কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি - কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি

কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি: প্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয়ই জানতে চাচ্ছেন কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি? বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক আছে তারা কুয়েতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। অনেক বাংলাদেশী ভাই আছে, তারা কুয়েতে যেতে চাই কিন্তু সঠিক তথ্য এবং সরকারি সঠীক নির্দেশনা না জানার কারণে কুয়েত যেতে পারছেন না।

তবে আজকের পোস্টের মাধ্যেমে আমি আপনাদের জানাতে চলেছি কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে, কুয়েত ভিসা দাম কত, সরকারি ভাবে কুয়েত যাওয়ার উপায়, কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি, কুয়েত কাজে বেতন কত সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। 

আপনি যদি মনোযোগ সহকারে আজকের পোস্ট পড়েন তবে আপনি জানতে পারবেন কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি সম্পর্কে। চলুন তাহলে জেনে নিই কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে বিস্তারিতঃ

(toc) #title=(সূচিপত্র)

শ্রমিক হিসেবে সরকারি ভাবে কুয়েত যাওয়ার উপায়

শ্রমিক হিসেবে সরকারি ভাবে কুয়েত যেতে হলে আপনাকে প্রাথমিক নিবন্ধন করতে হবে। আপনি যদি কুয়েতে যেতে চান তাহলে আপনি দৈনিক সংবাদপত্রে কুয়েতের বিভিন্ন চাকরির সার্কুলার সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখতে হবে।

যেহেতু কুয়েতে সকল কাজ অভিজ্ঞতা নির্ভর তাই আপনার প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে। এছাড়াও আপনি যদি কুয়েতে চাকরি করতে যান তবে আপনাকে নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য আপনার নিকটস্থ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এর প্রবাসী শাখায় যোগাযোগ করতে হবে এরপর সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কার্যাবলী সম্পন্ন করতে হবে। 

কুয়েতে যেতে কি কি কাগজপত্র লাগবে

সরকারি ভাবে কুয়েতে যেতে হলে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে। যেসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া আপনি কোনো ভাবেই কুয়েতে যেতে পারবেন না। তা নিম্নরূপঃ

  • পাসপোর্ট
  • টিকিট
  • ভিসা
  • একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
  • দূতাবাসের ফোন নাম্বার ও ঠিকানা
  • জনশক্তি ব্যুরোর ছাড়পত্র
  • মেডিকেল রিপোর্ট
  • চাকুরির ছাড়পত্র
  • টাকা প্রদানের রশিদ ও চুক্তিপত্র ইত্যাদি
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট 
  • আবেদনকারীর পাসপোর্ট ও ষ্ট্যাম্প সাইজের ছবি (রঙ্গিন)
  • আবেদনকারীর সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য
  • পারিবারিক বিভিন্ন তথ্য
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • জাতিয় পরিচয়পত্র
  • চাকরির অভিজ্ঞতা ও প্রমানপত্র ইত্যাদি 

এছাড়াও আরও বিভন্ন ধরনের দরকারি কাগজপত্র লাগতে পারে। আপনারা যারা কুয়েতে যেতে আগ্রহী তারা কুয়েতে চাকরির সার্কুলারে আরও বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন। 

কুয়েত যাওয়ার প্রক্রিয়া

সরকারি ভাবে কুয়েতে যাওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে আবেদনের কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের জনশক্তি মন্ত্রাণালয়ের জনশক্তি ও পরিসংখ্যান ব্যুরো শাখায় ডাটা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। 

এরপর ক্রমানয়ে ছাড়পত্র সংগ্রহ করেতে হবে, মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট তৈরি করতে হবে এবং সর্বশেষ পাসপোর্ট করে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। তারপর কুয়েতে গিয়ে যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি বা কাজ করবেন সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সকল তথ্য সংগ্রহ করে এজেন্সির মাধ্যমে চুক্তিপত্র চূড়ান্তভাবে নিশ্চায়ন করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি

কুয়েত ভিসার দাম কত

আপনারা যারা সরকারি ভাব কুয়েতে যেতে চান তারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন কুয়েত ভিসার দাম কত জানতে চেয়েছেন, আসলে কুয়েতে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে যেমনঃ হোটেল কর্মী কাজের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, কোম্পানি ভিসা, ড্রাইভিং ভিসাসহ বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে।

আপনি যে কাজে জন্য কুয়েত যেতে চাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে ভিসার দাম নির্ধারিত হয় তবে কুয়েতের ভিসার জন্য সাধারণ ৭ লাখ থেকে ৮ লক্ষ টাকা লাগে। কিন্তু কুয়েতের ভিসা প্রসেসিং খরচ মাত্র ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। 

বিভিন্ন সময় আরো কম বেশি লাগতে পারে। আর আপনি যদি দালালের মাধ্যেমে ভিসা করে থাকেন তাহলে আরও বেশী খরচ হতে পারে। আপনি চেষ্টা করবেন কুয়েতে যাওয়ার সকল প্রকিয়া নিজে করতে তাহলে আপনার অনেক অভিজ্ঞতা হবে এবং সকল কিছু সঠিকভাবে নিতে পারেবন।

কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে

আপনি যদি বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ভিসা নিয়ে কুয়েতে যেতে চান তাহলে আপনার কুয়েতের ভিসার জন্য সাধারণ ৭ লাখ থেকে ৮ লক্ষ টাকা লাগতে পারে। এছড়াও কিছু আনুষঙ্গিক খরচ রয়েছে যেমনঃ বিমান খরচ, টিকিট খরচ ইত্যাদি। তবে বিভিন্ন ভিসার জন্য কুয়েতে যাওয়ার জন্য ভিন্ন ভিন্ন টাকার পরিমাণ লাগতে পারে। 

কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি

বর্তমানে সবচেয়ে কাজের চাহিদা বেশী ক্লিনার হসপিটাল ক্লিনার স্কুল ক্লিনার মসজিদ ক্লিনার, ড্রাইভিং, কন্সট্রাকশন, ওয়েল্ডিং, অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার, অফিস সহকারী, দোকান সহাকারি, সেলস ম্যানেজার, কম্পিউটার অপারেটর, হোটেল, গার্মেন্টস, রেস্টুরেন্ট, ইলেকট্রিশিয়ান, সপ কিপার, লেবার, রাজ মিস্ত্রিসহ এধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে কুয়েতে। 

১। ড্রাইভিং

আপনি যদি ড্রাইভিং ভালো পারেন তাহলে আপনি কুয়েতে গিয়ে গাড়ি ড্রাইভিং করতে পারেন। কুয়েতে ড্রাইভিং এর কাজ প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তবে আপনাকে একজন দক্ষ ড্রাইভার হতে হবে এবং ট্রাফিক আইন-কানুন মেনে গাড়ি ড্রাইভ করতে হবে। আপনি চাইলে ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে কুয়েত যেতে পারেন। 

২। মসজিদ ক্লিনার

কুয়েতে অনেক মসজিদ আছে যে গুলো পরিষ্কার করার জন্য বাংলাদেশসহ অন্যন্যদেশের শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া। আপনারা যারা ভাবছেন কুয়েতে গিয়ে কি কাজ করব তারা মসজিদ ক্লিনার এর কাজ করতে পারেন। কুয়েতে ভালো বেতন দেয়া হয়ে মসজিদ ক্লিনারদের।

৩। কন্সট্র্যাকশন

আপনি যদি কুয়েতে চাকরি করতে যান তাহলে কন্সট্রাকশন এর কাজ করতে পারেন। কারণ কুয়েতে এমন হাজারো প্রকল্পের কাজ আছে যেগুলো করানোর জন্য তারা বাহিরের দেশ থেকে লোক নিয়োগ করে থাকে। আপনাকে এই বিষয় অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে তাহলেই আপনি কন্সট্রাকশন এর চাকরি পেতে পারেন। 

৪। অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার

কুয়েতে বিভন্ন ধরনের অফিস আছে আর এই অফিসে বিভিন্ন ধরনের দাপ্তরিক কাজ আছে। সে কাজগুলো করার জন্য বাহিরের দেশের বিভিন্ন কর্মীকে নিয়োগ করা হয়। এখানে কাজ হচ্ছে হিসাব রক্ষা করা, টাকা-পয়সা লেনদেন করা ইত্যাদি। 

৫। কম্পিউটার অপারেটর

আপনি যদি একজন এক্সপার্ট কম্পিউটার অপারেটর হয়ে থাকেন তাহলে আপনি কুয়েতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারেন যেমনঃ মাইক্রোসফট এর সকল কাজ, গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, গেম ডেভেল পমেন্ট, এসইও, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সহ বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ আছে।

৬। রেস্টুরেন্ট

আপনি কুয়েতে গিয়ে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে চাকরি করতে পারেন।কুয়েতে বিভিন্ন ধরনের হোটেল বা রেস্টুরেন্ট আছে সেখানে কাজে জন্য লোক নিয়োগ করা হয়। আপনি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার বা হিসাব রক্ষকের কাজ করতে পারেন। 

৭। রাজ মিস্ত্রি

কুয়েতে বিভিন্ন উঁচু ভবন তৈরি করার জন্য রাজমিস্ত্রি প্রয়োজন তাই তারা বাহিরের দেশ থেকে দক্ষ রাজমিস্ত্রি নিয়োগ করে। আপনি যদি একজন দক্ষ রাজমিস্ত্রি হয়ে থাকেন তাহলে আপনি কুয়েতে গিয়ে এই কাজ করতে পারেন। কুয়েতে রাজমিস্ত্রি কাজের চাহিদা প্রচুর রয়েছে। এছাড়াও কুয়েতে অনেক কাজের চাহিদা রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি

কুয়েত কাজের বেতন কত

কুয়েতে কাজের উপর নির্ভর করে কর্মীকে বেতন প্রদান করা হয়। আপনি কি কাজ করছেন সেই কাজের উপর নির্ভর করে বেতন প্রদান করা হয়। তবে কুয়েতে একজন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্মীকে ৪০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। আপনি যদি কাজে অভার টাইম করেন তাহলে অতিরিক্ত আরও বেতন প্রদান করা হয়। 

কুয়েত টাকার মান কত

বর্তমানে বাংলাদেশের ১ টাকা সমান কুয়েতের ০.০০৩২ কুয়েতি দিনার।

সর্বশেষ কথা

প্রিয় পাঠক, পরিশেষে আমি আপনাদের সাথে কিছু কথা বলতে চাই, আজকের আলোচনায় আমি আপনাদের কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি, কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে, কুয়েত ভিসা দাম কত, সরকারি ভাবে কুয়েত যাওয়ার উপায় সহ বিভিন্ন বিষয় আপনাদের সাথে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!