কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় : মানুষ ভেদে মানুষের ভালোলাগা এবং খারাপ লাগা ভিন্ন হয়ে থাকে। আর তাই মানসিক শান্তির জন্য কিছু মানুষের প্রয়োজন পড়ে ভালো কোন জায়গার, কিছু মানুষের প্রয়োজন পড়ে ভাল কোনো বন্ধুর অথবা কিছু মানুষের প্রয়োজন পড়ে পছন্দনীয় কোন কাজের। আর প্রকৃত সত্যি কথা হচ্ছে ভালো থাকতে সকলেই যায় মানসিক শান্তি নিয়ে বাঁচতে সবাই পছন্দ করে।
কিন্তু আজকের এই দ্রুতগতির এবং ব্যস্ত বিশ্বে মানসিক শান্তি খুঁজে পাওয়া যেন চ্যালেঞ্জিং একটা বিষয় হয়ে উঠছে। কিন্তু তবুও মানসিক সুস্থ থাকে অগ্রাধিকার দেওয়া আমাদের প্রত্যেকের জন্যই গুরুতর কাজ বা দায়িত্ব বলা চলে।
কেননা একজন মানুষ মূলত মানসিকভাবে সুস্থ ও শান্তিতে থাকলে তবে সে জীবনের যেকোনো সিদ্ধান্ত সঠিক ভাবে নিতে পারবে এবং যেকোনো কাজে মনোযোগী হতে পারবে পাশাপাশি খুঁজে পাবে নিজ নিজ জীবনের মহত্ব। তাহলে আসুন আজকের আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়!
কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়
আজকের এই নিবন্ধনটিতে আমরা আপনাদের ছোট ছোট কিছু বিষয় সম্পর্কে জানাবো। আপনি মূলত কোন কোন উপায়ে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় তার সবটাই উপলব্ধি করতে পারবেন আজকের এই আলোচনা থেকে। তবে হ্যাঁ আপনি যদি শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আপনাদের কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর পেতে চান তাহলে কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় সেটা নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন।
কেননা একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বীর মানুষ স্বাভাবিকভাবেই মানসিক শান্তি পেয়ে থাকে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট। যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভালোবাসে এবং সর্বদা তারই পথে জীবন অতিবাহিত করার প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয় তারা সর্বদা মানসিক শান্তিতে বাস করতে পারেন সেই সাথে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে গেলে মানসিক শান্তি অনুভব করেন। সেটা হতে পারেঃ ১। পবিত্র মক্কা বা মদিনা ভুমি ২। আল্লাহ তায়ালার ঘর মসজিদ ৩। মাদ্রাসা বা ঈদগাহ মাঠ অথবা বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান সমূহ।
যদি আপনার প্রশ্ন হয় থাকে কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় তবে আপনি উক্ত জায়গা গুলোতে যেতে পারেন। ইনশাআল্লাহ আপনি মানসিক শান্তি পাবেন। তবে একজন প্রকৃত মুসলিম ও ঈমানদার ব্যক্তির সবচেয়ে মানসিক শান্তির স্থান হচ্ছে নামাজের সেজদাহ। কেননা নামাজের মাধ্যমে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই মানসিক শান্তি খুঁজে পেয়ে থাকেন। কারণ টেনশন নামাজে দাঁড়ালে দূর হয়ে যায়। সেই সাথে দুনিয়ার সকল কিছু থেকে বের করে নিয়ে আসা সম্ভব হয়। যে কারণে মানসিক শান্তি মেলে সকলেরই।
আর যারা হিন্দু ধর্মাবলম্বী বা অন্যান্য ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। তারা মূলত তাদের ধর্মীয় তীর্থস্থান সমূহ ভ্রমণ করার মাধ্যমে মানসিক শান্তি পেয়ে থাকেন। এছাড়াও পছন্দের যেকোনো জায়গায় ঘোরাফেরা করলেও মন ফুরফুরে হয় এবং মানসিক শান্তি বিরাজ করে। এবার আসুন আলোচনার পরবর্তী পর্যায়ে কোন কোন উপায়ে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় সে সম্পর্কে কমন কিছু বিষয় জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ আতরের নামের তালিকা - আতরের নাম ও দাম
কোন কোন উপায়ে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়?
মানসিক শান্তিতে থাকতে হলে প্রথমত বুঝতে হবে মানসিক অশান্তির কারণ কি। কেননা কিছু মানুষ রয়েছে যারা এটাই জানে না যে তারা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। অনেকের ধারণা মানসিক সমস্যা মানে পাগল হয়ে যাওয়া মানসিক অশান্তি বিরাজ করা মানে উগ্র আচরণ করা। তবে এই ধারণাটা প্রায় 95% ভুল।
কেননা কখনো কখনো মানুষ স্বাভাবিক থেকেও মানসিক অশান্তিতে থাকেন আবার পাগল না হয়েও মানসিক সমস্যায় ভুগেন অনেকেই। তাই প্রথমত আপনি কেমন আছেন সেটা বোঝার চেষ্টা করুন এবং আপনার খারাপ লাগার বিষয়গুলো চিহ্নিত করুন। পরবর্তীতে ওই বিষয়গুলো এক এক করে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন আপনার জীবন থেকে।
তবে হ্যাঁ কিছু কিছু বিষয় হয়তো আপনি বাদ দিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে ওই বিষয়গুলোকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন এবং এটা মনে প্রাণে বিশ্বাস করুন যে জীবন একটা আর ছোট্ট এই পার্থিব জীবনে আপনাকে মানসিক শান্তি নিয়ে বাস করতে হবে।
সেই সাথে সব সময় এটা মনে রাখুন আপনাকে কেন এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে আপনার উদ্দেশ্য কি এবং আপনি কতক্ষণ যাবৎ এই পৃথিবীতে থাকতে পারবেন। কেননা যারা আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখেন এবং মৃ- ত্যুকে ভয় করেন তারা মূলত সকল প্রকার খারাপ লাগাকে খুব সহজেই দূরীভূত করতে পারবেন।
যদি আপনি কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় জানতে তবে আমি আপনাকে বলব মানসিক শান্তির জন্য নির্বাচন করতে পারেন আপনার পছন্দের যে কোন জায়গা। কেননা একজন মানুষ নিজেকে কতটা শান্তি দেবে সেটা পুরোপুরি নিজেই নির্ধারণ করতে পারে। কারো চিন্তা ভাবনা যদি ইতিবাচক হয়ে থাকে তাহলে সে অবশ্যই মানসিক শান্তি নিয়ে বাস করতে পারবে। কিন্তু আপনি যদি সর্বদা নেগেটিভ কিছু চিন্তা ভাবনা করেন। যেমন ধরুনঃ আমার সাথে এমনটা কেন হচ্ছে, কেন এমনটা হলো না বা আমি এটা ডিজার্ভ করি না ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু ওই মুহূর্তে যদি আপনি বিষয়টা অন্যভাবে চিন্তা করেন যে আপনার সাথে যা ঘটেছে সেটা অন্য কারো সাথে না ঘটে আপনার সাথে ঘটেছে কারণ আপনি অন্যদের থেকে একদমই আলাদা। কিংবা আল্লাহ তা'আলা আপনার পরীক্ষা নিচ্ছেন বলে বারবার আপনাকে নানা রকম কষ্ট দিচ্ছেন। এক কথায় সব সময় পজিটিভ চিন্তাভাবনা মানসিক অশান্তি থেকে বাঁচার অন্যতম উপায়। সেই সাথে নিম্ন বর্ণিত জায়গা গুলোতে গেলে আপনি মানসিক শান্তি পেতে পারেন। যথাঃ
১। প্রকৃতি (পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো পার্ক, যে কোন স্থান অথবা সমুদ্র সৈকত)
২। ধ্যান- মনকে শান্ত করার অভ্যন্তরীণ শান্তি খুঁজে পাওয়ার অন্যতম উপায়।
৩। একান্ত নিজের ঘর এবং নামাজ
৪। যোগব্যায়াম ক্লাসে মনোনীত হয়ে
৫। বই পড়ে অথবা লাইব্রেরীতে গিয়ে
৬। একটা সৃজনশীল ক্রিয়া কালাপ করে
৭। বাগানে নিজ হাতে লাগানো গাছের পরিচর্যা করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এক কথায় যে কাজগুলো আপনার মন খারাপকে দূরীভূত করবে এবং আপনার মনকে হালকা রাখবে ঐ সকল কাজগুলো করতে হবে সে সময়। তাই মানুষের শান্তি ফিরে পেতে চাইলে প্রকৃতির মাঝে পছন্দ অনুযায়ী ঘুরে বেড়ান, অথবা নামাজ পড়ুন কিংবা যোগব্যায়াম ক্লাসে মনোনীত হন। চাইলে বই পড়ার মাধ্যমে নিজেকে শান্ত রাখুন বা পছন্দের যেকোনো কাজ করুন যেটা আপনার মনকে প্রফুল্ল করবে।
আরো পড়ুনঃ কি আমল করলে মনের আশা পূরণ হয়
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আশা করি আমাদের এই আলোচনার মাধ্যমে আপনি উপলব্ধি করতে পারছেন কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। যেহেতু জীবন একটা এবং ছোট এই জীবনে সবাইকে নিয়ে ভালো ও মন্দ উভয় ভাবেই ভালো থাকতে হবে এবং জীবনকে সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করতে হবে। তাই সবসময় পজেটিভ চিন্তাভাবনা করুন এবং মানসিকভাবে শান্তি লাভের চেষ্টা করুন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।