সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম: আমরা সবাই কমবেশি জানি যে কৃমি আমাদের শরীরের রক্ত শুষে নেয়। যার কারণে রক্তশূন্যতা এবং অপুষ্টিতে ভুগে থাকে ওই সকল মানুষ যাদের অন্ত্রে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কৃমির বাস। আর এই কৃমিকে নিরাময় করতে সচরাচর সেবন করা হয় সোলাস ট্যাবলেট অথবা সিরাপ।
তাই অনেকেরই জানার প্রয়োজন পড়ে, সোরাস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আজ আমরা আমাদের আলোচনার মাধ্যমে আপনাদেরকে সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম, সোলাস সিরাপ ঔষধ খাওয়ার নিয়ম, সোলাস ১০০ খাওয়ার নিয়ম এবং এই ওষুধটি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানাবো।
তাহলে আসুন কথা না বাড়িয়ে ধারাবাহিকভাবে জেনে নেওয়া যাক সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম, সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা, সোলাস ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার আগে না পরে খেতে হয়, সোলাস ট্যাবলেট কি খালি পেটে খেতে হয়, আর যদি খালি পেটে খেতেও হয় তাহলে সোলাস ট্যাবলেট কিছু চুষে খেতে হয় ইত্যাদি সম্পর্কে সমস্ত বৃত্তান্ত।
(toc) #title=(সুচিপত্র)
সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
সোলাস ট্যাবলেট ওষুধটি মূলত খাওয়ার আগে অথবা পরে অর্থাৎ খালি পেটে এবং ভরা পেটে উভয় ভাবেই খেতে পারবেন আপনি। এতে কোন সমস্যা হবে না। তবে হ্যাঁ, আমরা সাধারণত এটা জানি কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করলে অবশ্যই ভরা পেট থাকতে হয়। মূলত এই কথাটা একদমই সত্যি।
কিন্তু কৃমির সোলাস নামক এই ওষুধটি আপনি খালি পেটে খেতে পারবেন এতে কোন সমস্যা হবে না। কেননা এই ওষুধের ক্ষেত্রে খুব একটা নিয়ম-কানুন না মেনে চললেও সমস্যা নেই। তবে এই ওষুধটি খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত এবং ভালো সময় হচ্ছে রাতে ভরা পেটে অর্থাৎ ভাত খাওয়ার পরবর্তীতে খাওয়া।
সোলাস ট্যাবলেট কয়টা খাওয়ার নিয়ম
খালি এবং ভরা পেট উভয় ভাবেই সোলাস ট্যাবলেট ওষুধটি খাওয়া যাবে। কিন্তু কথা হচ্ছে সোলাস ট্যাবলেট কি চুষে খেতে হয়? আর এই ওষুধটি একসঙ্গে কতগুলো খেতে হয়?
কৃমিনাশক ট্যাবলেট গুলো সাধারণত তিন মাস অন্তর অন্তর খাওয়া হয়ে থাকে। আর আপনি যদি কৃমিনাশক ঔষধ হিসেবে সোলাস ট্যাবলেট খেতে চান তাহলে প্রতিদিন সকালে ও রাত্রে একটি করে তিন দিন ছয়টি ট্যাবলেট খেতে পারেন। কিংবা প্রত্যেকদিন রাতে একটি করে অর্থাৎ ছয় দিনে মোট ছয়টি ট্যাবলেটও খেতে পারেন।
তাছাড়াও আপনার যদি ক্রিমের সমস্যা অধিক বেশি পরিমাণে থেকে থাকে এবং আপনি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন তাহলে চাইলে সোলাস ট্যাবলেটটি সাত দিন কিংবা চৌদ্দ দিন পর পর নিতে পারবেন।
তবে হ্যাঁ অল্পবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের ক্ষেত্রে অবশ্যই সোলাস ট্যাবলেট সেবন করানোর পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে ভুলবেন না। কেননা অধিক পরিমাণে সোলাস ট্যাবলেট বাচ্চাদেরকে খাওয়ালে বিভিন্ন বিপদজনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
সোলাস সিরাপ ঔষধ খাওয়ার নিয়ম | শিশুদের সোলাস সিরাপ খাওয়ানোর নিয়ম
প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে সোলাস সিরাপ নির্দেশিত। আর এটি মূলত ১০০ মিলিগ্রাম অথবা এক চা চামচ একক ডোজ হিসেবে নির্দেশিত হয়ে থাকে। সুতরাং সোলাস সিরাপ ওষুধটি খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে ১০০ মিলিগ্রাম ঔষধ সেবন করা। আর এটি একটানা ৩ দিন সকাল ও বিকালে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
তবে শিশুদের জন্য সোলাস সিরাপটি নির্দেশিত নয়। মূলত দুই বছরের অধিক বয়সী শিশুরা এই সিরাপ ঔষধটি খেতে পারবে। তাই আপনার শিশুর বয়স যদি দুই বছরের কম হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কৃমিনাশক সোলাস সিরাপ ঔষধ এভোয়েড করতে হবে।
আর আরেকটি কথা না বললেই নয় সেটা হচ্ছে শিশুদেরকে কৃমিসহ যেকোন ওষুধ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
সেই সাথে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও যেকোনো ওষুধ আনুমানিকের উপর ভিত্তি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ ও নির্দেশনা মোতাবেক সেবন করা উচিত। যাতে করে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে নিজেদের কে মুক্ত রাখা যায়।
শিশুদের সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ানোর নিয়ম
শিশুদের সোলাস ট্যাবলেট খাওয়াতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ আপনার শিশু যদি দীর্ঘদিন যাবত অপুষ্টি বা রক্তশূন্যতায় ভোগে তাহলে এটা একটা গুরুতর সমস্যা হতে পারে। এজন্য পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ খাওয়ানোটা অধিক বেশি জরুরী।
আপনি চাইলে অনলাইনে বিভিন্ন ডাক্তারদের সাথে কথা বলেও এ বিষয়ে জানতে পারবেন। কেননা আজকাল এমন অনেক ডাক্তার রয়েছেন যারা অনলাইনে ফ্রি চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন।
তবে এবার আসেন জেনে নেওয়া যাক, সোলাস ট্যাবলেট মূলত কিভাবে খেতে হয়। মানে এই ট্যাবলেট ঔষধ কি চুষে খাওয়া অধিক বেশি ভালো নাকি পানিতে গিলে খাওয়া অধিক বেশি কার্যকরী!
সোলাস ট্যাবলেট কিভাবে খেতে হয়?
সোলাস ট্যাবলেট কি চুষে খেতে হয় এমন প্রশ্ন করে থাকেন অনেকেই। তাদের প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে " না"। কেননা এই ট্যাবলেটটি সাধারণত পানি দিয়ে গিলেই খেতে হয়, তাই চুষে খেতে হবে এমনটা বাধ্যতামূলক নয়।
সাধারণত সোলাস ট্যাবলেট অন্যান্য ক্রিমির ঔষধ গুলো থেকে কিছুটা ভিন্ন। আর তাই কৃমির অন্যান্য ওষুধের মত সোলাস ট্যাবলেট ওষুধটি চুষে খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না, এটি পানি দিয়ে গিলে খেলেই হয়।
এবার আসুন জেনে নেই সোলাস ট্যাবলেট এর কাজ কি, সোলাস ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা এবং সোলাস ট্যাবলেট ও সিরাপ ওষুধের দাম সম্পর্কে খুঁটিনাটি।
সোলাস ট্যাবলেট এর উপকারিতা
সোলাস ট্যাবলেট এর উপকারিতা হচ্ছে এটি সঠিক পরিমাণে খেলে পেটে যত প্রকারের কৃমি রয়েছে সেগুলো খুব দ্রুত নির্মূল হয়ে যায়। কেননা এটি কৃমিকে ধ্বংস করার অন্যতম কার্যকরী একটি ঔষধ হিসেবে নির্দেশিত। তাই আপনি সোলাস ট্যাবলেট এর উপকার হিসেবে পাবেন কৃমি থেকে পরিত্রাণ।
সোলাস ট্যাবলেট এর অপকারিতা
সোলাস ট্যাবলেট এর তেমন কোন অপকারিতা নেই যদি আপনি এটি সঠিক মাত্রায় চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক সেবন করে থাকেন। আর যদি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি আন্দাজ এর উপর ভিত্তি করে অতিরিক্ত পরিমাণ ওষুধ খেয়ে ফেলেন তাহলে অপকারিতা অর্থাৎ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন উপসর্গ। যেমনঃ
- বমি বমি ভাব অথবা বমি
- মাথা ঘোরা
- শারীরিক অসুস্থতা অনুভব এবং
- খাবারে অরুচি সহ আরো কিছু উপসর্গ।
আর হ্যাঁ, যদি দুই বছরের ছোট শিশুদেরকে অর্থাৎ বাচ্চাদেরকে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ান সেক্ষেত্রে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেকটাই বিপদজনক হতে পারে। তাই অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন এক্ষেত্রে।
সোলাস ট্যাবলেট এর কাজ কি
সোলাস ট্যাবলেট এর কাজ মূলত আমাদের আলোচনার উপর ভিত্তি করে আপনি নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন। কেননা ইতিমধ্যে আমরা উল্লেখ করেছি এই ট্যাবলেট ওষুধটি খাওয়ার ফলে যেকোনো ধরনের কৃমি চিরতরে নির্মূল হয়ে যায় অর্থাৎ কৃমির বংশধর বিনষ্ট হয়। তবুও এ পর্যায়ে সোলাস ট্যাবলেট ও সিরাপ এর কাজ সম্পর্কিত কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো।
তাহলে আসুন জেনে নেই সোলাস ট্যাবলেট/সিরাপ এর কাজ কি কি সে সম্পর্কে। যথাঃ
- শিশুদের গুড়া কৃমি দমন
- পরজীবী পোকার সংক্রমণ দমন
- কেঁচো কৃমির সংক্রমণ দমন
- দেহে সুতা কৃমির সংক্রমণ দমন
- অন্ত্রে সংক্রমণের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণে রাখা
- পিম ওয়ার্ম সংক্রমণ দমন
- বক্র দেহে কৃমি বিশেষ সংক্রমণ দমন প্রভৃতি।
এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক সলাস ট্যাবলেট এবং সিরাপ ওষুধের দাম কত!
সোলাস ট্যাবলেট এর দাম
সোলাস ট্যাবলেট এর প্রতি পিস এর দাম ১.১৫ টাকা। যেটা যেকোনো ফার্মেসির দোকান থেকেই সংগ্রহ করা যায়।
সোলাস সিরাপ ওষুধের দাম
সোলাস সিরাপ ঔষধের দাম ৩০ মিলি বোতলের ক্ষেত্রে ১৮.২৫ টাকা। তবে কখনো কখনো এই দামের তুলনায় কিছুটা কম অথবা বেশি হতে পারে।
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত আলোচনাটি আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন পরবর্তীতে খুব শীঘ্রই আবারো নতুন টপিকের নতুন কোন আলোচনা পর্বে আপনাদের সাথে কথা হবে। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ।
আরো পড়ুনঃ
কেগেল ব্যায়াম কিভাবে করে? কেগেল এক্সারসাইজ কিভাবে করে
ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট কোনটা ভালো
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।