রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত - প্রিয় বন্ধুরা আমরা অনেকে রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে জানিনা। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে এবং পবিত্র মাহে রমজানে ইবাদত করার জন্য আমাদেরকে রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে হবে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলে রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
পেজ সূচিপত্রঃ রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত
- ভূমিকাঃ রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত
- রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত ও গুরুত্ব
- রমজান কুরআন তেলাওয়াতের মাস
- রমজানের কোরআন তেলাওয়াত কারীর বৈশিষ্ট্য
- মাহে রমজানের ফজিলত
- আমাদের শেষ কথাঃ রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আজকের এই আর্টিকেলে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মাস মাহে রমজান মাসের বিভিন্ন রকম ফজিলত এবং রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকাঃ রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত
আমরা জানি যে মাহে রমজান হল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। আল্লাহ তায়ালার কাছে যে কয়েকটি মাস সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তার মধ্যে সবার উপরে হলো রমজান মাস। অন্যান্য সময়ে আমল করলে যে নেকি পাওয়া যায় রমজান মাসে সে আমল করলে তার থেকে দ্বিগুণ নেকি পাওয়া যায়। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করব।
এছাড়া এই আর্টিকেলে আরো থাকবে রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব, রমজান কুরআন তেলাওয়াতের মাস, রমজানের কোরআন তেলাওয়াত কারীর বৈশিষ্ট্য, মাহে রমজানের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার
রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত ও গুরুত্ব
রমজান মাস হল কোরআন তেলাওয়াতের মাস। সর্বোচ্চ মর্যাদাবান এ কিতাব রমজান মাসে নাযিল হয়েছে। রমজান মাসের ৩০ টি রোজা পালনের পাশাপাশি রোজাদাররা কুরআন তিলাওয়াত করলে আরো বেশি নেকি পাবে। সেজন্য আমাদেরকে বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত শিখতে হবে। রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত ও গুরুত্ব আলোচনা করা হলো।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ রমজানের অধিক পরিমাণ কুরআন তিলাওয়াত করতেন - যেহেতু রমজান মাস হল কুরআন তিলাওয়াতের মাস এবং এই রমজান মাসেই পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, " রমজান মাসে প্রতিরাতে জিব্রাইল আঃ রাসুল সাঃ এর কাছে উপস্থিত হতেন এবং তারা উভয় পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করে একে অপরকে শোনাতেন।"{ বুখারীঃ ৬}
কুরআন তিলাওয়াতকারী যে নেকী পাবেন - কুরআন তিলাওয়াতকারী প্রতি অক্ষরে ১০ নেকি পাবে। যেহেতু রমজান মাসে প্রতিটি আমলের নেকি দ্বিগুণ পাওয়া যায় তাই রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াত করলে এই নেকি আরো বেশি পাওয়া যাবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, " যে ব্যাক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তেলাওয়াত করল তার বিনিময়ে সে একটি নেকি পাবে আর একটি নেকি বিনিময় হবে 10 গুণ। এ কথা বলছি না যে আলিফ লাম মিম একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর লাম একটি অক্ষর এবং মিম একটি অক্ষর।"{ তিরমিজিঃ ২৯১০}
যারা শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারে না তাদেরকে অবশ্যই শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে। কারণ শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করলে তার নেকি আরো বেশি পাওয়া যাবে। শুদ্ধ করার পাশাপাশি থেকে থেকে হলেও কুরআন তিলাওয়াত চালিয়ে যাওয়া উচিত।
আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, " কুরআন তেলাওয়াত পারদর্শী ব্যক্তিরা সম্মানিত ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। আর যারা থেকে থেকে কষ্ট করে কোরআন তেলাওয়াত করে তারা দ্বিগু সওয়াব পাবে।"{মুসলিমঃ ১৮৯৮}
গভীর রাতে কোরআন তেলাওয়াত করা - রাত জেগে নফল ইবাদত করলে অনেক বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। বিশেষ করে রমজান মাসে রাত জেগে ইবাদত করার অনেক ফজিলত রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা রাতে কোরআন তেলাওয়াতের আয়াত সংখ্যা পরিমাণ অনুযায়ী তেলাওয়াতকারীর মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেয়।
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, " যে ব্যক্তি রাতে ১০ টি আয়াত তেলাওয়াত করে সে গাফেল বলে গণ্য হবে না, আর যে ব্যাক্তি 108 তেলাওয়াত করে সে আনুগত্যশীল বলে গণ্য হবে, আর যে ব্যক্তি এক হাজার আয়াত তেলাওয়াত করে তার জন্য সওয়াবের ভান্ডার লেখা হবে।"{ আবু দাউদঃ ১৪০০}
সন্তানকে কোরআন তেলাওয়াত শিক্ষা দিতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, " যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করে এবং সে অনুযায়ী আমল করে, কেয়ামতের দিন তার পিতামাতাকে এমন মুকুট পড়ানো হবে যার আলো সূর্য চাইতে উজ্জ্বল হবে। ধরে নাও, যদি সূর্য তোমাদের ঘরে বিদ্যমান থাকে। তাহলে সে ব্যক্তি কুরআন অনুযায়ী আমল করে তার ব্যাপারটি কেমন হবে? তোমরা ধারণা করো তো!"{ আবু দাউদঃ ১৪৫৩}
আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালের রমজানের ঈদ কত তারিখ
রমজান কুরআন তেলাওয়াতের মাস
আমরা জানি যে রমজান মাস হলো মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। আল্লাহ তায়ালার কাছে রমজান মাসে ইবাদতগুলো খুবই গ্রহণযোগ্য। রমজান মাস হচ্ছে কোরআন তিলাওয়াতের মাস। রমজান মাসে যে ব্যাক্তি কোরান কে নিজের আবশ্যক মনে করবে কুরআন অনুযায়ী চলাচল করবে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অগণিত বরকত নিয়ামত আসবে।
অন্যান্য সময় কোরআন তেলাওয়াত করলে যে নেকি পাওয়া যায় যদি রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াত করা যায় তাহলে তার থেকে অনেক গুণ বেশি নেকি পাওয়া যাবে। সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই শুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত শিখতে হবে। কুরআন তেলাওয়াতের উদ্দেশ্য যদি তার কাছে উপদেশ গ্রহণ করা হয়, আল্লাহ ডাকে সাড়া দেওয়া এবং শাস্তির ব্যাপারে ভয় গ্রহণ করে।
রমজানের কোরআন তেলাওয়াত কারীর বৈশিষ্ট্য
রমজানে কুরআন তেলাওয়াতকারীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই রমজানে কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে জেনেছি। এটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। রমজানে যতটা সম্ভব আমরা কোরআন তেলাওয়াত করার চেষ্টা করব। আবু মুসা আশআরী রাঃ থেকে বর্ণিত।
যে ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করে তার উদ্দেশ্যে নবী সাঃ বলেন, সে ব্যক্তির উদাহরণ হল তার লেবুর মতো স্বাদ ভালো, সুগন্ধি ও ভালো। খেজুরের মত স্বাদ ভালো কিন্তু কোন ঘ্রাণ নেই সেটা হল মুমিনের উদাহরণ। আবার কুরআন তেলাওয়াত করাটা এমন ব্যাক্তির উদাহরণ হল মাকাল ফলের মত যার কোন সুগন্ধ নেই এবং স্বাদ তিক্ত।
মাহে রমজানের ফজিলত
রমজান মাসে রোজাদারের রোজা থাকার কারণে মুখের গন্ধ আল্লাহতালার কাছে অনেক প্রিয়। রমজান মাসে ফেরেশতারা রোজাদারদের জন্য ইফতার করা পর্যন্ত ইস্তেগফার ও গুনাহ মাফ চাইতে থাকে।রমজানের প্রতিদিন আল্লাহ তায়ালা জান্নাতকে সুসজ্জিত করে বলেন, " আমার রোজাদার বান্দারা অচিরেই তাদের পরিশ্রম ও কষ্ট দূরে সরিয়ে তোমার কাছে পৌঁছে যাবে।"
রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিতে লাইলাতুল কদর রয়েছে। যে রাত হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। এ রাতের কল্যাণ থেকে যে বঞ্চিত হয় সে সকল ধরনের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়। রমজান মাসের শেষ রাত্রে রোজাদারদের ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। রমজান মাসের নফল ইবাদত ফরজের সমতুল্য। এবং একটি ফরজ ইবাদত ৭০ টি ফরজের সমতুল্য।
রমজান মাসের ফজিলত অনেক বেশি। এর ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কোরআন শরীফ এবং হাদিস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, "হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা পরহেজগারী অর্জন করতে পারো"
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন," রোজাদারদের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ তায়ালার কাছে মেসওয়াকের চেয়ে বেশি ঘ্রাণযুক্ত।" আরো বলেন,"ইফতার পর্যন্ত রোজাদারদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন।" রোজাদারদের জন্য প্রতিদিন জান্নাতকে সজ্জিত করা হয়। এ হাদীসগুলো থেকে আমরা জানতে পারি যে রমজান মাসের গুরুত্ব এবং ফজিলত কত বেশি।
আরো পড়ুনঃ সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৩ ঢাকা
আমাদের শেষ কথাঃ রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত
প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রমজানের কোরআন তেলাওয়াত কারীর বৈশিষ্ট্য, রমজান কুরআন তেলাওয়াতের মাস, রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব, রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই উত্তর বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা উচিত যদি না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন ধন্যবাদ।