এই মুহূর্তেও যারা কম্পিউটার এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলো সম্পর্কে কম জানেন কিংবা এই বিষয়ে নতুন, তারা এখনো পর্যন্ত হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার সম্পর্কে জানেনা। আর এই প্রশ্ন থেকেই, অনেকেই জানতে চান, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য কি?
(toc) #title=(সুচিপত্র)
হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে প্রধান পার্থক্য বিবেচনা করলে; হার্ডওয়্যার হলো কম্পিউটারের একটি ফিজিক্যাল কম্পনেন্ট, যা একটি কম্পিউটারে সফটওয়্যারের কাজ পরিচালনার জন্য কাজ করে। আর সফটওয়্যার হল এমন সামগ্রী, যা কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে কাজের উপযোগী করে।
হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে, যা আপনি আজকের এই আর্টিকেলে সম্পূর্ণ জানতে পারবেন। সেই সাথে আপনি হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার নিয়ে আরো অনেক ডিটেলস জানতে পারবেন। যেমন, ইনপুট হার্ডওয়্যার ডিভাইস কি, আউটপুট হার্ডওয়্যার ডিভাইস কি, সেকেন্ডারি হার্ডওয়্যার্ড ডিভাইস কি ইত্যাদি।
তাই আজকের এই আর্টিকেলটি আমি আপনাকে মনোযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ করবো, যাতে করে আপনি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন।
কম্পিউটারের কম্পোনেন্ট গুলো সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এদের একটি হলো, হার্ডওয়্যার এবং অন্যটি হলো সফটওয়্যার। হার্ডওয়্যার বলতে সাধারণত ফিজিক্যাল উপাদান গুলোকে বোঝায়। এসবের মধ্যে যেমন: সিপিইউ, মাদারবোর্ড মাউস কিবোর্ড প্রিন্টার মনিটর এবং আরো অন্যান্য হার্ডওয়্যার সামগ্রী।
অন্যদিকে সফটওয়্যার হলো মনে একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করার জন্য একটি টুল, যা হার্ডওয়্যারের সমন্বয়ে কাজ করে এবং এটি হার্ডওয়্যারে লোড হয়। একটি সফটওয়্যার ব্যবহারকারীদের জন্য হার্ডওয়্যারের ইন্টারফেস হিসেবে কাজ করে। কেননা, কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সামগ্রী গুলোর পারফরম্যান্স এবং আউটপুট বিভিন্ন সফটওয়্যার এর মাধ্যমেই ব্যবহারকারী কোন দেখতে পান।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, একটি হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার উভয়ই কম্পিউটারের জন্য দরকারি আউটপুট তৈরি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তবে, এবার বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য কি এবং একটি কম্পিউটার পরিচালনার সময় এগুলো কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হয়।
হার্ডওয়্যার কি?
হার্ডওয়্যার বলতে সাধারণত কম্পিউটারের ফিজিক্যাল কম্পনেন্ট গুলোকে বোঝায়, যেসব কম্পিউটার বা উপাদান গুলো আমরা দেখতে পাই কিংবা হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায়। আর এসব ডিভাইস গুলো বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। এসব হার্ডওয়্যারের মধ্যে যেমন: ইনপুট ডিভাইস (কীবোর্ড, মাউস) আউটপুট ডিভাইস (স্পিকার, মনিটর) সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইস এবং ইন্টারনাল কম্পনেন্ট ইত্যাদি। একটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সামগ্রী গুলো মূলত এই কয়ভাগে বিভক্ত।
আরো পড়ুনঃ কম্পিউটারের জনক কে
হার্ডওয়্যার সামগ্রীর মধ্যে ইনপুট ডিভাইস কি?
ইনপুট ডিভাইস হলো কম্পিউটারের সেসমস্ত কম্পনেন্ট, যা কম্পিউটারের ডেটা পাঠায়। আমরা যদি কম্পিউটারের কিছু ইনপুট ডিভাইসের উদাহরণ দেই, তাহলে কিবোর্ড একটি ইনপুট ডিভাইস, যা ব্যবহারকারীকে কম্পিউটারে ডাটা ইনপুট করতে দেয়। কিবোর্ডের মত মাউস ও হল কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সামগ্রী গুলোর মধ্যে একটি ইনপুট ডিভাইস, যা দিয়ে কম্পিউটারে বিভিন্ন ইনপুট দিয়ে কাজ করা হয়।
ইনপুট ডিভাইস হিসেবে কিবোর্ড ব্যবহার না করলে, কম্পিউটারে কোন লেখা প্রবেশ করানো যাবে না এবং একই সাথে মাউস ব্যবহার না করলে পর্দার কোন ফাংশন অ্যাক্সেস করা সম্ভব না। একইভাবে, কম্পিউটারের জন্য জয়স্টিক, লাইট পেন, স্ক্যানার, মাইক্রোফোন এবং বারকোড রিডার হলো ইনপুট ডিভাইস গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম উদাহরণ। আমি এখানে যেসমস্ত ইনপুট ডিভাইস গুলোর কথা বললাম, এগুলোর সমস্তই হার্ডওয়্যার সামগ্রী।
কম্পিউটারে কাজ করার জন্য এগুলোর সবই ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট, যা হাত দিয়ে ধরা যায় এবং যার বাস্তব অস্তিত্ব রয়েছে। মোট কথা, সহজ ভাষায় বলতে গেলে, কম্পিউটারে ব্যবহৃত যে সমস্ত জিনিসগুলোর ফিজিক্যাল অস্তিত্ব রয়েছে বা যেগুলো দেখা যায় এবং হাত দিয়ে ধরা যায়, এগুলোর সমস্তই হার্ডওয়্যার।
হার্ডওয়্যার এর মধ্যে আউটপুট ডিভাইস কি?
আউটপুট ডিভাইস হলো এমন Peripheral Device, যা কম্পিউটার থেকে ডাটা গ্রহণ করে। এ ধরনের ডিভাইস গুলো কম্পিউটার থেকে ডাটা গ্রহণ করে তা অন্য কোন মাধ্যমে পাঠাতে পারে অথবা সেটি আউটপুট হিসেবে প্রদর্শন করতে পারে।
আমরা যদি হার্ডওয়্যারের মধ্যে আউটপুট ডিভাইস গুলোর একটি উদাহরণ দেই, তাহলে কম্পিউটারের মনিটর হল একটি ভিজুয়াল ডিসপ্লে, যা কম্পিউটার থেকে ডাটা গ্রহণ করে তা প্রদর্শন করে। সুতরাং, কম্পিউটার মনিটর হলো একটি আউটপুট হার্ডওয়্যার ডিভাইস।
একইভাবে, প্রিন্টার ও হল আউটপুট ডিভাইস গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উদাহরণ। এসব ডিভাইস গুলো কম্পিউটার থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করে তা আউটপুট হিসেবে প্রদর্শন করে বা সেগুলো থেকে ডেটা বের করে।
হার্ডওয়্যারের মধ্যে সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইস কি?
হার্ডওয়্যার সামগ্রী গুলোর মধ্যে সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইস হলো এমন একটি ডিভাইস, যা স্থায়ীভাবে ডেটা সংরক্ষণ করে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইসকে আপনি অন্য কথায় একটি স্থায়ী মেমরি ও বলতে পারেন। কম্পিউটারের পাওয়ার বন্ধ করলেও, সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইস থেকে ডেটা মুছে যাবে না। হার্ড ডিস্ক, এসএসডি, সিডি এবং ডিভিডি হল সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইসের কিছু উদাহরণ।
আরো পড়ুনঃ কম্পিউটার হঠাৎ বন্ধ হওয়ার কারণ
হার্ডওয়্যার এর ইন্টারনাল কম্পনেন্ট কি?
ইন্টার্নাল কম্পনেন্টগুলো হল একটি কম্পিউটারের প্রধান ফাংশনালিটিস গুলোর মধ্যে অন্যতম এবং এই কম্পনেন্ট গুলোই একটি কম্পিউটারের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
একটি কম্পিউটারের ইন্টারনাল হার্ডওয়্যার উপাদান গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো CPU, Ram, Rom, HDD এবং Motherboard ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে থেকে আবার সিপিইউ হল কম্পিউটারের প্রধান উপাদান, যেটি পুরো কম্পিউটারকে পরিচালিত করে।
আবার ইন্টারনাল হার্ডওয়্যার কম্পনেন্ট গুলোর মধ্যে Ram বা Random Access Memory সিপিইউ এর কাজ সম্পাদনের জন্য ডেটা সংরক্ষণ করে রাখে। সাময়িকভাবে ডেটা ধরে রাখার জন্য Ram কাজ করে থাকে।
Ram হলো ইন্টার্নাল হার্ডওয়্যার কমপ্লেন গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। যাইহোক, একটি কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ সকল উপাদান গুলোকেই ইন্টার্নাল হার্ডওয়্যার কম্পনেন্ট বলা যায়।
সফটওয়্যার কি?
সফটওয়্যার হল কম্পিউটারে হার্ডওয়্যার এর সমন্বয়ে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা একটি প্রোগ্রামের সেট। সফটওয়্যার হল হার্ডওয়্যার এর বিপরীত এবং এটি হার্ডওয়্যার এর সমন্বয়ে কাজ করে। একটি সফটওয়্যার সাধারণত প্রোগ্রামিং কোড ব্যবহার করে তৈরি করা হয়,
এবং এটি পরবর্তীতে হার্ডওয়্যার এর সাহায্যেই কম্পিউটারে রান হয়। কম্পিউটারের সফটওয়্যার গুলো সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত। এগুলো হলো, সিস্টেম সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। চলুন তবে, এবার কম্পিউটারের সিস্টেম সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সিস্টেম সফটওয়্যার কি?
সিস্টেম সফটওয়্যার হল এমন ধরনের সফটওয়্যার, যা একটি কম্পিউটারকে পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণ করার অনুমতি দেয়। একটি কম্পিউটারে হার্ডওয়্যার এবং অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার চালানোর জন্য এ ধরনের সফটওয়্যার অবশ্যই প্রয়োজনীয়। আর এসব সফটওয়্যার না থাকলে, সেই কম্পিউটারটির রান হবে না এবং সেখানে কোন অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ও ইনস্টল করা যাবে না।
সাধারণত কম্পিউটার ম্যানুফ্যাকচাররা সিস্টেম সফটওয়্যার তৈরি করে থাকেন। আর সিস্টেম সফটওয়্যার তৈরি করার জন্য সাধারণত C, C++ এবং Assembly Language ব্যবহার করা হয়।
কিছু সিস্টেম সফটওয়্যার এর উদাহরণ হল, Compilers, Assemblers, Interpreters এবং ডিভাইস ড্রাইভার। এ ধরনের সফটওয়্যার গুলো অপারেটিং সিস্টেম টাস্ক ম্যানেজমেন্ট, মেমোরি ম্যানেজমেন্ট, ফাইল হ্যান্ডেলিং এবং হার্ডওয়্যার ম্যানেজমেন্ট এর মত আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।
আরো পড়ুনঃ সেকেন্ড হ্যান্ড ম্যাকবুক কেনার আগে যে জিনিস গুলো দেখে নেয়া উচিত
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার কি?
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার গুলো সাধারণত ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে ডিজাইন করা হয়। অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার গুলো বিভিন্ন কাজের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। যেমন, কোন ব্যক্তি যদি কম্পিউটারে ডেটা লিস্ট আকারে সংরক্ষণ করতে চান, তাহলে তিনি অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার হিসেবে MS Office বা Exel ব্যবহার করতে পারেন।
এ ধরনের সফটওয়্যার গুলো যে কেউ ডিজাইন করতে পারে এবং সেগুলো যে কেউ তার কম্পিউটারে ইন্সটল করার মাধ্যমে কাজ করতে পারে। একটি অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেমের সমন্বয়ে কাজ করে থাকে।
হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য
হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সবসময় একে অপরের উপর নির্ভরশীল। কেননা, দরকারি কোন আউটপুট তৈরি করতে কিংবা কোন ইনপুট লিখতে গেলে, অবশ্যই হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর সমন্বয়েই কাজ করতে হবে।
এখানে আমি উপরে এজন্যই বিস্তারিত আলোচনা করলাম যে, যাতে করে আপনি হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। আপনি যখন হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন বা একটু ধারণা অর্জন করতে পারবেন, তখন আপনি খুব সহজেই হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারবেন।
উদাহরণস্বরূপ, আমরা যদি একটি কিবোর্ডের কথা চিন্তা করি, তাহলে কম্পিউটারের জন্য এটি একটি ইনপুট হার্ডওয়্যার ডিভাইস। এখন, যদি একটি কম্পিউটারে ইনপুট হার্ডওয়্যার ডিভাইস হিসেবে কিবোর্ড লাগানো হয়, তাহলে সেটি দিয়ে কি কোন ধরনের কাজ করা যাবে?
এর উত্তর হবে, না। কেননা, সেই কিবোর্ডের কোন বাটনে প্রেস করলে কম্পিউটারে কি উঠবে, সেটি অবশ্যই কম্পিউটারকে বলে দিতে হবে। আর এই কাজটি করবে সফটওয়্যার। একটি কম্পিউটার কিভাবে পরিচালিত হবে বা সেটির ইউজার ইন্টারফেস কেমন হবে, সেটি নির্ভর করে তার অপারেটিং সিস্টেম, সিস্টেম সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার এর উপর।
একটি হার্ডওয়্যারকে মূলত এমনভাবে ডিজাইন করা হয় এবং সেটিকে এমন ভাবেই তৈরি করা হয়, যাতে করে সেটি সফটওয়্যারের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে পারে। আর একটি সফটওয়্যারকে মূলত প্রোগ্রামিং কোড ব্যবহার করে তৈরি করা হয়, যা একটি কম্পিউটারে ইন্সটল করলে হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে কাজ করে। একটি কম্পিউটারে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে মূল পার্থক্য এখানেই।
মোটকথা, হার্ডওয়্যার বলতে একটি কম্পিউটার বা ইলেকট্রিক সিস্টেমের ফিজিক্যাল এলিমেন্ট বা উপাদান গুলোকে বোঝায়, যা মূলত হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায়। অন্যদিকে, সফটওয়্যার হল এমন সামগ্রী, যা কম্পিউটার কিভাবে কাজ করবে, সেটি বলে দেয়। আর এই বিষয়টিকেই আপনি হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য বলতে পারেন।
হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে সবসময় আলাদা। চলুন তবে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্যের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য দেখে নেয়া যাক, যেগুলোর কারণে এই দুইটি আলাদা।
ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য
কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের মূলত চারটি ভাগ রয়েছে। এগুলো হলো, ইনপুট ডিভাইস, আউটপুট ডিভাইস, সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইস এবং ইন্টার্নাল ডিভাইস। অন্যদিকে, সফটওয়্যার প্রধানত সিস্টেম সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার এই দুই ক্যাটাগরিতে বিভক্ত।
স্পর্শকাতরতার দিক থেকে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য
আপনি যদি এই মুহূর্তে হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার এর মধ্যে মূল পার্থক্য নির্ণয় করতে অসুবিধায় পড়েন, তাহলে আপনার জন্য এটি জানাই যথেষ্ট হবে যে, হার্ডওয়্যার সামগ্রীগুলো হাত দিয়ে ধরা যায় এবং এগুলোর একটি বাস্তবিক অস্তিত্ব রয়েছে।
কিন্তু অন্যদিকে, সফটওয়্যার কখনোই হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায় না। শুধুমাত্র কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সামগ্রী ব্যবহার করে সফটওয়্যার এর কাজের পদ্ধতি দেখা যায়। এটিকেই আপনি হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে মূল পার্থক্য হিসেবে বলতে পারেন।
নির্মাণ পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য
ইলেকট্রিক ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে হার্ডওয়্যার সামগ্রী তৈরি করা হয়। একটি হার্ডওয়্যার সামগ্রী তৈরি করতে অনেক পদার্থের প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে, একটি সফটওয়্যার তৈরি করতে প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করা হয়।
একটি সফটওয়্যার তৈরি করতে শুধুমাত্র প্রোগ্রামিং ভাষায় লিখে দিতে হয়, সেটি কিভাবে কাজ করবে। নির্মাণ পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে এটিই হলো হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য।
রিপ্লেসমেন্ট এর উপর ভিত্তি করে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মধ্যে পার্থক্য
যখন একটি হার্ডওয়্যার সামগ্রিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন সেটি মেরামত করতে হয় অথবা তার পরিবর্তে নতুন একটি হার্ডওয়্যার প্রতিস্থাপন করতে হয়। কিন্তু, একটি সফটওয়্যার ক্ষতিগ্রস্ত হলে, সেটির ব্যাকআপ কপি থেকে তা সংগ্রহ করে, তা পুনরায় ইন্সটল করা যেতে পারে।
আর সফটওয়্যার এর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করার জন্য, পুনরায় প্রোগ্রামারের প্রয়োজন হয় এবং যিনি সেটির বাগ ফিক্স করেন। রিপ্লেসমেন্ট এর দিক থেকে, এটি হলো হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য।
হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য নিয়ে শেষ কথা
কম্পিউটারের সঠিক কার্যকারিতার জন্য অবশ্যই হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উভয়টির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একটি সফটওয়্যার কখনোই হার্ডওয়্যার ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না, আবার সফটওয়্যার ছাড়া হার্ডওয়্যার ও ব্যবহার করা যাবে না।
হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে এক কথায় বলতে গেলে, হার্ডওয়্যার একটি কম্পিউটারের ফিজিক্যাল উপাদান গুলোকে বোঝায় এবং সফটওয়্যার সেই নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করার জন্য তৈরি করা প্রোগ্রামের সেটকে বোঝায়।
যেখানে হার্ডওয়্যার তৈরি করা হয় বিভিন্ন পদার্থ দিয়ে, সেখানে সফটওয়্যার তৈরি করা হয় কিছু প্রোগ্রামিং কোডের মাধ্যমে। এগুলোই হল হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।