হারানো সিম বন্ধ করার উপায়

হাসিবুর
লিখেছেন -

হারানো সিম বন্ধ করার উপায় - প্রিয় পাঠক আপনি কি হারানো সিম বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। বর্তমান ডিজিটাল সময়ে মোবাইল ছাড়া একটি মহূর্ত চলা যায়না। আর এই মোবাইল ফোনের সিমে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জমা থাকে।

হারানো সিম বন্ধ করার উপায়

তবে চলার পথে যেকোনো সময় আমাদের মোবাইল বা সিম হারিয়ে যেতে পারে অথবা চুরি হয়ে যেতে পারে। চুরি যাওয়া বা হারানো সিম সাথে সাথে বন্ধ না করলে এই সিমের মধ্যে থাকা আপনার যতগুলো একাউন্ট আছে এবং জিমেইল বা অন্যান্য গোপনীয় একাউন্ট অন্যের হাতে চলে যেতে পারে। 

তাই সিম হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নির্দিষ্ট অপারেটরের সাথে যোগাযোগ করে সিমটা সাময়িক সময়ের জন্য বা প্রয়োজন হলে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ আপনার সুরক্ষার জন্য। 

ধরা যাক আপনার হারানো সিম এর মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালিত হতো বা ফেসবুক আইডি চালু থাকতে পারে বা হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট থাকতে পারে। তাই সিমটি আপনার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।সিম হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে আপনি যেকোনো ধরনের বিপদে পড়তে পারেন বা যে আপনার সিমটি পাবে সে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। 

আপনার যেকোনো সামাজিক একাউন্ট হ্যাক করে যদি রাষ্ট্রদ্রোহী পোষ্ট করে তাহলে আপনি আইনের আওতায় পড়ে যেতে পারেন এবং আপনার বড় ধরনরে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই সিম হারিয়ে গেলে বা চুরি যাওয়ার সাথে সাথে আপনার গুরুত্বপূর্ণ সিমটি বন্ধ করা উচিৎ।

পরবর্তীতে আপনার প্রয়োজন অনূযায়ী সিমটাি উঠিয়ে আপনার একান্টগুলি সচল করতে পারেন। আজকে আমরা দেখবো বাংলাদেশের সকল হারানো সিম বন্ধ করার উপায়। তাহলে চলুন জেনে নেই হারানো সিম বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেইঃ

আরো পড়ুনঃ আইফোন রিংটোন ডাউনলোড

হারানো সিম বন্ধ করার উপায়

সিম বন্ধ করার অনেক কারণ থাকে যার মধ্যে প্রধান কারন হলোঃ সিম হারিয়ে যাওয়া, সিম চুরি হয়ে যাওয়া, মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়া, দীর্ঘদিন সিম অব্যবহার অবস্থায় থাকা, সিমের ক্ষমতা নষ্ট হওয়া বা সিমে দীর্ঘদিন রিচার্জ না করার ফলে ও সিমটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 

আমাদের মোবাইল সিমে যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে সেহেতু যতদ্রুত সম্ভব সিম বন্ধ করা উচিৎ।বাংলাদেশে সকল অপারেটর এর সিম বন্ধ করার নিয়ম একই। বাংলাদেশে সিম বন্ধ করার ২টি উপায় রয়েছে (১) স্থায়ীভাবে সিম বন্ধ করা (২) সাময়িক ভাবে সিম বন্ধ করা।

হারিয়ে বা চুরি হওয়া সিম বন্ধ করার উপায় বা নিয়ম

(১) প্রথমে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি আপনার হারানো সিম সাময়িক ভাবে না স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে চাচ্ছেন। আপনার সিমটি পুনরায় চালু করতে চান তাহলে আপনি সাময়িক ভাবে বন্ধ করুন। সাময়িকভাবে সিম বন্ধ করার জন্য আপনার সিমের হেল্পলাইন নাম্বার ১২১ এ কল করে সাময়িকভাবে সিম বন্ধ করার জন্য বলুন।

হেল্প সেন্টার বা কাস্টমার ম্যানেজার আপনাকে সিম সর্ম্পকিত নানা প্রশ্ন বা তথ্য জানতে চাইবে। তখন আপনি সিমটি চুরি বা হারিয়ে যাওয়ার কথা বলবেন। হারানো সিমের নম্বর, হারিয়ে যাওয়া সিমের ব্যালেন্স, হারিয়ে যাওয়া সময় ও তারিখ জানাবেন। 

এবং কাস্টমার ম্যানেজার আপনার কাছে আপনার ভোটার আইডি, আপনার নাম, জন্ম তারিখ, মাতা-পিতার নাম সহ প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট চাইবে এবং তা আপনি অবশ্যই প্রদান করবেন। 

আপনার সকল ডকুমেন্ট পাওয়ার পর কল সেন্টার আপনার চাহিদার প্রেক্ষিতে হারানো সিমটি সাময়িক বন্ধ করে দিবে। পরবর্তী যেকোনো সুবিধামতো সময়ে পুনরায় আপনি সিমটি তুলে চালু করতে পারবেন।

(২) আপনি হারানো সিম পুনরায় ব্যবহার করতে না চান তাহলে স্থায়ীভাবে সিম বন্ধ করতে পারেন নিয়ম একই। হারানো সিম স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য উক্ত সিমের হেল্পলাইন নাম্বার ১২১ এ কল করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে পারেন। 

তবে স্থায়ীভাবে সিম বন্ধ করার জন্য কাষ্টমার কেয়ার এর বিভাগীয় অফিসে আবেদন করতে হবে।বিভাগীয় অফিসের অফিসার সিমটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনার কাছে চাইবে। 

আপনি প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র প্রদান করে স্থায়ীভাবে সিমটি বন্ধ করতে পারবেন। আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে স্থায়ীভাবে সিমটি বন্ধ করলে আর কোনদিন সিমটি তুলতে পারবেন না।

আরো পড়ুনঃ সিমের নাম্বার দেখার কোড

আপনি যদি বাংলাদেশে থাকেন তাহলে হারানো সিম স্থায়ীভাবে বা সাময়িকভাবে বন্ধ করার জন্য নিন্মোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে হবে।

১। আপনি যে অপারেটর ব্যবহার করেছেন সেই নির্দিষ্ট অপারেটরে যোগাযোগ করতে হবে।

২। আপনি যদি গ্রামীনফোনের গ্রাহক হোন তাহলে গ্রামীন ফোনের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে কথা বলতে হবে। ঠিক তেমনি বাংলালিংক হলে বাংলালিংক কাস্টমার, রবি হলে রবির কাস্টমার কেয়ারে কথা বলতে হবে।

৩। কাস্টমার কেয়ার এ যোগাযোগ করার পর আপনার হারিয়ে যাওয়া সিম সম্পর্কে তথ্য দিবেন এবং সিমটি বন্ধ করতে চাচ্ছেন জানাবেন।

৪। হারিয়ে যাওয়া সিম বন্ধ করার কথা বললে কাস্টমার কেয়ার হতে আপনার কাছে কিছু তথ্য চাইবে।

৫। তথ্যের জন্য আপনি যে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে আপনার সিমটি নিবন্ধন করেছিলেন সেই জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি রাখবেন।

৬। আপনার যদি জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে তাহলে যার পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সিম নিবন্ধন করেছেন তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন।

৭। সিম কর্তৃপক্ষ এনআইডি চেক করার মাধ্যমে আপনি যে সিমের মালিক তা নিশ্চিত করবেন।

৮। সিম কর্তৃপক্ষ যখন নিশ্চিত হবে যে আপনি সিমের প্রকৃত মালিক তখন আপনার অভিযোগ আমলে নিবেন এবং সিমটি তারা বন্ধ করে দিবেন।

উপরোক্ত পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে আপনাদের চুরি হয়ে যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া সিম খুব সহজে বন্ধ করতে পারবেন। আমি যে পদ্ধতিগুলো দেখালাম তা শুধু বাংলাদেশে ব্যবহার করা অপারেটর গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, রবি, টেলিটক, এয়ারটেল সহ সকল অপারেটরের হারিয়ে যাওয়া সিম বন্ধ করার জন্য প্রযোজ্য।

বিঃদ্রঃ হারানো সিম কি ভাবে বন্ধ করবেন তা বা সিম কি কারণে বন্ধ হয় তা বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।এবং হারানো সিম বন্ধ করার জন্য কি করতে হবে বা কি কাগজপত্র প্রদান করতে হবে তা লেখনিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশে ফোন অপারেটরগুলো বাংলাদেশ সরকারের আইন এবং অপারেটর এর নিজস্ব আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য প্রদান করবেন।

আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় ছিলো হারানো সিম বন্ধ করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত তথ্য। আমাদের লেখাটি কেমন লেগেছে এবং হারানো সিম বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে কোনো তথ্য জানার থাকলে অবশ্যই তা কমেন্ট করে আমাদেরকে জানিয়ে দিবেন। হারানো সিম বন্ধ করার উপায় লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!