প্রিয় পাঠক অনেকেই ২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম | পিল খাবার নিয়ম, পিল খাওয়ার সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে আমার কাছে জানতে চাইছেন। তাই আপনাদের কথা মাথায় রেখে আজ আমরা ২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকের লেখায় বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি এই পোস্ট থেকে আপনারা অনেক উপকৃত হতে পারবেন।
সাধারণত অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধের প্রতিটি মেয়েরাই পিল ব্যবহার করে থাকেন। সহবাসের পর গর্ভবতী না হওয়া নিশ্চিত হয় পিলের মাধ্যমেই। সহবাসের পর পিল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার করলে গর্ভে সন্তান আসার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না। কিছু পিল রয়েছে ইমার্জেন্সি ভাবে ব্যবহার করা হয়, আবার কিছু পিল প্রতিদিন খাবারের পর খেতে হয় যা ২১ দিনের পিল নামেই বেশি পরিচিত।
বর্তমানে আমাদের সমাজের প্রতিটি বাবা মায়েরা সচেতন। তারা ২ টি সন্তানের মাঝে কিছুটা সময় বিরত রাখতে চায় সেক্ষেত্রে সহবাসের পর অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারন ঠেকাতেই পিল ব্যবহার করে থাকে। তবে সকল পিল স্বাস্থ্যর জন্য ভালো নয়। বিশেষ করে ইমারজেন্সি পিল নিয়মিত ব্যবহার চিরতরে বান্ধ্যত্ব বানিয়ে দিতে পারে।
তাই প্রায় নারীরাই রেগুলার পিল বা ২১ দিনের পিল বেশি ব্যবহার করে থাকেন। চলুন আজকের আর্টিকেলে ২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম, সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জানিঃ
(toc) #title=(সুচিপত্র)
পিল খাওয়ার নিয়ম
- পিল খাওয়ার নিয়ম অনেকটাই নির্ভর করে আপনার পিরিয়ডের উপর। প্রতিদিন একটি করে পিল খেতে হবে খাবারের পরে। মূলত পিলগুলো রাতে খাবারের পরই গ্রহণ করা ভালো। তাহলে রেগুলার গ্রহন করা যায়। পিরিয়ডের ৭ দিন পর থেকে অথবা ৭ দিন বিরতি দিয়ে আবার পিল খাওয়া শুরু করতে হবে।
- তাছাড়া আপনার যদি অতিরিক্ত বমি, ডায়রিয়া বা একটি পিল মিস করেন ২১ দিনের পিলের ক্ষেত্রে তাহলে গর্ভবর্তী হবার সম্ভবনা থেকে যায়।তাই নিয়ম মেনে নিয়মিত পিল একটি করে খেতে হবে।
- তাছাড়া আপনার যদি অতিরিক্ত বমি, ডায়রিয়া বা একটি পিল মিস করেন ২১ দিনের পিলের ক্ষেত্রে তাহলে গর্ভবর্তী হবার সম্ভবনা থেকে যায়। তাই নিয়ম মেনে নিয়মিত পিল একটি করে খেতে হবে।
২১ দিনের কিছু পিলের নাম
পিল দুই ধরনের হয়ে থাকে। কিছু আছে ইনস্ট্যান্ট বিল যা একবারই গ্রহণ করতে হয়। আর কিছু আছে যেগুলো টানা ২১ দিন গ্রহণ করতে হয়। ২১ দিন গ্রহণ করা হয় এমন পিল গুলো হল:
- ফেমিকন ট্যাবলেট
- নরেট ২৮ ট্যাবলেট পিল
- টি-২১ পিল
- কনরেনা-আর
- প্যাসিক-২১
- মনোফ্যাসিক-২১
- মারভেলন-২১ পিল
২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন সহজ ভাষায়
২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়মাবলী: সাধারণত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ২১ অথবা ২৮ টির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। ২১ দিনের পিল এর ক্ষেত্রেঃ আপনার মাসিক শুরুর প্রথম দিন থেকেই দিনে ১টি করে খেতে হবে ২১ দিন, তারপর ৭ দিন বিরতি এরপর আবার পরপর ২১ দিন, মনে রাখবেন মাসিক চক্র শুরু হওয়ার সময় থেকেই পিল খাওয়া শুরু করতে হবে, যদি দেরি করেন তবে কাজ নাও হতে পারে।
২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম
নিয়ম মেনে পিল খাওয়া উচিত। যদি আপনি নিয়ম ছাড়া পিল খেতে থাকেন এটি নানা ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এমনিতেও শরীরের জন্য নিয়মিত পিল খাওয়াটা খুব একটা ভালো বিষয় নয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে নিয়মিত বিল গ্রহণের ফলে নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায় শরীরে কোন অসুখ থাকলে পিল খাওয়ায় নিষেধ থাকে। তাই আপনাকে অবশ্যই পিল খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে। কিভাবে খাবেন কতদিন খাবেন সব নিয়ম মেনে খেলে শরীরে সমস্যা খুব কম হবে সহজেই শরীরের সাথে মানিয়ে যাবে। চলুন জেনে নিই ২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম:
- পিল বাহারি রংয়ের হয়ে থাকে তাই সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন চিহ্নিত করে প্যাকট হতে আপনার প্রথম পিলটি বা বড়িটি খাওয়া শুরু করুন।
- প্রতিদিন একটি করে পিল খাবেন।
- রাতে প্রতিদিন একটি পিল খাবেন খাবারের পর যতদিন না একটি প্যাকেট শেষ হচ্ছে।
- পিরয়ডের সময় বা ৭ দিন পিল খাওয়া বন্ধ করুন।
- পিরিয়ড শেষে ৮ম দিন যদি আপনার রক্তপাত না হয় তবুও নতুন প্যাকটের পিল খাওয়া শুরু করুন। তবে ১ম পিলটি যেদিন খেয়েছেন নতুন প্যাকেটেরটিও যেন সে দিন থেকে শুরু হয়।
২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম ভিডিওতে দেখুন
পিল খাওয়া উপকারিতা
জন্মনিরোধক পদ্ধতি হিসেবে বেশিরভাগ নারীরাই পিল গ্রহণ করে থাকে। যদিও আরো কিছু জন্মনিরোধক পদ্ধতি রয়েছে। যেমন জন্মবিরতিকরণ এর জন্য ইনজেকশনও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তবে পিল খাওয়াটাকেই সবচেয়ে নিরাপদ মনে করা হয়। নিয়মিত পিল খেলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের কোন সম্ভাবনা থাকে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক পিল খাওয়ার উপকারিতা:
- কারো যদি ঘন ও বেদনাদায়ক পিরিয়ড থাকে। তাহলে সঠিকভাবে পিল গ্রহণের ফলে আপনার রক্তপাত হালকা করে দেবে এবং ব্যথা কমিয়ে দিয়ে পাশাপাশি পিরিয়ড পাতলা করে দিবে।
- সঠিকভাবে এবং সঠিক সময়ে পিল গ্রহনের ফলে গর্ভবতী হবার চান্স ৯৯% কমে যায়।
- রক্ত জমাট বাধার ঝুকি কমে যায়।
- যৌ*ন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
- এক পিলে মাধ্যমে সহবাস অনেক বার করা যায় গর্ভবতী হবার চান্স থাকে না।
- কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
- গবেষনায় দেখা গেছে পিল খেলে অতিরিক্ত ওজন বাড়ে না।
- কোন কোন সময় এটি ব্রন কমিয়ে দেয়।
- পেলভিক ব্যাথা জনিত রোগ থেকে মুক্ত করে।
- স্তন রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
পিল খাওয়ার অপকারিতা - পিল খাবার অসুবিধা সমূহ
পিল খাওয়ার যেমন উপকারিতা আছে তেমনি বেশ কিছু অপকারিতাও রয়েছে। নিয়মিত দীর্ঘদিন পিল খেলে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। এমনকি অনেকের পিল খাওয়া নিষিদ্ধ রয়েছে। বিশেষ করে যারা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত। চলুন জেনে নিন পিল খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
- চিকিৎসা শর্ত থাকলে বা চিকিৎসকের নিষেধ থাকলে ইমাজেন্সি পিল খাওয়া যাবে না।
- অন্য কোন রোগ থাকলে সে ঔষুধের কার্যকারিতা কমে যাবে বিশেষ করে ইমার্জেন্সি পিলের ক্ষেত্রে।
- বয়স ৩৫-৪০ এর উপরে ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার ফলে অন্যান্য রোগ বৃদ্ধি পেতে পারে।
- পিল আপনার যৌ*ন সংক্রমন থেকে রক্ষা করে না। তাই সহবাসে কন*ডম ব্যবহার করুন।
- অতিরিক্ত পিল খেলে হতাশাগ্রস্ত হবার চান্স বেরে যায়।
- পিল খেলে মেজাজ পরিবর্তন ও বমি বমি ভাব আসতে পারে।
- মাথা ঘুরা সহ মাথা ব্যাথাও হতে পারে।
- রক্তচাপের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। যাঁদের হাই ব্লাড পেসার আছে পিল না খাওয়াই ভালো।
- অতিরিক্ত পিল খাওয়া রক্ত জমাট সহ স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িতে দেয়।
উপসংহারঃ ২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম
আশা করি ২১ দিনের পিল খাওয়ার নিয়ম এবং সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আপনাদেরকে যথাযথ ধারণা দিতে পেরেছি। এবং আপনারা উপকৃত হয়েছেন। যেকোনো ঔষধ নিয়মিত সেবনের আগে তার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
norix 1 pill details - norix 1 এর কাজ কি
কোন পিল সবচেয়ে ভালো? ইমারজেন্সি পিল কোনটা ভালো