ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানাবো আজকের এই আর্টিকেলে। আপনারা যারা ঘরোয়া পদ্ধতিতে বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরি করে ত্বকের যত্ন নিতে ভালোবাসেন তাদের জন্য খুবই উপকারী একটি পোস্ট এটি। কেননা আজ আমরা ভিটামিন এ ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম হিসেবে বেশ কিছু কার্যকরী টিপস প্রদান করতে চলেছি।

তো আপনি যদি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান এবং এলোভেরা জেল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার অথবা ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে নাইট ক্রিম এর ব্যবহার সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের উল্লেখিত পয়েন্ট গুলো এক নজরে পড়ে ফেলুন।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার ১০ টি উপায়

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সাথে অন্যান্য আরো কিছু উপাদান মিশিয়ে বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। যেগুলোর কার্যকারিতা অনেক বেশি এবং প্রত্যেকটি ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করা সম্ভব। তাই যারা নিজেদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে চান এবং সুন্দর লাবণ্যময়ী ত্বকের অধিকারী হতে চান, তারা ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে আমাদের সাজেস্টকৃত প্যাক গুলো তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।

যেগুলো ব্যাবহারে একেবারেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রত্যেকটি উপাদান আপনার হাতের নাগালে থেকে থাকবে। কেননা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সাথে আমরা যে উপকরণ গুলো মেশানোর কথা বলব সেগুলো খুবই পরিচিত উপকরণ, যেগুলো সচরাচর আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতেই থেকে থাকে।

তাহলে আসুন জেনে নেই এমন দশটি সহজ উপায়, যে উপায় অবলম্বন করে আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সাথে মাত্র সাধারণ কিছু উপাদান মিশিয়ে রূপচর্চায় কাজে লাগাতে পারবেন এবং ভালো ফলাফল পাবেন।

১। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় -১

উপকরণ: লেবু +ই ক্যাপ+দই

ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি: একটা বাটিতে দুই চামচ দই, একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং এক ফোটা লেবুর রস নিন। পরবর্তীতে সেটা ভালোভাবে মিক্সড করুন। মূলত এক মিনিট ভালোভাবে মেশালেই যথেষ্ট।

ব্যবহারবিধি: ফেসপ্যাক বানানোর পরবর্তীতে সেটা মুখে ভালোভাবে লাগান এবং মিনিট ১৫ রাখার পরবর্তীতে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আর এই প্যাকটি সপ্তাহে অন্তত দুইবার ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। 

উপকারিতা: আপনি যদি সপ্তাহে লেবু ই-ক্যাপ এবং দই এর এই ফেস প্যাকটি ব্যবহার করেন তাহলে আপনার মুখের কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর হবে এবং উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে। সেই সাথে মুখের ত্বকে পুষ্টি জোগাবে একই সাথে মুখে জমে থাকা ময়লা দূর করবে। 

২। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় –২

উপকরণ: অ্যালোভেরা জেল+ভিটামিন ই ক্যাপ

ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি: একটি ছোট পাত্রে একটি ই ক্যাপসুল নিন এবং তাতে এক অথবা দের চামচ এলোভেরা জেল নেশান। 

ব্যবহারবিধি: এলোভেরা জেল এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভালোভাবে মেশানো হলে সেটা মুখে ঘষে ঘষে ম্যাসাজ করুন। এরপর অন্তত ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন শুকানোর জন্য। পরবর্তীতে একটি রুমাল ভেজিয়ে মুখ মুছে নিন অথবা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 

উপকারিতা: অ্যালোভেরা জেল এর মধ্যে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অন্যদিকে ভিটামিন ই ত্বকের জেলা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আর তাই এটি যদি আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে ত্বক থাকবে প্রাণবন্ত ও সতেজ এবং ত্বকের ডার্ক স্পট কমে যাবে, মুখে ফিরে আসবে জেল্লা।

৩। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় -৩

উপকরণ: ভিটামিন ই ক্যাপসুল+নারিকেল তেল

ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি: একটি পাত্র তে ৮ টেবিল চামচ নারকেল তেল, দুইটি ই ক্যাপসুল নিন এরপর এই দুটি উপাদান ভালোভাবে মেশান। পরবর্তীতে কাঁচের একটা শিশি অথবা ছোটখাটো কোন কৌটোতে মিশ্রণটি ঢেলে অন্তত আধা ঘন্টা রেফ্রিজারে রেখে সেট করুন। 

ব্যবহারবিধি: ফ্রিজ থেকে বের করে পাঁচ মিনিট রেখে দিয়ে পরবর্তীতে গুপ্ত ফেসপ্যাকটি ভালোভাবে ঘষে ঘষে মুখে লাগান এবং ১০ মিনিট পর্যন্ত রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

উপকারিতা: আপনি যদি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করেন তাহলে তক হবে অনেক উজ্জ্বল ও ফ্রেশ, সেই সাথে ব্রণের সমস্যা এবং কালো ছোপ ছোপ দাগের সমস্যা থাকলেও সেটা ঠিক হয়ে যাবে।

৪। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় -৪

উপকরণ: ভিটামিন ই+টক দই+ডিম

ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি: এক টেবিল চামচ টক দই, একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং ডিমের সাদা অংশ এক টেবিল চামচ নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে সংরক্ষণ করুন।

ব্যবহারবিধি: মূলত ভিটামিন ই, ডিম এবং টক দই এর তৈরিকৃত এই মিশ্রণটি মাস্কের মতো মুখে লাগাতে হবে। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পরবর্তীতে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই মুগ্ধ হওয়ার সময় স্ক্রাব করে নিতে ভুলবেন না।

উপকারিতা: টক দই সাধারণত ত্বককে এক্সফলিয়েট করে থাকে এবং ডিম ত্বকের পুষ্টি যোগায়। অন্যদিকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখের আর্দ্রতা ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই আপনি যদি এই ফেসপ্যাকটি বাড়িতে তৈরি করে নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে একটি সুন্দর প্রাণবন্ত ত্বকের অধিকারী হতে পারবেন।

৫। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় –৫

উপকরণ: ভিটামিন ই ক্যাপসুল+গ্রিন টি+মধু

ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি: প্রথমত এক কাপ গ্রিন টি নিতে হবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন গ্রিন টি যেন ঠান্ডা হয় অর্থাৎ স্বাভাবিক তাপমাত্রা হতে হবে। পরবর্তীতে তাদের দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে ভালোভাবে সেটআপ করে রাখতে হবে কিছুক্ষণ যাবৎ। আপনি চাইলে এই মিশ্রণটি কিছুটা ফুটিয়ে নিতে পারেন এতে করে আরো ভালো একটি প্যাক তৈরি হয়ে যাবে। 

ব্যবহারবিধি: প্রতিদিন এই প্যাকটি আপনি মুখে লাগাতে পারেন গোসল দেওয়ার পূর্বে। মূলত ফেসপ্যাক টি বানানোর পর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ফিরে এলে অর্থাৎ ঠান্ডা করে নিয়ে মুখে ভালোভাবে প্রলেপ দিতে হবে। পরবর্তীতে ১৫ অথবা কুড়ি মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলবেন। 

উপকারিতা: ত্বকের বলেরেখা দূর হবে ব্রণের দাগ এবং কালো ছোপ ছোপ দাগ থাকলে সেগুলো খুব সহজেই মলিন হয়ে যাবে।

৬। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় –৬

উপকরণ: পেঁপে+গোলাপজল+ভিটামিন ই ক্যাপসুল

ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি: প্রথমত একটি বাটিতে দুই টেবিল চামচ পেঁপের পাল্প নিতে হবে এবং তাতে এক টেবিল চামচ গোলাপ জল এড করতে হবে। সেই সঙ্গে মোটামুটি ১৫-২০ ফোঁটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভালো ভালো করে মিক্সড করে প্যাকটি বানাতে হবে। 

ব্যবহারবিধি: ফেসপ্যাক বানানো হলে এটি সারা মুখে ভালোভাবে এপ্লাই করতে হবে এবং অপেক্ষা করতে হবে ততক্ষণ যাবৎ যতক্ষণ না মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে। তবে আপনি যদি অনেক ব্যস্ত প্রকৃতির মানুষ হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে মাত্র ১০ মিনিট রাখলেও চলবে। তবে শুখনো পর্যন্ত অপেক্ষা করলে অনেক বেশি উপকার পাবেন। 

উপকারিতা: এই ফেসপ্যাক নিয়মিত ব্যবহার করলে মুখ অনেক বেশি পরিষ্কার থাকে সেই সাথে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল, যে কারণে অনেক বেশি ফর্সা হয়ে দেখায় আগের তুলনায়।

৭। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় –৭

উপকরণ: ভিটামিন ই ক্যাপসুল+নাইট ক্রিম

প্যাক বানানোর পদ্ধতি: এক থেকে দুইটি এই ক্যাপসুল এর তেল ভালোভাবে বের করে সেটা আপনার পছন্দের নাইট ক্রিম অথবা হালকা বেবি ক্রিম এর সঙ্গে মেশাতে হবে।

ব্যবহারবিধি: প্রতিদিন রাতে আপনি যখন নাইট ক্রিম ব্যবহার করেন মূলত সেই টাইমে ব্যবহার করতে হবে। এটা মূলত ফেসপ্যাক এর মধ্যে পড়ে না। আপনি মূলত এই পদ্ধতিতে ভিটামিন ই আপনার ত্বকের রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।

উপকারিতা: নাইট ক্রিম এর সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ব্যবহার করলে উক্ত ক্রিমটি আরো বেশি কাজ করে অর্থাৎ উপকার হিসেবে ত্বকের উজ্জ্বলতা খুব দ্রুত ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়, ত্বকের ময়লা দূর হয় বিভিন্ন কালো ছোপ ছোপ দাও দূর হয়ে যায় এবং টক হয়ে ওঠে ফর্সা ও প্রাণবন্ত।

৮। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় –৮

উপকরণ: ভিটামিন ই ক্যাপসুল+লিপ বাম বা ভেসলিন

প্যাক বানানোর পদ্ধতি: লিপ বাম অথবা ভ্যাসলিন এর সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তেল বের করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।

ব্যবহার বিধি: এটি আপনি হালকাভাবে আপনার ত্বকে এপ্লাই করতে পারবেন পাশাপাশি হাতে-পায়ে সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এই প্যাকটি বানানো হয় মূলত মসৃণ গোলাপি ঠোঁট পেতে। আর তাই এটি রাতের বেলা ঠোঁটে এবং মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন।

উপকারিতা: ঠোঁট ফাটার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে নিয়মিত এই মিশ্রণ টি বানিয়ে ব্যবহার করে ফলে।

৯। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় –৯

উপকরণ: ভিটামিন ই ক্যাপসুল + লেবু

ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি: পরিমাণ মতো লেবু এবং দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল একসঙ্গে মিক্স করতে হবে। 

ব্যবহারবিধি: সপ্তাহে অন্তত দুই দিন সকাল কিংবা গোসল দেওয়ার পূর্বে এটি মুখে এপ্লাই করতে হবে এবং সুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরবর্তীতে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুতে হবে।

উপকারিতা: গাল ফাটা এবং ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগের সমস্যা দূরীভূত হবে এবং ত্বক হবে ফর্সা।

১০। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় –১০

উপকরণ: ভিটামিন ই ক্যাপসুল

ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি: এই প্যাকটি বানানোর কোন প্রয়োজন নেই। কেননা শুধুমাত্র ভিটামিন এ ক্যাপসুল কেটে এর তেল টুকু সংগ্রহ করলেই চলবে। 

ব্যবহারবিধি: প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে এটি মুখে ভালোভাবে এপ্লাই করতে হবে।

উপকারিতা: ভিটামিন ই ক্যাপসুল ডার্ক সার্কেল দূর করে, গ্লইন স্কিন পেতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আর তাই স্কিন গ্লো করার জন্য, সুন্দর ফর্সা ও প্রাণবন্ত করার জন্য এটি বিশেষভাবে ভূমিকা রাখবে।

তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় আশা করছি আপনারা এপ্লাই করে ভালো ফলাফল পাবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না আমাদের উল্লেখিত ব্যবহার পদ্ধতি গুলো আপনার জন্য কতটা কার্যকরী হয়েছে। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ।

আরো পড়ুনঃ 

ই ক্যাপ 400 এর উপকারিতা

ই ক্যাপ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

সেরা ৫ টি ফর্সা হওয়ার ডাক্তারি ক্রিম মেয়েদের

ফর্সা হওয়ার ক্রিম কোনটা ভালো

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!