সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

সাইয়েদুল ইস্তেগফার - তওবার শ্রেষ্ঠ দোয়া - আপনি কি গুনাহ করতে করতে ক্লান্ত। এত এত গুনাহ করেছেন যে, মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে ক্ষমা চাইতেও লজ্জা পাচ্ছেন, সাহস পাচ্ছেন না ক্ষমা চাওয়ার। দ্বিধা দ্বন্দে আছেন, আপনার দোয়া কবুল হবে কিনা। তাহলে আপনি আজকে জানতে চলেছেন সেই এক শ্রেষ্ঠ দোয়া তা হচ্ছে সাইয়েদুল ইস্তেগফার। এই দোয়া আপনার পাহাড় সমান গুনাহও ক্ষমা করিয়েই ছাড়বে ইনশাআল্লাহ। আজকে আমরা সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

আপনার জীবনের যত বড় পাপ লুকিয়ে থাকুক না কেন আপনি যদি সেই পাপের জন্য লজ্জিত হন আর ক্ষমা চান এই দোয়া পড়ে তাহলে ইনশাআল্লাহ মহান রব্বুল আলামীন আপনার দোয়া কবুল করে নিবেন। দূর হয়ে যাবে আপনার সকল দু:শচিন্তা। 

সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া এক বিশাল হাতিয়ার সেসকল মুমিন বান্দাদের যারা এক আল্লাহর পথে অবিচল থাকতে চায়, ইমান আনতে চায় আর সেই ইমানকে আকড়ে ধরে শাহাদাত বরন করতে চায় তাদের জন্য।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

সাইয়েদুল ইস্তেগফার

সাইয়েদুল ইস্তেগফার কি

সাইয়েদুল ইস্তেগফার হলো একটি সহীহ হাদিস, হাদিসটি হচ্ছে বুখারী শরীফের ৬৩০৬ ও ৬৩২৩ নাম্বার হাদিস। সহীহ হাদিস বলার কারণ হলো, এই হাদিস নিয়ে কোন দ্বিধাদন্ধের সুযোগ নাই, এই হাদিস মেশকাত শরীফেও এসেছে, হাদিস নাম্বার ২৩৩৫ ‘দো'আ সমূহ অধ্যায়-৯, 'ইস্তিগফার ও তওবা' অনুচ্ছেদ-৪। সাইয়েদুল ইস্তেগফারকে বলা হয় ক্ষমা প্রাথনার শ্রেষ্ঠ দোয়া।

এই সাইয়েদুল ইস্তেগফার এর এত এত মুজিযা যা বলে শেষ করা যাবে না। শিরক ও অন্যের হক কেড়ে নেওয়া ব্যতিত সকল পাপ থেকে মুক্ত হওয়া যায় শুধুমাত্র সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ে।

বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলেছেন “যদি কোন ব্যক্তি যুদ্ধের ময়দান থেকে ফিরে আসার মত কবিরা গুনাহও করে থাকে আর সে যদি মন থেকে সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ে তাহলে মহান রব্বুল আলামীন তার গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।”

শুধু তাই নয়, তিনি আরও বলেছেন “যদি কোন ব্যক্তি দিনে সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করেন এবং সেই দিনে যদি তার মৃত্যু হয় তবে সেই ব্যক্তি জান্নাতি। আর যদি কোন ব্যক্তি সাইয়েদুল ইস্তেগফার রাতে পড়েন এবং ওই ব্যক্তি যদি রাতে মারা যান তাহলেও আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার জীবনের সব গুনাহ মাফ করে দিয়ে জান্নাত দিয়ে দিবেন।”

এই সাইয়েদুল ইস্তেগফার আপনি যত বেশি পড়বেন ততো ভাল। সাইয়েদুল ইস্তেগফারকে নিজের জীবনের অংশ বানিয়ে নিন। দিনে রাতে যখনই সুযোগ পাবেন তখনই পড়তে থাকুন সাইয়েদুল ইস্তেগফার।

আরো পড়ুনঃ হিজামা: হিজামা কি - হিজামার উপকারিতা ও অপকারিতা

সাইয়েদুল ইস্তেগফার আরবি

اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ

وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ، أبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ

عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ، فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ

আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থসহ

“হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ'তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই”।

আরো পড়ুনঃ বিষয় ভিত্তিক আয়াত ও হাদিস pdf download

ইস্তেগফার এর ফজিলত - সাইয়েদুল ইস্তেগফার এর ফজিলত

অনেকেই জানতে চান সাইয়েদুল ইস্তেগফার এর ফজিলত কি? সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার নিয়ম, সাইয়েদুল ইস্তেগফার দিনে কত বার পড়তে হবে? তাহলে জেনে নিন সাইয়েদুল ইস্তেগফার এর ফজিলত এবং সাইয়েদুল ইস্তেগফার কখন পড়তে হয়।

সাইয়েদুল ইস্তেগফার সকাল সন্ধ্যার দোয়াগুলোর মধ্যে একটি। সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়াটি সকালে একবার এবং সন্ধ্যাবেলায় একবার পড়লেই হবে। ফজর সালাতের পর একবার সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে এবং মাগরিব সালাতের পর একবার পাঠ করলেই হয়ে যাবে। কিন্তু আপনি যদি অনেক বার অর্থাৎ বেশি বেশি পড়তে পারেন তবে সেটা আপনার জন্য খুব ভালো। সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার অনেক ফজিলত রয়েছে। 

সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়লে আল্লাহ তায়ালা পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দিবেন। হযরত মোহাম্মাদ (সা.) এই কথা বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দোয়া পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’। (বুখারী, মিশকাত হা/২৩৩৫ ‘দোয়া সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘ইস্তিগফার ও তওবা’ অনুচ্ছেদ-৪)

তাই, সাইয়েদুল ইস্তেগফার নিয়মিত পড়া ভালো। অধিক পরিমাণে সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়া ভালো। একটি হচ্ছে উত্তম কাজ। এক হাদিস অনুযায়ী, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) এক বৈঠকে ৭০ বার করে পড়তেন। এ থেকে বোঝা যায় যে, বেশি বেশি সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়া উত্তম।

আরো পড়ুনঃ ইসলামে বাবার সম্পত্তি ভাগের নিয়ম

সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠকারীকে আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য পুরষ্কার দিবেন বলে ওয়াদা করেছেন। সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার পুরষ্কার গুলো হলোঃ 

১। যিনি সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করবেন আল্লাহ তায়ালা তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। 

২। যাদের সম্পদের অভাব তা দূর করে দিবেন। 

৩। অনাবৃষ্টির মতো সমস্যা দূর করে রহমতের বৃষ্টি নাজিল করবেন।

৪। অনেকের আছেন যারা সন্তানহীনতার মতো সমস্যা আছেন। সম্পদ রয়েছে কিন্তু সন্তান নেই আল্লাহ তায়ালা সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার কারণে সন্তানহীনতার সমস্যা দূর করে দিবেন। আল্লাহ তায়ালা এমন সন্তান দান করবে যা তাকে শক্তিশালী করে রিযিক বৃদ্ধি করে দিবেন।

তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত বেশি বেশি সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়া এবং অন্যদেরকে সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার জন্য উপদেশ দেওয়া।

আরো পড়ুনঃ সাহাবীদের নাম অর্থসহ ছেলেদের - পুরুষ সাহাবীদের নামের তালিকা অর্থসহ

Tags:

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!