হালাল ব্যবসার আইডিয়া - আপনি কি হালাল ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক। মহান আল্লাহ তায়ালা ব্যবসাকে হালাল করে দিয়েছেন এবং সুদকে হারাম করে দিয়েছেন। হারাম ব্যবসা করলে পরকালে আমাদের পরিস্তিতি হবে ভয়ানক। তাই আমদের সকলের হালাল ব্যবসা করে জিবন যাপন করা উচিত।
সূচীপত্রঃ হালাল ব্যবসার আইডিয়া
একমাত্র হালাল ব্যবসার মাঝেই মানুষ সুখ খুজে পায়। একজন মুসলমানের হালাল ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে জানা অতিব জরুরি। তাই আজকে আমরা হালাল ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করবো।
আমাদের আজকের আর্টিকেলে জানবো কয়েকটি হালাল ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে। আপনার যারা ব্যবসা করবেন ভাবছেন তাদের জন্য পোষ্টটি অনেক বেশী উপকার করবে। অনেকেই চান যে, ইসলামিক ভাবে ব্যবসা করে লাভবান হবেন। ইসলামে ব্যবসা করা সুন্নত। চলুন তাহলে হালাল ব্যবসার আইডিয়া গুলো কি কি তা জেনে নিইঃ
ইসলামিক হালাল ব্যবসার নিয়ম
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য যে কার্যক্রম করতেন তাকেই হালাল ব্যবসা বলে। অর্থাৎ যে ব্যবসায় থাকে না কোনো ধোকা, থাকে না কাউকে ঠকানো, যে ব্যবসা দ্বারা কোনো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না তাকেই হালাল ব্যবসা বলে।
ইসলামি শরিয়তে হালাল ব্যবসার ফজিলত
হালাল ভাবে টাকা উপার্জনের একমাত্র ভালো উপায় হচ্ছে ব্যবসা। আমাদের প্রিয় নবি হযরত মোহাম্মদ (সা.) ব্যবসা করতেন। আরও অনেক সাহাবিরা ব্যবসা করতেন।
হালাল রিযিক উপার্জন আল্লাহর নিকট পছন্দের। আল্লাহ তায়ালা ব্যবসাকে হালাল করে দিয়েছেন। আমাদের অবশ্যই হালাল ব্যবসা করা উচিত। হালাল রিজিক উপার্জন করে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারলেই আমাদের পরকালের জিবন সুখের হবে। নিচে হালাল ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
১। ফার্মেসির দোকান
আমাদের পরিক্ষা করার জন্য আল্লাহ তায়ালা আমাদের বিভিন্ন রোগবালাই দিয়ে থাকেন। আবার মহান আল্লাহ তায়ালাই আমাদের রোগ বালাই থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। তবে রোগ থেকে মুক্তির জন্য উসিলার প্রয়োজন হয়। আর এই উসিলাই হচ্ছে চিকিৎসক ও ঔষধ।
হালাল ভাবে ব্যবসা করতে চাইলে ঔষধের ব্যবসা বা ফার্মেসি দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ঔষধের ব্যবসা হালাল ও লাভজনক ব্যবসা। ঔষধের ব্যবসা হালাল ভাবে করতে হলে অবশ্যয় ভালো কোম্পানির ঔষধ ও ঠিকঠাক দাম রাখতে হবে।
আর যদি ক্রেতাকে ধোকা দেন, তাহলে আপনার ঔষধের ব্যবসা হারাম হয়ে যাবে। তাই সর্বধা হালাল ব্যবসা করার চেষ্টা করতে হবে। লাভজনক হালাল ব্যবসা আইডিয়া হচ্ছে ঔষধের ব্যবসা। হালাল ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে আপনি ফার্মেসি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা
২। হালাল ফুডের ব্যবসা
হালাল ভাবে রিজিক উপার্জনের জন্য ফুডের ব্যবসা খুবই লাভজনক ব্যবসা। তবে আপনার অব্যশই ফুডের ব্যবসা হালাল ভাবে করতে হবে। ক্রেতাকে মাপে কম বা খারাপ ফল দিলে হালাল ব্যবসা হবে নাহ। আপনি যদি হালাল ব্যবসা করতে চান তাহলে ফলের ব্যবসা করতে পারেন।
এই ব্যবসা করার জন্য আপনাকে প্রথমেই একটি ফলের দোকান দিতে হবে। তারপর ভালো ফল রেখে ব্যবসা শুরু করে দিতে হবে। ইসলাম সমর্থন করে না, এমন কিছু খাবার আছে। সেই খাবার গুলোই হারাম। আপনাকে মূল ফোকাস রাখতে হবে হালাল ব্যবসার দিকে।
৩। হালাল কাপড়ের ব্যবসা
হালাল ভাবে লাইফটাইম একটা ব্যবসা করতে চাইলে কাপড়ের ব্যবসা করতে পারেন। হস্তশিল্প তৈরিতে বাংলাদেশ অধিক জনপ্রিয়। শুধু দেশে না, বাহিরেও আমাদের দেশের তৈরি পোষাক রপ্তানি করা হয়।
কাপড় উৎপাদন করে ব্যবসা করতে পারবেন। আবার কাপড় থেকে পোষাক তৈরি করে ব্যবসা করতে পারবেন। তবে আপনাকে অবশ্যই কাপড়ের ব্যবসা করতে হলে, কাপড় সম্পর্কে ভালো আইডিয়া নিতে হবে।
৪। হালাল মুদি মনোহারি দোকান দেওয়া
হালাল ব্যবসা আইডিয়া খুজে থাকলে, আপনি মুদি মনোহারির দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। হালাল ভাবে ব্যবসা করতে হলে আপনাকে সর্বদা সৎ থাকতে হবে।
বর্তমান যুগে মুদি মনোহারি দোকান দিয়ে, প্রচুর মানুষ হালাল ভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে। তাহলে আপনি কেনো বসে থাকবেন। তবে মুদি মনোহারি দোকান দিতে প্রচুর মূলধন লাগে। মুদি মনোহারি দোকানে আপনাকে অবশ্যয় হালাল জিনিস পত্র রাখতে হবে।
যে সকল জিনিস পত্র ইসলাম সমর্থন করে না, সে সব জিনিস বিক্রি করা যাবে না। হারাম কোনো জিনিস বিক্রি করা যাবে না, হালাল ভাবে ব্যবসা করতে হলে হালাল জিনিস পত্র বিক্রি করতে হবে। ক্রেতাকে ঠকালে ব্যবসা হারাম হয়ে যাবে। তাই অবশ্যয় হালাল রিযিক উপার্জনের চেষ্টা করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায়
৫। হালাল মাছের ব্যবসা
আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। মাছ আমদের সবার প্রিয়। আপনি যদি হালাল ব্যবসার আইডিয়া খুজে থাকেন তাহলে মাছের ব্যবসা করতে পারেন। মাছের লিস রেখে মাছ চাষ করে ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছে অনেক মাছ ব্যবসায়ী। এটি একটি হালাল ব্যবসা।
মাছ চাষ করতে হলে প্রথমে একটা লিস নির্ণয় করতে হবে। তারপর লিসে চুন দিয়ে, লিস পরিষ্কার করে মাছের পোনা ছারতে হবে। লিসে মাছের পোনা ছারার পর মাছের পরিচর্যা করতে হবে। এবং মাছের খাবার দিতে হবে।
আপনি যদি হালাল ব্যবসা করতে চান, তাহলে মাছকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। অবৈধ খাবার দিয়ে, মাছকে তারাতাড়ি বড় করলে। মাছের ব্যবসাটি হারাম হয়ে যাবে। তাই আপনাকে হালাল ব্যবসা করতে হলে সর্বধা সচেতন থাকতে হবে।
৬। লাইব্রেরির দোকান দেওয়া
আমদের দেশে অনেক শিক্ষার্থী আছে। প্রতিটা শিক্ষার্থীর বিভিন্ন বইয়ের প্রয়োজন হয়। আপনি বইয়ের লাইব্রেরি দিয়ে হালাল ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে হালাল ব্যবসা করার জন্য আপনাকে সৎ থাকতে হবে।
লাইব্রেরি দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনাকে একটি স্কুল কলেজের পাশে একটি দোকান দিতে হবে। দোকান দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনিয় বিভিন্ন বই রাখবেন। তারপর ব্যবসা শুরু করে দিবেন।
৭। ছাগলের ব্যবসা
আপনি যদি হালাল ব্যবসার আইডিয়া খুজে থাকেন তাহলে, ছাগলের ব্যবসা হতে পারে আপনার জন্য হালাল ও লাভজনক ব্যবসা। ছগলের ব্যবসা হচ্ছে হালাল ব্যবসা।
যারা গ্রামে বসবাস করে, তাদের জন্য ছাগলের ব্যবসা বেশি লাভজনক। ছগলের ব্যবসা করার জন্য প্রথমেই একটা ছাগলের ঘর তৈরি করতে হবে। তারপর মাঝারি সাইজের ছাগল ক্রয় করে পালন করতে হবে। ১ বছর পর ঐ ছাগল বিক্রি করে প্রচুর টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
শেষ কথা
যে ব্যবসা গুলো ইসলাম সমর্থন করে না, সে ব্যবসাগুলোই হলো হারাম ব্যবসা। সকল মুসলমানের হালাল ব্যবসা করে, জীবনযাপন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার চেষ্টা করা উচিত। হারাম ভক্ষণ কারীর ইবাদত বন্দেগি আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না।
আমরা হালাল ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনি ইতিমধ্যে হালাল ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেছেন। এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।