অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা ২০২৪

হাসিবুর
লিখেছেন -

আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা গুগলে সার্চ করে থাকেন। মূলত তাদের জন্য আজকের এই পোস্টে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে লিখিত অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা ২০২৪ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাদের জন্য।

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা। এখানে আমরা খুব সহজ ভাবে রচনাটি লিখলাম যা, আপনারা যে কোনো শ্রেণীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন।

অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা

(toc) #title=(পোষ্ট সূচিপত্র)

অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ

ভুমিকাঃ বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর অনেক বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশ একটি মধ্য আয়ের দেশের কাতারে নাম লিখিয়েছে। বাংলাদেশ কিছুদিন পুর্বে ও নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত রাস্ট্র হিসেবে গড়ে উঠবে। মানব সম্পদ এর উন্নয়ন, বৈদেশিক বানিজ্য চুক্তি, পরিকল্পনা, নেতৃত্ব, মানুষের কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয় গুলোতে বাংলাদেশ আগের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে, যার ফলে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশিল রাষ্ট্রের মতো এগিয়ে যাচ্ছে।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় অনেক বাধা থাকলেও বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য ভাবে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশ এখন একটি নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের মধ্যে একটি। অর্থনীতিতে বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৪০তম। যা স্বাধীনতার পর থেকে ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা অর্থনৈতীক সমস্যার সমাধান করা।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা

বাংলাদেশের অর্থনীতিঃ ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালে বাংলাদেশের গড় উতপাদনের জিডিপি হার ছিল ৫.৪৩%। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। পরবর্তী তে ২০১৮-১৯ সালে বাংলাদেশের গড় উতপাদনের হার বেড়ে হয় ৮.১৩% ও মাথাপিছু আয় ১৯০৯ মার্কিন ডলার হয়। একদিকে বাংলাদেশের সম্পদের উন্নয়ন যেভাবে বেড়েছে অন্য দিকে মানুষের আয়ের পরিমান ও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতীক উন্নয়নের সবচেয়ে বড় একটি বাধা ছিল দারিদ্র বিমোচন করা। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। সকল বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের একটি দেশ। ইতিমধ্যেই জাতিসংঘ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে।

মানবসম্পদের উন্নয়নঃ জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের জনসংখার হার অনেক বেশি। বেশি জনসংখ্যার কারণে বেকারত্বের হার অনেক বেশি যা, উন্নয়নশীল একটি রাষ্ট্রের জন্য একটি বাধা। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এত পরিমান জনসংখ্যা কাজে লাগিয়ে মানব সম্পদের উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার শিক্ষার হার বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বিশেষ করে, মাধ্যমিক শ্রেনী পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই বিতরন, শিক্ষা বৃত্তি, ও দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ।

যার ফলে দেশে জনসংখ্যা বেশি থাকলেও তারা দক্ষ হয়ে উঠছে। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দেশ ও দেশের বাহিরে অনেক দক্ষ লোক বাংলাদেশের অর্থনৈতীক জিডিপি বাড়াতে সাহায্য করছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য শিল্প খাত অনেক বেশি ভুমিকা পালন করে। পোষাক শিল্প, ঔষধ শিল্পসহ প্রতিটি শিল্পখাতের বিপুল অগ্রগতি হয়েছে পূর্বের তুলনায়।

বাংলাদেশের উন্নয়নে বড় একটি ভুমিকা পালন করে কৃষি। বাংলাদেশ মূলত একটি কৃষি প্রধান দেশ। বাংলাদেশের প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করেন ও কৃষির সাথে জড়িত। বর্তমানে শিক্ষার প্রসারের ফলে কৃষি কাজে শিক্ষিত উদ্দোত্তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি কাজে প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে আগের থেকে কম সময়ে কৃষক রা বেশি উতপাদন করতে পারছে কম সময়েরে মধ্যে।

তথ্য প্রযুক্তির খাতে অন্যান্য রাষ্টের মতো বাংলাদেশ ও একটি ডিজিটাল দেশ। তথ্য প্রযুক্তির ফলে দেশের প্রায় ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিদেশে কাজের প্রসার ও বৃদ্ধি পেয়ছে ইতিমধ্যে প্রায় ১৫৭ টি দেশে প্রায় ১ কোটির অধিক শ্রমিক আছে। যা বাংলাদেশের অর্থনীতি তে অনেক বড় ভুমিকা পালন করে।

অবকাঠামোগত উন্নয়নঃ যে কোনো দেশের অর্থনৈতীক উন্নয়েরন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এর ফলে দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করা যায়। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখার মতো। বড় বড় প্রকল্প গুলো জাতীয় অর্থনিতীতে ভুমিকা পালন করছে। পদ্মা সেতু নির্মান ছিল একটি বড় মাইলফলক। নিজ দেশের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মান করা হয়। এ ছাড়াও বাংলাদেশের কয়েকটি প্রকল্প হলো রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্র, মেট্রোরেল, পায়রা সমুদ্রবন্দর ইত্যাদি বাংলাদেশের অর্থনীতি তে অবদান রাখবে।

প্রযুক্তিগত উন্নয়নঃ বর্তমানে বাংলাদেশ একটি ডিজিটাল দেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার অনেক গুলো পরিকল্পনা ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করা শুরু করেছেন। দেশের প্রায় ৪৫৫০ টি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। দেশের সব উপজেলা মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১২ কোটির বেশি। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে সফল ভাবে ৫ জি ইন্টারনেট এর যুগে প্রবেশ করেছে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উতক্ষেপন ছিল বাংলাদেশের জন্য স্বপ্নের মতো। এটা একান্তই বাংলাদেশের জন্য অন্যতম অর্জন ছিল। বর্তমানে দেশের টিভি চ্যানেল এর সর্ম্পচার গুলো এই স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে হচ্ছে।

বৈদেশিক বানিজ্যঃ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য বৈদেশিক বানিজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। বাংলাদেশের বৈদেশিক বানিজ্য পূর্বের তূলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়ছে। পন্য রপ্তানি করে দেশে অর্থনীতির দিক থেকে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ রপ্তানি রেকর্ড হয়েছিল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

আরো পড়ুনঃ স্মার্ট বাংলাদেশ অনুচ্ছেদ রচনা: ১৫০০ শব্দের স্মার্ট বাংলাদেশ রচনা

প্রতিবন্ধকতাঃ বাংলাদেশ বর্তমানে অনেক এগিয়ে থাকলেও এ পর্যন্ত নানা রকম প্রতিবন্ধকতার বাধা ছিল। বঙ্গবন্ধু কে হত্যার মাধ্যমে দেশের প্রথম অগ্রগতির চাকা আটকে দেয়। এর পরে অনেক রাজনৈতিক জনিত সমস্যায় বাংলাদেশ ডুবে ছিল। বাংলাদেশে উন্নয়ন এর বড় একটি বাধা হিসেবে দুর্নিতি সবচেয়ে বেশি সচল। তবে, সকল বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশ একদিন অর্থনীতিতে টেকসই হবে।

উপসংহারঃ বিশ্বের মাঝে বর্তমানে অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এত প্রতিবন্ধকার মধ্য দিয়েও বাংলাদেশের উন্নয়ন থেমে থাকেনি তাই এই উন্নয়ন এর নাম অদম্য বাংলাদেশ বলা যায়। সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি সবচেয়ে বেশি দরকার যা দিন দিন হচ্ছে।

Tags:

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!