মহানবী সা এর বিড়ালের নাম কি - নবীজির বিড়ালের নাম - অন্যান্য সব প্রাণীর তুলনায় বিড়াল খুবই শান্তশিষ্ট একটি প্রাণী। তাছাড়া বিড়াল যে ঘরে থাকে সে ঘরে কোন অশুভ আত্মা প্রবেশ করতে পারে না, বিড়াল খুবই পবিত্র একটি প্রাণী।
মহানবী (সা:) বিড়াল খুবই পছন্দ করতেন ও ভালোবাসতেন, তিনি বলতেন বিড়াল খুবই পরিষ্কার এবং শান্তশিষ্ট, খাঁটি একটি প্রাণী। বিড়াল মসজিদেও প্রবেশ করতে পারে। তাছাড়াও মহানবী (সাঃ), আবু হুরায়রা (রা:) কে বিড়ালের পিতা বলে ডেকেছিলেন। কারণ তিনি বিড়াল পোষতেন এবং বিড়ালকে খুবই ভালোবাসতেন, সব সময় সাথে সাথে রাখতেন।
তাই আজকে আমাদের এই পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন বিড়াল সম্পর্কে এবং মহানবী (সা:) এর বিড়ালের নাম কি? এছাড়াও বিড়ালের ইসলামিক নাম, আরবি নাম, ছেলে বিড়ালের ইসলামিক নাম, মেয়ে বিড়ালের ইসলামিক নাম এইসব সম্বন্ধে। মহানবী (সা:) এর প্রিয় পোষা প্রাণী ছিল উনার বিড়াল। তো চলুন দেরি না করে জেনে আসি, নবীজির বিড়ালের নাম কি ছিলো?
(toc) #title=(সুচিপত্র)
মহানবী সা এর বিড়ালের নাম কি - নবীজির বিড়ালের নাম
মহানবীর (সা:) বিড়ালের নাম কি? মহানবী (সা:) উনার পোষা প্রাণী বিড়ালকে খুবই ভালোবাসতেন। যার নাম ছিলো 'মুয়েজ্জা'।
- নবীজির বিড়ালের নাম ছিলো মুয়েজ্জা
মহানবী (সা:) বলেছেন, বিড়াল কোন অপবিত্র প্রাণী নয়, এটা তোমাদের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করে। বিড়াল এতটাই পবিত্র প্রাণী যে, আপনি যখন ঘুমাবেন তখন আপনার পাশে যদি কোন বিড়াল থাকে তাহলে অন্য কোন ক্ষতিকর প্রাণী আপনার পাশে আসবে না। এছাড়াও অশুভ কোন ছায়া বা আত্মা আপনার ঘরে প্রবেশ করতে পারবে না।
একদিন মহানবী (সাঃ) নামাজের জন্য মসজিদে রওনা হবেন, তো দেখলেন উনার সেই পোশাকের একটা অংশে বিড়াল (মুয়েজ্জা) ঘুমিয়ে পড়েছে, তখন মহানবী (সা:) দূর দূর করে সরিয়ে দেন নি, বা কোন কিছু দিয়ে আঘাতও করেন নি বরং আশ্চর্যমূলক কাজ করলেন, যেটুকু অংশে বিড়াল শুয়ে আছে সেইটুকু অংশ ছেঁড়ে বাকি অংশটুকু কেটে ফেলেন মহানবী (সাঃ), যাতে সে ঘুমন্ত বিড়ালের ঘুম না ভেঙ্গে যায় এবং সেই ছেঁড়া কাপড় পরিধান করেই তিনি নামাজের উদ্দেশ্য রওয়ানা হন।
অথচ আমরা সামান্য খাবারে মুখ দেওয়ার জন্য অথবা অন্য কোন কারণে বিড়ালের উপর কত কঠোর হয়ে যাই। এটা মোটেও উচিত নয়। বিড়ালের মুখ দেওয়া খাবারও খাওয়া যায় এটা কোন গুনাহ নয়, কারণ বিড়াল একটি পবিত্র প্রাণী। তাছাড়া মক্কা সহ বিভিন্ন দেশের বড় বড় মসজিদগুলোতে বিনামূলক প্রবেশ অধিকার রয়েছে বিড়ালের। মসজিদের ভিতরে যে কোন উপাসকের পাশে ঘুমায়, সর্বোত্ত চলাফেরা করে, পাশাপাশি বসে থাকে।
এছাড়াও একজন বিখ্যাত সুন্নি, যিনি মহানবী (সা:) এর কাছ থেকে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করতেন, তিনি প্রায় সময়ই কয়েকটা বিড়ালকে আদর করতে মসজিদে আসতেন, একদিন একটা বিড়ালকে কোলে নিয়ে হেঁসে হেঁসে মারতে যাবেন তখনই মহানবী (সা:) তাকে ডাক দিলেন " এই বিড়ালের বাবা এখানে এসো "।
তিনি এই ডাক শুনে একটুও ভ্রু কুচঁকালেন না বরং শিক্ষকের মুখে এই ডাক শুনে মনে মনে আনন্দিত হলেন। এই ডাকটা উনার খুব মনে ধরে এবং সবার মধ্যে পরিচিত লাভ করেন বিড়ালের বাবা বলে। তিনি আর কেউ নন, আমাদের প্রিয় আবু হুরায়রা (রা:)।
বিড়ালের ইসলামিক নাম
আমরা অনেকেই বিড়াল পোষে থাকি, কিন্তু পোষা প্রাণিটির নাম ঠিকঠাক ভাবে রাখতে পারিনা বা কি রাখবো সেটা খুঁজে পাই না। তো সেরকমই কিছু ইসলামিক বিড়ালের নাম আমাদের আজকের এই পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এখান থেকেই আপনি আপনার পোষা প্রাণীটির একটা নাম সিলেক্ট করে নিতে পারেন। নিম্নে বিড়ালের ইসলামিক কয়েকটি নাম উল্লেখ করা হলো:
- সানা
- জাবির
- খালিদ
- সাফিয়া
- হাসান
- আলী
- ইয়াসমিন
- ইদ্রিস
- ওমর
- জয়া
- লায়লা
- লতিফ
- খলিফা
- আমিনা
- উসমান
- মাজিদ
- আফিয়া
- মরিয়ম
- নওয়াজ
- হাসান
- মিরাজ
- রাবেয়া
- কুলসুম
- সুমাইয়া
- বারী
- হান্নান
- হানা
এই ইসলামিক সুন্দর সুন্দর নাম থেকে বেঁছে নিতে পারেন, আপনার আঁদরের পোষা প্রাণীর জন্য একটি নাম।
মেয়ে বিড়ালের ইসলামিক নাম
মহানবী (সাঃ) বিড়াল খুব পছন্দ করতেন, ভালোবেসে নাম রেখে বিড়াল পোষতেন। আমরাও ওই নবীর উম্মত হিসেবে অনেকে ভালোবেসে বিড়াল পোষে থাকি কিন্তু একটা ইসলামিক সুন্দর নাম নির্ধারণ করে রাখতে পারি না।
কি রাখা যায় সে রকম একটা নাম সঠিক সময় মনে আসে না, তাই আমাদের এই পোস্টটি পড়লে অবশ্যই আপনি আপনার ছেলে/মেয়ে বিড়ালের সুন্দর একটি ইসলামিক নাম নির্ধারণ করে রাখতে পারবেন। আসুন এক নজরে দেখে নেই ছেলে/মেয়ে বিড়ালের সুন্দর কয়েকটি নাম
- লিসা
- লোনা
- রানী
- মিনি
- সোফি
- লুসি
- মুক্তা
- ছায়া
- মালা
- মোনা
- রুমি
- মালেকা
- নাঈমা
- আমিরাহ্
- আজরা
- পার্সি
- মুফাসা
- আনিকা
- সুরাইয়া
- হামজা
- জায়েদা
- জয়নব
- হুসনা
- ইমা
- আনোয়ারা
- নৌরা
- কারীমা
ছেলে বিড়ালের ইসলামিক নাম
- আব্রাহাম
- আবু
- ইব্রাহিম
- ইদ্রিস
- নীল
- রাজা
- সাইমন
- শের খান
- নোয়েল
- রুফাস
- তারেক
- খালিদ
- আব্বাস
- হাফিজ
- নূর
- হাকীম
- বেলাল
- হারিস
- আনোয়ার
- আমির
- মোস্তফা
- জামাল
- সাদিক
- আনোয়ার
- লতিফ
- জাহিদ
- আজিজ
বিড়াল কি পবিত্র প্রাণী?
অবশ্যই বিড়াল একটি পবিত্র প্রাণী। বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে-
- যিনি বিড়াল পোষেন তার হৃদরোগের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম থাকে, বিড়ালের সাথে থাকায় মানসিক চাপ কম থাকে ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
- তাছাড়াও যখন বিড়ালের সাথে সময় কাটাবেন তখন শরীর থেকে শান্ত ও আরামদায়ক রাসায়নিক নিঃসরণ বেড়ে যায়, যার ফলে ওই ব্যক্তির দুশ্চিন্তা, রাগ, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এর একটি গবেষণা ২০০২ সালে প্রমাণিত হয়েছে যে, এক বছরের কম বয়সী শিশুরা বিড়ালকে খুবই পছন্দ করে এবং বিড়াল পাশে থাকলে বিভিন্ন ধরনের এনার্জি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশ কম থাকে।
- এছাড়াও অন্যান্য প্রাণী যেমন কুকুরের তুলনায় বিড়াল অনেক কম খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। বেশি সময় ঘুমায়, খুবই শান্ত শিষ্ট থাকে, ঘরে ইঁদুর তাড়ায়। এবং বিড়াল যে জায়গায় থাকে সে জায়গাটা নি:সন্দেহে বুঝা যায় পবিত্র একটি জায়গা।
- বিড়ালের মুখ দেওয়া খাবার খাওয়া জায়েজ আছে, যেহেতু বিড়াল একটি পবিত্র প্রাণী।
বিড়ালের সাথে কঠিন ব্যবহার বা আঘাত করা উচিত নয়। এর শাস্তিস্বরুপ, একজন নারী জাহান্নামে প্রবেশ করেছিলেন শুধু একটি বিড়ালের জন্য। খুবই জঘন্য কাজ করেছিলেন ওই নারী বিড়ালটির সাথে, দীর্ঘদিন বেঁধে রেখেছিলেন কিন্তু কোনো খাবার দেন নি, এমনকি বাইরের যে কীটপতঙ্গ খাবে সে সুযোগও দেননি। ফলে পরকালে ওই নারীর শাস্তি হয়েছিলো জাহান্নাম। (আল-বুখারী: ৩১৪০, মুসলিম: ২২৪২)।
মহানবী সা এর বিড়ালের নাম কি | নবীজির বিড়ালের নাম পোষ্ট সম্পর্কে সর্বশেষ
বিড়ালের সাথে কখনো খারাপ ব্যবহার করবেন না, বিড়ালকে লাথি বা অন্য কিছু দ্বারা আঘাত করবেন না। বিড়াল আপনার কাছে ভালবেসে আসতে পারে বা আপনার ফেলে দেওয়া খাবারের খুজে আসতে পারে। বিড়াল খুবই উপকারী একটি প্রাণী, বিড়ালকে তাড়িয়ে দেওয়া বা আঘাত করা থেকে বিরত থাকবেন।
"মহানবী (সা:) বলেছেন, আল্লাহ ওই সব ব্যক্তিদের চেহারা উজ্জ্বল করে দেন যে আমার হাদিস শুনেছে এবং অন্যের কাছে তা পৌঁছে দিয়েছে " (আবু দাউদ: ৫১৫)। তাই যেকোনো হাদিস বা তথ্য আমরা নিজে জানবো এবং অন্যকে জানার সুযোগ করে দিব।
আমাদের মহানবী (সা:) এর বিড়ালের নাম কি এবং বিড়াল সম্পর্কে অন্যান্য সব তথ্য নিয়ে সাজানো এই পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এবং বিড়াল সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা সর্বক্ষণ আপনার উত্তর দিতে প্রস্তুত। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আরো পড়ুনঃ
কিস্তিতে দেনমোহর পরিশোধের নিয়ম
নামাজের জন্য ১০ টি সূরা | ১০ টি ছোট সূরা
সাহাবীদের নাম অর্থসহ ছেলেদের - পুরুষ সাহাবীদের নামের তালিকা অর্থসহ
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।