জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো? গর্ভধারণ করতে না চাইলে অথবা ভুলবশত যদি শারীরিক সম্পর্ক ঘটে যায় তাহলে মূলত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করা আবশ্য হয়ে পড়ে। এছাড়াও সদ্য বিবাহিত দম্পতি থেকে শুরু করে যে কোন স্বামী স্ত্রী জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য পিল খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
একটা সময় ছিল যখন খাবার পিল হিসেবে ফেমিকন সবচেয়ে সুপরিচিত ছিল। কিন্তু কথা হচ্ছে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল হিসেবে আর কি কি পিল রয়েছে এবং ফেমিকন ছাড়া জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো? আজকের এই নিবন্ধনটিতে মূলত আমরা জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো তা নিয়েই আলোচনা করব।
তো পাঠক বন্ধুরা আপনি যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ খাবার পিল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে পড়তে থাকুন আমাদের আজকের আর্টিকেলটি। কেননা আজ আমরা এমন কিছু জন্ম বিরতিকরণ পিল এর নাম সাজেস্ট করব যেগুলো কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পন্ন পিল হিসেবে সুখ্যাত।
(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)
জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো
সাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারে মূলত একটা সময় ফেমিকন, সুখী, মিনিকন এই টাইপের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল অধিক বেশি ব্যবহৃত হতো। কিন্তু বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকার কারণে এখন মানুষ অনেক বেশি জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো এগুলোর বাইরে।
কোন পিল গুলো সেবন করলে খুব একটা ইফেক্ট পরবেনা। সত্যি বলতে বর্তমানে কয়েকটি অত্যাধুনিক জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল বের হয়েছে যেগুলো আগের থেকে তুলনামূলক দামে বেশি এবং কার্যক্ষমতার দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ
- অভোস্টাট গোল্ড - Ovostat Gold
- নভেলন লাইট - Novelon Lite
- মারভেলন - Marvelon
তাই আপনি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল হিসেবে এগুলো সেবন করতে পারেন নিঃসন্দেহে, যেগুলোর খুব একটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
অন্য পোষ্ট পড়ুনঃ ২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম | পিল খাবার নিয়ম, সুবিধা-অসুবিধা
কোন ইমারজেন্সি পিল সবচেয়ে ভালো?
দেখুন ইতিমধ্যে আমরা তিনটি আধুনিক জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল এর নাম সাজেস্ট করেছি। যেগুলো বর্তমানে অধিক বেশি জনপ্রিয় এবং কার্যক্ষমতার দিক থেকে অনেকে গিয়ে সেই সাথে খুব একটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বলে প্রমাণিত। তবে আমাদের উল্লেখিত কোন ইমার্জেন্সি পিল সবচেয়ে ভালো এটা যদি জানতে চান তাহলে আপনাকে এদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।
কেননা একটি ওষুধ কোন কোম্পানির কোন ব্র্যান্ড তৈরি করছে এটার উপর নির্ভর করেও ঔষধটির মান যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়। তাই এ পর্যায়ে আমরা আমাদের উল্লেখিত তিনটি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেব আপনাদেরকে।
আশা করছি আপনি নিজেই আপনার জন্য কার্যকরী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিলটি বাছাই করতে পারবেন আর হ্যাঁ আমরা আরেকটি বিষয় সাজেস্ট করব সেটা হচ্ছে যে কোন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবার। কেননা দীর্ঘদিন যাবত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করার ফলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতেই পারে।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চা না হওয়ার ট্যাবলেট - বাচ্চা না হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম কি
১. অভোস্টাট গোল্ড - জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল
অভোস্টাট গোল্ড হল একটি কম্বাইন্ড গর্ভনিরোধক পিল। যেটা নভিস্তা ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড এর তৈরিকৃত এক ঔষধ। এই ঔষধটি মূলত নিম্নলিখিত রোগের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যথাঃ
- জন্ম নিয়ন্ত্রণ
- মাসিক র ক্তপাত
- Menopausal উপসর্গের পরিচালনা
- মহিলা হাইপোগোনাডিজম
- Gonadotropin লুকাইয়া
- ডিম্বাশয় এবং ডিম্বস্ফোটন মধ্যে follicles পূর্ণতা সহ প্রভৃতি।
তবে আপনি যদি এটা জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য খেতে চান তাহলে মাসিকের প্রথম দিন থেকে শুরু করে পরপর ২২ দিন খেতে হবে। আর যতদিন না পর্যন্ত আপনি কনসিভ করতে চান ঠিক ততদিন পর্যন্ত এই পিল সেবন চালিয়ে যেতে হবে।
মূলত এটি সেবনের জন্য আপনার শরীরে কোন ক্ষতিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না। তবে সাধারণ কিছু সমস্যা হতে পারে যেমনঃ
- বমি
- মাথা ভার
- মাথা ঘোরা
- মাথা ব্যাথা
- ফোটা ফোটা র ক্ত আকারে মাসিক।
২. নভেলন লাইট - জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল
নভেলন লাইট হচ্ছে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন অ্যাস্ট্রোজেনিক চতুর্থ প্রজন্মের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল। আর এটা মূলত আপনি শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টা অতিক্রম না হওয়ার ব্যবধানে গ্রহণ করলে সঠিক কার্যকারিতা ভোগ করতে পারবেন।
কেননা নভেলন লাইট ইমার্জেন্সি পিল ড্রেসপিরেনন হরমোন পরিবর্তনের মাধ্যমে গর্ভবতী হওয়ার প্রতিক্রিয়াকে বাধা প্রদান করে। এটা মূলত একটানা ২৪ দিন পর্যন্ত সেবন করতে হয়। পরবর্তীতে ২৫ তম দিন থেকে ০৪ দিন এই ওষুধ সেবন বন্ধ রেখে পরবর্তীতে আবারও শুরু করতে হয়। এক কথায় আপনি যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে এটি আপনাকে সারা মাস খেতে হবে। ২৪ দিন খাবার পরবর্তীতে আপনি ৪ থেকে ৫ দিন গ্যাপ দিয়ে পুনরায় খাওয়া শুরু করবেন।
আর হ্যাঁ এই ট্যাবলেটটির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যদি জানতে চান তাহলে বলব, আপনার মাঝে মূলত কিছু কিছু সমস্যা হঠাৎ দেখা দিতে পারে নিয়মিত নভেলন পিল সেবন করার ফলে। যেমনঃ
- মাসিক প্রবাহ পরিবর্তন
- বমি
- পেট ব্যথা
- হালকা মাথা ঘোরা
- মুখে ব্রনের আবির্ভাব
- মানসিক অস্থিরতা সহ প্রভৃতি।
তবে এই সমস্যাগুলো মূলত শুরুর দিকে হয়ে থাকে। তাই আপনি যখন নিয়মিত এই পিন সেবন করবেন পরবর্তীতে আপনার মাঝে এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাবে না বলে আশা করা যায়।
আরো পড়ুনঃ norix 1 pill details - norix 1 এর কাজ কি
৩. মারভেলন - জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল
খুবই পরিচিত এবং কার্যকরী আরেকটি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল মারভেলন। যেটা সাধারণত ঋতুস্রাবের প্রথম দিন থেকে পঞ্চম দিনের মধ্যে সেবন করা উচিত। পরবর্তীতে প্রতিদিন রাত্রে খাবার খাওয়ার পর নির্দিষ্ট নিয়মে পিল সেবন করা জরুরী। মূলত পরপর প্রতিদিন ২১ দিনে ২১ টি পিল সেবন করে পরবর্তীতে এক সপ্তাহ বন্ধ রেখে পুনরায় নতুন প্যাকেট শুরু করতে হয় জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য।
তাই আপনি যদি মারভেলন খাওয়া শুরু করেন তাহলে অবশ্যই সঠিক নিয়ম মেনে খাবার চেষ্টা করবেন। আর হ্যাঁ এই ট্যাবলেটের প্যাকেটে মূলত ২১ টি ট্যাবলেট থেকে থাকে সেই সাথে সেবন বিধির সকল ইনস্ট্রাকশন দেওয়া থাকে প্যাকেটের গায়ে বা প্রেসক্রিপশনে।
তাই ওষুধ সেবন করার পূর্বে অবশ্যই সকল প্রকার নিয়মাবলী সঠিকভাবে অনুসরণ করবেন। আর যদি দীর্ঘদিন যাবত এটা সেবন করতে চান তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটাও জরুরী। এবার আসুন জেনে নেই জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিলের নাম ও দাম কেমন সে সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি
জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিলের নাম ও দাম
জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল হিসেবে আমরা আমাদের আর্টিকেলে তিনটি ঔষধ সাজেস্ট করেছি। আর তাই এ পর্যায়ে আমরা ওই তিনটি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল এর দাম উল্লেখ করব। যাতে করে মার্কেটে অথবা ফার্মেসিতে গিয়ে আপনার ঠোকতে না হয়। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল এর নাম ও দামঃ
- মারভেলন ট্যাবলেট, ২১ টি ট্যাবলেটের প্যাকেটের দাম ১০৫ টাকা।
- নভেলন লাইট ট্যাবলেট, ২৮ টি ট্যাবলেটের প্যাকেটের দাম ৪২৫ টাকা।
- অভোস্টাট গোল্ড পিল, বাইশটি ট্যাবলেটের প্যাকেটের দাম ৭৭ টাকা।
এবার আসুন, আলোচনার শেষ পর্যায়ে জেনে নেওয়া যাক- জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল সেবনের ক্ষেত্রে কি কি সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরী।
আমরা অনেকেই ঔষধ সেবন করাকে খুব একটা গুরুত্ব সহকারে এখনো পর্যন্ত নেই না। এটা যদি আপনি বুঝতে চান তাহলে গ্রাম অঞ্চলের মানুষের দিকে লক্ষ্য রাখতে পারেন অথবা আপনার পরিবারের মানুষদের ওপরও নজর দিতে পারেন।
কেননা আমাদের আশেপাশে এমন অসংখ্য মানুষ রয়েছে যারা নাপা এক্সট্রা থেকে শুরু করে গ্যাসের ব্যথার বিভিন্ন ঔষধ কোন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করে। কিন্তু তারা এটা বুঝতেও পারে না এবং কখনো চিন্তাও করে না যে এই ঔষধ তাদের জন্য কতটা ভয়ানক বিপদ ডেকে আনতে পারে।
যেহেতু আপনি জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য জন্মনিরোধক পিল সেবন করবেন তবুও অবশ্যই এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী বৈকি। আর তাই নিজের পয়েন্টগুলো একবার হলেও মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আরো পড়ুনঃ কোন পিল সবচেয়ে ভালো? ইমারজেন্সি পিল কোনটা ভালো
✓ জরুরী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল ব্যর্থ হলে গর্ভের বাইরে গর্ভাবস্থা সামান্য ঝুঁকি থাকে এবং এই ধরনের গর্ব অবস্থা বিপদজনক হতে পারে। আর তাই তীব্র পেটে ব্যথা অনুভব হয় যেটা জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই যদি কখনো এমন সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে দেরি না করে রক্তক্ষরণ বা পেটে ব্যথা অনুভবের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিন।
✓ যদি কখনো মনে হয় যে আপনি গর্ভবতী হতে পারেন তাহলে জরুরী জন্মনিরোধ হোক পিল গ্রহণের তিন থেকে চার সপ্তাহ পরে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় পরীক্ষা করে নিন। কেননা কনসিভ করার পরবর্তীতে যদি আপনি পিল সেগুন করেন সেটা আপনার স্বাস্থ্যের এবং ভ্রুনের উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
✓ নিয়মিত পদ্ধতি হিসেবে কখনোই জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করা যায় না বা এটা চিকিৎসকেরাও পরামর্শ দিয়ে থাকেন না। আর তাই দীর্ঘমেয়াদি গর্ভধারণ রুখতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে অন্য মাধ্যম বা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
✓ যদি কারো দেহের ওজন ৭০ প্লাস হয়ে থাকে তাহলে ওই সকল মহিলাদের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কার্যকর নয়। আর তাই এই পরিস্থিতিতে তাদের কভার আইইউডি পদ্ধতি গ্রহণ করাই বাঞ্জনীয়।
অন্য পোষ্ট পড়ুনঃ বাচ্চাদের দুধ কোনটা ভালো
পরিশেষে
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজকের আলোচনার এখানে ইতি টানছি। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো আশা করি আপনি সেই প্রশ্নের উত্তরটি পেয়েছেন। আর হ্যাঁ, আপনি যদি চান আপনার আশেপাশের বা আপনার পরিচিত কেউ এ সম্পর্কে অবগত হোক এবং সঠিক সময় সঠিক জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করুক তাহলে পোস্টটি শেয়ার করুন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।