কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হয় - নারীদের জীবনের মূল্যবান একটি সময় হচ্ছে প্রেগনেন্সির সময়। এই সময় নারীদের জীবনে নানা পরিবর্তন আসে। সহবাসের সময় শুক্রাণুর জরায়ুতে পৌঁছাতে দুই থেকে তিন দিন লেগে যায়।
এরপর ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলনের ক্ষেত্রেই তৈরী হয় ভ্রুন,পরে তা ৩-৪ দিনের মধ্যই গর্ভধারণ হয়। গর্ভধারণের প্রয়োজনীয় আরো বিভিন্ন তথ্য পেতে পুরো আর্টিকেলটি পরুন।
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হয়, প্রেগনেন্সি কতদিন পর বুঝা যায়, সহবাসের কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায়, প্রেগনেন্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি, লবণ দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট সহ প্রেগনেন্সি নিয়ে নানান তথ্য।
প্রেগনেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পুরোটি পড়ুন। তো চলুন দেরি না করে জেনে আসি, কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয়।
(toc) #title=(সুচিপত্র)
কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয়
আমাদের আজকের এই পোস্টের মূল বিষয় হচ্ছে কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয়। এই পোস্টের মাধ্যমেই প্রেগনেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। নারীদের মধ্যে প্রেগনেন্সি নিয়ে অনেক ভাবনা থাকে, তবে প্রকাশ্যে অনেকে এই বিষয়গুলো আনতে সংকোচন বোধ করেন। ফলে না জেনেই নিজে নিজে অনেক ভুল পদক্ষেপ গ্রহণ করে ফেলেন।
পিরিয়ডের তারিখ পেরিয়ে গেলে পরের দিনই আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে পারেন। একদিনে ফলাফল ভালো না আসলে পরের দিন আবার টেস্ট করতে পারেন, পিরিয়ডের তারিখের ৩-৪ দিন পরে টেস্ট করলে ফাইনালি রেজাল্ট পাওয়া যায় এবং এই প্রেগনেন্সি টেস্ট করার জন্য ভালো একটি সময় হচ্ছে সকালে ঘুম থেকে উঠে টেস্ট করা।
এতে টেস্টে কোন ব্যাঘাত ঘটবে না এবং আপনার সঠিক রেজাল্ট পেয়ে যাবেন। ভোর সকালে ঘুম থেকে উঠে টেস্ট করার কারণ হচ্ছে তখন HCG হরমোন অত্যন্ত বেশি ঘনীভূত থাকে। যার কারনে রেজাল্ট নির্ভুল আসার সম্ভাবনা থাকে।
অনেক নারীরাই প্রায় সময় নির্ধারিত তারিখের আগেই প্রেগনেন্সি টেস্ট করেন ফলে, প্রেগনেন্সি টেস্টে নেগেটিভ আসে। যার কারনে উনারা ধরে নেন গর্ভবতী নন। তাছাড়াও সহবাসের দুই সপ্তাহ পরে প্রেগনেন্সি টেস্ট করলে তাতেও একটা মিথ্যা নেগেটিভ রিপোর্ট আসতে পারে।
তাই হুটহাট করে যেকোনো সময় প্রেগনেন্সি টেস্ট না করে, নিয়ম বুঝে সঠিক সময় প্রেগনেন্সি টেস্ট করবেন। এতে করে টেস্টের রেজাল্ট আসতে কোনো ধরনের ঝামেলা হবেনা বরং সঠিক ফলাফল আসবে।
পিরিয়ডের তারিখ থেকে দুই দিন এক্সট্রা যাওয়ার পরেই আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে পারেন এবং টেস্টের রেজাল্ট পজেটিভ আসলেই স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে যোগাযোগ করবেন। সেই অনুযায়ী চলাফেরা, কাজকর্ম, নিয়মকানুন মেনে চলবেন।
প্রথম থেকেই প্রেগনেন্সির নিয়ম কানুন মেনে চললে মা ও শিশু দুজনেই ভালো থাকবেন ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন। এতে আপনার ও আপনার গর্ভস্থ শিশুর সুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় থাকবে।
আরো পড়ুনঃ দাউদের ভালো মলম কি । দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম
প্রেগনেন্সি কতদিন পর বুঝা যায়
আপনি গর্ভবতী কি না তার প্রথম লক্ষণই হচ্ছে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং গর্ভবতী কিনা তা জানার জন্য নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে প্রেগনেন্সি টেস্ট কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা করা। পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার ১-২ দিন পরেই প্রেগনেন্সি কিট টেস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনি গর্ভবতী কিনা।
এছাড়া সহবাসের দুই সপ্তাহ পরেও প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায় কিন্তু সঠিক বা ভালো রেজাল্ট পাবার জন্য পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার ১-২ দিন পরে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা ভালো। সকাল বেলার কয়েক ফোঁটা প্রস্রাব নিয়ে পরীক্ষা করলে নির্ভুল একটা রেজাল্ট পাবার সম্ভাবনা থাকে।
সহবাসের কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায়
সহবাসের পরে কমপক্ষে ২১ দিন পরে আপনি আপনার প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে পারবেন। সাধারণত গর্ভবতী নারীদের প্রেগনেন্সি টেস্টে প্রস্রাবে একটি হরমোনের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়। গর্ভকালীন সময় প্রস্রাবের এই হরমোনের পরিমাণ প্রথমের দিকে অল্প পরিমানে থাকে এবং ধীরে ধীরে তার পরিমাণ বাড়তে থাকে।
তাছাড়া, মাসিক বন্ধ হওয়ার ৭দিন অপেক্ষা করা ভালো। পিরিয়ড বন্ধ হওয়া পর্যন্ত যদি অপেক্ষা করতে না চান তবে সহবাসের এক বা দুই সপ্তাহ পরেও প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় সালোয়ার পড়ার নিয়ম
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি
পিরিয়ডের তারিখ মিস হলেই, অনেকটা চিন্তায় পড়ে যান মহিলারা। এই সময় অনেকে প্রস্তুত থাকেন না প্রেগনেন্সির জন্য বা অনেকে আবার খুশি ঠেলায় লজ্জায় লজ্জাবতী হয়ে যান। দোকানে গিয়ে বা বাইরে গিয়ে টেস্ট কিট কিনে আনতে লজ্জাবোধ করেন।
তখন তারা কিভাবে টেস্ট করবেন, তাদের জন্য রয়েছে ঘরোয়া প্রেগনেন্সি টেস্ট পদ্ধতি। আসুন ঘরোয়া এই পদ্ধতিটির নিয়ম জেনে আসি,
রান্নাঘরে থাকা একটি সহজলভ্য উপকরণ চিনি, যার সাহায্যে দেখে নিতে পারবেন আপনি প্রেগন্যান্ট কি না। আগের যুগের দাদি,নানীরা যখন প্রেগনেন্সি কিট কি জানতেন না বা তখন এটা সহজলভ্য ছিলো না, তখন ঘরোয়া এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করেই তারা প্রেগনেন্সি টেস্ট করতেন। যা যা লাগবেঃ
- একটি পরিষ্কার কাঁচের বাটি
- চিনি এক টেবিল চামচ
- সকালবেলার কয়েক ফোঁটা প্রস্রাব
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিভাবে করবেন
পরিষ্কার বাটির মধ্যে কয়েক ফোটা প্রস্রাব রাখুন, এর মধ্যে এক টেবিল চামচ চিনি ঢেলে দিন। পরে ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন, তখন যদি দেখতে পান চিনি কোনোভাবে গলছে না, তখন আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি প্রেগন্যান্ট।
কারন তখন মহিলাদের শরীরে HCG এর মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে এটি চিনিকে এতো সহজে গলতে দেয়না। আর যদি দেখেন যে, প্রস্রাব এর মধ্যে চিনি গলে যাচ্ছে, তখন বুঝতে পারবেন আপনি প্রেগন্যান্ট নন।
আরো পড়ুনঃ সিজারের পর পেট কমানোর উপায়
লবণ দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার অন্য একটি ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যেমনঃ
রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহৃত একটি উপকরণ লবণ, যা দিয়ে খুব সহজেই ঘরের মধ্যেই পরীক্ষা করে নিতে পারবেন, আপনি প্রেগন্যান্ট কি না। যা যা লাগবে পরীক্ষা করতে:-
- একটি পরিষ্কার কাচের গ্লাস
- সামান্য একটু খাবার লবণ
- সকালবেলার কয়েক ফোঁটা প্রস্রাব
- একটি পরিষ্কার ড্রপার
লবণ দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট কিভাবে করবেন
সকালের প্রথম কয়েক ফোটা প্রস্রাব ড্রপারের সাহায্যে পরিষ্কার কাচের গ্লাসে নিবেন। তার উপর সামান্য নুন ছিটিয়ে দিবেন, এবার ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। যদি দেখতে পান এই দুইটি উপকরণের মধ্যে রাসায়নিক কোনো বিক্রিয়া (বুদবুদ আকারে উঠছে) ঘটছে, তখন বুঝতে পারবেন আপনি গর্ভবতী, আর যদি দেখেন যে এতে কোন পরিবর্তন হচ্ছে না, তখন বুঝতে পারবেন আপনি গর্ভবতী নন।
বি:দ্র: এগুলো শুধু আগেরকার প্রচলিত ধারণা মাত্র।
আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট কিটে পরীক্ষা করে পজেটিভ আসলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
আরো পড়ুনঃ norix 1 pill details - norix 1 এর কাজ কি
কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয় নিয়ে সর্বশেষ কথা
আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারলেন, কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হয়, প্রেগনেন্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি, সহবাসের কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা যায়, লবণ দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট সহ প্রেগনেন্সি সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্য। প্রেগনেন্সির সম্পর্কে আপনার আরও কোন কিছু বা কোনো তথ্য জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন, আমরা সর্বক্ষণ আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত।
কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হয়, এই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। গর্ভকালীন সময় নিজের প্রতি যত্নশীল ও সতর্ক থাকা অতি প্রয়োজনীয়। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। আপনার প্রতি শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।