২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ - শবে বরাত মুসলমানদের একটি জনপ্রিয় রাত। আজকের এই আর্টিকেলে ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ জানানো হবে। আপনারা যদি ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ জানতে চান। তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। তো চলুন জেনে নিই ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ।
সূচিপত্রঃ ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ
- ভূমিকাঃ ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ
- শবেবরাত কি
- ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ
- শবে বরাত পালন করা যাবে কিনা
- শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস কি বলে
- শেষ কথা ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ
ভূমিকা ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ
শবে বরাত ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। হিজরি সাবান মাসের ১৪ এবং ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতকে উপমহাদেশের শবে বরাত হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। শবে বরাত এই রাতটিতে মুসলমানদের একটি সৌভাগ্যের রাত বা ক্ষমাশীল রাত। কেননা এই রাতে মুসলমানদের ইবাদত কারীর আল্লাহর বান্দাদের গুনাহ মাফ করার রাত।
তাই এই রাতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত হিসাবে প্রদান করা হয়। ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানবো। এছাড়াও জানবো ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ, শবে বরাত কি, শবে বরাত পালন করা যাবে কিনা, শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস কি বলে এইসব উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।
আপনারা যারা ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আশা করি প্রথম থেকে সম্পূর্ণ পড়বেন। তাহলে চলুন শুরু করি ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাত সম্পর্কে জানতে চাই
শবে বরাত কি
শবে বরাত শব্দটি ফারসি ভাষা থেকে এসেছে। ফার্সিতে শবে অর্থ রাত আর বরাত অর্থ হচ্ছে ভাগ্য। অর্থই দুটি যদি একত্রে করা যায় তাহলে অর্থ দাঁড়াচ্ছে শবে বরাত অর্থ সৌভাগ্যের রাত অথবা ভাগ্য রজনী বা ভাগ্য নির্ধারণ হয় যে রজনীতে। ইসলামের আবির্ভাব প্রায় পাঁচশ বছরের পরে এই শবে বরাত পরিভাষাটা প্রথম ব্যবহৃত হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুগে সাহাবীদের যুগে, তবেতাবাইনদের যুগেও এই পরিভাষাটি প্রচলিত ছিল না।
আমরা এই রাতকে যেভাবে উদযাপন করি ইসলামের আবির্ভাবে প্রথম ৫০০ বছরের এইভাবে রাতকে উদযাপন করা হতো না। অনেকেই শবে বরাত শব্দের অর্থ ভাগ্য রজনী বলে। তাই আপনাদের জন্য ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে শবে বরাতের অর্থ কি সেটা তুলে ধরা হয়েছে।
শবে বরাত ফারসি বরাত শব্দের অর্থ হল ভাগ্য বা বন্টন। তুরকি ভাষাভাষীগণ বলেন বিরাত কান্দলি। পৃথিবীর সকল মুসলমানদের জন্য শবে বরাত একটি নফল ইবাদতের দিন। শবেবরাত সাবান মাসের চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল।
২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ
২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ এখন আমরা জানবো। বাংলাদেশ একটি মুসলিম কান্ট্রি হিসাবে এদেশের অধিকাংশই মানুষ মুসলমান। বাংলাদেশের অনেক মানুষ জানেন না২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ। হিজরী বর্ষের সাবান মাসের ১৪ তারিখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সৌভাগ্যের রাত হিসেবে পালন করেন। এই রাতে ধর্ম-প্রাণ জন্য কৃপার দরজা খুলে দেন মহান আল্লাহ তা'আলা।
তাই এই রাতটি পবিত্র শবে বরাত হিসেবে পালিত হয়। তাছাড়া অনেক সময় ইংরেজি ক্যালেন্ডার বা আরবি ক্যালেন্ডার গুলোতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর তথ্য অনুযায়ী অনেক সময় শবে বরাত তারিখ উল্লেখ করা থাকে যেটা নির্দিষ্ট ভাবে যে তারিখ প্রদান করা হয় না যে ওই দিনেই শবেবরাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছর ইংরেজি ক্যালেন্ডার এর একই দিনে শবে বরাত অনুষ্ঠিত হয় না। কারণ আরবি মাস গুলো কখনো ২৯ দিন বা কখনো ৩০ দিন হয়ে থাকে।
তাই ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ এ বিষয়টি নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা অসম্ভব একটি বিষয়। ইসলাম ধর্মের বিশেষ বিশেষ দিন বা উৎসবগুলো আরবি মাসের চাঁদের উপর নির্ভর করে। ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ এটার নির্দিষ্ট ভাবে বলা যাবে না তবে আশা করা যায় ২০২৩ সালের মার্চ মাসের ৮ তারিখ রাতে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে সঠিক তারিখটি সাবান ১৪৪৪ সালের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাত কি পালন করা জায়েজ
শবে বরাত পালন করা যাবে কিনা
সকল প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার জন্য, যিনি পরিপূর্ণ দিন হিসাবে আমাদেরকে ইসলাম দান করেছেন। যেদিনে মানুষের পক্ষে থেকে কোন সংযোজন বা বিযোজন প্রয়োজন হয় না। সালাত ও সালাম তারই রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি। যিনি আল্লাহর দ্বীনের রিসালাত দায়িত্বপূর্ণভাবে আদায় করেছেন। কোথাও কোন কার্পণ্য করেনি।
দিন হিসাবে যা কিছু এসেছে তিনি তা উম্মতের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন ও নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে গেছেন। তার সাহাবায়ে কিরামের প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। যারা ছিলেন উম্মতের মোহাম্মদের আদর্শ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ পালনের সকল চেয়ে অগ্রগামী।
ইদানিং শবে বরাত কে নিয়ে বেশ বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনলাইনে অফলাইনে বিভিন্ন তর্ক বিতর্ক হচ্ছে। কোথাও কোথাও ডিবেট পর্যন্ত হচ্ছে। তাই কোরআন সুন্নাহ ভিত্তিক সঠিক মেসেজ মুসলিম উম্মাহকে বোঝানোর ইচ্ছায় বাস্তবতার উল্লেখ করা হলো।
শবে বরাত এই শব্দে কোরআন ও হাদিসে লেখা না থাকায় অনেকেই শবে বরাত বলতে কিছু নেই ঘোষণা করেছেন। অনেকেই অনেক খোঁড়া যুক্তি তোলেন। তাদের দাবি এবং যুক্তি সঠিক নয়। একটু বুঝিয়ে বলি আমরা সবাই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি কোরআন হাদিসের নির্দেশের কারণে।
কিন্তু কোরআন ও হাদিসের কোথাও কি নামাজ শব্দ আছে? আমরা যাকে নামাজ বলি কুরআন ও হাদিসে উর্ধ্বত্ব শব্দ সালাত নামাজ। তদ্রূপভাবে আমরা যাকে শবে বরাত বলি হাদিসে সেটাকে লাইলাতুন নিসফি বিন সাবান বলে।
এভাবে আরও অনেক শব্দ আছে যেগুলো সরাসরি কুরআন ও হাদিসের মধ্যে উল্লেখ নেই। কিন্তু শব্দগুলো মর্ম ও উদ্দেশ্য কোরআন হাদিস সমর্থিত বা ইসলাম কেন্দ্রিক। যেমন ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল, সালাফি কনফারেন্স ইত্যাদি এগুলো কোরআন হাদিসে বর্ণিত শব্দ না হয়েও যদি বিদআত হয় তাহলে শবে বরাত কেন বিদআত হবে? এমন আরো অসংখ্য দৃষ্টান্ত দেখানো যাবে। জ্ঞানী এবং সতেচন ব্যক্তির জন্য এতোটুকুই বলাই যথেষ্ট।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাত কি বিদআত
শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস কি বলে
এখন আমরা জানবো শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস কি বলে। শবে বরাত কি আসলেই পালন করা জায়েজ না নাজায়েজ। এগুলো বিস্তারিত এখন জানবো। এবং হাদিস কি বলে আমরা তা দেখব।
১ নং হাদিস
عن معاذ بن جبل عن النبي صلى الله عليه و سلم قال : ( يطلع الله إلى خلقه في ليلة النصف من شعبان فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن
অনুবাদ: হযরত মুআয ইবনে যাবার রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-আল্লাহ তায়ালা ১৫ই সাবানের রাতে সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিসেদ পোষণকারীর ব্যতীত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।
২ নং হাদিস
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, রাতে রাসূল সাঃ নামাজে দাঁড়ান এবং দীর্ঘ সিজদা করেন যে আমার ধারণা হলো তিনি মৃ- ত্যু বরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধা আঙ্গুল নাড়া দিলাম। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বলেন, হে আইশা তোমার কি আশঙ্কা হয়েছে যে আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম না ইয়া রাসুল। আপনার দীর্ঘ শীত সিজদা দেখে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃ- ত্যু বরণ করেছেন কিনা?
নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভাল জানেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এটা সাবানের রাত। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থীদের ক্ষমা করেন। অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন এবং বিশেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।
শেষ কথা ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ
২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ আমরা এতক্ষণে হয়তো জেনে গেছি। ছাড়াও এই আর্টিকেলে আরো বিশেষ বিশেষ কথা আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এই বিস্তারিত আলোচনা আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন এবং খুব উপকৃত হয়েছেন।
আমরা প্রায় পোষ্টের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি আজকের এই আর্টিকেলে ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যারা এখনো ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখ জানেন নি তারা এই পোস্টটি আবার প্রথম থেকে সম্পূর্ণ পড়ুন। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে এতক্ষণ থাকার জন্য আসসালামু আলাইকুম।