নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম - আপনি কি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক। প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

সূচিপত্রঃ নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জানেনা। তাই এ সম্পর্কে জানতে গুগলের সার্চ করে। আজকে আমরা আপনাকে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানাবো।

আপনি যদি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।

ভোটার আইডি কার্ড কেন প্রয়োজন?

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যাদের ভোটার আইডি কার্ড করার বয়স হয়ে গেছে। কিন্তু নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে না জানার কারণে আইডি কার্ড করতে পারছে না। 

তাই আজকে আমরা আপনাদের সাথে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। তার আগে চলুন ভোটার আইডি কার্ড কেন প্রয়োজন তা জেনে নেই।

বিভিন্ন রকম গুরুত্বপূর্ণ কারণে আমাদের ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হয়। যেমন বিভিন্ন রকম সরকারি সেবা গ্রহণ করার জন্য। চাকরি অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য। ভোট প্রদান করার জন্য। পাসপোর্ট করার জন্য। বিভিন্ন দলিলপত্র এবং কাগজপত্র ব্যাপারে ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হয়।

সরকারি সেবা গ্রহণ করার জন্য

আপনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক না হোন তাহলে এটা স্বাভাবিক যে আপনি বাংলাদেশ থেকে সরকারি বিভিন্ন রকম সেবা রয়েছে সেগুলো পাবেন না। আপনি যে বাংলাদেশের নাগরিক তার আপনাকে প্রমাণ দেখাতে হবে যে আপনি বাংলাদেশের নাগরিক। 

যেমন বর্তমানে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য বাধ্যতামূলক ভাবে ভোটার আইডি কার্ড দেখানোর প্রয়োজন হয়। না হলে আপনি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন না। এছাড়াও আরো অন্যান্য সরকারি সুবিধা গ্রহণ করার জন্য ভোটার আইডি কার্ডের প্রয়োজন হয়ে থাকে।

ভোট প্রদান করার জন্য

আমাদের দেশে 18 বছর বয়স হওয়ার পর থেকে আমরা ভোট দিতে পারি। এটি হলো গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই আপনি দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজে ভোটার আইডি কার্ড না থাকার কারণে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তাই ভোট প্রদান করার জন্য আপনার ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হবে।

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জমির দলিল বের করার নিয়ম

সশরীরে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ সশরীরে গিয়ে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য নিবন্ধন করে থাকেন। প্রতিবছর যারা নতুন ভাবে প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স হয় তাদের ভোটার হিসাবে নিবন্ধন করা বাংলাদেশ নির্বাচন অফিসের দায়িত্ব। 

বেশ কয়েকটি ধাপে নির্বাচন কমিশন এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে থাকেন। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা এবং পৌরসভা সিটি কর্পোরেশন এই প্রক্রিয়ার আওতাভুক্ত রয়েছে।

ভোটার নিবন্ধন করার জন্য বিভিন্ন রকম পত্র-পত্রিকায় অথবা মাইকিং এর মাধ্যমে নাগরিকদের সচেতন করা হয়। তাই আপনি যদি নতুন ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে এই বিষয়ে আপনার সতর্ক থাকতে হবে এবং আপনাকে নিজে থেকেই খোঁজ রাখতে হবে। 

বিভিন্ন জায়গাতে নির্দিষ্ট সময়ে ভোটার আইডি কার্ডের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়। গ্রাম অঞ্চলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। কিন্তু শহরের বেশিরভাগ কাজ নির্বাচন অফিসে হয়ে থাকে।

আপনি যদি সশরীরে ভোটার আইডি কার্ড করতে চান তাহলে আপনাকে আপনার নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। তারা আপনাকে অফলাইনে বিভিন্ন রকম পদ্ধতি সম্পর্কে বলে দেবে। আপনাকে কোন পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে এবং আপনার কি কি কাগজপত্র লাগবে তারা সবকিছু আপনাকে বলে দেবে।

আরো পড়ুনঃ বাইক কেনার জন্য ব্যাংক লোন

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

এখন হচ্ছে ডিজিটাল যুগ এই সময় সবকিছু অনলাইনে করা যায়। আপনি যদি শরীরের না গিয়ে অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান তাহলে এটিও আপনি করতে পারবেন। তার জন্য আপনাকে অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন এখন আমরা অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেইঃ

ধাপ ১ঃ অ্যাকাউন্ট তৈরি | নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

ভোটার হিসাবে নিবন্ধন করতে প্রথমে আপনাকে www.services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তারপর আপনাকে একটি একাউন্ট খুলতে হবে। ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর নতুন নিবন্ধন ট্যাবে ক্লিক করে নিচের দিকে যেতে হবে এরপর দেখতে পাবেন আমি "রাজি নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে চাই" নামক একটি বাটন রয়েছে ওই বাটনে চাপ দিতে হবে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

এরপর আপনাকে আপনি যেহেতু নতুন ভোটার নিবন্ধন করবেন সেও তো আপনাকে নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন এখানে ক্লিক করতে হবে।

এরপর আপনার সম্পূর্ণ নাম ইংরেজিতে এবং আপনার জন্ম তারিখ যেন না ভুল হয় এরকম ভাবে প্রবেশ করাতে হবে। অবশ্যই আপনাকে জন্ম সনদ অনুযায়ী আপনার জন্ম তারিখ দিতে হবে। এরপর আপনাকে ক্যাপচার কোডটি বসাতে হবে। এরপর বহাল লিখার উপর ক্লিক করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

এরপর আপনাকে একটি মোবাইল নাম্বার প্রবেশ করাতে হবে। আপনার কাছে যে মোবাইলটি রয়েছে সেই মোবাইলের নাম্বার বসাতে হবে। এরপর বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার নাম্বারে একটি কোড আসবে যা সাইটে প্রবেশ করাতে হবে।

আপনার কটি ভেরিফাই করার পর আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড ঠিক করতে হবে পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর আপনার একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। এখন আপনি আপনার একাউন্টে প্রবেশ করার জন্য প্রস্তুত।

ধাপ ২ঃ একাউন্টে লগইন করতে হবে | ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

একাউন্ট খোলা হয়ে গেলে আপনি সরাসরি লগইন করতে পারবেন। আর যদি আপনি পরবর্তীতে লগইন করতে চান তাহলে লগইন করুন এখানে ক্লিক করে আপনার পাসওয়ার্ড বসাতে হবে। এরপর আপনাকে লগইন বাটনে ক্লিক করে আপনার একাউন্টে লগইন হয়ে যাবে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

ধাপ ৩ঃ প্রোফাইল সম্পাদনা | নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

প্রোফাইল বাটনে ক্লিক করলে আপনি প্রোফাইল অপশনে চলে যাবেন যেখানে আপনাকে আপনার যাবতীয় তথ্য পূরণ করতে হবে।

প্রোফাইলে যাওয়ার পর যতগুলো তথ্য চাইবে আপনাকে সব গুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। তথ্য গুলো পূরণ করার জন্য পেজের বামদিকে এডিট বাটনে ক্লিক করে আপনি তথ্য পূরণ করতে পারবেন। এরপর আপনি প্রত্যেকটি তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন। খেয়াল রাখবেন যেন কোনো তথ্য ছুটে না যায়।

ধাপ ৪ঃ আবেদন সম্পাদন

আপনার প্রোফাইলের সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর আপনাকে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এর জন্য আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো স্ক্যান করে পিডিএফ কঁপি আপনার অ্যাকাউন্টে আপলোড করে দিতে হবে। আপলোড দ্বিতীয় প্রোফাইল এডিট মোডে গিয়ে পরবর্তী ধাপে ক্লিক করলেই আপলোড এর উপায় পাবেন।

আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করা হয়ে গেলে আবার পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে। এটি হলো আবেদনের শেষ কাজ। এই ধাপ সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনার আবেদন একটি প্রিভিউ আপনাকে দেখানো হবে। এর সাহায্যে আপনি ভালোভাবে নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার আবেদনের সকল তথ্য সঠিক আছে কিনা।

নতুন ভোটার হতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

প্রিয় পাঠক আমরা ইতিমধ্যে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আপনি যদি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

এখন আমরা নতুন ভোটার হতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি লাগবে সেগুলো সম্পর্কে জানব। ভোটার হতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো হলঃ

জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রঃ আপনি যদি ভোটার হতে চান তাহলে আপনার প্রথমেই লাগবে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র যা অনলাইনে থাকতে হবে। হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড করা যাবে না।

এসএসসি সনদপত্রঃ আপনি যদি শিক্ষিত হন তাহলে অবশ্যই আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য এসএসসি বা এইচএসসি এর সনদপত্র প্রয়োজন হবে।

পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ডঃ পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ড এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে। আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান তাহলে পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ড এর ফটোকপি লাগবে।

বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপিঃ আপনি যে জায়গায় রয়েছেন আপনি সেখানে নিয়মিত থাকেন তার একটি প্রমাণ পত্র অর্থাৎ বিদ্যুৎ বিল এর ফটোকপি লাগবে।

নাগরিকত্ব সনদপত্রঃ ভোটার আইডি কার্ড লেখার জন্য কখনো কখনো নাগরিকত্ব সনদপত্র প্রয়োজন হয়। আপনি যে এলাকায় রয়েছেন এলাকার চেয়ারম্যান অথবা কমিশনার কাছ থেকে এটি সংগ্রহ করতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ডের ছবি তোলা এবং স্বাক্ষর

আপনি অনলাইনে অথবা অফলাইনে যেখানে আপনার তথ্য পূরণ করে থাকুন না কেন এলাকাভেদে ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য ছবি এবং স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। যা আপনাকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে দিয়ে আসতে হবে। 

আপনার আবেদনপত্র জমা হওয়ার পরে আপনার মোবাইল নাম্বারে একটা মেসেজ যাবে। আপনি কোথায় এবং কত তারিখে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি এবং স্বাক্ষর দিতে আসবেন। এখানে আপনাকে মূলত তিনটি কাজ করতে হবে সেগুলো হলোঃ

  • ছবি তোলা
  • স্বাক্ষর দেওয়া
  • চোখের স্ক্যান করা

এ তিনটি কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেল এখন শুধু ভোটার আইডি কার্ড হাতে পাওয়ার অপেক্ষায়।

ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ

এরপর আপনাকে ভোটার আইডি কার্ড হয়েছে কিনা সেটি আপনার মোবাইলে মেসেজ করে জানিয়ে দেওয়া হবে। আপনি আবেদনের সময় যে নাম্বারটি দিয়েছিলেন ওই নাম্বারে আপনাকে মেসেজ পাঠানো হবে। 

সেখানে আপনাকে আপনার ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার বলে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে আপনার আইডি কার্ডের নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

আপনি দেশের যেকোনো স্থান থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইট থেকে আপনার ভোটার আইডি কার্ড প্রিন্ট করে বের করে নিতে পারবেন। এর জন্য কিছু দিন সময় লাগতে পারে। যতদিন না আপনার মোবাইলে মেসেজ এসেছে ততদিন আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।

শেষ কথাঃ নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

আপনারা যারা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়ে ছিলেন তাদের জন্য উপরে এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। 

তাহলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি এবং সহজে কোন ঝামেলা ছাড়াই নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন। যা আপনাদের সুবিধার্থে উপরে বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম আপনার অনেক উপকৃত হবে বলে আশা করি।

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!