে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের দেয়া হয়।
তো আমাদের আজকের আর্টিকেলে জানাতে চলেছি বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয়। যারা বাহিরের দেশে যাওয়ার জন্য লোন নেয়ার ব্যাংক গুলো খুজছেন আজকের তালিকা গুলো আপনাকে অনেক বেশী সহায়তা করে দিবে। কারণ আজকের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের এমন কয়েকটি ব্যাংক যারা বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন প্রদান করে থাকে।
তবে প্রতিটি ব্যাংক থেকে লোন পেতে হলে কোন কোন বিষয় গুলো ফুলফিল করা প্রয়োজন এই সম্পর্কে জানেন না। আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেব আপনাকে। চলুন তাহলে বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয় সম্পর্কে লেখাটি বিস্তারিত জেনে নিইঃ
আরো পড়ুনঃ কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি
বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয়
বিদেশ যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রায় সব ব্যাংক আর্থিক লোন প্রদান করে থাকে। যে সকল ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন সুবিধা পাওয়া যাবে। নিচে আমরা এমন কয়েকটি ব্যাংক নিয়ে বিস্তারিত লিখে দিলামঃ
বৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার জন্য এবং জনশক্তি রপ্তানি করতে বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে আসছে অনেক ব্যাংক। যারা টাকার অভাবে বিদেশ যেতে পারছেন না এবং স্বল্প সুদে বিদেশ যাওয়ার জন্য ব্যাংক লোন খুঁজছেন তাদের জন্য এটি হচ্ছে সুবর্ণ সুযোগ।
বাংলাদেশে বিদেশ যাওয়ার জন্য অনেক ব্যাংক বর্তমানে লোন দিচ্ছে। আর এই লোন নিতে হলে কিভাবে আবেদন করতে হবে এবং কোন কোন ব্যাংক বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন দিচ্ছে এই নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করনো। তাহলে চলুন দেখে নেই বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয় এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
বৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন নিতে হলে অবশ্যই জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে নিবন্ধন করে বিদেশে যেতে হবে আর লোন নেয়ার ক্ষেত্রে এই শর্ত প্রযোজ্য। পরবর্তীতে বিদেশ যাওয়ার পরে বিদেশে গিয়ে জব করে কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সুদের পরিমাণ অনেকটাই কম অন্যান্য লোনের থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশে চাকরি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার জন্য কয়েকটি ব্যাংক উৎসাহিত করছে।
আর বিদেশ যাওয়ার জন্য ব্যাংক লোন প্রকল্পে বর্তমানে ব্যাপকভাবে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে ঋণপ্রদানকারী কয়েকটি ব্যাংকের মাধ্যমে। বিদেশ যাওয়ার জন্য জন্য ব্যাংক লোন প্রদানকারী ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ যাতে বিদেশে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে এবং তাদের স্বাবলম্বীর কথা চিন্তা করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক এই সমস্ত সুবিধে দিচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে। তাহলে চলুন পর্যায়ক্রমে দেখে নেই বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয়।
বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয়
বর্তমানে বিদেশে যাওয়ার জন্য নিম্নোক্ত ব্যাংক গুলি লোন দিয়ে আসছেঃ ১। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ২। কর্মসংস্থান ব্যাংক ৩। সোনালী ব্যাংক ৪। মার্কেন্টাইল ব্যাংক ৫। ইসলামী ব্যাংক ৬। অগ্রণী ব্যাংক ৭। পূবালী ব্যাংক ৮। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
১। সোনালি ব্যাংক - প্রবাসী লোন সোনালী ব্যাংক
বিদেশে যাওয়ার জন্য দেশের স্বনামধন্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠান সোনালি ব্যাংকের মাধ্যমে লোন নিতে পারবেন। বিদেশে যাওয়ার জন্য বিমান ভাড়া, শ্রম, জনশক্তি ও প্রবাসী কল্যান এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান এর প্রদেয় সরকারী নিয়ম অনুযায়ী লোন প্রদান করে থাকে। বিদেশে যাওয়ার জন্য সম্পুর্ণ ১০০% খরচ এই ব্যাংক বহন করবে তবে খরচের সীমা হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত।
লোনের মেয়াদ থাকবে ৩ মাস ও গ্রেস পিরিয়ড সহ সর্বোচ্চ ২৪ থেকে ৩৬ মাস পর্যন্ত। এক্ষেত্রে আপনি চাকরি কত বছর করবেন সেটার উপরে নির্ভর করবে কত দিনে আপনাকে লোন পরিশোধ করতে হবে। লোনের উপরে ১২% হারে সরল সুদ দিতে হবে। যদি কোন কিস্তি খেলাপী না হলে আরোপিত সুদের উপর ২% রিবেট প্রদান করা হবে।
লোনের আবেদন করতে যা যা লাগবে
১। যিনি লোন নিতে চান তাকে অবশ্যই নির্ধারিত ফরম পূরন এর মাধ্যমে লোনের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।
২। ইউনিয়ন পরিষদ / সিটি কর্পোরেশন / পৌরসভা কর্তৃক প্রার্থীকে নাগরিকত্ব এর সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
৩। ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি।
৪। প্রার্থীর সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ৩ কপি ছবি।
৫। পাসপোর্ট এর সত্যায়িত ফটোকপি।
৬। বিদেশে যে চাকরির জন্য যাবেন। সেই চাকরির নিয়োগ পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
৭। নিয়োগপত্রের যাচাইকরণ সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনপত্রের ফটোকপি।
৮। মাসিক বেতন থেকে লোন পরিশোধ অর্থের পরিমান ও চাকুরীর মেয়াদকাল সম্পর্কে শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের গমন পত্র।
৯। শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় কর্তৃক আবেদনকারীর ইস্যুকৃত বিদেশ গমনের কমিশন/ সার্ভিস চার্জের বিবরণ সম্বলিত প্রত্যায়ন পত্র।
আরো পড়ুনঃ পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম
২। অগ্রণী ব্যাংক - বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন
দেশের স্বনামধন্য আরেকটি ব্যাংকিং সেবার নাম হলো অগ্রণী ব্যাংক। বিদেশে চাকরি পেয়েছেন কিন্তু যেতে পারছেন না? সহজ কিছু নিয়ম মেনে আপনিও পেয়ে যেতে পারেন অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিদেশ যাওয়ার লোন এর সুবিধা। অগ্রণী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রকল্পের নাম দিয়েছে প্রবাসী ঋণ প্রকল্প। তাদের এখান থেকে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন নিতে পারবেন।
১৮ থেকে ৪৫ বৎসরের বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক বিদেশ যাওয়ার জন্য অগ্রণী ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা ১৫ থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে ঋণ সহয়তা নিতে পারবেন। তাছাড়াও পৃথিবীর যেকোনো দেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য অগ্রণী ব্যাংক মাত্র ৯% হারে ঋণ দিচ্ছে। সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকার এই ঋণ ৬০ কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে।
অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিদেশ যাওয়ার লোন নিতে যা যা লাগবে
১। অগ্রণী ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে বিদেশ যাওয়ার লোনের আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করে পূরন করতে হবে।
২। সদ্য তোলা ৪ কপি ছবি।
৩। ন্যাশনাল আইডি এর ফটোকপি।
৪। নাগরিকত্ব সনদ।
৫। আবেদনকারীর জামানত দারদের প্রত্যকের পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা ৪ কপি করে ছবি ও ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক দেয়া নাগরিকত্ব সনদ, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি।
৬। অগ্রণী ব্যাংকের যে শাখায় লোনের জন্য আবেদন করবেন সেখানে আবেদন কারী ও উপকারভোগী ২ টা একাউন্ট খুলতে হবে।
৭। বিদেশ থেকে যে সকল রেমিট্যান্স পাঠাবেন সব এই একাউন্টে পাঠাতে হবে।
৮। আবেদন কারী যে মাধ্যমে ভিসা করেছেন রিক্রুটিং এজেন্সি কিংবা রিলেটিভ ও তাদের মধ্যে ৩০০ টাকার একটি স্টাম্প চুক্তিনামা দিতে হবে।
৯। লোন নেয়ার জন্য সর্বোচ্চ ১৫ কিস্তিতে বেতন থেকে যা লোন পরিশোধ করা সম্ভব সেটুকুই লোনের জন্য আবেদন করা যাবে।
৩। পূবালী ব্যাংক - বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন
বিদেশে যাওয়ার জন্য বিনা জামানতে লোন প্রদান করে পূবালী ব্যাংক সেবা। বর্তমানে প্রবালী ব্যাংক তাদের এই প্রকল্পটির নাম দিয়েছে নন রেসিডেন্ট ক্রেডিট স্কিম। এখান থেকে সর্বোচ্চ লোন নেয়া যাবে ২.৫ লাখ পর্যন্ত। লোন পরিশোধ করতে হবে ২ বছরের মধ্যে ২৪ টি কিস্তির মাধ্যমে।
সুদের হার ১৩%। লোনের প্রার্থীর ও বিদেশে যাওয়ার এজেন্সি কতৃক চুক্তিনামা করতে হবে। তবে কাউকে জামানতের জন্য রাখার চাহিদা নেই। পূবালী ব্যাংকের বিদেশ যাওয়ার জন্য আবেদন ফর্ম আপনাকে নির্ধারিত ব্যাংকের ব্রাঞ্চ কতৃক উত্তোলন করতে হবে।
৪। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক - বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন
বর্তমানে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এই প্রকল্পটি চালু করেছে যারা নাম দিয়েছে তারা এনআরবি মাইগ্রেশন লোন। বিদেশে চাকরি নিয়ে যাওয়ার জন্য লোন নিতে পারবেন এনআরবি ব্যাংক থেকে। যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিতে পারবেন। সর্বোচ্চ লোন গ্রহণ করা যাবে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। গ্রেস পিরিয়ড ৩ মাস। তারা ১৪% সুদে এই প্রকল্পের আওতায় লোন প্রদান করছে। ১২, ২৪ ও ৩৬ কিস্তিতে লোন গ্রহন করা যাবে।
অর্থাৎ এই লোনের মেয়াদ হচ্ছে ১ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত এর মধ্যেই লোন পরিশোধ করতে হবে। যদি আপনার বয়স ১৮ থেকে ৫৫ হয়ে থাকে তাহলে এই লোনে আপনি আবেদন করতে পারবেন। লোনের আবেদনপত্র এনআরবি ব্যাংকের ব্রাঞ্চ থেকে তুলতে হবে। সেখানে আপনাকে বাকি সব কাগজপত্র ও চুক্তিনামা জানিয়ে দেয়া হবে।
আর একবার ভিসা নিশ্চিত হয়ে গেলে আপনি এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে যেকোনো ব্যাংকে ভিসার ২টি ফটোকপি এবং পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিয়ে আপনি আবেদন করতে পারবেন লোনের জন্য। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যেই তারা ফোন কিংবা এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দিবে আপনি লোন পাবার যোগ্য কিনা।
৫। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক - বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন
বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তাদের এই প্রকল্পটির নাম দিয়েছে অভিবাসন ঋণ প্রকল্প নামে। বিদেশ যাওয়ার জন্য ব্যাংক লোন পেতে চাইলে বৈধ ভিসা থাকতে হবে। ভিসা থাকলে লোন দেয়া হবে ভিসার মেয়াদের উপর ভিত্তি করে। প্রবাসী কল্যান ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২৪ কিস্তিতে বিদেশে যাওয়ার জন্য লোন নেয়া যাবে। লোনের পরিমান নির্ভর করে আপনি কোন দেশে যাবেন সেটার উপরে। সাধারণত তাদের লোনের পরিমাণ ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা।
তবে যদি আপনি সিঙ্গাপুর গিয়ে থাকেন সেজন্য আপনাকে লোন পরিশোধের জন্য ১ বছর সময় দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে প্রত্যেক মাসে ১টি করে কিস্তির মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সুদের হার ৯%। গ্রেস প্রিয়ড ২ মাস পর্যন্ত। সব মিলিয়ে লোন দেয়া হচ্ছে ২৬ মাসের জন্য এবং সুদের হার ৯%। প্রবাসী কল্যান ব্যাংক থেকে ফর্ম তুলে পূরন করে নির্ধারিত শর্ত মেনে নিয়ে আপনি লোনের জন্য যোগ্য হবেন।
৬। কর্মসংস্থান ব্যাংক - বিদেশ যাওয়ার জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন
বৈধভাবে বিদেশে চাকুরীর জন্যে গমনেচ্ছুকদেরকে সহজ শর্তে লোন প্রদান করছে কর্মসংস্থান ব্যাংক। বিদেশে যাওয়ার জন্য লোন পেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা সরাসরি নিকটস্থ কর্মসংস্থান ব্যাংকে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও উপরে আলোচনা সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, এবি ব্যাংক ও ব্র্যাকসহ সরকারি-বেসরকারি আরো বিভিন্ন ব্যাংক এবং সংস্থা এখন বিদেশে যাওয়ার জন্য স্বল্পসুদে লোন দিচ্ছে। তাই আপনার পছন্দের ব্যাংক থেকে আপনি লোন নিয়ে বিদেশে যেতে পারেন খুব সহজেই।
৭। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন
বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন প্রদান করছে। ইসলামি ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোনের সুবিধে আপনারা অন্যান্য ব্যাংক গুলোর মতোই পাবেন। ইসলামি ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিতে হলে আপনাকে অবশ্যই অন্যান্য ব্যাংক গুলোর মতো রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী এখানেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। ইসলামি ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন ২.৫ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। এই লোন ৩ বছর মেয়াদে পরিশোধ করতে হবে।
ইসলামি ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নেয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার একজন গ্যারান্টেড আত্মীয়র মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার জন্য লোনের আবেদন করতে হবে। এবং আপনার পাসপোর্ট এবং ভিসা অনুযায়ী এবং আপনি বিদেশে কি কাজ করছেন সেখানকার কাজের প্রমাণ উল্লেখ করে আপনি এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৮। মার্কেন্টাইল ব্যাংক - বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন
বিদেশে যেতে ইচ্ছুক ১৮ থেকে ৪৫ বৎসরের বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক মার্কেন্টাইল ব্যাংক থেকে ৩ বৎসর মেয়াদের কিস্তিতে সর্বোচ্চ ২.৫ লাখ টাকা লোন সহয়তা নিতে পারবেন। এই ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিয়ে আপনার নিকটস্থ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন।
প্রবাসী লোন পাওয়ার যোগ্যতা সমূহ
আবেদনকারীকে তার অনুপস্থিতিতে অবশ্যই তাকে তার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে যেকোনো একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তির মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার জন্য লোনের আবেদন করতে হবে। ঋণ গ্রহনকারীর অনুপস্থিতিতে আপনজনকে ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব নিতে হবে।
কেননা পরবর্তীতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে সেই ব্যক্তি যেন ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা রাখে এমন কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে আসতে হবে। মানে অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল এমন একজন ব্যক্তিকে জামিনদার রাখতে হবে। অর্থাৎ জামিনদারকে অবশ্যই স্বচ্ছল হতে হবে।
জামিনদার ব্যতীত আপনার ভিসার ২ কপি ফটোকপি, ফোন নাম্বার, বিমানের টিকিট এবং আপনি বিদেশে কি কাজ করছেন তার রশিদ সহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো সাথে করে নিয়ে আসতে হবে এবং ব্যাংকের ম্যানেজারের মাধ্যমে আপনাকে বিদেশে যাওয়ার জন্য ব্যাংক লোনের আবেদন করতে হবে।
এই কাজ করার পর ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে ভিসা সহ সবকিছু যাচাই করে ফোন অথবা মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে। এবং সেইসাথে আপনি যে ব্যাংকে একাউন্ট করবেন সেই ব্যাংকের একটি অবশ্যই সেভিংস একাউন্ট থাকতে হবে। উপরোক্ত কাজগুলো করার পরে আপনাকে বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর সময় আপনাকে এই নির্দিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় হলফনামা অনুযায়ী আপনাকে জমা দিতে হবে।
প্রবাসী লোন আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
বিদেশ যাওয়ার জন্য ব্যাংক লোন নিতে আবেদনকারীকে অবশ্যই ব্যাংকের নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে স্বাক্ষর করতে হবে এবং প্রবাসী লোনের আবেদন করতে হলে যা যা প্রয়োজন বা যেসকল কাগজপত্র প্রয়োজন তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
১। বাংলাদেশের জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যাণ কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পত্র ১ কপি।
২। অভিবাসন ব্যয়ের বিবরনী (যে দেশে চাকুরিরত আছেন সেখানকার একটি রশিদ সত্যায়িত)।
৩। আবেদনকারীর (৪কপি), জামানতদারদের (৩কপি) ছবি, ১কপি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, পাসপোর্ট এর 1 কপি সত্যায়িত ফটোকপি তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের নিবন্ধন আইডি কার্ড, বিমান টিকিটের একটি ফটোকপি।
৪। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানাসহ পৌরসভার/ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে
৫। এছাড়াও নন-জিডিসিয়াল স্ট্যাম্পে উক্ত ব্যাংকের মাধ্যমের রেমিটেন্স পাঠানো হবে সেই অঙ্গিকারনামাও জমা দিতে হবে।
বিদেশ যাওয়ার লোনের জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
ভিসা হাতে পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বাবস্থাপক পরিচালক বরাবর বিদেশ যাওয়ার জন্য লোনের আবেদন করতে হবে। বিদেশে যাওয়ার জন্য খরচ ও বিবরণ আবেদনকারী পাসপোর্ট সাইজের ছবি ০৩ কপি ছবি এবং জামানত দাতার পাসপোর্ট সাইজের ছবি ২ কপি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সহ ভিসার ফটোকপি এবং স্থানীয় ঠিকানা অনুযায়ী পৌরসভার/ইউনিয়ন কর্তৃক একটি সার্টিফিকেট সত্যায়িত করে নিতে হবে।
তারপরে আবেদনপত্রের সঙ্গে সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে জমা করতে হবে। আপনি যে ব্যাংকের মাধ্যমে লোন নিবেন এবং সেই ব্যাংকের একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। পরবর্তীতে উক্ত ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানোর অঙ্গীকারনামা আপনাকে জমা দিতে হবে।
শেষ কথা - বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয়
বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয় অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে অবগত নয়। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের এ সম্পর্কে অবগত করার জন্য যথেষ্ট। বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো রকম জামানত ছাড়াই উপরোক্ত ব্যাংকগুলো বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন প্রদান করছে।
এখানে আলোচনা করা ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি ০৩ বছর মেয়াদে ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে তারা আয়ের লক্ষ্য থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন দিচ্ছে কোনো রকমের জামানত ছাড়াই। কোনো রকম জামানত ব্যতীত আপনি এই ব্যাংক গুলো থেকে লোন নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পরে মাসিক কিস্তিতে লোন পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন।
আর এই ৩ টি ব্যাংক (পূবালী ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক) থেকে আবেদন এর ফর্ম অনলাইন থেকে সংগ্রহ করা যাবে না। ও নির্ধারিত চুক্তিনামা গুলো ফর্মে লেখা থাকবে। কোনো ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয় আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।