কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি জেনে নিন

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান - কক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন অঞ্চল। কক্সবাজার জেলাটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এটি চট্টগ্রাম থেকে ১৫২ কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে ৪১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতটি বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ছাড়াও এখানে দেখার মতো আরও অনেক জায়গা রয়েছে। পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বেসরকারি উদ্যোগে অনেক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। এছাড়া পর্যটকদের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে ঝিনুকের বাজার। বার্মা, থাইল্যান্ড, চীন সহ বিভিন্ন দেশের মশলাদার পণ্য নিয়ে সীমান্ত বরাবর বার্মিজ বাজার গড়ে উঠেছে।

কক্সবাজারে বিভিন্ন উপজাতি বা জাতিগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে যা শহরটিকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। আমরা আমাদের আজকের পোস্টে আপনাদের জানাতে চেষ্টা করব কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি। আমাদের আজকের পোষ্টের মাধ্যমে কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি জেনে নিন।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান

কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান

ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের কাছে কক্সবাজার পছন্দের তালিকার মধ্যে প্রথম। সকলেই পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের টানে একবার হলেও কক্সবাজার যেতে চায়। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বিশ্বের অন্যতম সমুদ্র সৈকত ৷ তাই আমাদের দেশের মানুষ ছাড়াও। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন ভিড় করে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখার জন্য।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত হলেও এখানে ঘুরে দেখার মত আরও দর্শনীয় স্থান রয়েছে ৷ তাই কক্সবাজার আসলে অবশ্যই এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখা উচিত ৷ কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি জেনে নিন ৷

  • ইনানী বিচ
  • কলাতলী বিচ
  • লাবনী পয়েন্ট
  • সুগন্ধা বিচ
  • মেরিন ড্রাইভ রোড
  • হিমছড়ি পাহাড়
  • মহেশখালী দ্বীপ
  • রামু রাবার বাগান
  • রামু বৌদ্ধ বিহার
  • শামলাপুর সমুদ্র সৈকত
  • মারমেইড ইকো রিসোর্ট
  • রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড
  • আদিনাথ মন্দির
  • কুতুবদিয়া দ্বীপ
  • ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক

কক্সবাজারে দেখার জন্য সেরা ১০ টি স্থান

১। সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১২০ কি.মি স্রষ্টা যেন বালির তালুতে বাংলার সমস্ত রূপ ঢেলে দিয়েছেন। সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজারের নাজিরা টেক থেকে টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত। সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি জেনে নিন। এর মধ্যে লাবণী পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, ডায়াবেটিক হাসপাতাল পয়েন্টসহ কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখযোগ্য।

২। মেরিন ড্রাইভ

মেরিন ড্রাইভ সড়ক পর্যটকদের জন্য কক্সবাজার ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। এই রাস্তার একপাশে সমুদ্র সৈকত আর অন্যপাশে পাহাড়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথের অধীনে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের নির্মাণকাজ পরিচালনা করছে।

আপনি যখন মেরিন ড্রাইভ ধরে যাবেন তখন আপনি দেখতে পাবেনসমুদ্রে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, বিশাল বিস্তৃত সৈকতে মেঘ আর রোদের লুকোচুরি খেলার দৃশ্য, খোলা ছিপ ইত্যাদি। যাওয়ার সময় সমুদ্র পারে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য এই রোডে রয়েছে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট।

আরো পড়ুনঃ কক্সবাজারে দেখার জন্য সেরা ১০টি স্থান

৩। হিমছড়ি

কক্সবাজার সদর থেকে পাহাড় ও সমুদ্রের অপরূপ দৃশ্য দেখতে দেখতে মেরিন ড্রাইভ থেকে ১২ কিমি দক্ষিণে গেলে আপনি হিমছড়ি দেখতে পাবেন। একদিকে সবুজ পাহাড় আর অন্যদিকে বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত এক অন্যরকম আবহ তৈরি করবে। আর সমুদ্রকে আরও বড় আকারে দেখতে চাইলে চলে যান হিমছড়ি পাহাড়ের চূড়ায়।

সমুদ্রের বিস্তীর্ণ অংশ এখান থেকে পর্যটকরা একটু অন্যভাবে দেখতে পাবেন। হিমছড়িতে একটি মিষ্টি জলের জলপ্রপাতও রয়েছে যেখানে বর্ষাকালে জল থাকে তবে অন্য সময়ে শুকিয়ে যায়। তারপরও প্রাকৃতিক পরিবেশ হিসেবে হিমছড়ি পর্যটকদের কাছে এক অনন্য আকর্ষণ।

৪। ইনানী বিচ

হিমছড়ি থেকে আরও ০৫ কিমি গেলে দেখা যাবে সারি সারি প্রবাল পাথর। এটি ইনানী বিচ, দেখতে অনেকটা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো। কিন্তু এখানে সমুদ্র খুবই শান্ত, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো বড় ঢেউ সৈকতে আছড়ে পড়ে না। উচ্চ জোয়ারে প্রবাল প্রাচীর দেখা যাবে না।

প্রবাল প্রাচীরের বড় অঞ্চলগুলি কেবল ভাটার সময় দেখা যায়। এখানে গোসল করা বা খুব বেশি লাফালাফি করা খুবই বিপজ্জনক। কারণ প্রবাল পাথরের সঙ্গে লেগে থাকা ধারালো শামুক ও ঝিনুকে যে কোনো সময় আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

৫। মহেশখালী আদিনাথ মন্দির

মহেশখালী দ্বীপ কক্সবাজার শহর থেকে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্রে অবস্থিত। বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীতে রয়েছে বিখ্যাত আদিনাথ মন্দির, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান। মহেশখালীর এই আদিনাথ মন্দিরটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৫.৩ মিটার উচ্চতায় মৈনাক পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত।

এক কৃষক এই দ্বীপে একটি মহাদেবের মূর্তি খুঁজে পেয়েছিলেন। এরপর তিনি মহাদেবের নামে একটি মন্দির স্থাপন করেন এবং সেখানে মূর্তি স্থাপন করেন। কালক্রমে মহাদেবের নামানুসারে এই দ্বীপের নামকরণ করা হয় মহেশখালী। উল্লেখ্য, মহেশ দেবতা মহাদেবের অপর নাম।

আরো পড়ুনঃ কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়

৬। ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার উত্তরে এবং চকরিয়া থানা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। পার্কটি ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ বন বিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জের ডুলাহাজারা ব্লকে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় ৯০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে এই সাফারি পার্কটি প্রতিষ্ঠা করেছে।

৭। সেন্ট মার্টিন

সেন্ট মার্টিন বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত প্রবাল দ্বীপ। এই দ্বীপটি সম্পূর্ণ প্রবাল দিয়ে তৈরি। এই দ্বীপে যেতে আপনি জাহাজের সাহায্য নিতে পারেন বা কক্সবাজার থেকে একটি ছোট নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করতে পারেন। যদিও সেন্ট মার্টিন্সে কোনো বড় হোটেল নেই।

এই দ্বীপটি নারকেল জিঙ্গিরা নামে পরিচিত কারণ দ্বীপটি নারকেল গাছ এবং অন্যান্য অনেক প্রজাতির গাছে ভরা। আপনি যদি জনবহুল মানব সমাজ থেকে দূরে সরে যেতে চান এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে নিজেকে খুঁজে পেতে চান, সেন্ট মার্টিন আপনার জন্য উপযুক্ত গন্তব্য।

৮। ছেঁড়া দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন

ছেঁড়া দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে অবস্থিত। প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন থেকে প্রায় ৫ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত। ছেঁড়া দ্বীপটি সেখানকার মানুষের কাছে ছেঁড়া দিয়া নামে পরিচিত। যারা সমুদ্রে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য যখন সমুদ্রের নীল ঢেউ পাথরের উপর আছড়ে পড়ে তখন তারা অদ্ভুত এক সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

আরো পড়ুনঃ ঢাকার আশেপাশে ঘোরার জায়গা

৯। রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড

রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড (Radiant Fish World) বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে প্রথম আন্তর্জাতিক মানের মাছের অ্যাকোয়ারিয়াম দেখার সুযোগ। পর্যটন শহর কক্সবাজারের ঝাউতলাতে বিনোদনের নতুন সংযোজন মৎস্য জাদুঘর। অ্যাকোয়ারিয়াম কমপ্লেক্সে প্রায় ১০০ প্রজাতির সামুদ্রিক এবং মিঠা পানির মাছ রয়েছে।

বিরল প্রজাতির মাছের পাশাপাশি হাঙ্গর, পিরানহা, উটপাখি, কচ্ছপ, কাঁকড়া, সামুদ্রিক অর্চিন, পিতাম্বরী, সামুদ্রিক অর্চিন, বোলাস, জেলিফিশ, চেওয়া, পাঙ্গাস, উটপাখিসহ আরও অনেক মাছ ও জলজ প্রাণী রয়েছে। আপনার চোখের সামনে সামুদ্রিক জীবনের এই মেলা দেখার সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়।

১০। রামু রাবার বাগান

১৯৬০-৬১ সালে রামুতে অনাবাদি জমি জরিপ করে রাবার চাষ শুরু হয়। রামুর ঐতিহ্যবাহী রাবার বাগান আজ দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে বাগানের আয়তন ২ হাজার ৬৮২ একর। রামুর রাবার বাগানে প্রায় ৫৮ হাজার উৎপাদনশীল গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে বছরে প্রায় আড়াই লাখ কেজি রাবার উৎপাদিত হয়।

কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত

কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের একটি শহর। কক্সবাজার হলো মৎস্য বন্দর এবং পর্যটন কেন্দ্র। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার সদর দপ্তর। কক্সবাজার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক বালুকাময় সৈকত রয়েছে।

কক্সবাজার থেকেই ইনানি ভাড়া

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ইনানী সমুদ্র সৈকতে সবসময় খোলা জিপ পাওয়া যায়। যেগুলোকে চান্দের গাড়িও বলা হয়। রিজার্ভ করলে বেশি টাকা লাগে, আলোচনা সাপেক্ষে ১৫০০-২০০০টাকা পর্যন্ত যেতে পারে। একটি জিপে ১২- ১৫ জন সহজেই বসতে পারে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে অটোরিকশা/ইজিবাইকের ভাড়া ঋতু ভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।

কক্সবাজার যাওয়ার উপযুক্ত সময়

খুব বেশি বর্ষার মৌসুমেও কক্সবাজার গিয়ে আনন্দ পাওয়া যায় না। কেননা বৃষ্টির জন্য কক্সবাজার এর দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এবং খুব বেশি রোদের সময় ও কক্সবাজার ঘুরে মজা পাওয়া যায় না। কারণ আমরা সকলেই জানি কক্সবাজার বালুকাময় সমুদ্র সৈকত৷ অন্যান্য অঞ্চলের থেকে কক্সবাজারে গরম তুলনামূলক বেশি। তাই খুব বেশি গরমে কক্সবাজার না যাওয়াই ভালো৷ সাধারণত অক্টোবর থেকে মার্চ মাসক কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত সময়। এই সময়টায় রোদের তেমন তেজ থাকে না তাই ঘুরে আনন্দ পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ ময়মনসিংহ আবাসিক হোটেল ভাড়া কত

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর

ইনানী সমুদ্র সৈকত কোথায় অবস্থিত?

কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। হিমছড়ির ওপারে সমুদ্র সৈকতকে বলা হয় ইনানী।

হিমছড়ি কিসের জন্য বিখ্যাত?

হিমছড়ি বনকে হাতির আবাসস্থল বলে মনে করা হয়। এছাড়া এই বনে মায়া হরিণ, বুনো শু-য়োর ও বানর দেখা যায়। হিমছড়ি বনও পেঁচার আবাসস্থল। হিমছড়ি বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত।

ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে বাসে কত সময় লাগে?

ঢাকা থেকে ৪১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাসে পৌঁছাতে প্রায় ১০-১২ ঘন্টা সময় লাগে।

কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান নিয়ে শেষ কথা

সমুদ্রের প্রতি মানুষের আলাদা একটা দুর্বলতা রয়েছে৷ এই দুর্বলতার টানেই মানুষ বার বার ছুটে যায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে৷ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সমুদ্র সৈকত ছাড়াও আরো বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। আমাদের আজকের পোস্টে সেই সব দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তাই আমাদের আজকের পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি জেনে নিন।

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!