প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার - প্রিয় পাঠকগণ প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। অনেক সময় আমাদের প্রসাবে ইনফেকশন হয় কিন্তু আমরা প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে না জানার কারণে এটি থেকে বের হতে পারি না। তাই আজকের এই আর্টিকেলে প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
সূচিপত্রঃ প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার
- ভূমিকাঃ প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার
- প্রস্রাবে ইনফেকশন কি
- প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়ার কারণ
- প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ
- প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়
- প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিকার
- শেষ কথাঃ প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার
প্রসাবে ইনফেকশন হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। আবার বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায় যার ফলে আমরা বুঝতে পারি যে প্রসাবে ইনফেকশন হয়েছে। প্রেসাব জ্বালাপোড়া করা এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে দুর্গন্ধ হওয়া প্রসাবে ইনফেকশন হওয়ার অনুমতম একটি লক্ষণ।
আমরা অনেকেই প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানিনা। যদি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে রাখতে পারি তাহলে খুব সহজেই বাসায় বসে এর চিকিৎসা করা যায়। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলে প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
ভূমিকাঃ প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার
প্রস্রাবে ইনফেকশন ব্যাপারটি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জ্ঞান রাখি না। কিন্তু অনেক সময় আমাদের প্রস্রাবে ইনফেকশন দেখা যায় যার ফলে বিভিন্ন রকম সমস্যা হয়ে থাকে। এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই প্রস্রাবে ইনফেকশন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা রাখতে হবে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
এছাড়া প্রস্রাবে ইনফেকশন কি? প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়ার কারণ, প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ, প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়, প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আরো পড়ুনঃ কিডনি রোগের কারণ ও প্রতিকার
প্রস্রাবে ইনফেকশন কি?
প্রস্রাবে ইনফেকশন এ বিষয়টিকে মেডিকেলের ভাষায় ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বলা হয়। মূত্রুতন্ত্রের যে কোন অংশের সংক্রমণ হওয়ার ফলে এটি হতে পারে। বিশেষ করে আপনার কিডনি, ইউরেটার মুত্রনালী, ইত্যাদি মূত্রতন্ত্রের অংশ। আমাদের শরীরের অন্যতম বজ্র পদার্থ হলো প্রসাব। এ প্রসাব কিডনিতে তৈরি হয় এবং মূত্রনালীর মাধ্যমে তা বেরিয়ে আসে।
সাধারণত অনেক সময় প্রসাবে বিভিন্ন রকম অস্বাভাবিকতা দেখা যায় যেমন প্রসবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া করা, সহজে প্রসাব বের না হওয়া, প্রসবের অত্যন্ত দুর্গন্ধ হওয়া এ লক্ষণগুলো সাধারণত প্রস্রাবে ইনফেকশন এর কারণে হয়ে থাকে।
প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়ার কারণ
আপনি যদি প্রস্রাবে ইনফেকশন থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যদি প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে পারেন তাহলে খুব সহজেই প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।
প্রস্রাবে ইনফেকশন সমস্যাটি হয় যখন ব্যাকটেরিয়া ইউরেথ্রার মধ্য দিয়ে ইউরিনারি ট্রাক্টে প্রবেশ করে এবং মূত্রশয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকে। কখনো কখনো অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া গুলো বিকশিত হতে থাকে যার ফলে প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
প্রস্রাবে ইনফেকশন এ সমস্যাটি সাধারণত মহিলারা বেশি ভোগে থাকেন। মুত্রাশয়ের সংক্রমণ সাধারণত ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়ে থাকে। আবার ইউরেথ্রাতে ইনফেকশন হতে পারে যখন মলদ্বার থেকে ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ
মূত্রতন্ত্রের যে কোন অংশ যদি জীবাণুর সংক্রমণ হয় তাহলে সেটিকে প্রস্রাবে ইনফেকশন বলা হয়। এই সমস্যাগুলো অনেক সময় বড় হয়ে দাঁড়ায়। যদি প্রথমে আমরা এটির গুরুত্ব না দেই। তার জন্য আমাদেরকে প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে হবে। আমরা যদি প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো জানতে পারি তাহলে খুব সহজেই এর ঘরোয়া চিকিৎসা করতে পারব।
১। প্রস্রাবে বাজে গন্ধ হওয়া
২। বমি বমি ভাব হওয়া মাঝেমধ্যে বমি হওয়া।
৩। প্রস্রাব গাঢ় হলুদ বা লালচে রং ধারণ করা।
৪। তলপেটে অথবা পিঠে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা অনুভব করা।
৫। একটু পর পর প্রস্রাব এর চাপ লাগা কিন্তু সঠিকভাবে প্রস্রাব না হওয়া।
৬। প্রস্রাব করার সময় অত্যন্ত পরিমাণে জ্বালাপোড়া করা।
৭। বেশিরভাগ সময় জ্বর জ্বর ভাব হওয়া এবং কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা।
প্রস্রাবে ইনফেকশন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে বেশিরভাগ নারীরা কিন্তু অনেক সময় পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রস্রাবে ইনফেকশন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, কিডনিতে ব্যথা করা এবং কোমরে ব্যথা হওয়া অন্যতম। এ লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেলে খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ
প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়
প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায় জানা থাকলে খুব সহজেই আমরা ঘরোয়া পদ্ধতিতেই এটি থেকে মুক্তি পেতে পারবো। এর জন্য আমাদেরকে এ রোগের লক্ষণ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়ার আগেই প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায় জানতে হবে সেখান থেকেই এই রোগকে প্রতিরোধ করতে হবে।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা - আমরা জানি যে সকল রোগের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। যদি হয় প্রসাবের কোন সমস্যা তাহলে আরো বেশি করে পানি পান করতে হবে। তবে আবার অতিরিক্ত পানি পান করা যাবে না। একজন মানুষের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই পান করতে হবে।
প্রস্রাব আটকে না রাখা - আমরা অনেকেই প্রস্রাব আটকে রাখি বিশেষ করে যখন বাইরে যায়। যার ফলে এটি আমাদের মূত্রথলি এবং কিডনির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কোথাও গেলে যদি প্রস্রাব চাপ দেয় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রস্রাব আটকে না রেখে প্রস্রাব ত্যাগ করতে হবে। তাই আপনি যদি প্রস্রাবে ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে চান তাহলে দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখবেন না।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া - অনেক সময় আমাদের ভিটামিন সি এর অভাবে প্রস্রাবে ইনফেকশন দেখা যায়। যদি এই সমস্যাটি প্রতিরোধ করতে হয় তাহলে আমাদেরকে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। দিনে ১০০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করলে মূত্রে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বিস্তার পাবে না।
যৌ- -ন মিলনের আগে এবং পরে - আমাদের মধ্যে অনেকের যৌ- -ন মিলনের পরে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। তাই যৌ- -ন মিলনের আগে এবং পরে মূত্র ত্যাগ করা প্রস্রাবে ইনফেকশন থেকে আমাদেরকে মুক্ত করে। তাই মনে রাখতে হবে যৌ- -ন মিলনের আগে এবং পরে মূত্র ত্যাগ করতে হবে।
গরম পানি দিয়ে গোসল - প্রস্রাবে ইনফেকশন এর ফলে সৃষ্টি হওয়া ব্যথা উপশমের হালকা গরম পানি করে গোসল করতে হবে যার ফলে প্রস্রাবে ইনফেকশন অনেকটাই কম হবে। বিশেষ করে শীতের সময় হালকা গরম পানি করে গোসল করতে হবে।
প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিকার
প্রস্রাবে ইনফেকশন ছেলেদের চাইতে মেয়েদের বেশি হয়ে থাকে। আমরা যদি প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিকার সম্পর্কে জানতে পারি তাহলে খুব সহজেই এ রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারব। আজকের এই আর্টিকেলে যেহেতু আমরা প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করছি তাই এখন প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করব।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা - প্রস্রাবের যেকোন সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। বিশেষ করে প্রস্রাবে ইনফেকশন দূর করার জন্য পানি পান করার প্রয়োজনীয়তা অনেক। বেশি পানি পান করলে প্রস্রাবের সাথে ব্যাকটেরিয়া গুলো বের হয়ে যায়। তাই আমাদেরকে পানি পান করতে হবে।
শসা খেতে পারেন - শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পানি। আপনি যদি প্রতিদিন একটি করে শসা খেতে পারেন তাহলে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ হবে তাই প্রস্রাবে ইনফেকশন দূর করতে হলে প্রচুর পরিমাণে শসা খাবেন।
আনারস খেতে পারেন - প্রস্রাবে ইনফেকশন যদি বেড়ে যায় তাহলে আনারস খেতে পারেন। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে ব্রোমেলাইন নামক এক ধরনের এন্জাইম যা প্রস্রাবে ইনফেকশন রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। তাই আনারস খেতে পারেন।
বেকিং সোডা ব্যবহার - বেকিং সোডা দ্রুত প্রস্রাবে ইনফেকশন ভালো করে দিতে সাহায্য করে। এর জন্য আধা চামচ বেকিং সোডা একগ্লাস পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে হবে যার ফলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
আরো পড়ুনঃ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ
শেষ কথাঃ প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার
প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার, প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়, প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাকে বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন ধন্যবাদ