কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক অনেকেই। কেননা যৌ*ন রোগের মহা ঔষধ তালমাখনা ও কাতিলা গাম। অনেকেই হয়তো যৌ*বন শক্তি বৃদ্ধিতে ইতোমধ্যে এই দুইটি উপকারী খাদ্য পণ্য খেয়েছেন অথবা নাম শুনেছেন। তবে যারা এর উপকারিতা সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত জানেন না এবং কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অবগত নন, তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই আলোচনা পর্ব।
ইতোমধ্যে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কাতিলা গাম এর উপকারিতা, সেই সাথে কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম ও বিশেষ কার্যকারিতা সম্পর্কে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেছি। কিন্তু আজকের এই আলোচনায় আমরা জানাবো কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত। তো পাঠক বন্ধুরা, আসুন তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক এবং এর সুফলগুলো অতি শীঘ্রই ভোগ করা যাক।
(toc) #title=(সুচিপত্র)
কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম
কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম জানার পূর্বে এটা জানা জরুরী কাতিলা গাম এবং তালমাখনা আসলে কি জিনিস! এর জন্য ধারাবাহিকভাবে আমরা কাতিলা গাম ও তাল মাখনার পরিচিতির পরবর্তীতে এটি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বর্ণনা করবো।
আশা করছি আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারবেন এবং এটি খাওয়ার মাধ্যমে বেশ কিছু উপকারিতা পেয়েও যাবেন। কারণ এই দুইটি খাদ্য পণ্যে রয়েছে ভেষজ গুণাবলী।
কাতিলা গাম কি?
কাতিলা গাম হলো একটি পলিস্যাকারাইড, যা উদ্ভিদের শিকড়ের রস শুকিয়ে সংগ্রহ করা হয়। এটি গন্ধহীন, স্বাধীন এবং পানি দ্রবণীয়। কাতিলা গাম দেখতে সাদা অথবা হালকা লালচে বর্ণের, যা দেখে কেউ কেউ তাল মিশ্রি ভেবেও ভুল করে বসে। এটি এমন একটি উপকারী জিনিস যা মানব শরীরের নানা বিশেষ কার্য সম্পাদন করে থাকে। সমাধান এনে দেয় বিভিন্ন রোগের এবং শরীরকে করে ভেতর থেকে চাঙ্গা। এক কথায় কাতিলা গামের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা অপরিসীম।
আরো পড়ুনঃ কাতিলা গাম কিভাবে খেতে হয়
তালমাখনা কি?
তালমাখনা হচ্ছে একটি উৎকৃষ্ট ভেষজ ঔষধ। এটি মূলত এক ধরনের লতা গুল্ম জাতীয় বর্ষজীবী উদ্ভিদের বীজ, যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটা শস্য দানা। তালমাখনার বীজ সাধারণত একেক জায়গায় একেক নামে পরিচিত। এর রয়েছে নানা রকম নাম। তালমাখনার ইউনানী নাম হচ্ছে তালমাখনা।
অন্যদিকে এটির প্রচলিত নাম কুলেখাড়া, আয়ুর্বেদিক নাম কোকিলাক্ষ্যা, ইংরেজি নাম Star Thorn, বৈজ্ঞানিক নাম Hygrophyla auriculata (Sch.) Heyne এবং পারিবারিক বৈজ্ঞানিক নাম Acanthaceae. এটি মূলত মানব দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহের শক্তি বর্ধক হিসেবে কাজ করে।
চিকিৎসকরা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন সঠিক নিয়মে তালমাখনা খেলে উপকার হিসেবে পাওয়া যায় অনেক কিছু। কেননা এটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহের শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি
- লিভারের দুর্বলতা দূর করে
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
- খাদ্যে অরুচি ভাব কাটিয়ে তোলে
- এসিডিটির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে
- যৌ*ন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- স্ত্রী স*ঙ্গমে অক্ষমতা ও বী*র্য গাঢ় করতে সাহায্য করে
আর শুধু তালমাখনা নয়। তালমাখনা এবং কাতিলা গাম এই দুইটি একসঙ্গে খাবার ফলে শরীরে বিশেষ শক্তি জাগ্রত হয় পাশাপাশি যৌ*ন রোগ থেকে থাকলে তা চিরতরে নির্মূল হয়ে যায়। অতএব আমাদের নিয়মিত কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত। এবার আসুন আলোচনার পরবর্তী ধাপে জেনে নেই কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি।
আরো পড়ুনঃ পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম
কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম কি কি
কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এই দুইটি জিনিস আলাদা রকম ভাবে খাওয়া যায় এমনকি একসঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যায়। তবে আপনি যদি শুধুমাত্র কাতিলা গাম না খেতে চান সেক্ষেত্রে এক গ্লাস পানিতে দুই চামচ তালমাখনা এক থেকে দুই ঘন্টা আগে ভিজিয়ে রাখতে।
অপরদিকে আপনি যদি কাতিলা গাম আলাদাভাবে খেতে চান সেক্ষেত্রে ভিজিয়ে রাখতে হবে অনেকক্ষণ যাবৎ। যতক্ষণ না পর্যন্ত শুকনো আঠা জাতীয় কাতিলা গাম জেলিতে পরিণত না হয়। অতএব যখন এলোভেরা বা অন্য কোন জেলের মত আকার নেবে ঠিক ওই সময় কাতিলা গাম আপনার খাওয়ার উপযুক্ত হিসেবে বিবেচ্য হবে।
আপনি যদি কাতিলা গাম ও তালমাখনা একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে চান সেক্ষেত্রে আরও কিছু উপকরণ তাতে যুক্ত করতে পারেন। যেমনঃ
- লেবু
- মধু
- লাল চিনি
কেননা এই পাঁচটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। তবে হ্যাঁ, তালমাখনা মিক্স তৈরিতে আপনি নিজের উপকরণগুলোও পরিমাণ মতো মিশিয়ে খেতে পারেন। কেননা ইতোমধ্যে চিকিৎসকরা তালমাখনার ম্যাক্স হিসেবে নিম্ন বর্ণিত উপকরণগুলো মেশানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
উপকরণ: ইসবগুলের ভুষি, মিশ্রি দানা, কাতিলা গাম, হালিম দানা, তালমাখনা, মধু
মিশ্রণ পদ্ধতি: এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দুই চামচ তালমাখনা এক থেকে দুই ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। পরবর্তীতে পরিমাণমতো উল্লেখিত পাঁচটি উপকরণ যুক্ত করুন তাতে। আর হ্যাঁ অবশ্যই তালমাখনা জেলিতে পরিণত করার মাধ্যমে এটি ব্যবহার করবেন অর্থাৎ এটি আরও দীর্ঘক্ষণ সময় পূর্বে ভিজিয়ে রাখবেন, যাতে করে সেটা সম্পূর্ণভাবে পানি শোষণ করে নিতে পারে এবং জেলির আকার ধারণ করে।
পরবর্তীতে তা পান করবেন। আপনি যদি এভাবে নিয়মিত তালমাখনা ও কাতিলা গাম খেয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে মুক্তি পাবেন। আপনার শরীরে ফিরে আসবে সতেজতা এবং মন হবে ফ্রেশ। আর হ্যাঁ, অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না কাতিলা গাম এবং তালমাখনা খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি।
এ বিষয়ে আমরা সাজেস্ট করব রাতের বেলা এই উপকরণগুলো পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে উল্লিখিত নিয়ম মেনে সেগুলো মিক্স করার মাধ্যমে পান করবার। কেননা সকালে খালি পেটে খেলে এর উপকারীতা বা কার্যকারিতা খুব দ্রুত পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ norix 1 pill details - norix 1 এর কাজ কি
কাতিলা গাম ও তালমাখনা কোথায় পাওয়া যায়?
কাতিলা গাম ও তালমাখনা সাধারণত আপনি আপনার নিকটস্থ বাজারে মোদির দোকান থেকেই সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে যদি কোন কারণে এগুলো খোঁজাখুঁজির পরেও না পেয়ে থাকেন তাহলে অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
কেননা কাতিলা গাম ও তালমাখনা এই দুইটি পণ্য অনেক বেশি বিক্রি হয় অনলাইন প্লাটফর্মে। তাই ফেসবুক পেজ অথবা কোন প্রোডাক্ট সেল ওয়েবসাইট থেকে আপনি খুব সহজেই কিনতে পারবেন এগুলো। আর হ্যাঁ, কখনো কখনো ফুটপাতে এই জিনিসগুলো হকার রা অনেক বেশি বিক্রি করে থাকে। আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকেও সেগুলো কিনতে পারেন।
তবে অবশ্যই চেষ্টা করবেন ভালো মানের তালমাখনা এবং কাতিলা গাম কিনবার। আর হ্যাঁ, যদি আপনি কোথাও তালমাখনা বা কাতিলাগাম এর সন্ধান না পেয়ে থাকেন তাহলে আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানিয়ে দিতে পারেন। এবার আসুন, জেনে নেওয়া যাক তালমাখনা এবং কাতিলা গাম এর মোটামুটি দাম কেমন?
তালমাখনা ও কাতিলা গাম এর দাম কত?
তালমাখনা ও কাতিলা গাম এর দাম সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। কেননা এই জিনিসগুলোর দাম সব সময় একরকম থাকে না স্থানভেদে দামের তারতম্যতা ঘটে থাকে। তবে হ্যাঁ আমাদের জানা মতে ১০০ গ্রাম তালমাখনার দাম মোটামুটি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
অন্যদিকে ১০০ গ্রাম কাতিলা গ্রাম এর দাম মোটামুটি ১৯৫ থেকে ২৯৯ বা তার বেশি টাকা। আপনি চাইলে এখনই দারাজ অথবা রকমারি ডট কম কিংবা আমার বাজার ডটকম এই সকল সেলস ওয়েবসাইট গুলো থেকে কাতিলাগাম এবং তালমাখনার আসল দাম কত সেগুলো জেনে নিতে পারেন।
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত আলোচনার ইতি টানছি এখানেই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।