পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে - পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে ২০২৩ – প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পর্তুগাল যায়। পর্তুগাল সুন্দর একটি রাষ্ট্র হওয়ায় প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ ভ্রমন করে।
আপনি যদি পর্তুগাল যেতে চান তবে আপনাকে জানা উচিত পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে, বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে, বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার উপায় কি অনেকেই জানেন না।
আবার অনেকেই আছেন যারা কাজ করতে পর্তুগাল যেতে চান তবে পর্তুগাল ও বাংলাদেশের টাকার মান কেমন সে সম্পর্কে কোনো আইডিয়া নেই। যদি আপনি পর্তুগাল যেতে চান তবে সম্পুর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন।
আজকের আর্টিকেলে জানাবো কিভাবে সহজ উপায়ে আপনি পর্তুগাল যেতে পারেন। পর্তুগালের টাকার মান বাংলাদেশে অনেকটা বেশী। আপনি যে ভিসাতে পর্তুগাল যেতে চান না কেন পর্তুগাল যেতে খরচ কত হবে এটা হলো প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
(toc) #title=(সুচিপত্র)
পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে
শুরুতেই আশা যাক পর্তুগাল যেতে আসলে কত টাকা লাগে এ সম্পর্কে। পর্তুগাল যাওয়ার খরচ নির্ভর করে ভিসার উপর। বিভিন্ন ধরনের ভিসা হয়ে থাকে যেমনঃ
টুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, মেডিকেল ভিসা, ফ্যামিলি ভিসা। প্রতিটি ক্যাটাগেরিতে খরচ এর পরিমাণ ভিন্ন হয়ে থাকে। খরচ বেশি বা কম হওয়ার জন্য ভিসার মেয়াদ কতদিন সেটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
০২ বছর মেয়াদি ভিসার খরচের চেয়ে ০৫ বছর মেয়াদি ভিসার খরচ তুলনামূলক বেশি হবে। সাধারণত, যে কোনো ধরনের পর্তুগালের ভিসার জন্য ০৮-১৩ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। নিচে বিভিন্ন ভিসা ক্যাটাগেরি অনুযায়ী আনুমানিক খরচ এর বিবরণ দিলাম –
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ
প্রচুর পরিমাণ মানুষ বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পর্তুগাল যাতায়াত করে। কোনো এজেন্সি এর মাধ্যমে গেলে পর্তুগাল যেতে প্রায় ৮-১২ লাখ টাকার মত খরচ হবে।
পর্তুগাল টুরিস্ট ভিসা খরচ
আপনার যদি পর্তুগাল ভ্রমন এর উদ্দেশ্যে যেতে চান তবে বিভিন্ন এজেন্সি ও সেবার মান অনুযায়ী খরচ এর পরিমাণ ও ভিন্ন হবে। তবে আপনি ০৫ লাখ টাকার মধ্যে পর্তুগাল টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত হবে এটা নির্ভর করে আপনার আইএলটিএস এর রেজাল্ট ও একাডেমিক রেজাল্ট এর উপর ভিত্তি করে। আপনার যদি আইএলটিএস স্কোর ভালো থাকে তাহলে আপনি ৫/৬ লাখ টাকার মধ্যে পর্তুগালের স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।
পর্তুগাল মেডিকেল ভিসা খরচ
চিকিৎসার জন্য অনেকেই পর্তুগাল যেতে পছন্দ করেন। আপনি যদি চিকিৎসার জন্য পর্তুগাল যেতে চান তাহলে আপনার ৪-৬ লাখ টাকার মত ভিসা খরচ হবে।
পর্তুগাল যেতে কত টাকা খরচ হবে এটা কখনো নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে আপনার কাছে যদি ১০-১২ লাখ টাকা থাকে তবে পর্তুগাল যাওয়ার জন্য যে কোনো ভিসা পেয়ে যাবেন।
আরো পড়ুনঃ দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে পারবেন সরকারি ও বেসরকারি দুই মাধ্যমেই। আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পর্তুগাল যেতে চান তাহলে সরকার যখন জনবল নিবে তখন আবেদন করতে হবে। আর আপনি যদি পর্তুগাল এর কোনো কোম্পানিতে চাকরি করতে চান তাহলে উক্ত কোম্পানির এপয়েটমেন্ট লেটার আপনার কাছে থাকতে হবে।
এ ছাড়াও টুরিস্ট ভিসা বা মেডিকেল ভিসাতে যেকোনো ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা আবেদন করতে হবে। যদি স্টূডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে চান তাহলে পর্তুগালের যে কোনো কলেজ অথবা ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করতে হবে এরপর যদি আপনাকে সে কলেজ বা ইউনাভার্সিটি ভর্তি নিয়ে নেয় তবে স্টূডেন্ট ভিসার মাধ্যমে পর্তুগালে যেতে পারবেন।
পর্তুগাল ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
অনেকেই জানতে চান পর্তুগালের টাকার মান সম্পর্কে। আসলে পর্তুগালের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা হবে এটি নির্দিষ্ট নয়। পর্তুগালের কারেন্সির নাম হলো – ইউরো। আজকের দিন পর্যন্ত পর্তুগালের ১ ইউরো বাংলাদেশি টাকায় ১১৬ টাকা। তবে আগামী দিনে এটা কমতেও পারে আবার বাড়তে ও পারে।
পর্তুগাল বেতন কত
পর্তুগালের কাজের উপর নির্ভর করে বেতন প্রদান করা হয়। তবে সবসময় একই বেতন থাকবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। পর্তুগালে মাসিক বেতন সবচেয়ে কম হলেও ৭০৫ ইউরো প্রাদান করে। আপনার কাজের মান যদি উচ্চ হয় তাহলে অনেক বেশি বেতন পাবেন বাংলাদেশি টাকায়।
সাধারণ লেবার দের ও কম পক্ষে ১ লাখ টাকার উপর বেতন হয়ে থাকে। আপনি কোন কোম্পানিতে চাকরি করবেন বা লেবার হিসেবে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই কত ইউরো মাসিক বেতন দিবে জেনে নিবেন।
আরো পড়ুনঃ সরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার উপায়
পর্তুগাল টাকার মান কত
পর্তুগালের কারেন্সির নাম হলো ইউরো। পর্তুগালের ১ ইউরো তে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১১৬ টাকা হয়। তবে টাকার মান সবসময় একরকম থাকে না। টাকার মান প্রতিদিন পরিবর্তন হয়। প্রতিদিন কার টাকার মান বের করতে পারেন এই ওয়েবসাটের মাধ্যমে। পর্তুগাল টাকার মান কত সরাসরি দেখতে ক্লিক করুন এই লিংকে।
পর্তুগাল যেতে কি কি লাগে
পর্তুগাল যেতে কি কি লাগে এ সম্পর্কে বলতে হলে ভিসার ভিন্নতা অনুযায়ী ডকুমেন্টস প্রদান করতে হবে। সাধারনত পর্তুগাল যাওয়ার জন্য নিম্নোক্ত কাগজ পত্রের প্রয়োজন হবে –
১। সর্বনীম্ন ছয় মাস মেয়াদি একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে।
২। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কোম্পানি কর্তৃক এপয়েন্টমেন্ট লেটার।
৩। যে কোনো কাজের উপর ভালো দক্ষতা থাকা।
৪। স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে আইলটিএস ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
৫। ইংরেজি ভাষা বলায় দক্ষতা থাকলে সবচেয়ে ভালো হয়।
এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় অনেক ডকুমেন্টস আপনাকে প্রদান করতে হতে পারে।
পর্তুগাল যাওয়ার সহজ উপায় - বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম
পর্তুগাল যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো কোনো একটা কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করে নিজে নিজে ভিসা আবেদন করা। যদি আপনি পর্তুগালের কোনো কোম্পানি থেকে এপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে যান তাহলে খব কম খরচে পর্তুগালে যেতে পারবেন। যদি আপনার কাছে ভিসা খরচ না থাকে ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন নিতে পারবেন।
যারা শিক্ষার্থী আছেন তারা সবার আগে পর্তুগালের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আইএলটস স্কোর করুন। রিকোয়ারমেন্ট পূরন হয়ে গেলে কলেজে আবেদন করতে পারবেন এর পর ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে সহজে পর্তুগালের ভিসা পাওয়ার জন্য স্কলারশীপ এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
পর্তুগালে কোন কাজের চাহিদা বেশি
কাজের জন্য যারা পর্তুগাল যাবেন তাদের জানা দরকার পর্তুগালে আসলে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশী। যে কাজের চাহিদা বেশি থাকে সে কাজ টি আপনার জানা থাকলে খুব সহজে কাজের সন্ধান পেয়ে যাবেন। সাধারণত নিম্নোক্ত কাজ গুলোর চাহিদা পর্তুগালে অনেক বেশী –
- সাধারন লেবার কাজ
- কনস্ট্রাকশন লেবার
- ক্লিনার
- ইলেক্ট্রিসিয়ান
- শেফ
- ওয়েটার
- গাড়ি ড্রাইভার
- প্রোগ্রামার
- সফটয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
দিনকাল ভেদে কাজের চাপ বৃদ্ধি পায়। আজকে যে কাজের চাহিদা বেশি সেটা কিছুদিন পরে না থাকতে পারে। তবে সাধারন কাজ গুলো অনেক সহজেই পেয়ে যাবেন। আর আপনার যদি ইংরেজি ভাষায় ভালো পরিমান দক্ষতা থাকে তাহলে অনেক ধরনের কাজের সুযোগ পেয়ে যাবেন।
শেষ কথা - পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে
আশা করি পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে এ সম্পর্কে ভালো একটি ধারণা পেয়ছেন। যদি আপনি কাজের জন্য পর্তুগাল যেতে চান তবে অবশ্যই যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে পর্তুগালের চেয়ে অনেক উন্নত দেশ রয়েছে তবে ভ্রমনের জন্য অসাধারন একটি দেশ হলো পর্তুগাল। পর্তুগাল যাওয়ার জন্য যদি আপনার আরো কোনো জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে আমাদের মন্তব্য করে জানাতে পারেন।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।