সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি - প্রিয় পাঠক আপনি কি সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি এই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? বাংলাদেশ থেকে অনেক বাংলাদেশী সিঙ্গাপুরে কাজ করে থাকে। কিন্তু নতুন যারা সিঙ্গাপুরে যেতে আগ্রহী তারা সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণে অনেকেই সিঙ্গাপুরে যেতে পারছে না।
আবার নতুন করে যারা সিঙ্গাপুরে যেতে চাচ্ছন তারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন "সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি" "সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে" "সিঙ্গাপুরে কাজের বেতন কত" "সিঙ্গাপুরে শ্রমিকের বেতন" "সিঙ্গাপুরের রাজধানীর নাম কি" ইত্যাদি জানতে চেয়েছেন।
তাই আজকের পোস্টে আমরা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব কিভাবে আপনি সরাকারিভাবে সিঙ্গাপুরে যেতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নেই সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি সেই সম্পর্কে বিস্তারিতঃ
আরো পড়ুনঃ রোমানিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
কেন আপনি সিঙ্গাপুর যাবেন?
আপনি বিভিন্ন কারণে সিঙ্গাপুরে যেতে পারেন। যেমনঃ ভ্রমণ করতে, চাকরি করতে, পড়াশোনা করতে, ব্যক্তিগত কাজের জন্য, শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে ইত্যাদি। আপনি যদি সিঙ্গাপুরে চাকরি বা কাজের জন্য যেতে চান তাহলে আপনার কাজের ভিসা প্রয়োজন হবে। বেশিরভাগ বাংলাদেশি মানুষ চাকরি বা শ্রমিক হিসেবে কাজের জন্য সিঙ্গাপুরে যায়।
দালাল ছাড়াই সরকারিভাবে সিঙ্গাপুর যাওয়ার উপায়
আপনি যদি দালাল ছাড়া সরকারি ভাবে সিঙ্গাপুরে যেতে চান তবে আপনার জন্য অনেক ভালো হবে। দালালের মাধ্যমে যদি আপনি কোনো প্রকার টাকা-পয়সা লেনদেন করেন তাহলে আপনি যে কাজের জন্য দালালকে টাকা দিয়েছেন সে কাজ কখনোই সম্পন্ন হবে না। বরং আপনার টাকা ক্ষতি হবে।
দালারের মাধ্যমে গেলে আপনার অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং আপনি থাকবেন অনিরাপদ। কোনো সমস্যা হলে দায়ভার আপনার হতে পারে। তাই আপনি চেষ্টা করবেন সরকারি ভাবে সকল তথ্য দিয়ে সিঙ্গাপুর যাওয়ার।
সরকারিভাবে সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য প্রথমত আপনাকে প্রাথমিক নিবন্ধন করতে হবে এরপর আপনার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বাংলাদেশ জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিসংখ্যান ব্যুরো ডাটা ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
এরপর ক্রমানয়ে ছাড়পত্র সংগ্রহ করবেন, মেডিকেল রিপোর্ট তৈরি করবেন এবং সর্বশেষ পাসপোর্ট করতে হবে। এরপর আপনাকে যে কাজে জন্য সিঙ্গাপুর যাবেন তার জন্য ৫ অথবা ১০ বছরের জন্য ভিসা নিতে হবে। এরপর আপনি সরকারিভাবে সিঙ্গাপুরে যেতে পারবেন।
সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে
আপনারা যারা সরকারিভাবে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার কথা চিন্তা করছেন তারা অনেকেই জানতে চাচ্ছেন সিঙ্গাপুরে যেতে কত টাকা লাগবে আসলে এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করছে আপনি কোন ভিসা নিয়ে সিঙ্গাপুরে যাবেন তার উপর।
সাধারণত বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক ভিসায় সিঙ্গাপুরে যেতে ৫ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা লাগতে পারে। এছাড়াও অন্যন্য খরচ লাগতে পারে যেমনঃ বিমান টিকিট খরচ, ভিসা খরচ, পাসপোর্ট খরচসহ বিভিন্ন কাজের জন্য অতিরিক্ত টাকা খরচ হতে পারে।
তবে শুধু শ্রমিক ভিসায় নয় অন্যন্য ভিসা দিয়ে গেলেও এরকম খরচ হতে পারে। তবে পড়াশোনা করার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য কম টাকা খরচ হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি
সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
আপনি যদি দালাল ছাড়াই সরকারি ভাবে সিঙ্গাপুরে যেতে চান তবে আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে। যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া আপনি কোনভাবেই সিঙ্গাপুরে যেতে পারবেন না। তা নিম্নরুপঃ
১। পাসপোর্ট ২। টিকিট ৩। ভিসা ৪। একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ৫। দূতাবাসের ফোন নাম্বার ও ঠিকানা ৬। জনশক্তি ব্যুরোর ছাড়পত্র ৭। মেডিকেল রিপোর্ট ৮। চাকুরির ছাড়পত্র ৯। টাকা প্রদানের রশিদ ও চুক্তিপত্র ইত্যাদি
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
উপরোক্ত কাগজপত্র নিয়ে আপনাকে প্রাথমিক নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করার জন্য বাংলাদেশ জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিসংখ্যান ব্যুরো ডাটা ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
এরপর ক্রমানয়ে ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হবে, মেডিকেল রিপোর্ট তৈরি করতে হবে এবং সর্বশেষ পাসপোর্ট করতে হবে। এরপর আপনি সিঙ্গাপুরে যে কোম্পানিতে চাকরি করবেন তার তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তারপর আপনি সরকারি ভাবে সিঙ্গাপুরে যেতে পারবেন।
সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা ২০২২
সিঙ্গাপুরে যেতে হলে আপনাকে ভিসা নিতে হবে। বিভিন্ন কাজের জন্য সিঙ্গাপুরে ভিসা পাওয়া যায়। যে ধরনের ভিসা সিঙ্গাপুরে পাওয়া যায় তার একটি তালিকা দেওয়া হলোঃ
ভিসার ধরন | যারা আবেদন করতে পারবে |
---|---|
ব্যক্তিগতকৃত কর্মসংস্থান পাশ | উচ্চ উপার্জনকারী পেশাদার যাদের ইতিমধ্যই একটি বিদ্যমান কর্মসংস্থান পাশ রয়েছে বা তারা বিদেশী |
এসএসসি পাশ | মিড-লেভেলের দক্ষ কর্মী যারা প্রত্যক মাসে ২,২২০ মার্কিন ডলার আয় করে থাকেন। |
ওয়ার্ক পারমিট (বিদেশী গৃহকর্মী) | বিদেশী গৃহকর্মী যারা সিঙ্গাপুরে কাজ করে |
ওয়ার্ক পারমিট (বিদেশী কর্মী) | আধা-দক্ষ বিদেশী কর্মী যারা সিঙ্গাপুর নির্মাণ,উৎপাদন,সামুদ্রিক শিপইয়ার্ড, প্রক্রিয়া বা সেবা খাতে কাজ করার জন্য নিয়োযিত থাকে। |
এন্ট্রি পাশ | বিদেশী উদ্যক্তা যারা সিঙ্গাপুরে একটি নতুন ব্যবসা শুরু করতে চায় এবং পরিচালনা করতে চাই। |
এছাড়াও সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা আছে যেগুলোর মাধ্যেমে সিঙ্গাপুরে যাওয়া সম্ভব। তাই আপনারা যারা নতুন সিঙ্গাপুরে যেতে আগ্রহী আছেন তারা আপনার পছন্দমত যেকোনো একটি ভিসা নির্বাচন করে সরকারি ভাবে সিঙ্গাপুরে যেতে পারবেন।
সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি
আপনারা যারা এবছর প্রথম সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন কাজের ভিসা নিয়ে আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন সিঙ্গাপুরে বর্তমানে কোন কাজের চাহিদা বেশী? বর্তমানে সিঙ্গাপুরে ওয়েল্ডিং এর কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
তবে এছাড়াও কন্সট্রাকশন, ফ্যাক্টারি, হোটেল বয়, সেনেটারী কাজ, ফিন্যান্স ম্যানেজার, মার্কেটিং ম্যানেজার, আইটি ম্যানেজার, সেলস ম্যানেজার, অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার, ওয়েব ডেভেলপার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, সেলস ম্যান সহ ভালো ভালো কাজ আছে যে কাজগুলোর চাহিদা সিঙ্গাপুরে অনেক বেশী।
তাই আপনি ও যদি এখন সিঙ্গাপুরে যেতে চান তাহলে এগুলো কাজ করতে পারবেন। তবে যাদের কাজে বেশী অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের বেশী মূল্যায়ন করা হয়। আপনি যদি কাজে অদক্ষ হয়ে থাকেন তবে আপনি চাইলে একটি ভালোমানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এই কাজগুলো করার সুবিধা পেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ দালাল ছাড়া বিদেশ যাওয়ার উপায়
সিঙ্গাপুরে কাজের বেতন কত
এই প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন, সিঙ্গাপুরে কাজের বেতন কত এই সম্পর্কে। তবে আপনারা সকলেই জেনে নিন বর্তমানে ১ সেপ্টেম্বর অনুযায়ী, সিঙ্গাপুর এমপ্লায়মেন্ট পাশ আবেদনকারীর জন্য প্রতিমাসে ন্যূনতম বেতন ৪৫০০ সিংগাপুরিয়ান ডলার বাড়িয়ে ৫,০০০ সিংগাপুরিয়ান ডলার করা হবে।
আর যারা এস পাশ আবেদনকারী আছে তাদের বেতন ২,৫০০ এসজিডি থেকে ৩,০০০ এসজিডি করা হবে। এবং সর্বশেষ এস পাশ আবেদনকারীদের জন্য মাসিক বেতন ন্যূনতম ৩,০০০ এসজিডি থেকে ৩৫,০০ এসজিডি করা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের রাজধানীর নাম কি
সিঙ্গাপুর হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় একটি দ্বীপ, মালয় উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে যা অবস্থিত। সিঙ্গাপুর হচ্ছে একটি শহর ও একটি রাষ্ট্র। অর্থাৎ সিঙ্গাপুরের রাজধানীর নাম হচ্ছে সিঙ্গাপুর।
সিঙ্গাপুর ১৯৫৯ সালে স্ব-শাসন লাভ করে এবং ১৯৬৩ সালে মালয়, উত্তর বোর্নিও এবং সারাওয়াকের পাশাপাশি মালয়েশিয়ার নতুন ফেডারেশনের অংশ হয়ে ওঠে। আদর্শগত পার্থক্যের কারণে সিঙ্গাপুরকে ০২ বছর পর ফেডারেশন থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং পরবর্তীতে এটি একটি স্বাধীন দেশে পরিণত হয়।
সিঙ্গাপুরের মুদ্রার নাম হচ্ছে সিঙ্গাপুর ডলার (S$) (SGD) এবং সিঙ্গাপুরের টাইম জোন হচ্ছে UTC+8 (সিঙ্গাপুর স্ট্যান্ডার্ড টাইম)। সিঙ্গাপুরের অফিশিয়াল ভাষা গুলো হচ্ছেঃ সিঙ্গাপুরের ০৪টি সরকারী ভাষা আছে তাহলো ইংরেজি, তামিল, মালয়, ম্যান্ডারিন।
শেষ কথাঃ সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি
প্রিয় পাঠক, পরিশেষে আমি কিছু কথা আপনাদের সাথে বলতে চাই, আজকের আলোচনায় আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি, সিঙ্গাপুরে যেতে কি কি কাগজপত্র লাগবে, সিঙ্গাপুরে কাজের বেতন কত ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি।আশা করি আপনি আজকের পোস্টটি পড়ে সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি সম্পর্কে জানতে পারলেন। ধন্যবাদ!